কামরুল হাসান

আমাদের আর তর সইছে না। সবাই অধীর অপেক্ষায়—কখন ফাটবে সেই বোমা। ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষার পর নির্দেশ এল। দুই হাতে দুই কান ঢেকে নিচু হয়ে মাটিতে বসে পড়লাম। এরপর ‘ইয়েস রেডি, ইয়েস’ কমান্ড দিতে না দিতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলো বোমাটি। তাকিয়ে দেখলাম, স্প্লিন্টারগুলো শিলাবৃষ্টির মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। বিস্ফোরণের গগনবিদারী শব্দে কেঁপে উঠল পুরো ফায়ার রেঞ্জ। সেই কম্পন মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের কয়েকটি আবাসিক ভবনেও অনুভূত হলো।
এবার বলি, সেই বোমা এল কোত্থেকে। আজ ৮ অক্টোবর শনিবার হলেও ২৩ বছর আগে ১৯৯৯ সালের ৮ অক্টোবর ছিল শুক্রবার। সকালের দিকে বেশ আরামেই ছিলাম। দুপুরের পর প্রধান প্রতিবেদক ফোন দিয়ে বললেন, খুলনার নিরালা আবাসিক এলাকার আহমদিয়া মসজিদে জুমার নামাজে বোমা ফেটেছে। তাতে ৬-৭ জন নিহত, জনা তিরিশেক আহত হয়েছে। ঢাকায় পুলিশের কোনো প্রস্তুতি আছে কি না, খোঁজ নাও। আরাম উবে গেল।
এ ওয়াই বি আই সিদ্দিকী তখন আইজিপি। ফোন দিলাম আইজিপির বাসার টিঅ্যান্ডটি নম্বরে। তিনি নিজেই ফোন ধরে বললেন, ‘আরে মিয়া, মিরপুর ২ নম্বরের জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদেও বোমা পাওয়া গেছে, আগে তার খোঁজ নাও।’ আইজিপির কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু জানতে চাওয়া ঠিক হবে না। ফোন দিলাম মিরপুর থানায়। ডিউটি অফিসার বললেন, শিরনির প্যাকেটে করে কে বা কারা একটি বোমা মসজিদে রেখে গেছে। কপাল ভালো, বোমাটি ফাটেনি। ফোন রেখে ছুটলাম মিরপুরে। ততক্ষণে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দল এসে গেছে। মসজিদের গেটে পেয়ে গেলাম কমিটির সভাপতি আবুল কাশেমকে। তাঁর কাছ থেকে সব খোঁজখবর করে অফিসে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল।
ইস্কাটনে জনকণ্ঠ অফিসে এসে দেখি হুলুস্থুল কাণ্ড। সহকর্মীরা সব নিচে; রাস্তায় দাঁড়িয়ে-বসে। সবার চোখে-মুখে উদ্বেগ। টেলিফোন অপারেটর লিজার স্বামী প্রশাসন বিভাগের কামাল হোসেন দৌড়াদৌড়ি করছেন। এক সহকর্মী বললেন, অফিসে একটি ব্রিফকেস বোমা পাওয়া গেছে। দুপুর ১২টার দিকে এক লোক ব্রিফকেসটি হাতে নিয়ে জনকণ্ঠ ভবনের নিচতলার অভ্যর্থনার সামনে রাখা সোফায় কিছুক্ষণ বসে ছিলেন। এরপর ‘একটু খেয়ে আসছি’ বলে ব্রিফকেসটি দেখার জন্য অভ্যর্থনার ছেলেটিকে অনুরোধ করে বেরিয়ে যান। ৫-৬ ঘণ্টা পরও সেই লোক ফিরে আসেননি। এতে সবার সন্দেহ হয়। কেউ একজন ব্রিফকেসটি হাতে তুলতে গিয়ে বুঝতে পারেন, অনেক ওজন। এতে সন্দেহ আরও জোরালো হয়। সম্পাদকের নির্দেশে ক্রাইম রিপোর্টার শংকর কুমার দে রমনা থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানান। থানা থেকে বলা হয় সবাইকে নিরাপদ দূরত্বে সরে থাকতে। সম্পাদক, উপদেষ্টা সম্পাদকসহ জনকণ্ঠের সব কর্মী ভবন ছেড়ে নিচে নেমে আসেন।
আমি আসার মিনিট দশেক পর দলবল নিয়ে হাজির হন পুলিশ কমিশনার এ কে এম শামসুদ্দিন। পুলিশে তখন বোমা বিস্ফোরক ইউনিট ছিল না। কমিশনার একটু উঁকিঝুঁকি মেরে দেখে নিয়ে আইজিপিকে ফোন দিলেন। আমাদের বলা হলো, সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দল আসছে। আমরা নিচে অপেক্ষা করছি। ঘণ্টা দেড়েক পর মেজর আহসান উল্লাহ ও মেজর জসিমের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দলের সদস্যরা এলেন। তাঁরা সবাইকে সরিয়ে দিয়ে বোমাটি দেখলেন। কিছুক্ষণ পর বললেন, এটা শক্তিশালী স্থলমাইন। ম্যানুয়াল হলে ১২ ঘণ্টা পরে, আর ডিজিটাল হলে যেকোনো সময় ফাটতে পারে।
এবার তাহলে কী হবে! পত্রিকা বের হবে কী করে! শুরু হলো আলোচনা। কমিশনারসহ সবাই সিদ্ধান্ত নিলেন, বোমাটি অফিসের সামনের রাস্তায় এনে রাখা হবে।
জনকণ্ঠ ভবনের সামনে রাস্তায় বালুর বস্তা এনে বাংকার বানানো হলো। তার মধ্যে রাখা হলো বোমাটি। আপাতত আমরা বাঁচলাম। সবাই অফিসে উঠে গেলাম।
ততক্ষণে ঢাকার সব মিডিয়ায় বোমার খবর চাউর হয়ে গেছে। ইস্কাটনের রাস্তায় বোমা রাখার কারণে বাংলামোটর থেকে মগবাজার সড়ক বন্ধ। বোমা দেখার জন্য দুপাশে হাজারো উৎসুক মানুষ ভিড়। জনকণ্ঠ অফিস লোকে লোকারণ্য। রাজনৈতিক নেতারাও এলেন। অফিসে পা ফেলার জায়গা নেই। শহরে নানা গুজবও ছড়িয়ে পড়েছে। ফোনের পরে ফোন আসছে পিএবিএক্সে। সারা রাত রাস্তায় বোমা রেখে আমরা সবাই অফিসে বসে থাকলাম।
পরদিন শনিবারের সকাল। বাসায় গিয়ে একটু নাশতা করে আবার অফিসে এলাম। সেনাবাহিনী থেকে বোমা বহনের জন্য বিশেষ ধরনের গাড়ি আনা হচ্ছে। সেই গাড়ির জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। দুপুরের দিকে গাড়ি এল আগেপিছে সাইরেন বাজিয়ে। গাড়িটিতে বোমা তুলে নিয়ে যাওয়া হবে মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের ফায়ারিং রেঞ্জে। বায়না ধরলাম, বিস্ফোরণ দেখতে যাব। সেনা কর্মকর্তারা রাজি হলেন। অফিস থেকে একটা গাড়ি নিয়ে বহরের সঙ্গে চললাম।
বোমা বহনকারী গাড়িবহর যখন মিরপুর ক্যান্টনমেন্টে পৌঁছাল, তখন দুপুর গড়িয়ে গেছে। গাড়িবহরের সাইরেনের কারণে এমপি চেকপোস্টগুলো সচল হয়ে গেছে। আগেপিছে সেনাবাহিনীর চারটি গাড়ি, সঙ্গে রমনা থানার পুলিশের গাড়ি। আমরাও যাচ্ছি ফায়ার রেঞ্জ এলাকায়।
মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের পেছনে পুরো ফাঁকা জলাশয়। ডিওএইচএস তখনো হয়নি। ক্যান্টনমেন্টের একেবারে শেষ মাথায় ফায়ারিং রেঞ্জ। রেঞ্জের নিরাপত্তার জন্য কংক্রিটের উঁচু দেয়াল। তার পাশে একটি টিনের ছাউনি। দূরে বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গার দেখা যাচ্ছে। বিলের ধার ঘেঁষে পাকা রাস্তা। বোমা নিয়ে গাড়িবহর সেখানে এসে থামল। খুব সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি থেকে নামানো হলো ভয়ংকর বোমাটি। এরপর নিয়ে যাওয়া হলো বিস্ফোরণ এলাকায়।
চকোলেট রঙের ব্রিফকেসটি মাটিতে রাখার পর সেনা কর্মকর্তারা উপুড় হয়ে শেষবারের মতো ভেতরের বস্তুটি দেখে নিলেন। আর কোনো সংশয় নেই। একটু পর এলেন ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডের কমান্ডার আবু হাশিম খান। তিনি আসার পর ১১ সদস্যের বিস্ফোরক দল ব্রিফকেসটি তুলে নিয়ে গেল জলাধারের কাছে। জল-জংলার পাশে লাউখেত। রাস্তায় কাদা। সিআইডির ফিঙ্গার প্রিন্টের ওসি ফরিদ আহমেদ, মিরপুর ও রমনা থানার পুলিশ, সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার ১০-১২ জন সদস্য নেমে গেলেন সেই পথে।
আমরা অপেক্ষা করছি কখন বোমাটি ফাটবে। একটু পর বলা হলো, মিরপুরে মসজিদ থেকে উদ্ধার করা বোমাটিও একই সঙ্গে ফাটানো হবে। গাড়িবহর আবার ছুটল নতুন বোমার খোঁজে। এক ঘণ্টা পর সেই বোমা এল। সিদ্ধান্ত হলো, আগে মিরপুরের বোমাটি ফাটানো হবে। এ সময় কী প্রস্তুতি নিতে হবে, তা আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হলো। লোক পাঠিয়ে ফায়ার রেঞ্জের পাশের সব ভবনের জানালা খোলার নির্দেশ দেওয়া হলো; যাতে শব্দে জানালার কাচ না ভাঙে।
মিরপুরের বোমাটি খোলা হলো সবার সামনে। ১০ ইঞ্চি লম্বা লালচে বোমাটির মুখে ঘড়ি ও দুটি অলিম্পিক পেনসিল ব্যাটারির সংযোগ। লম্বাটে বোমার গায়ে আতাফলের মতো খাঁচকাটা। সতর্কতার সঙ্গে বোমাটি রাখা হলো বিলের পানির কাছে স্যাঁতসেঁতে মাটিতে। তার সঙ্গে সংযুক্ত হলো দুটি ডেটোনেটর। তারের শেষ মাথায় ব্লাস্টিং মেশিন। তাতে বিদ্যুতের প্রবাহ দিতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলো বোমাটি।
এরপর শুরু হলো জনকণ্ঠে রাখা ব্রিফকেসের বোমা ফাটানোর কাজ। দূর থেকে প্রথমে বিশেষ কায়দায় খোলা হলো ব্রিফকেসের ওপরের ডালাটি। দেখা গেল, ভেতরে কাঠের ওপর বোমাটি বসানো; যাতে নড়াচড়া না হয়। বোমাটি যুক্ত রয়েছে ব্রিফকেসের নম্বর লকের সঙ্গে। সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটানো হলো শেষ বোমাটি। বিস্ফোরণের শব্দ প্রতিধ্বনিত হলো ঝিলের পানিতে। ততক্ষণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে, অফিসে ফিরে এলাম।
অফিসে এসে শুনি, আইএসপিআর হ্যান্ডআউট দিয়ে বলেছে, বোমাটি বিস্ফোরিত হলে ১০০ মিটার এলাকার সবকিছু উড়ে যেত। স্বরাষ্ট্রসচিব সফিউর রহমান একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন। জনকণ্ঠের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ আবু সাঈদ বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা করলেন। এরপর এ ঘটনার অনেক ফলোআপ হয়েছিল। আবার অন্যান্য গণমাধ্যম থেকে রটানো হলো, কাটতি বাড়াতে এ ঘটনা সাজানো হয়েছে। কী কারণে যেন পুলিশি তদন্তও থেমে গেল। তারপর এত বছরে অনেক জঙ্গি ধরা পড়েছে, বিচারও হয়েছে। শুধু এ ঘটনার কোনো বিচার হলো না। বিষয়টা এখনো খুব অদ্ভুত মনে হয়।

আমাদের আর তর সইছে না। সবাই অধীর অপেক্ষায়—কখন ফাটবে সেই বোমা। ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষার পর নির্দেশ এল। দুই হাতে দুই কান ঢেকে নিচু হয়ে মাটিতে বসে পড়লাম। এরপর ‘ইয়েস রেডি, ইয়েস’ কমান্ড দিতে না দিতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলো বোমাটি। তাকিয়ে দেখলাম, স্প্লিন্টারগুলো শিলাবৃষ্টির মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। বিস্ফোরণের গগনবিদারী শব্দে কেঁপে উঠল পুরো ফায়ার রেঞ্জ। সেই কম্পন মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের কয়েকটি আবাসিক ভবনেও অনুভূত হলো।
এবার বলি, সেই বোমা এল কোত্থেকে। আজ ৮ অক্টোবর শনিবার হলেও ২৩ বছর আগে ১৯৯৯ সালের ৮ অক্টোবর ছিল শুক্রবার। সকালের দিকে বেশ আরামেই ছিলাম। দুপুরের পর প্রধান প্রতিবেদক ফোন দিয়ে বললেন, খুলনার নিরালা আবাসিক এলাকার আহমদিয়া মসজিদে জুমার নামাজে বোমা ফেটেছে। তাতে ৬-৭ জন নিহত, জনা তিরিশেক আহত হয়েছে। ঢাকায় পুলিশের কোনো প্রস্তুতি আছে কি না, খোঁজ নাও। আরাম উবে গেল।
এ ওয়াই বি আই সিদ্দিকী তখন আইজিপি। ফোন দিলাম আইজিপির বাসার টিঅ্যান্ডটি নম্বরে। তিনি নিজেই ফোন ধরে বললেন, ‘আরে মিয়া, মিরপুর ২ নম্বরের জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদেও বোমা পাওয়া গেছে, আগে তার খোঁজ নাও।’ আইজিপির কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু জানতে চাওয়া ঠিক হবে না। ফোন দিলাম মিরপুর থানায়। ডিউটি অফিসার বললেন, শিরনির প্যাকেটে করে কে বা কারা একটি বোমা মসজিদে রেখে গেছে। কপাল ভালো, বোমাটি ফাটেনি। ফোন রেখে ছুটলাম মিরপুরে। ততক্ষণে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দল এসে গেছে। মসজিদের গেটে পেয়ে গেলাম কমিটির সভাপতি আবুল কাশেমকে। তাঁর কাছ থেকে সব খোঁজখবর করে অফিসে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল।
ইস্কাটনে জনকণ্ঠ অফিসে এসে দেখি হুলুস্থুল কাণ্ড। সহকর্মীরা সব নিচে; রাস্তায় দাঁড়িয়ে-বসে। সবার চোখে-মুখে উদ্বেগ। টেলিফোন অপারেটর লিজার স্বামী প্রশাসন বিভাগের কামাল হোসেন দৌড়াদৌড়ি করছেন। এক সহকর্মী বললেন, অফিসে একটি ব্রিফকেস বোমা পাওয়া গেছে। দুপুর ১২টার দিকে এক লোক ব্রিফকেসটি হাতে নিয়ে জনকণ্ঠ ভবনের নিচতলার অভ্যর্থনার সামনে রাখা সোফায় কিছুক্ষণ বসে ছিলেন। এরপর ‘একটু খেয়ে আসছি’ বলে ব্রিফকেসটি দেখার জন্য অভ্যর্থনার ছেলেটিকে অনুরোধ করে বেরিয়ে যান। ৫-৬ ঘণ্টা পরও সেই লোক ফিরে আসেননি। এতে সবার সন্দেহ হয়। কেউ একজন ব্রিফকেসটি হাতে তুলতে গিয়ে বুঝতে পারেন, অনেক ওজন। এতে সন্দেহ আরও জোরালো হয়। সম্পাদকের নির্দেশে ক্রাইম রিপোর্টার শংকর কুমার দে রমনা থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানান। থানা থেকে বলা হয় সবাইকে নিরাপদ দূরত্বে সরে থাকতে। সম্পাদক, উপদেষ্টা সম্পাদকসহ জনকণ্ঠের সব কর্মী ভবন ছেড়ে নিচে নেমে আসেন।
আমি আসার মিনিট দশেক পর দলবল নিয়ে হাজির হন পুলিশ কমিশনার এ কে এম শামসুদ্দিন। পুলিশে তখন বোমা বিস্ফোরক ইউনিট ছিল না। কমিশনার একটু উঁকিঝুঁকি মেরে দেখে নিয়ে আইজিপিকে ফোন দিলেন। আমাদের বলা হলো, সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দল আসছে। আমরা নিচে অপেক্ষা করছি। ঘণ্টা দেড়েক পর মেজর আহসান উল্লাহ ও মেজর জসিমের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দলের সদস্যরা এলেন। তাঁরা সবাইকে সরিয়ে দিয়ে বোমাটি দেখলেন। কিছুক্ষণ পর বললেন, এটা শক্তিশালী স্থলমাইন। ম্যানুয়াল হলে ১২ ঘণ্টা পরে, আর ডিজিটাল হলে যেকোনো সময় ফাটতে পারে।
এবার তাহলে কী হবে! পত্রিকা বের হবে কী করে! শুরু হলো আলোচনা। কমিশনারসহ সবাই সিদ্ধান্ত নিলেন, বোমাটি অফিসের সামনের রাস্তায় এনে রাখা হবে।
জনকণ্ঠ ভবনের সামনে রাস্তায় বালুর বস্তা এনে বাংকার বানানো হলো। তার মধ্যে রাখা হলো বোমাটি। আপাতত আমরা বাঁচলাম। সবাই অফিসে উঠে গেলাম।
ততক্ষণে ঢাকার সব মিডিয়ায় বোমার খবর চাউর হয়ে গেছে। ইস্কাটনের রাস্তায় বোমা রাখার কারণে বাংলামোটর থেকে মগবাজার সড়ক বন্ধ। বোমা দেখার জন্য দুপাশে হাজারো উৎসুক মানুষ ভিড়। জনকণ্ঠ অফিস লোকে লোকারণ্য। রাজনৈতিক নেতারাও এলেন। অফিসে পা ফেলার জায়গা নেই। শহরে নানা গুজবও ছড়িয়ে পড়েছে। ফোনের পরে ফোন আসছে পিএবিএক্সে। সারা রাত রাস্তায় বোমা রেখে আমরা সবাই অফিসে বসে থাকলাম।
পরদিন শনিবারের সকাল। বাসায় গিয়ে একটু নাশতা করে আবার অফিসে এলাম। সেনাবাহিনী থেকে বোমা বহনের জন্য বিশেষ ধরনের গাড়ি আনা হচ্ছে। সেই গাড়ির জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। দুপুরের দিকে গাড়ি এল আগেপিছে সাইরেন বাজিয়ে। গাড়িটিতে বোমা তুলে নিয়ে যাওয়া হবে মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের ফায়ারিং রেঞ্জে। বায়না ধরলাম, বিস্ফোরণ দেখতে যাব। সেনা কর্মকর্তারা রাজি হলেন। অফিস থেকে একটা গাড়ি নিয়ে বহরের সঙ্গে চললাম।
বোমা বহনকারী গাড়িবহর যখন মিরপুর ক্যান্টনমেন্টে পৌঁছাল, তখন দুপুর গড়িয়ে গেছে। গাড়িবহরের সাইরেনের কারণে এমপি চেকপোস্টগুলো সচল হয়ে গেছে। আগেপিছে সেনাবাহিনীর চারটি গাড়ি, সঙ্গে রমনা থানার পুলিশের গাড়ি। আমরাও যাচ্ছি ফায়ার রেঞ্জ এলাকায়।
মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের পেছনে পুরো ফাঁকা জলাশয়। ডিওএইচএস তখনো হয়নি। ক্যান্টনমেন্টের একেবারে শেষ মাথায় ফায়ারিং রেঞ্জ। রেঞ্জের নিরাপত্তার জন্য কংক্রিটের উঁচু দেয়াল। তার পাশে একটি টিনের ছাউনি। দূরে বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গার দেখা যাচ্ছে। বিলের ধার ঘেঁষে পাকা রাস্তা। বোমা নিয়ে গাড়িবহর সেখানে এসে থামল। খুব সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি থেকে নামানো হলো ভয়ংকর বোমাটি। এরপর নিয়ে যাওয়া হলো বিস্ফোরণ এলাকায়।
চকোলেট রঙের ব্রিফকেসটি মাটিতে রাখার পর সেনা কর্মকর্তারা উপুড় হয়ে শেষবারের মতো ভেতরের বস্তুটি দেখে নিলেন। আর কোনো সংশয় নেই। একটু পর এলেন ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডের কমান্ডার আবু হাশিম খান। তিনি আসার পর ১১ সদস্যের বিস্ফোরক দল ব্রিফকেসটি তুলে নিয়ে গেল জলাধারের কাছে। জল-জংলার পাশে লাউখেত। রাস্তায় কাদা। সিআইডির ফিঙ্গার প্রিন্টের ওসি ফরিদ আহমেদ, মিরপুর ও রমনা থানার পুলিশ, সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার ১০-১২ জন সদস্য নেমে গেলেন সেই পথে।
আমরা অপেক্ষা করছি কখন বোমাটি ফাটবে। একটু পর বলা হলো, মিরপুরে মসজিদ থেকে উদ্ধার করা বোমাটিও একই সঙ্গে ফাটানো হবে। গাড়িবহর আবার ছুটল নতুন বোমার খোঁজে। এক ঘণ্টা পর সেই বোমা এল। সিদ্ধান্ত হলো, আগে মিরপুরের বোমাটি ফাটানো হবে। এ সময় কী প্রস্তুতি নিতে হবে, তা আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হলো। লোক পাঠিয়ে ফায়ার রেঞ্জের পাশের সব ভবনের জানালা খোলার নির্দেশ দেওয়া হলো; যাতে শব্দে জানালার কাচ না ভাঙে।
মিরপুরের বোমাটি খোলা হলো সবার সামনে। ১০ ইঞ্চি লম্বা লালচে বোমাটির মুখে ঘড়ি ও দুটি অলিম্পিক পেনসিল ব্যাটারির সংযোগ। লম্বাটে বোমার গায়ে আতাফলের মতো খাঁচকাটা। সতর্কতার সঙ্গে বোমাটি রাখা হলো বিলের পানির কাছে স্যাঁতসেঁতে মাটিতে। তার সঙ্গে সংযুক্ত হলো দুটি ডেটোনেটর। তারের শেষ মাথায় ব্লাস্টিং মেশিন। তাতে বিদ্যুতের প্রবাহ দিতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলো বোমাটি।
এরপর শুরু হলো জনকণ্ঠে রাখা ব্রিফকেসের বোমা ফাটানোর কাজ। দূর থেকে প্রথমে বিশেষ কায়দায় খোলা হলো ব্রিফকেসের ওপরের ডালাটি। দেখা গেল, ভেতরে কাঠের ওপর বোমাটি বসানো; যাতে নড়াচড়া না হয়। বোমাটি যুক্ত রয়েছে ব্রিফকেসের নম্বর লকের সঙ্গে। সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটানো হলো শেষ বোমাটি। বিস্ফোরণের শব্দ প্রতিধ্বনিত হলো ঝিলের পানিতে। ততক্ষণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে, অফিসে ফিরে এলাম।
অফিসে এসে শুনি, আইএসপিআর হ্যান্ডআউট দিয়ে বলেছে, বোমাটি বিস্ফোরিত হলে ১০০ মিটার এলাকার সবকিছু উড়ে যেত। স্বরাষ্ট্রসচিব সফিউর রহমান একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন। জনকণ্ঠের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ আবু সাঈদ বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা করলেন। এরপর এ ঘটনার অনেক ফলোআপ হয়েছিল। আবার অন্যান্য গণমাধ্যম থেকে রটানো হলো, কাটতি বাড়াতে এ ঘটনা সাজানো হয়েছে। কী কারণে যেন পুলিশি তদন্তও থেমে গেল। তারপর এত বছরে অনেক জঙ্গি ধরা পড়েছে, বিচারও হয়েছে। শুধু এ ঘটনার কোনো বিচার হলো না। বিষয়টা এখনো খুব অদ্ভুত মনে হয়।
কামরুল হাসান

আমাদের আর তর সইছে না। সবাই অধীর অপেক্ষায়—কখন ফাটবে সেই বোমা। ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষার পর নির্দেশ এল। দুই হাতে দুই কান ঢেকে নিচু হয়ে মাটিতে বসে পড়লাম। এরপর ‘ইয়েস রেডি, ইয়েস’ কমান্ড দিতে না দিতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলো বোমাটি। তাকিয়ে দেখলাম, স্প্লিন্টারগুলো শিলাবৃষ্টির মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। বিস্ফোরণের গগনবিদারী শব্দে কেঁপে উঠল পুরো ফায়ার রেঞ্জ। সেই কম্পন মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের কয়েকটি আবাসিক ভবনেও অনুভূত হলো।
এবার বলি, সেই বোমা এল কোত্থেকে। আজ ৮ অক্টোবর শনিবার হলেও ২৩ বছর আগে ১৯৯৯ সালের ৮ অক্টোবর ছিল শুক্রবার। সকালের দিকে বেশ আরামেই ছিলাম। দুপুরের পর প্রধান প্রতিবেদক ফোন দিয়ে বললেন, খুলনার নিরালা আবাসিক এলাকার আহমদিয়া মসজিদে জুমার নামাজে বোমা ফেটেছে। তাতে ৬-৭ জন নিহত, জনা তিরিশেক আহত হয়েছে। ঢাকায় পুলিশের কোনো প্রস্তুতি আছে কি না, খোঁজ নাও। আরাম উবে গেল।
এ ওয়াই বি আই সিদ্দিকী তখন আইজিপি। ফোন দিলাম আইজিপির বাসার টিঅ্যান্ডটি নম্বরে। তিনি নিজেই ফোন ধরে বললেন, ‘আরে মিয়া, মিরপুর ২ নম্বরের জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদেও বোমা পাওয়া গেছে, আগে তার খোঁজ নাও।’ আইজিপির কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু জানতে চাওয়া ঠিক হবে না। ফোন দিলাম মিরপুর থানায়। ডিউটি অফিসার বললেন, শিরনির প্যাকেটে করে কে বা কারা একটি বোমা মসজিদে রেখে গেছে। কপাল ভালো, বোমাটি ফাটেনি। ফোন রেখে ছুটলাম মিরপুরে। ততক্ষণে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দল এসে গেছে। মসজিদের গেটে পেয়ে গেলাম কমিটির সভাপতি আবুল কাশেমকে। তাঁর কাছ থেকে সব খোঁজখবর করে অফিসে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল।
ইস্কাটনে জনকণ্ঠ অফিসে এসে দেখি হুলুস্থুল কাণ্ড। সহকর্মীরা সব নিচে; রাস্তায় দাঁড়িয়ে-বসে। সবার চোখে-মুখে উদ্বেগ। টেলিফোন অপারেটর লিজার স্বামী প্রশাসন বিভাগের কামাল হোসেন দৌড়াদৌড়ি করছেন। এক সহকর্মী বললেন, অফিসে একটি ব্রিফকেস বোমা পাওয়া গেছে। দুপুর ১২টার দিকে এক লোক ব্রিফকেসটি হাতে নিয়ে জনকণ্ঠ ভবনের নিচতলার অভ্যর্থনার সামনে রাখা সোফায় কিছুক্ষণ বসে ছিলেন। এরপর ‘একটু খেয়ে আসছি’ বলে ব্রিফকেসটি দেখার জন্য অভ্যর্থনার ছেলেটিকে অনুরোধ করে বেরিয়ে যান। ৫-৬ ঘণ্টা পরও সেই লোক ফিরে আসেননি। এতে সবার সন্দেহ হয়। কেউ একজন ব্রিফকেসটি হাতে তুলতে গিয়ে বুঝতে পারেন, অনেক ওজন। এতে সন্দেহ আরও জোরালো হয়। সম্পাদকের নির্দেশে ক্রাইম রিপোর্টার শংকর কুমার দে রমনা থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানান। থানা থেকে বলা হয় সবাইকে নিরাপদ দূরত্বে সরে থাকতে। সম্পাদক, উপদেষ্টা সম্পাদকসহ জনকণ্ঠের সব কর্মী ভবন ছেড়ে নিচে নেমে আসেন।
আমি আসার মিনিট দশেক পর দলবল নিয়ে হাজির হন পুলিশ কমিশনার এ কে এম শামসুদ্দিন। পুলিশে তখন বোমা বিস্ফোরক ইউনিট ছিল না। কমিশনার একটু উঁকিঝুঁকি মেরে দেখে নিয়ে আইজিপিকে ফোন দিলেন। আমাদের বলা হলো, সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দল আসছে। আমরা নিচে অপেক্ষা করছি। ঘণ্টা দেড়েক পর মেজর আহসান উল্লাহ ও মেজর জসিমের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দলের সদস্যরা এলেন। তাঁরা সবাইকে সরিয়ে দিয়ে বোমাটি দেখলেন। কিছুক্ষণ পর বললেন, এটা শক্তিশালী স্থলমাইন। ম্যানুয়াল হলে ১২ ঘণ্টা পরে, আর ডিজিটাল হলে যেকোনো সময় ফাটতে পারে।
এবার তাহলে কী হবে! পত্রিকা বের হবে কী করে! শুরু হলো আলোচনা। কমিশনারসহ সবাই সিদ্ধান্ত নিলেন, বোমাটি অফিসের সামনের রাস্তায় এনে রাখা হবে।
জনকণ্ঠ ভবনের সামনে রাস্তায় বালুর বস্তা এনে বাংকার বানানো হলো। তার মধ্যে রাখা হলো বোমাটি। আপাতত আমরা বাঁচলাম। সবাই অফিসে উঠে গেলাম।
ততক্ষণে ঢাকার সব মিডিয়ায় বোমার খবর চাউর হয়ে গেছে। ইস্কাটনের রাস্তায় বোমা রাখার কারণে বাংলামোটর থেকে মগবাজার সড়ক বন্ধ। বোমা দেখার জন্য দুপাশে হাজারো উৎসুক মানুষ ভিড়। জনকণ্ঠ অফিস লোকে লোকারণ্য। রাজনৈতিক নেতারাও এলেন। অফিসে পা ফেলার জায়গা নেই। শহরে নানা গুজবও ছড়িয়ে পড়েছে। ফোনের পরে ফোন আসছে পিএবিএক্সে। সারা রাত রাস্তায় বোমা রেখে আমরা সবাই অফিসে বসে থাকলাম।
পরদিন শনিবারের সকাল। বাসায় গিয়ে একটু নাশতা করে আবার অফিসে এলাম। সেনাবাহিনী থেকে বোমা বহনের জন্য বিশেষ ধরনের গাড়ি আনা হচ্ছে। সেই গাড়ির জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। দুপুরের দিকে গাড়ি এল আগেপিছে সাইরেন বাজিয়ে। গাড়িটিতে বোমা তুলে নিয়ে যাওয়া হবে মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের ফায়ারিং রেঞ্জে। বায়না ধরলাম, বিস্ফোরণ দেখতে যাব। সেনা কর্মকর্তারা রাজি হলেন। অফিস থেকে একটা গাড়ি নিয়ে বহরের সঙ্গে চললাম।
বোমা বহনকারী গাড়িবহর যখন মিরপুর ক্যান্টনমেন্টে পৌঁছাল, তখন দুপুর গড়িয়ে গেছে। গাড়িবহরের সাইরেনের কারণে এমপি চেকপোস্টগুলো সচল হয়ে গেছে। আগেপিছে সেনাবাহিনীর চারটি গাড়ি, সঙ্গে রমনা থানার পুলিশের গাড়ি। আমরাও যাচ্ছি ফায়ার রেঞ্জ এলাকায়।
মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের পেছনে পুরো ফাঁকা জলাশয়। ডিওএইচএস তখনো হয়নি। ক্যান্টনমেন্টের একেবারে শেষ মাথায় ফায়ারিং রেঞ্জ। রেঞ্জের নিরাপত্তার জন্য কংক্রিটের উঁচু দেয়াল। তার পাশে একটি টিনের ছাউনি। দূরে বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গার দেখা যাচ্ছে। বিলের ধার ঘেঁষে পাকা রাস্তা। বোমা নিয়ে গাড়িবহর সেখানে এসে থামল। খুব সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি থেকে নামানো হলো ভয়ংকর বোমাটি। এরপর নিয়ে যাওয়া হলো বিস্ফোরণ এলাকায়।
চকোলেট রঙের ব্রিফকেসটি মাটিতে রাখার পর সেনা কর্মকর্তারা উপুড় হয়ে শেষবারের মতো ভেতরের বস্তুটি দেখে নিলেন। আর কোনো সংশয় নেই। একটু পর এলেন ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডের কমান্ডার আবু হাশিম খান। তিনি আসার পর ১১ সদস্যের বিস্ফোরক দল ব্রিফকেসটি তুলে নিয়ে গেল জলাধারের কাছে। জল-জংলার পাশে লাউখেত। রাস্তায় কাদা। সিআইডির ফিঙ্গার প্রিন্টের ওসি ফরিদ আহমেদ, মিরপুর ও রমনা থানার পুলিশ, সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার ১০-১২ জন সদস্য নেমে গেলেন সেই পথে।
আমরা অপেক্ষা করছি কখন বোমাটি ফাটবে। একটু পর বলা হলো, মিরপুরে মসজিদ থেকে উদ্ধার করা বোমাটিও একই সঙ্গে ফাটানো হবে। গাড়িবহর আবার ছুটল নতুন বোমার খোঁজে। এক ঘণ্টা পর সেই বোমা এল। সিদ্ধান্ত হলো, আগে মিরপুরের বোমাটি ফাটানো হবে। এ সময় কী প্রস্তুতি নিতে হবে, তা আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হলো। লোক পাঠিয়ে ফায়ার রেঞ্জের পাশের সব ভবনের জানালা খোলার নির্দেশ দেওয়া হলো; যাতে শব্দে জানালার কাচ না ভাঙে।
মিরপুরের বোমাটি খোলা হলো সবার সামনে। ১০ ইঞ্চি লম্বা লালচে বোমাটির মুখে ঘড়ি ও দুটি অলিম্পিক পেনসিল ব্যাটারির সংযোগ। লম্বাটে বোমার গায়ে আতাফলের মতো খাঁচকাটা। সতর্কতার সঙ্গে বোমাটি রাখা হলো বিলের পানির কাছে স্যাঁতসেঁতে মাটিতে। তার সঙ্গে সংযুক্ত হলো দুটি ডেটোনেটর। তারের শেষ মাথায় ব্লাস্টিং মেশিন। তাতে বিদ্যুতের প্রবাহ দিতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলো বোমাটি।
এরপর শুরু হলো জনকণ্ঠে রাখা ব্রিফকেসের বোমা ফাটানোর কাজ। দূর থেকে প্রথমে বিশেষ কায়দায় খোলা হলো ব্রিফকেসের ওপরের ডালাটি। দেখা গেল, ভেতরে কাঠের ওপর বোমাটি বসানো; যাতে নড়াচড়া না হয়। বোমাটি যুক্ত রয়েছে ব্রিফকেসের নম্বর লকের সঙ্গে। সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটানো হলো শেষ বোমাটি। বিস্ফোরণের শব্দ প্রতিধ্বনিত হলো ঝিলের পানিতে। ততক্ষণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে, অফিসে ফিরে এলাম।
অফিসে এসে শুনি, আইএসপিআর হ্যান্ডআউট দিয়ে বলেছে, বোমাটি বিস্ফোরিত হলে ১০০ মিটার এলাকার সবকিছু উড়ে যেত। স্বরাষ্ট্রসচিব সফিউর রহমান একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন। জনকণ্ঠের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ আবু সাঈদ বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা করলেন। এরপর এ ঘটনার অনেক ফলোআপ হয়েছিল। আবার অন্যান্য গণমাধ্যম থেকে রটানো হলো, কাটতি বাড়াতে এ ঘটনা সাজানো হয়েছে। কী কারণে যেন পুলিশি তদন্তও থেমে গেল। তারপর এত বছরে অনেক জঙ্গি ধরা পড়েছে, বিচারও হয়েছে। শুধু এ ঘটনার কোনো বিচার হলো না। বিষয়টা এখনো খুব অদ্ভুত মনে হয়।

আমাদের আর তর সইছে না। সবাই অধীর অপেক্ষায়—কখন ফাটবে সেই বোমা। ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষার পর নির্দেশ এল। দুই হাতে দুই কান ঢেকে নিচু হয়ে মাটিতে বসে পড়লাম। এরপর ‘ইয়েস রেডি, ইয়েস’ কমান্ড দিতে না দিতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলো বোমাটি। তাকিয়ে দেখলাম, স্প্লিন্টারগুলো শিলাবৃষ্টির মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। বিস্ফোরণের গগনবিদারী শব্দে কেঁপে উঠল পুরো ফায়ার রেঞ্জ। সেই কম্পন মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের কয়েকটি আবাসিক ভবনেও অনুভূত হলো।
এবার বলি, সেই বোমা এল কোত্থেকে। আজ ৮ অক্টোবর শনিবার হলেও ২৩ বছর আগে ১৯৯৯ সালের ৮ অক্টোবর ছিল শুক্রবার। সকালের দিকে বেশ আরামেই ছিলাম। দুপুরের পর প্রধান প্রতিবেদক ফোন দিয়ে বললেন, খুলনার নিরালা আবাসিক এলাকার আহমদিয়া মসজিদে জুমার নামাজে বোমা ফেটেছে। তাতে ৬-৭ জন নিহত, জনা তিরিশেক আহত হয়েছে। ঢাকায় পুলিশের কোনো প্রস্তুতি আছে কি না, খোঁজ নাও। আরাম উবে গেল।
এ ওয়াই বি আই সিদ্দিকী তখন আইজিপি। ফোন দিলাম আইজিপির বাসার টিঅ্যান্ডটি নম্বরে। তিনি নিজেই ফোন ধরে বললেন, ‘আরে মিয়া, মিরপুর ২ নম্বরের জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদেও বোমা পাওয়া গেছে, আগে তার খোঁজ নাও।’ আইজিপির কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু জানতে চাওয়া ঠিক হবে না। ফোন দিলাম মিরপুর থানায়। ডিউটি অফিসার বললেন, শিরনির প্যাকেটে করে কে বা কারা একটি বোমা মসজিদে রেখে গেছে। কপাল ভালো, বোমাটি ফাটেনি। ফোন রেখে ছুটলাম মিরপুরে। ততক্ষণে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দল এসে গেছে। মসজিদের গেটে পেয়ে গেলাম কমিটির সভাপতি আবুল কাশেমকে। তাঁর কাছ থেকে সব খোঁজখবর করে অফিসে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল।
ইস্কাটনে জনকণ্ঠ অফিসে এসে দেখি হুলুস্থুল কাণ্ড। সহকর্মীরা সব নিচে; রাস্তায় দাঁড়িয়ে-বসে। সবার চোখে-মুখে উদ্বেগ। টেলিফোন অপারেটর লিজার স্বামী প্রশাসন বিভাগের কামাল হোসেন দৌড়াদৌড়ি করছেন। এক সহকর্মী বললেন, অফিসে একটি ব্রিফকেস বোমা পাওয়া গেছে। দুপুর ১২টার দিকে এক লোক ব্রিফকেসটি হাতে নিয়ে জনকণ্ঠ ভবনের নিচতলার অভ্যর্থনার সামনে রাখা সোফায় কিছুক্ষণ বসে ছিলেন। এরপর ‘একটু খেয়ে আসছি’ বলে ব্রিফকেসটি দেখার জন্য অভ্যর্থনার ছেলেটিকে অনুরোধ করে বেরিয়ে যান। ৫-৬ ঘণ্টা পরও সেই লোক ফিরে আসেননি। এতে সবার সন্দেহ হয়। কেউ একজন ব্রিফকেসটি হাতে তুলতে গিয়ে বুঝতে পারেন, অনেক ওজন। এতে সন্দেহ আরও জোরালো হয়। সম্পাদকের নির্দেশে ক্রাইম রিপোর্টার শংকর কুমার দে রমনা থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানান। থানা থেকে বলা হয় সবাইকে নিরাপদ দূরত্বে সরে থাকতে। সম্পাদক, উপদেষ্টা সম্পাদকসহ জনকণ্ঠের সব কর্মী ভবন ছেড়ে নিচে নেমে আসেন।
আমি আসার মিনিট দশেক পর দলবল নিয়ে হাজির হন পুলিশ কমিশনার এ কে এম শামসুদ্দিন। পুলিশে তখন বোমা বিস্ফোরক ইউনিট ছিল না। কমিশনার একটু উঁকিঝুঁকি মেরে দেখে নিয়ে আইজিপিকে ফোন দিলেন। আমাদের বলা হলো, সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দল আসছে। আমরা নিচে অপেক্ষা করছি। ঘণ্টা দেড়েক পর মেজর আহসান উল্লাহ ও মেজর জসিমের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক দলের সদস্যরা এলেন। তাঁরা সবাইকে সরিয়ে দিয়ে বোমাটি দেখলেন। কিছুক্ষণ পর বললেন, এটা শক্তিশালী স্থলমাইন। ম্যানুয়াল হলে ১২ ঘণ্টা পরে, আর ডিজিটাল হলে যেকোনো সময় ফাটতে পারে।
এবার তাহলে কী হবে! পত্রিকা বের হবে কী করে! শুরু হলো আলোচনা। কমিশনারসহ সবাই সিদ্ধান্ত নিলেন, বোমাটি অফিসের সামনের রাস্তায় এনে রাখা হবে।
জনকণ্ঠ ভবনের সামনে রাস্তায় বালুর বস্তা এনে বাংকার বানানো হলো। তার মধ্যে রাখা হলো বোমাটি। আপাতত আমরা বাঁচলাম। সবাই অফিসে উঠে গেলাম।
ততক্ষণে ঢাকার সব মিডিয়ায় বোমার খবর চাউর হয়ে গেছে। ইস্কাটনের রাস্তায় বোমা রাখার কারণে বাংলামোটর থেকে মগবাজার সড়ক বন্ধ। বোমা দেখার জন্য দুপাশে হাজারো উৎসুক মানুষ ভিড়। জনকণ্ঠ অফিস লোকে লোকারণ্য। রাজনৈতিক নেতারাও এলেন। অফিসে পা ফেলার জায়গা নেই। শহরে নানা গুজবও ছড়িয়ে পড়েছে। ফোনের পরে ফোন আসছে পিএবিএক্সে। সারা রাত রাস্তায় বোমা রেখে আমরা সবাই অফিসে বসে থাকলাম।
পরদিন শনিবারের সকাল। বাসায় গিয়ে একটু নাশতা করে আবার অফিসে এলাম। সেনাবাহিনী থেকে বোমা বহনের জন্য বিশেষ ধরনের গাড়ি আনা হচ্ছে। সেই গাড়ির জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। দুপুরের দিকে গাড়ি এল আগেপিছে সাইরেন বাজিয়ে। গাড়িটিতে বোমা তুলে নিয়ে যাওয়া হবে মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের ফায়ারিং রেঞ্জে। বায়না ধরলাম, বিস্ফোরণ দেখতে যাব। সেনা কর্মকর্তারা রাজি হলেন। অফিস থেকে একটা গাড়ি নিয়ে বহরের সঙ্গে চললাম।
বোমা বহনকারী গাড়িবহর যখন মিরপুর ক্যান্টনমেন্টে পৌঁছাল, তখন দুপুর গড়িয়ে গেছে। গাড়িবহরের সাইরেনের কারণে এমপি চেকপোস্টগুলো সচল হয়ে গেছে। আগেপিছে সেনাবাহিনীর চারটি গাড়ি, সঙ্গে রমনা থানার পুলিশের গাড়ি। আমরাও যাচ্ছি ফায়ার রেঞ্জ এলাকায়।
মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের পেছনে পুরো ফাঁকা জলাশয়। ডিওএইচএস তখনো হয়নি। ক্যান্টনমেন্টের একেবারে শেষ মাথায় ফায়ারিং রেঞ্জ। রেঞ্জের নিরাপত্তার জন্য কংক্রিটের উঁচু দেয়াল। তার পাশে একটি টিনের ছাউনি। দূরে বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গার দেখা যাচ্ছে। বিলের ধার ঘেঁষে পাকা রাস্তা। বোমা নিয়ে গাড়িবহর সেখানে এসে থামল। খুব সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি থেকে নামানো হলো ভয়ংকর বোমাটি। এরপর নিয়ে যাওয়া হলো বিস্ফোরণ এলাকায়।
চকোলেট রঙের ব্রিফকেসটি মাটিতে রাখার পর সেনা কর্মকর্তারা উপুড় হয়ে শেষবারের মতো ভেতরের বস্তুটি দেখে নিলেন। আর কোনো সংশয় নেই। একটু পর এলেন ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডের কমান্ডার আবু হাশিম খান। তিনি আসার পর ১১ সদস্যের বিস্ফোরক দল ব্রিফকেসটি তুলে নিয়ে গেল জলাধারের কাছে। জল-জংলার পাশে লাউখেত। রাস্তায় কাদা। সিআইডির ফিঙ্গার প্রিন্টের ওসি ফরিদ আহমেদ, মিরপুর ও রমনা থানার পুলিশ, সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার ১০-১২ জন সদস্য নেমে গেলেন সেই পথে।
আমরা অপেক্ষা করছি কখন বোমাটি ফাটবে। একটু পর বলা হলো, মিরপুরে মসজিদ থেকে উদ্ধার করা বোমাটিও একই সঙ্গে ফাটানো হবে। গাড়িবহর আবার ছুটল নতুন বোমার খোঁজে। এক ঘণ্টা পর সেই বোমা এল। সিদ্ধান্ত হলো, আগে মিরপুরের বোমাটি ফাটানো হবে। এ সময় কী প্রস্তুতি নিতে হবে, তা আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হলো। লোক পাঠিয়ে ফায়ার রেঞ্জের পাশের সব ভবনের জানালা খোলার নির্দেশ দেওয়া হলো; যাতে শব্দে জানালার কাচ না ভাঙে।
মিরপুরের বোমাটি খোলা হলো সবার সামনে। ১০ ইঞ্চি লম্বা লালচে বোমাটির মুখে ঘড়ি ও দুটি অলিম্পিক পেনসিল ব্যাটারির সংযোগ। লম্বাটে বোমার গায়ে আতাফলের মতো খাঁচকাটা। সতর্কতার সঙ্গে বোমাটি রাখা হলো বিলের পানির কাছে স্যাঁতসেঁতে মাটিতে। তার সঙ্গে সংযুক্ত হলো দুটি ডেটোনেটর। তারের শেষ মাথায় ব্লাস্টিং মেশিন। তাতে বিদ্যুতের প্রবাহ দিতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলো বোমাটি।
এরপর শুরু হলো জনকণ্ঠে রাখা ব্রিফকেসের বোমা ফাটানোর কাজ। দূর থেকে প্রথমে বিশেষ কায়দায় খোলা হলো ব্রিফকেসের ওপরের ডালাটি। দেখা গেল, ভেতরে কাঠের ওপর বোমাটি বসানো; যাতে নড়াচড়া না হয়। বোমাটি যুক্ত রয়েছে ব্রিফকেসের নম্বর লকের সঙ্গে। সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটানো হলো শেষ বোমাটি। বিস্ফোরণের শব্দ প্রতিধ্বনিত হলো ঝিলের পানিতে। ততক্ষণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে, অফিসে ফিরে এলাম।
অফিসে এসে শুনি, আইএসপিআর হ্যান্ডআউট দিয়ে বলেছে, বোমাটি বিস্ফোরিত হলে ১০০ মিটার এলাকার সবকিছু উড়ে যেত। স্বরাষ্ট্রসচিব সফিউর রহমান একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন। জনকণ্ঠের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ আবু সাঈদ বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা করলেন। এরপর এ ঘটনার অনেক ফলোআপ হয়েছিল। আবার অন্যান্য গণমাধ্যম থেকে রটানো হলো, কাটতি বাড়াতে এ ঘটনা সাজানো হয়েছে। কী কারণে যেন পুলিশি তদন্তও থেমে গেল। তারপর এত বছরে অনেক জঙ্গি ধরা পড়েছে, বিচারও হয়েছে। শুধু এ ঘটনার কোনো বিচার হলো না। বিষয়টা এখনো খুব অদ্ভুত মনে হয়।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

আমাদের আর তর সইছে না। সবাই অধীর অপেক্ষায়—কখন ফাটবে সেই বোমা। ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষার পর নির্দেশ এল। দুই হাতে দুই কান ঢেকে নিচু হয়ে মাটিতে বসে পড়লাম।
০৮ অক্টোবর ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

আমাদের আর তর সইছে না। সবাই অধীর অপেক্ষায়—কখন ফাটবে সেই বোমা। ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষার পর নির্দেশ এল। দুই হাতে দুই কান ঢেকে নিচু হয়ে মাটিতে বসে পড়লাম।
০৮ অক্টোবর ২০২২
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

আমাদের আর তর সইছে না। সবাই অধীর অপেক্ষায়—কখন ফাটবে সেই বোমা। ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষার পর নির্দেশ এল। দুই হাতে দুই কান ঢেকে নিচু হয়ে মাটিতে বসে পড়লাম।
০৮ অক্টোবর ২০২২
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

আমাদের আর তর সইছে না। সবাই অধীর অপেক্ষায়—কখন ফাটবে সেই বোমা। ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষার পর নির্দেশ এল। দুই হাতে দুই কান ঢেকে নিচু হয়ে মাটিতে বসে পড়লাম।
০৮ অক্টোবর ২০২২
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে