কামরুল হাসান

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে। লোকটা কে? যে কর্মকর্তার কক্ষে বসে ছিলাম, তাঁকে প্রশ্ন করতেই একটু থতমত খেয়ে তিনি বললেন, ‘নাম জানি না ভাই। শুনেছি, সে নাকি বুকি (ক্রিকেট জুয়াড়ি)।’
এতটুকু শুনেই মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেল। জীবনে বহু চোর, ডাকাত, অস্ত্রবাজ, ছিনতাইকারী দেখেছি। শীর্ষ সন্ত্রাসীর সামনে বসে কথা বলেছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়াল কিলারের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। কিন্তু ক্রিকেট জুয়াড়ি! ভাবতেই আরাম লাগছে। কথায় কথায় আবদার করলাম, সেই জুয়াড়িকে দেখতে চাই। কর্মকর্তা আমার আবদার এড়াতে পারেন না। শুধু বললেন, ‘এটা তো ভাই এডিজি স্যার দেখছেন।’
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) তখন জিয়াউল আহসান। গেলাম তাঁর কক্ষে। তিনি আমার আবদার শুনে একটু মুচকি হেসে বললেন, ‘আচ্ছা, বসেন।’ মিনিট ত্রিশেক পর আমার সামনে আনা হলো টেকো মাথার মাঝারি উচ্চতার সেই ব্যক্তিকে। আমি নাম-ঠিকানা জানতে চাইলাম। বললেন, নাম অতনু দত্ত। পিতার নাম মণীন্দ্র দত্ত। কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকার ৯৯ নম্বর সড়কের ড্রিমটপ রেসিডেন্সিতে থাকেন। এরপর যত প্রশ্ন করি, একটারও কোনো জবাব দেন না; বিশেষ করে আমার মাথায় ঘুরছিল, জুয়াটা কী করে হয়, সেটা জানা। কিন্তু তিনি সে সম্পর্কে কিছুই বললেন না। তবে অতনু দত্ত না বললেও আমি হাল ছাড়িনি। কয়েক দিনের মধ্যে আমার কাছে সব পরিষ্কার হয়ে এল।
তার আগে বলি, ক্রিকেট খেলা যাঁরা দেখেন, তাঁরা সবাই আইসিসির (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) পাশাপাশি আরও একটি নামের সঙ্গে বেশ পরিচিত, তা হলো ‘আকসু’। আইসিসির অঙ্গসংগঠন ‘অ্যান্টি করাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট’ বা আকসুকে ক্রিকেটাররা ডরান যমের মতো। এর কারণও আছে। জুয়া ঠেকিয়ে ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে আকসু সব সময় থাকে পুলিশের ভূমিকায়। সেই আকসু আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ঢাকার ক্রিকেটে জুয়া হবে বলে।
আমি যে ঘটনা বলছি, সেটা ২০১৪ সালের। এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা নিয়ে বেটিং (বাজি) করার অপরাধে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের লুধিয়ানা শহরের একটি বাড়ি থেকে ৩৬টি মোবাইল ফোনসহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। যুবকেরাই প্রথম ফাঁস করেছিলেন নতুন ধরনের ক্রিকেট জুয়ার ছক। এরপর পাঞ্জাব পুলিশ সেই ছকের কথা জানিয়েছিল আকসুকে। প্রথম দফায় এই গল্প শুনে আমার কাছেও খুব অদ্ভুত মনে হয়েছিল বিষয়টা।
এবার সেই পদ্ধতিটা বলি, ক্রিকেট নিয়ে কোটি কোটি টাকার জুয়ার গল্প নতুন কিছু নয়। সেই জুয়াড়িদের কেউই কিন্তু মাঠে যান না। তাঁরা থাকেন মাঠের বাইরে দিল্লি, ঢাকা বা দুবাইয়ের মতো শহরে। কিন্তু তাঁদের লোক থাকে খেলার মাঠে। সেই লোকদের কানে লাগানো থাকে মোবাইল ফোন। মাঠের খেলার সব তথ্য তাঁরা হালনাগাদ টেলিফোনে জানিয়ে দেন ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা লোকটিকে। জুয়াড়িরা যেহেতু টেলিভিশন বা ইন্টারনেটে খেলা দেখে বাজি ধরেন, কাজেই তাঁরা বাড়তি কিছু সময় হাতে পান। এই সময়টা কাজে লাগিয়েই জুয়া জেতেন। বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করি। ধরুন, মিরপুর মাঠে কোনো খেলোয়াড় আউট হলো, সেটা টেলিভিশনের পর্দায় আসতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে, কিন্তু টেলিফোনে সেটা সঙ্গে সঙ্গে বলা যায়। এটাই হলো জুয়ার সময়ের পার্থক্য।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০১৪ সালের ২১ মার্চ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিল ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচের সময় গোয়েন্দারা লক্ষ করলেন, মাঠে বসে কিছু লোক সার্বক্ষণিক টেলিফোনে কথা বলছিলেন। খেলার পুরো সময় তাঁদের ফোনের সংযোগ সচল। এ রকম কয়েকজনকে সন্দেহ করার সময় তাঁরাও বিষয়টি টের পান। এরপর দ্রুত সটকে পড়েন। কিন্তু সেই দলের অতনু দত্ত আর সরতে পারেননি। র্যাবের গোয়েন্দারা মাঠ থেকেই তাঁকে পাকড়াও করেন। ওই সময় আকসুর প্রধান ছিলেন যোগীন্দ্র পল সিং। তিনিও উপস্থিত ছিলেন মিরপুরের মাঠে। অতনুকে আটক করতে দেখে আকসুর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক ধরমবীর সিং যাদব এগিয়ে যান। তিনি র্যাবের গোয়েন্দাকে বলেন, অতনু হলো তাঁর গোপন তথ্যদাতা (সোর্স)। এরপর র্যাব তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ছেড়ে দিলেও র্যাব অতনুর ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করে।
দেখা যায়, অতনু ব্যবসায়ী ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর নিজেকে ‘ক্রিকেট ফ্যান’ পরিচয় দিয়ে মিরপুরে গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলে ওঠেন। অতনুর ফোন নম্বর অনুসরণ করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সময় তিনি যখন ফোনে কথা বলছিলেন, তখন ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন কলকাতার জুয়াড়ি কুনাল দাগা। পরে হোটেল থেকে অতনুর পাসপোর্টের কপি নিয়ে তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অতনু বিষয়টি বুঝতে পেরে পালানোর পথ খুঁজতে থাকেন।
গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলের ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান আমাকে বলেছিলেন, গোয়েন্দারা পিছু নিয়েছেন দেখে ১ এপ্রিল চট্টগ্রামে খেলা দেখতে যাওয়ার কথা বলে হোটেল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অতনু। তিনি সব মালপত্র হোটেলে ফেলে যান, যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা বললেন, পালানোর আগের দিন ধরমবীর সিং যাদবের সঙ্গে টেলিফোনে অতনুর কথা হয়েছিল। যাদব তাঁকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে ফলো করা হচ্ছে। একবার বাঁচাতে পারলেও দ্বিতীয়বার বাঁচানো যাবে না। তুমি দ্রুত বাংলাদেশ ছেড়ে যাও।’ এরপর ৩ এপ্রিল (২০১৪) রাতে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত অতিক্রম করার সময় ইমিগ্রেশনের ওসি মনিরুজ্জামান তাঁকে আটক করেন।
কয়েক দিন পর মিরপুর থানার অপারেশন কর্মকর্তা আফজাল হোসেন আমাকে বললেন, অতনুর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় মামলা হয়। সেই মামলায় অতনুকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় আদালতে। এরপর মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান তাঁকে জামিন দেন। জামিন পেয়ে গা ঢাকা দেন অতনু। আজও তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি।
মনে আছে, বেশ কয়েকজন আইনজীবী অতনু দত্তের মামলা পরিচালনা করেছিলেন। তাঁদের একজন এমদাদ হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ঢাকার নামকরা এক ক্রীড়া সংগঠক অতনুর জামিনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ওই ক্রীড়া সংগঠকের নাম তিনি বলতে চাননি।
রিপোর্টার হিসেবে এ বিষয়ে আরও জানতে আকসুর প্রধান যোগীন্দ্র পল সিং (ওয়াই পি সিং) ও ধরমবীর সিং যাদবকে আকসুর ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে ফোন করেছিলাম। দুজনই আমার ফোন সিরিভ করেছিলেন। ফোনে সব কথা শুনে বলেছিলেন, ‘না, না, আমি সে লোক নই। রং নম্বর।’ পরে আইসিসি ও আকসুকে এ বিষয়ে বক্তব্য চেয়ে ই-মেইল করেছিলাম, কিন্তু তারা কোনো জবাব দেয়নি। দুদিন পর আকসুর আরেক আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন সিং বার্ক আমাকে ফোন করেন। তিনি তখনকার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তাঁর কথা অনুযায়ী যোগাযোগও করেছিলাম।
বেশ কয়েক মাস পর র্যাব ওই ঘটনার তদন্ত গুছিয়ে এনেছিল। একদিন র্যাবের তখনকার এডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসান আমাকে বললেন, জুয়াড়ি অতনু দত্তের সঙ্গে আকসুর সেই কর্মকর্তা ধরমবীর সিং যাদবের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাঁরা একসঙ্গে এই কাজ করেন। এ ঘটনার কয়েক বছর পর বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে তিন ভারতীয় জুয়াড়িকে এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা) আটক করে তুলে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। এরপর শুনলাম, দীপ আগারওয়াল নামের এক জুয়াড়ি বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকেও ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আইসিসির এক কর্মকর্তা একবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ৫০টি ম্যাচ পাতানোর ঘটনা তাঁরা তদন্ত করছেন, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল ভারত-সংশ্লিষ্ট। সবার কথায় আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে এল, ক্রিকেট ম্যাচ গড়াপেটা বা পাতানো খেলার যে অভিযোগ আমরা হরহামেশা শুনি, তার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আকসু এবং ক্রীড়া সংস্থাগুলোর লোকজনও জড়িত। ‘বেড়ায় ক্ষেত খায়’ বা ‘শর্ষের ভেতরে ভূত’ থাকার যে গল্প আছে, এ ক্ষেত্রে তা শতভাগ সত্যি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে। লোকটা কে? যে কর্মকর্তার কক্ষে বসে ছিলাম, তাঁকে প্রশ্ন করতেই একটু থতমত খেয়ে তিনি বললেন, ‘নাম জানি না ভাই। শুনেছি, সে নাকি বুকি (ক্রিকেট জুয়াড়ি)।’
এতটুকু শুনেই মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেল। জীবনে বহু চোর, ডাকাত, অস্ত্রবাজ, ছিনতাইকারী দেখেছি। শীর্ষ সন্ত্রাসীর সামনে বসে কথা বলেছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়াল কিলারের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। কিন্তু ক্রিকেট জুয়াড়ি! ভাবতেই আরাম লাগছে। কথায় কথায় আবদার করলাম, সেই জুয়াড়িকে দেখতে চাই। কর্মকর্তা আমার আবদার এড়াতে পারেন না। শুধু বললেন, ‘এটা তো ভাই এডিজি স্যার দেখছেন।’
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) তখন জিয়াউল আহসান। গেলাম তাঁর কক্ষে। তিনি আমার আবদার শুনে একটু মুচকি হেসে বললেন, ‘আচ্ছা, বসেন।’ মিনিট ত্রিশেক পর আমার সামনে আনা হলো টেকো মাথার মাঝারি উচ্চতার সেই ব্যক্তিকে। আমি নাম-ঠিকানা জানতে চাইলাম। বললেন, নাম অতনু দত্ত। পিতার নাম মণীন্দ্র দত্ত। কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকার ৯৯ নম্বর সড়কের ড্রিমটপ রেসিডেন্সিতে থাকেন। এরপর যত প্রশ্ন করি, একটারও কোনো জবাব দেন না; বিশেষ করে আমার মাথায় ঘুরছিল, জুয়াটা কী করে হয়, সেটা জানা। কিন্তু তিনি সে সম্পর্কে কিছুই বললেন না। তবে অতনু দত্ত না বললেও আমি হাল ছাড়িনি। কয়েক দিনের মধ্যে আমার কাছে সব পরিষ্কার হয়ে এল।
তার আগে বলি, ক্রিকেট খেলা যাঁরা দেখেন, তাঁরা সবাই আইসিসির (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) পাশাপাশি আরও একটি নামের সঙ্গে বেশ পরিচিত, তা হলো ‘আকসু’। আইসিসির অঙ্গসংগঠন ‘অ্যান্টি করাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট’ বা আকসুকে ক্রিকেটাররা ডরান যমের মতো। এর কারণও আছে। জুয়া ঠেকিয়ে ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে আকসু সব সময় থাকে পুলিশের ভূমিকায়। সেই আকসু আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ঢাকার ক্রিকেটে জুয়া হবে বলে।
আমি যে ঘটনা বলছি, সেটা ২০১৪ সালের। এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা নিয়ে বেটিং (বাজি) করার অপরাধে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের লুধিয়ানা শহরের একটি বাড়ি থেকে ৩৬টি মোবাইল ফোনসহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। যুবকেরাই প্রথম ফাঁস করেছিলেন নতুন ধরনের ক্রিকেট জুয়ার ছক। এরপর পাঞ্জাব পুলিশ সেই ছকের কথা জানিয়েছিল আকসুকে। প্রথম দফায় এই গল্প শুনে আমার কাছেও খুব অদ্ভুত মনে হয়েছিল বিষয়টা।
এবার সেই পদ্ধতিটা বলি, ক্রিকেট নিয়ে কোটি কোটি টাকার জুয়ার গল্প নতুন কিছু নয়। সেই জুয়াড়িদের কেউই কিন্তু মাঠে যান না। তাঁরা থাকেন মাঠের বাইরে দিল্লি, ঢাকা বা দুবাইয়ের মতো শহরে। কিন্তু তাঁদের লোক থাকে খেলার মাঠে। সেই লোকদের কানে লাগানো থাকে মোবাইল ফোন। মাঠের খেলার সব তথ্য তাঁরা হালনাগাদ টেলিফোনে জানিয়ে দেন ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা লোকটিকে। জুয়াড়িরা যেহেতু টেলিভিশন বা ইন্টারনেটে খেলা দেখে বাজি ধরেন, কাজেই তাঁরা বাড়তি কিছু সময় হাতে পান। এই সময়টা কাজে লাগিয়েই জুয়া জেতেন। বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করি। ধরুন, মিরপুর মাঠে কোনো খেলোয়াড় আউট হলো, সেটা টেলিভিশনের পর্দায় আসতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে, কিন্তু টেলিফোনে সেটা সঙ্গে সঙ্গে বলা যায়। এটাই হলো জুয়ার সময়ের পার্থক্য।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০১৪ সালের ২১ মার্চ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিল ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচের সময় গোয়েন্দারা লক্ষ করলেন, মাঠে বসে কিছু লোক সার্বক্ষণিক টেলিফোনে কথা বলছিলেন। খেলার পুরো সময় তাঁদের ফোনের সংযোগ সচল। এ রকম কয়েকজনকে সন্দেহ করার সময় তাঁরাও বিষয়টি টের পান। এরপর দ্রুত সটকে পড়েন। কিন্তু সেই দলের অতনু দত্ত আর সরতে পারেননি। র্যাবের গোয়েন্দারা মাঠ থেকেই তাঁকে পাকড়াও করেন। ওই সময় আকসুর প্রধান ছিলেন যোগীন্দ্র পল সিং। তিনিও উপস্থিত ছিলেন মিরপুরের মাঠে। অতনুকে আটক করতে দেখে আকসুর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক ধরমবীর সিং যাদব এগিয়ে যান। তিনি র্যাবের গোয়েন্দাকে বলেন, অতনু হলো তাঁর গোপন তথ্যদাতা (সোর্স)। এরপর র্যাব তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ছেড়ে দিলেও র্যাব অতনুর ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করে।
দেখা যায়, অতনু ব্যবসায়ী ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর নিজেকে ‘ক্রিকেট ফ্যান’ পরিচয় দিয়ে মিরপুরে গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলে ওঠেন। অতনুর ফোন নম্বর অনুসরণ করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সময় তিনি যখন ফোনে কথা বলছিলেন, তখন ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন কলকাতার জুয়াড়ি কুনাল দাগা। পরে হোটেল থেকে অতনুর পাসপোর্টের কপি নিয়ে তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অতনু বিষয়টি বুঝতে পেরে পালানোর পথ খুঁজতে থাকেন।
গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলের ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান আমাকে বলেছিলেন, গোয়েন্দারা পিছু নিয়েছেন দেখে ১ এপ্রিল চট্টগ্রামে খেলা দেখতে যাওয়ার কথা বলে হোটেল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অতনু। তিনি সব মালপত্র হোটেলে ফেলে যান, যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা বললেন, পালানোর আগের দিন ধরমবীর সিং যাদবের সঙ্গে টেলিফোনে অতনুর কথা হয়েছিল। যাদব তাঁকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে ফলো করা হচ্ছে। একবার বাঁচাতে পারলেও দ্বিতীয়বার বাঁচানো যাবে না। তুমি দ্রুত বাংলাদেশ ছেড়ে যাও।’ এরপর ৩ এপ্রিল (২০১৪) রাতে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত অতিক্রম করার সময় ইমিগ্রেশনের ওসি মনিরুজ্জামান তাঁকে আটক করেন।
কয়েক দিন পর মিরপুর থানার অপারেশন কর্মকর্তা আফজাল হোসেন আমাকে বললেন, অতনুর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় মামলা হয়। সেই মামলায় অতনুকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় আদালতে। এরপর মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান তাঁকে জামিন দেন। জামিন পেয়ে গা ঢাকা দেন অতনু। আজও তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি।
মনে আছে, বেশ কয়েকজন আইনজীবী অতনু দত্তের মামলা পরিচালনা করেছিলেন। তাঁদের একজন এমদাদ হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ঢাকার নামকরা এক ক্রীড়া সংগঠক অতনুর জামিনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ওই ক্রীড়া সংগঠকের নাম তিনি বলতে চাননি।
রিপোর্টার হিসেবে এ বিষয়ে আরও জানতে আকসুর প্রধান যোগীন্দ্র পল সিং (ওয়াই পি সিং) ও ধরমবীর সিং যাদবকে আকসুর ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে ফোন করেছিলাম। দুজনই আমার ফোন সিরিভ করেছিলেন। ফোনে সব কথা শুনে বলেছিলেন, ‘না, না, আমি সে লোক নই। রং নম্বর।’ পরে আইসিসি ও আকসুকে এ বিষয়ে বক্তব্য চেয়ে ই-মেইল করেছিলাম, কিন্তু তারা কোনো জবাব দেয়নি। দুদিন পর আকসুর আরেক আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন সিং বার্ক আমাকে ফোন করেন। তিনি তখনকার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তাঁর কথা অনুযায়ী যোগাযোগও করেছিলাম।
বেশ কয়েক মাস পর র্যাব ওই ঘটনার তদন্ত গুছিয়ে এনেছিল। একদিন র্যাবের তখনকার এডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসান আমাকে বললেন, জুয়াড়ি অতনু দত্তের সঙ্গে আকসুর সেই কর্মকর্তা ধরমবীর সিং যাদবের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাঁরা একসঙ্গে এই কাজ করেন। এ ঘটনার কয়েক বছর পর বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে তিন ভারতীয় জুয়াড়িকে এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা) আটক করে তুলে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। এরপর শুনলাম, দীপ আগারওয়াল নামের এক জুয়াড়ি বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকেও ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আইসিসির এক কর্মকর্তা একবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ৫০টি ম্যাচ পাতানোর ঘটনা তাঁরা তদন্ত করছেন, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল ভারত-সংশ্লিষ্ট। সবার কথায় আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে এল, ক্রিকেট ম্যাচ গড়াপেটা বা পাতানো খেলার যে অভিযোগ আমরা হরহামেশা শুনি, তার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আকসু এবং ক্রীড়া সংস্থাগুলোর লোকজনও জড়িত। ‘বেড়ায় ক্ষেত খায়’ বা ‘শর্ষের ভেতরে ভূত’ থাকার যে গল্প আছে, এ ক্ষেত্রে তা শতভাগ সত্যি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে। লোকটা কে? যে কর্মকর্তার কক্ষে বসে ছিলাম, তাঁকে প্রশ্ন করতেই একটু থতমত খেয়ে তিনি বললেন, ‘নাম জানি না ভাই। শুনেছি, সে নাকি বুকি (ক্রিকেট জুয়াড়ি)।’
এতটুকু শুনেই মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেল। জীবনে বহু চোর, ডাকাত, অস্ত্রবাজ, ছিনতাইকারী দেখেছি। শীর্ষ সন্ত্রাসীর সামনে বসে কথা বলেছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়াল কিলারের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। কিন্তু ক্রিকেট জুয়াড়ি! ভাবতেই আরাম লাগছে। কথায় কথায় আবদার করলাম, সেই জুয়াড়িকে দেখতে চাই। কর্মকর্তা আমার আবদার এড়াতে পারেন না। শুধু বললেন, ‘এটা তো ভাই এডিজি স্যার দেখছেন।’
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) তখন জিয়াউল আহসান। গেলাম তাঁর কক্ষে। তিনি আমার আবদার শুনে একটু মুচকি হেসে বললেন, ‘আচ্ছা, বসেন।’ মিনিট ত্রিশেক পর আমার সামনে আনা হলো টেকো মাথার মাঝারি উচ্চতার সেই ব্যক্তিকে। আমি নাম-ঠিকানা জানতে চাইলাম। বললেন, নাম অতনু দত্ত। পিতার নাম মণীন্দ্র দত্ত। কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকার ৯৯ নম্বর সড়কের ড্রিমটপ রেসিডেন্সিতে থাকেন। এরপর যত প্রশ্ন করি, একটারও কোনো জবাব দেন না; বিশেষ করে আমার মাথায় ঘুরছিল, জুয়াটা কী করে হয়, সেটা জানা। কিন্তু তিনি সে সম্পর্কে কিছুই বললেন না। তবে অতনু দত্ত না বললেও আমি হাল ছাড়িনি। কয়েক দিনের মধ্যে আমার কাছে সব পরিষ্কার হয়ে এল।
তার আগে বলি, ক্রিকেট খেলা যাঁরা দেখেন, তাঁরা সবাই আইসিসির (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) পাশাপাশি আরও একটি নামের সঙ্গে বেশ পরিচিত, তা হলো ‘আকসু’। আইসিসির অঙ্গসংগঠন ‘অ্যান্টি করাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট’ বা আকসুকে ক্রিকেটাররা ডরান যমের মতো। এর কারণও আছে। জুয়া ঠেকিয়ে ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে আকসু সব সময় থাকে পুলিশের ভূমিকায়। সেই আকসু আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ঢাকার ক্রিকেটে জুয়া হবে বলে।
আমি যে ঘটনা বলছি, সেটা ২০১৪ সালের। এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা নিয়ে বেটিং (বাজি) করার অপরাধে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের লুধিয়ানা শহরের একটি বাড়ি থেকে ৩৬টি মোবাইল ফোনসহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। যুবকেরাই প্রথম ফাঁস করেছিলেন নতুন ধরনের ক্রিকেট জুয়ার ছক। এরপর পাঞ্জাব পুলিশ সেই ছকের কথা জানিয়েছিল আকসুকে। প্রথম দফায় এই গল্প শুনে আমার কাছেও খুব অদ্ভুত মনে হয়েছিল বিষয়টা।
এবার সেই পদ্ধতিটা বলি, ক্রিকেট নিয়ে কোটি কোটি টাকার জুয়ার গল্প নতুন কিছু নয়। সেই জুয়াড়িদের কেউই কিন্তু মাঠে যান না। তাঁরা থাকেন মাঠের বাইরে দিল্লি, ঢাকা বা দুবাইয়ের মতো শহরে। কিন্তু তাঁদের লোক থাকে খেলার মাঠে। সেই লোকদের কানে লাগানো থাকে মোবাইল ফোন। মাঠের খেলার সব তথ্য তাঁরা হালনাগাদ টেলিফোনে জানিয়ে দেন ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা লোকটিকে। জুয়াড়িরা যেহেতু টেলিভিশন বা ইন্টারনেটে খেলা দেখে বাজি ধরেন, কাজেই তাঁরা বাড়তি কিছু সময় হাতে পান। এই সময়টা কাজে লাগিয়েই জুয়া জেতেন। বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করি। ধরুন, মিরপুর মাঠে কোনো খেলোয়াড় আউট হলো, সেটা টেলিভিশনের পর্দায় আসতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে, কিন্তু টেলিফোনে সেটা সঙ্গে সঙ্গে বলা যায়। এটাই হলো জুয়ার সময়ের পার্থক্য।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০১৪ সালের ২১ মার্চ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিল ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচের সময় গোয়েন্দারা লক্ষ করলেন, মাঠে বসে কিছু লোক সার্বক্ষণিক টেলিফোনে কথা বলছিলেন। খেলার পুরো সময় তাঁদের ফোনের সংযোগ সচল। এ রকম কয়েকজনকে সন্দেহ করার সময় তাঁরাও বিষয়টি টের পান। এরপর দ্রুত সটকে পড়েন। কিন্তু সেই দলের অতনু দত্ত আর সরতে পারেননি। র্যাবের গোয়েন্দারা মাঠ থেকেই তাঁকে পাকড়াও করেন। ওই সময় আকসুর প্রধান ছিলেন যোগীন্দ্র পল সিং। তিনিও উপস্থিত ছিলেন মিরপুরের মাঠে। অতনুকে আটক করতে দেখে আকসুর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক ধরমবীর সিং যাদব এগিয়ে যান। তিনি র্যাবের গোয়েন্দাকে বলেন, অতনু হলো তাঁর গোপন তথ্যদাতা (সোর্স)। এরপর র্যাব তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ছেড়ে দিলেও র্যাব অতনুর ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করে।
দেখা যায়, অতনু ব্যবসায়ী ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর নিজেকে ‘ক্রিকেট ফ্যান’ পরিচয় দিয়ে মিরপুরে গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলে ওঠেন। অতনুর ফোন নম্বর অনুসরণ করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সময় তিনি যখন ফোনে কথা বলছিলেন, তখন ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন কলকাতার জুয়াড়ি কুনাল দাগা। পরে হোটেল থেকে অতনুর পাসপোর্টের কপি নিয়ে তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অতনু বিষয়টি বুঝতে পেরে পালানোর পথ খুঁজতে থাকেন।
গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলের ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান আমাকে বলেছিলেন, গোয়েন্দারা পিছু নিয়েছেন দেখে ১ এপ্রিল চট্টগ্রামে খেলা দেখতে যাওয়ার কথা বলে হোটেল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অতনু। তিনি সব মালপত্র হোটেলে ফেলে যান, যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা বললেন, পালানোর আগের দিন ধরমবীর সিং যাদবের সঙ্গে টেলিফোনে অতনুর কথা হয়েছিল। যাদব তাঁকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে ফলো করা হচ্ছে। একবার বাঁচাতে পারলেও দ্বিতীয়বার বাঁচানো যাবে না। তুমি দ্রুত বাংলাদেশ ছেড়ে যাও।’ এরপর ৩ এপ্রিল (২০১৪) রাতে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত অতিক্রম করার সময় ইমিগ্রেশনের ওসি মনিরুজ্জামান তাঁকে আটক করেন।
কয়েক দিন পর মিরপুর থানার অপারেশন কর্মকর্তা আফজাল হোসেন আমাকে বললেন, অতনুর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় মামলা হয়। সেই মামলায় অতনুকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় আদালতে। এরপর মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান তাঁকে জামিন দেন। জামিন পেয়ে গা ঢাকা দেন অতনু। আজও তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি।
মনে আছে, বেশ কয়েকজন আইনজীবী অতনু দত্তের মামলা পরিচালনা করেছিলেন। তাঁদের একজন এমদাদ হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ঢাকার নামকরা এক ক্রীড়া সংগঠক অতনুর জামিনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ওই ক্রীড়া সংগঠকের নাম তিনি বলতে চাননি।
রিপোর্টার হিসেবে এ বিষয়ে আরও জানতে আকসুর প্রধান যোগীন্দ্র পল সিং (ওয়াই পি সিং) ও ধরমবীর সিং যাদবকে আকসুর ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে ফোন করেছিলাম। দুজনই আমার ফোন সিরিভ করেছিলেন। ফোনে সব কথা শুনে বলেছিলেন, ‘না, না, আমি সে লোক নই। রং নম্বর।’ পরে আইসিসি ও আকসুকে এ বিষয়ে বক্তব্য চেয়ে ই-মেইল করেছিলাম, কিন্তু তারা কোনো জবাব দেয়নি। দুদিন পর আকসুর আরেক আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন সিং বার্ক আমাকে ফোন করেন। তিনি তখনকার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তাঁর কথা অনুযায়ী যোগাযোগও করেছিলাম।
বেশ কয়েক মাস পর র্যাব ওই ঘটনার তদন্ত গুছিয়ে এনেছিল। একদিন র্যাবের তখনকার এডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসান আমাকে বললেন, জুয়াড়ি অতনু দত্তের সঙ্গে আকসুর সেই কর্মকর্তা ধরমবীর সিং যাদবের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাঁরা একসঙ্গে এই কাজ করেন। এ ঘটনার কয়েক বছর পর বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে তিন ভারতীয় জুয়াড়িকে এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা) আটক করে তুলে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। এরপর শুনলাম, দীপ আগারওয়াল নামের এক জুয়াড়ি বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকেও ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আইসিসির এক কর্মকর্তা একবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ৫০টি ম্যাচ পাতানোর ঘটনা তাঁরা তদন্ত করছেন, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল ভারত-সংশ্লিষ্ট। সবার কথায় আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে এল, ক্রিকেট ম্যাচ গড়াপেটা বা পাতানো খেলার যে অভিযোগ আমরা হরহামেশা শুনি, তার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আকসু এবং ক্রীড়া সংস্থাগুলোর লোকজনও জড়িত। ‘বেড়ায় ক্ষেত খায়’ বা ‘শর্ষের ভেতরে ভূত’ থাকার যে গল্প আছে, এ ক্ষেত্রে তা শতভাগ সত্যি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে। লোকটা কে? যে কর্মকর্তার কক্ষে বসে ছিলাম, তাঁকে প্রশ্ন করতেই একটু থতমত খেয়ে তিনি বললেন, ‘নাম জানি না ভাই। শুনেছি, সে নাকি বুকি (ক্রিকেট জুয়াড়ি)।’
এতটুকু শুনেই মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেল। জীবনে বহু চোর, ডাকাত, অস্ত্রবাজ, ছিনতাইকারী দেখেছি। শীর্ষ সন্ত্রাসীর সামনে বসে কথা বলেছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়াল কিলারের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। কিন্তু ক্রিকেট জুয়াড়ি! ভাবতেই আরাম লাগছে। কথায় কথায় আবদার করলাম, সেই জুয়াড়িকে দেখতে চাই। কর্মকর্তা আমার আবদার এড়াতে পারেন না। শুধু বললেন, ‘এটা তো ভাই এডিজি স্যার দেখছেন।’
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) তখন জিয়াউল আহসান। গেলাম তাঁর কক্ষে। তিনি আমার আবদার শুনে একটু মুচকি হেসে বললেন, ‘আচ্ছা, বসেন।’ মিনিট ত্রিশেক পর আমার সামনে আনা হলো টেকো মাথার মাঝারি উচ্চতার সেই ব্যক্তিকে। আমি নাম-ঠিকানা জানতে চাইলাম। বললেন, নাম অতনু দত্ত। পিতার নাম মণীন্দ্র দত্ত। কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকার ৯৯ নম্বর সড়কের ড্রিমটপ রেসিডেন্সিতে থাকেন। এরপর যত প্রশ্ন করি, একটারও কোনো জবাব দেন না; বিশেষ করে আমার মাথায় ঘুরছিল, জুয়াটা কী করে হয়, সেটা জানা। কিন্তু তিনি সে সম্পর্কে কিছুই বললেন না। তবে অতনু দত্ত না বললেও আমি হাল ছাড়িনি। কয়েক দিনের মধ্যে আমার কাছে সব পরিষ্কার হয়ে এল।
তার আগে বলি, ক্রিকেট খেলা যাঁরা দেখেন, তাঁরা সবাই আইসিসির (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) পাশাপাশি আরও একটি নামের সঙ্গে বেশ পরিচিত, তা হলো ‘আকসু’। আইসিসির অঙ্গসংগঠন ‘অ্যান্টি করাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট’ বা আকসুকে ক্রিকেটাররা ডরান যমের মতো। এর কারণও আছে। জুয়া ঠেকিয়ে ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে আকসু সব সময় থাকে পুলিশের ভূমিকায়। সেই আকসু আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ঢাকার ক্রিকেটে জুয়া হবে বলে।
আমি যে ঘটনা বলছি, সেটা ২০১৪ সালের। এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা নিয়ে বেটিং (বাজি) করার অপরাধে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের লুধিয়ানা শহরের একটি বাড়ি থেকে ৩৬টি মোবাইল ফোনসহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। যুবকেরাই প্রথম ফাঁস করেছিলেন নতুন ধরনের ক্রিকেট জুয়ার ছক। এরপর পাঞ্জাব পুলিশ সেই ছকের কথা জানিয়েছিল আকসুকে। প্রথম দফায় এই গল্প শুনে আমার কাছেও খুব অদ্ভুত মনে হয়েছিল বিষয়টা।
এবার সেই পদ্ধতিটা বলি, ক্রিকেট নিয়ে কোটি কোটি টাকার জুয়ার গল্প নতুন কিছু নয়। সেই জুয়াড়িদের কেউই কিন্তু মাঠে যান না। তাঁরা থাকেন মাঠের বাইরে দিল্লি, ঢাকা বা দুবাইয়ের মতো শহরে। কিন্তু তাঁদের লোক থাকে খেলার মাঠে। সেই লোকদের কানে লাগানো থাকে মোবাইল ফোন। মাঠের খেলার সব তথ্য তাঁরা হালনাগাদ টেলিফোনে জানিয়ে দেন ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা লোকটিকে। জুয়াড়িরা যেহেতু টেলিভিশন বা ইন্টারনেটে খেলা দেখে বাজি ধরেন, কাজেই তাঁরা বাড়তি কিছু সময় হাতে পান। এই সময়টা কাজে লাগিয়েই জুয়া জেতেন। বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করি। ধরুন, মিরপুর মাঠে কোনো খেলোয়াড় আউট হলো, সেটা টেলিভিশনের পর্দায় আসতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে, কিন্তু টেলিফোনে সেটা সঙ্গে সঙ্গে বলা যায়। এটাই হলো জুয়ার সময়ের পার্থক্য।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০১৪ সালের ২১ মার্চ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিল ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচের সময় গোয়েন্দারা লক্ষ করলেন, মাঠে বসে কিছু লোক সার্বক্ষণিক টেলিফোনে কথা বলছিলেন। খেলার পুরো সময় তাঁদের ফোনের সংযোগ সচল। এ রকম কয়েকজনকে সন্দেহ করার সময় তাঁরাও বিষয়টি টের পান। এরপর দ্রুত সটকে পড়েন। কিন্তু সেই দলের অতনু দত্ত আর সরতে পারেননি। র্যাবের গোয়েন্দারা মাঠ থেকেই তাঁকে পাকড়াও করেন। ওই সময় আকসুর প্রধান ছিলেন যোগীন্দ্র পল সিং। তিনিও উপস্থিত ছিলেন মিরপুরের মাঠে। অতনুকে আটক করতে দেখে আকসুর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক ধরমবীর সিং যাদব এগিয়ে যান। তিনি র্যাবের গোয়েন্দাকে বলেন, অতনু হলো তাঁর গোপন তথ্যদাতা (সোর্স)। এরপর র্যাব তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ছেড়ে দিলেও র্যাব অতনুর ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করে।
দেখা যায়, অতনু ব্যবসায়ী ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর নিজেকে ‘ক্রিকেট ফ্যান’ পরিচয় দিয়ে মিরপুরে গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলে ওঠেন। অতনুর ফোন নম্বর অনুসরণ করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সময় তিনি যখন ফোনে কথা বলছিলেন, তখন ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন কলকাতার জুয়াড়ি কুনাল দাগা। পরে হোটেল থেকে অতনুর পাসপোর্টের কপি নিয়ে তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অতনু বিষয়টি বুঝতে পেরে পালানোর পথ খুঁজতে থাকেন।
গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলের ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান আমাকে বলেছিলেন, গোয়েন্দারা পিছু নিয়েছেন দেখে ১ এপ্রিল চট্টগ্রামে খেলা দেখতে যাওয়ার কথা বলে হোটেল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অতনু। তিনি সব মালপত্র হোটেলে ফেলে যান, যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা বললেন, পালানোর আগের দিন ধরমবীর সিং যাদবের সঙ্গে টেলিফোনে অতনুর কথা হয়েছিল। যাদব তাঁকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে ফলো করা হচ্ছে। একবার বাঁচাতে পারলেও দ্বিতীয়বার বাঁচানো যাবে না। তুমি দ্রুত বাংলাদেশ ছেড়ে যাও।’ এরপর ৩ এপ্রিল (২০১৪) রাতে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত অতিক্রম করার সময় ইমিগ্রেশনের ওসি মনিরুজ্জামান তাঁকে আটক করেন।
কয়েক দিন পর মিরপুর থানার অপারেশন কর্মকর্তা আফজাল হোসেন আমাকে বললেন, অতনুর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় মামলা হয়। সেই মামলায় অতনুকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় আদালতে। এরপর মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান তাঁকে জামিন দেন। জামিন পেয়ে গা ঢাকা দেন অতনু। আজও তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি।
মনে আছে, বেশ কয়েকজন আইনজীবী অতনু দত্তের মামলা পরিচালনা করেছিলেন। তাঁদের একজন এমদাদ হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ঢাকার নামকরা এক ক্রীড়া সংগঠক অতনুর জামিনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ওই ক্রীড়া সংগঠকের নাম তিনি বলতে চাননি।
রিপোর্টার হিসেবে এ বিষয়ে আরও জানতে আকসুর প্রধান যোগীন্দ্র পল সিং (ওয়াই পি সিং) ও ধরমবীর সিং যাদবকে আকসুর ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে ফোন করেছিলাম। দুজনই আমার ফোন সিরিভ করেছিলেন। ফোনে সব কথা শুনে বলেছিলেন, ‘না, না, আমি সে লোক নই। রং নম্বর।’ পরে আইসিসি ও আকসুকে এ বিষয়ে বক্তব্য চেয়ে ই-মেইল করেছিলাম, কিন্তু তারা কোনো জবাব দেয়নি। দুদিন পর আকসুর আরেক আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন সিং বার্ক আমাকে ফোন করেন। তিনি তখনকার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তাঁর কথা অনুযায়ী যোগাযোগও করেছিলাম।
বেশ কয়েক মাস পর র্যাব ওই ঘটনার তদন্ত গুছিয়ে এনেছিল। একদিন র্যাবের তখনকার এডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসান আমাকে বললেন, জুয়াড়ি অতনু দত্তের সঙ্গে আকসুর সেই কর্মকর্তা ধরমবীর সিং যাদবের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাঁরা একসঙ্গে এই কাজ করেন। এ ঘটনার কয়েক বছর পর বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে তিন ভারতীয় জুয়াড়িকে এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা) আটক করে তুলে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। এরপর শুনলাম, দীপ আগারওয়াল নামের এক জুয়াড়ি বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকেও ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আইসিসির এক কর্মকর্তা একবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ৫০টি ম্যাচ পাতানোর ঘটনা তাঁরা তদন্ত করছেন, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল ভারত-সংশ্লিষ্ট। সবার কথায় আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে এল, ক্রিকেট ম্যাচ গড়াপেটা বা পাতানো খেলার যে অভিযোগ আমরা হরহামেশা শুনি, তার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আকসু এবং ক্রীড়া সংস্থাগুলোর লোকজনও জড়িত। ‘বেড়ায় ক্ষেত খায়’ বা ‘শর্ষের ভেতরে ভূত’ থাকার যে গল্প আছে, এ ক্ষেত্রে তা শতভাগ সত্যি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে