কামরুল হাসান

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি ফাইল পড়ছিলেন। জিনসের প্যান্ট আর টি-শার্ট পরা যুবককে ওসির সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে লোকটি বললেন, এই নিন আপনার আসামি, শীর্ষ সন্ত্রাসী। ওসি চোখ কপালে তুলে যুবকের কাছে জানতে চাইলেন, কী নাম? যুবক নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললেন, কামাল পাশা। ওসি একবার বৃদ্ধের দিকে, আরেকবার যুবকের দিকে তাকালেন। কিছুই বলতে পারছেন না। ততক্ষণে ঝোড়ো গতিতে থানায় রটে গেছে, সরকারের পুরস্কারঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কামাল পাশা ‘সারেন্ডার’ করেছেন।
আগের দিনের পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, থানা আর খেয়াঘাটে কোনো কথা গোপন থাকে না। মোহাম্মদপুর থানাতেও শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো, নিমেষে খবর পৌঁছে গেল ক্রাইম রিপোর্টারদের কানে। আমি যখন থানায় এলাম, ততক্ষণে কামাল পাশাকে হাজতে ঢোকানো হয়েছে। আর তাঁর বাবা লিয়াকত আলী ডিউটি অফিসারের সামনে নির্বিকার বসে আছেন।
ডিউটি অফিসার আর লিয়াকত আলীর মুখ থেকে আমি পুরো ঘটনা শুনলাম। মনে হলো, তাঁরা কিছুই গোপন করেননি। কিন্তু ওসির রুমে গিয়ে শুনি, এরই মধ্যে দৃশ্যপট বদলে গেছে। ওসি এখন বলছেন, তিনি বৃদ্ধকে চাপ দিয়ে তাঁর সন্ত্রাসী ছেলে কামাল পাশাকে আত্মসমর্পণ করাতে বাধ্য করেছেন। আরও বললেন, এটা নাকি আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ কৌশল। এ ঘটনার যাবতীয় কৃতিত্ব ওসির। তাঁর সঙ্গে আর তর্কে জড়ালাম না, পাছে তিক্ততা বাড়ে! ওসি আমাকে কামাল পাশার সঙ্গে কথার বলার অনুমতি দিলেন।
থানাহাজতের দিকে একটু উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশা দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, কেন আত্মসমর্পণ করলেন? তিনি চুপ করে থাকলেন। আবার একই প্রশ্ন করলাম। এবার তিনি বললেন, ‘ভাই, এটা না করলে আমার মা-বাবা সুইসাইড করবে। বলেন, আপনি হলে কী করতেন?’ আমি তাঁর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে একটার পর একটা প্রশ্ন করছি। মনে আছে, সেদিন তিনি প্রায় সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন।
এটা ছিল ২০০২ সালের ২০ মের বিকেল। ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে তখন কামাল পাশার অনেক নামডাক। সব সময় অস্ত্রধারী সহযোগী নিয়ে চলাফেরা করেন। তবে তাঁর পরিচিতির আরেকটি কারণ ছিল, তিনি সব খুনই করেছিলেন দিনের বেলায়। শত শত লোকের উপস্থিতিতে। খুন করার পরমুহূর্তেই হাওয়া হয়ে যেতেন। সম্ভবত প্রথমে তিনি একজন ঠিকাদারকে খুন করেছিলেন। ১৯৯৭ সালের ২২ মে শাহবাগে পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) ঠিকাদার আশিক ইকবালকে গুলি করে খুন করেন।
এ সময় কামালের সঙ্গে তাঁর সহযোগী রাশেদ মোস্তফা রতনও ছিলেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় শেরাটন হোটেলের সামনে এক সার্জেন্ট জীবনবাজি রেখে তাঁদের গতিরোধ করে আটক করেন। পরে কামাল পাশা জামিনে বেরিয়ে আসেন।
২০০০ সালের প্রথম দিকে উত্তরায় আরেক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলেন কামাল পাশা ও তাঁর লোকজন। বনানীর একজন ডিশ ব্যবসায়ীও তাঁর হাতে খুন হন।
২০০০ সালের মে মাসে মোহাম্মদপুরে আশরাফ হোসেন জুয়েল ও মোহাম্মদ আলী রিভেল নামের দুই ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খুন করেন কামাল। এরপরই পত্রপত্রিকায় তাঁর নাম বেশি বেশি আসতে থাকে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে কামাল পাশার নাম ছিল। তাঁকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সরকার।
সেদিন থানায় কামাল পাশার সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, তিনি কীভাবে সন্ত্রাসী হলেন। কামাল পাশা বলছিলেন, ঢাকা কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। ১৯৯৩ সালে ঢাকা কলেজ থেকে বিএসসি পাস করে কিছুদিন একমি ল্যাবরেটরিজে চাকরি করেন। সেখানে এক সন্ত্রাসীর সঙ্গে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন। কিছুদিন পর সেই সন্ত্রাসী খুন হয়। এরপর তিনি প্রকাশ্যে চলাফেরা বন্ধ করে দেন।
জানতে চাইলাম, এত দিন গোপনে থাকতেন কোথায়? তিনি বললেন, মোহাম্মদপুরের গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউটের হোস্টেলে। এটা ছিল মোহাম্মদপুর থানার পাঁচ শ গজের মধ্যে। বললেন, আজ সকাল পর্যন্ত ওই হোস্টেলেই ছিলেন। কার রুমে থাকতেন? তিনি বললেন, এটা বলা ঠিক হবে না।
কামাল পাশা বলছিলেন, তিনি ছিলেন জোট সরকারের প্রয়াত এমপি নাসিরউদ্দীন পিন্টুর ঘনিষ্ঠ। বিএনপির পুরো সময়ে তিনি পিন্টুর সহযোগিতা নিয়েই ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ভারতে পালিয়ে যান। কিছুদিন বাস করেন কলকাতায়। সেখানে থাকার সময় জানতে পারেন, আরেক সন্ত্রাসী ইমনকে সে দেশের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এরপর তিনি কলকাতা ছেড়ে আজমির শরিফে চলে যান। সেখানে আরও কিছুদিন কাটান। পরে পিন্টুর সঙ্গে কথা বলে ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় এসে পিন্টুর সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছিলেন। আমাকে বললেন, টেলিফোনে পিন্টু ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হতো। ঢাকায় আসার পর নিরাপদ জায়গা না পেয়ে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ঝাপড়াজানে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। পরে ঢাকায় ফিরে আসেন। এবার মোহাম্মদপুর থানার উল্টো দিকে গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট হোস্টেলের একটি রুমে পাকাপাকি আস্তানা গাড়েন। তাঁর কাছে জায়গাটি ছিল খুব নিরাপদ। সহজে কেউ সন্দেহ করত না।
বললাম, তাহলে আপনি ধরা দিতে রাজি হলেন কেন? কামাল বললেন, কয়েক দিন আগে বড় ভাই পারভেজ আহমেদকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। বাবার চাকরি নেই। পারভেজ ভাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি না থাকলে বাসার সবাই না খেয়ে থাকবে। এই অবস্থায় আব্বা ওসির কাছে কথা দিয়ে যান, আমি এলে তিনি পুলিশকে খবর দেবেন। সম্ভবত এ ধরনের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েই তিনি ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। এরপর একদিন ভোরে আমি বাড়ি এলাম। সেদিন সবাই আমাকে নিয়ে বসলেন। তাঁরা আমাকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার পরামর্শ দিলেন। আমি প্রথমে রাজি হইনি। পরে মা-বাবা অনেক কান্নাকাটি করলেন। একপর্যায়ে মা বললেন, তিনি আত্মহত্যা করবেন। মায়ের এই কান্না আমার সহ্য হলো না। মনে হলো, মায়ের জন্য কিছু একটা করি। রাজি হয়ে গেলাম, দেখি কী আছে কপালে। আমি কামাল পাশার দিকে তাকালাম, তিনি হাজতের মেঝের দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁর গলা ধরে এসেছে।
আত্মসমর্পণের পর কামাল পাশাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দেশের সব কাগজে তা ফলাও করে ছাপাও হয়। তিনটি খুনের মামলার আসামি হিসেবে পুলিশ তাঁকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নেয়। এভাবে একের পর এক মামলায় তাঁকে আসামি হিসেবে দেখানো হতে থাকে। এগুলোর মধ্যে ছিল রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর ও রমনা থানার দুটি পৃথক হত্যা মামলা এবং তেজগাঁও থানার একটি অস্ত্র মামলা। এসব মামলায় তাঁর ৯০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। ২০০৫ সালের ২৬ আগস্ট তাঁকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ স্থানান্তর করা হয়।
এরপর দিনে দিনে কামাল পাশা হারিয়ে যান। অনেক দিন তাঁর আর খোঁজ করিনি। ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই শুনলাম, কামাল পাশা মারা গেছেন। কাশিমপুরের জেলার বলেছিলেন, কারাগারে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কামাল পাশাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। রচিত হয় জীবনকাহিনির শেষ অধ্যায়।
অনেক দিন পর পুরোনো ডায়েরি খুঁজতে গিয়ে কামাল পাশার ইন্টারভিউর সেই নোটটা পেয়ে গেলাম। পড়তে গিয়ে মনে হলো, সেদিন থানা থেকে বের হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। বের হওয়ার পথে ডিউটি অফিসারের রুমে উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশার বাবা লিয়াকত আলী তখনো বসে আছেন। আমি আবার তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। এবার আর তিনি কিছুই বললেন না। আমার দিকে তাকালেনও না। টলমল চোখে শূন্যের দিকে চেয়ে আছেন। আমার খুব ইচ্ছে করছিল, অসহায় এই বাবার সঙ্গে আরেকটু কথা বলি। কিন্তু অফিস থেকে বারবার ফোন আসছে, তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে। বেরিয়ে এলাম থানা থেকে। ‘সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।’
আরও পড়ুন:

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি ফাইল পড়ছিলেন। জিনসের প্যান্ট আর টি-শার্ট পরা যুবককে ওসির সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে লোকটি বললেন, এই নিন আপনার আসামি, শীর্ষ সন্ত্রাসী। ওসি চোখ কপালে তুলে যুবকের কাছে জানতে চাইলেন, কী নাম? যুবক নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললেন, কামাল পাশা। ওসি একবার বৃদ্ধের দিকে, আরেকবার যুবকের দিকে তাকালেন। কিছুই বলতে পারছেন না। ততক্ষণে ঝোড়ো গতিতে থানায় রটে গেছে, সরকারের পুরস্কারঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কামাল পাশা ‘সারেন্ডার’ করেছেন।
আগের দিনের পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, থানা আর খেয়াঘাটে কোনো কথা গোপন থাকে না। মোহাম্মদপুর থানাতেও শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো, নিমেষে খবর পৌঁছে গেল ক্রাইম রিপোর্টারদের কানে। আমি যখন থানায় এলাম, ততক্ষণে কামাল পাশাকে হাজতে ঢোকানো হয়েছে। আর তাঁর বাবা লিয়াকত আলী ডিউটি অফিসারের সামনে নির্বিকার বসে আছেন।
ডিউটি অফিসার আর লিয়াকত আলীর মুখ থেকে আমি পুরো ঘটনা শুনলাম। মনে হলো, তাঁরা কিছুই গোপন করেননি। কিন্তু ওসির রুমে গিয়ে শুনি, এরই মধ্যে দৃশ্যপট বদলে গেছে। ওসি এখন বলছেন, তিনি বৃদ্ধকে চাপ দিয়ে তাঁর সন্ত্রাসী ছেলে কামাল পাশাকে আত্মসমর্পণ করাতে বাধ্য করেছেন। আরও বললেন, এটা নাকি আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ কৌশল। এ ঘটনার যাবতীয় কৃতিত্ব ওসির। তাঁর সঙ্গে আর তর্কে জড়ালাম না, পাছে তিক্ততা বাড়ে! ওসি আমাকে কামাল পাশার সঙ্গে কথার বলার অনুমতি দিলেন।
থানাহাজতের দিকে একটু উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশা দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, কেন আত্মসমর্পণ করলেন? তিনি চুপ করে থাকলেন। আবার একই প্রশ্ন করলাম। এবার তিনি বললেন, ‘ভাই, এটা না করলে আমার মা-বাবা সুইসাইড করবে। বলেন, আপনি হলে কী করতেন?’ আমি তাঁর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে একটার পর একটা প্রশ্ন করছি। মনে আছে, সেদিন তিনি প্রায় সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন।
এটা ছিল ২০০২ সালের ২০ মের বিকেল। ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে তখন কামাল পাশার অনেক নামডাক। সব সময় অস্ত্রধারী সহযোগী নিয়ে চলাফেরা করেন। তবে তাঁর পরিচিতির আরেকটি কারণ ছিল, তিনি সব খুনই করেছিলেন দিনের বেলায়। শত শত লোকের উপস্থিতিতে। খুন করার পরমুহূর্তেই হাওয়া হয়ে যেতেন। সম্ভবত প্রথমে তিনি একজন ঠিকাদারকে খুন করেছিলেন। ১৯৯৭ সালের ২২ মে শাহবাগে পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) ঠিকাদার আশিক ইকবালকে গুলি করে খুন করেন।
এ সময় কামালের সঙ্গে তাঁর সহযোগী রাশেদ মোস্তফা রতনও ছিলেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় শেরাটন হোটেলের সামনে এক সার্জেন্ট জীবনবাজি রেখে তাঁদের গতিরোধ করে আটক করেন। পরে কামাল পাশা জামিনে বেরিয়ে আসেন।
২০০০ সালের প্রথম দিকে উত্তরায় আরেক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলেন কামাল পাশা ও তাঁর লোকজন। বনানীর একজন ডিশ ব্যবসায়ীও তাঁর হাতে খুন হন।
২০০০ সালের মে মাসে মোহাম্মদপুরে আশরাফ হোসেন জুয়েল ও মোহাম্মদ আলী রিভেল নামের দুই ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খুন করেন কামাল। এরপরই পত্রপত্রিকায় তাঁর নাম বেশি বেশি আসতে থাকে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে কামাল পাশার নাম ছিল। তাঁকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সরকার।
সেদিন থানায় কামাল পাশার সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, তিনি কীভাবে সন্ত্রাসী হলেন। কামাল পাশা বলছিলেন, ঢাকা কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। ১৯৯৩ সালে ঢাকা কলেজ থেকে বিএসসি পাস করে কিছুদিন একমি ল্যাবরেটরিজে চাকরি করেন। সেখানে এক সন্ত্রাসীর সঙ্গে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন। কিছুদিন পর সেই সন্ত্রাসী খুন হয়। এরপর তিনি প্রকাশ্যে চলাফেরা বন্ধ করে দেন।
জানতে চাইলাম, এত দিন গোপনে থাকতেন কোথায়? তিনি বললেন, মোহাম্মদপুরের গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউটের হোস্টেলে। এটা ছিল মোহাম্মদপুর থানার পাঁচ শ গজের মধ্যে। বললেন, আজ সকাল পর্যন্ত ওই হোস্টেলেই ছিলেন। কার রুমে থাকতেন? তিনি বললেন, এটা বলা ঠিক হবে না।
কামাল পাশা বলছিলেন, তিনি ছিলেন জোট সরকারের প্রয়াত এমপি নাসিরউদ্দীন পিন্টুর ঘনিষ্ঠ। বিএনপির পুরো সময়ে তিনি পিন্টুর সহযোগিতা নিয়েই ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ভারতে পালিয়ে যান। কিছুদিন বাস করেন কলকাতায়। সেখানে থাকার সময় জানতে পারেন, আরেক সন্ত্রাসী ইমনকে সে দেশের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এরপর তিনি কলকাতা ছেড়ে আজমির শরিফে চলে যান। সেখানে আরও কিছুদিন কাটান। পরে পিন্টুর সঙ্গে কথা বলে ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় এসে পিন্টুর সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছিলেন। আমাকে বললেন, টেলিফোনে পিন্টু ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হতো। ঢাকায় আসার পর নিরাপদ জায়গা না পেয়ে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ঝাপড়াজানে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। পরে ঢাকায় ফিরে আসেন। এবার মোহাম্মদপুর থানার উল্টো দিকে গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট হোস্টেলের একটি রুমে পাকাপাকি আস্তানা গাড়েন। তাঁর কাছে জায়গাটি ছিল খুব নিরাপদ। সহজে কেউ সন্দেহ করত না।
বললাম, তাহলে আপনি ধরা দিতে রাজি হলেন কেন? কামাল বললেন, কয়েক দিন আগে বড় ভাই পারভেজ আহমেদকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। বাবার চাকরি নেই। পারভেজ ভাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি না থাকলে বাসার সবাই না খেয়ে থাকবে। এই অবস্থায় আব্বা ওসির কাছে কথা দিয়ে যান, আমি এলে তিনি পুলিশকে খবর দেবেন। সম্ভবত এ ধরনের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েই তিনি ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। এরপর একদিন ভোরে আমি বাড়ি এলাম। সেদিন সবাই আমাকে নিয়ে বসলেন। তাঁরা আমাকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার পরামর্শ দিলেন। আমি প্রথমে রাজি হইনি। পরে মা-বাবা অনেক কান্নাকাটি করলেন। একপর্যায়ে মা বললেন, তিনি আত্মহত্যা করবেন। মায়ের এই কান্না আমার সহ্য হলো না। মনে হলো, মায়ের জন্য কিছু একটা করি। রাজি হয়ে গেলাম, দেখি কী আছে কপালে। আমি কামাল পাশার দিকে তাকালাম, তিনি হাজতের মেঝের দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁর গলা ধরে এসেছে।
আত্মসমর্পণের পর কামাল পাশাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দেশের সব কাগজে তা ফলাও করে ছাপাও হয়। তিনটি খুনের মামলার আসামি হিসেবে পুলিশ তাঁকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নেয়। এভাবে একের পর এক মামলায় তাঁকে আসামি হিসেবে দেখানো হতে থাকে। এগুলোর মধ্যে ছিল রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর ও রমনা থানার দুটি পৃথক হত্যা মামলা এবং তেজগাঁও থানার একটি অস্ত্র মামলা। এসব মামলায় তাঁর ৯০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। ২০০৫ সালের ২৬ আগস্ট তাঁকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ স্থানান্তর করা হয়।
এরপর দিনে দিনে কামাল পাশা হারিয়ে যান। অনেক দিন তাঁর আর খোঁজ করিনি। ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই শুনলাম, কামাল পাশা মারা গেছেন। কাশিমপুরের জেলার বলেছিলেন, কারাগারে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কামাল পাশাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। রচিত হয় জীবনকাহিনির শেষ অধ্যায়।
অনেক দিন পর পুরোনো ডায়েরি খুঁজতে গিয়ে কামাল পাশার ইন্টারভিউর সেই নোটটা পেয়ে গেলাম। পড়তে গিয়ে মনে হলো, সেদিন থানা থেকে বের হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। বের হওয়ার পথে ডিউটি অফিসারের রুমে উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশার বাবা লিয়াকত আলী তখনো বসে আছেন। আমি আবার তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। এবার আর তিনি কিছুই বললেন না। আমার দিকে তাকালেনও না। টলমল চোখে শূন্যের দিকে চেয়ে আছেন। আমার খুব ইচ্ছে করছিল, অসহায় এই বাবার সঙ্গে আরেকটু কথা বলি। কিন্তু অফিস থেকে বারবার ফোন আসছে, তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে। বেরিয়ে এলাম থানা থেকে। ‘সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।’
আরও পড়ুন:

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি
২১ জানুয়ারি ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি
২১ জানুয়ারি ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি
২১ জানুয়ারি ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি
২১ জানুয়ারি ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে