কামরুল হাসান

আমার অবস্থা তখন জীবনানন্দ দাশের কবিতার মতো, ‘অতিদূর সমুদ্রের ’পর হাল ভেঙে যে-নাবিক হারায়েছে দিশা’। দিনভর তন্নতন্ন করে খুঁজেও কোনো কূলকিনারা করতে পারছি না। স্থানীয় লোকজন আমাকে সাহায্য না করে উল্টো সন্দেহ করতে শুরু করেছে। এ রকম অবস্থায় তথ্য সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, তাতে সমূহ আশঙ্কা থাকে। একবার ভাবছি ফিরে যাব। এভাবে ফিরে যাওয়াকে বলে ‘রণে ভঙ্গ দেওয়া’, মানে পরাজিত হয়ে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালানো। কিন্তু আমার সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। শেষমেশ চন্দ্রবিন্দুর ‘এভাবেও ফিরে আসা যায়’ গাইতে গাইতে রাজ্যের ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঢাকায় ফিরে এলাম।
পরদিন সিআইডির এএসপি মোহাম্মদ মুসলিমকে (বর্তমানে চট্টগ্রাম সিআইডির প্রধান) পুরো ঘটনা খুলে বলতেই তিনি মৃদৃ ভর্ৎসনা করে বললেন, একলা গেলেন কেন, আপনার কি মাথা খারাপ! মুসলিমের কথা শুনেই আমি সেখানে গিয়েছিলাম। আমার ধারণা ছিল, খুব সহজেই সবকিছু জানতে পারব। কিন্তু গিয়ে দেখলাম, পুলিশি অভিযানের কারণে সবাই সেখানে সতর্ক। অচেনা লোক দেখলেই সন্দেহ করছে।
যে গ্রামের কথা বলছি, তার নাম মিজমিজি। আলোঝলমলে রাজধানীর অদূরে তখন এক অজগাঁ। ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে কয়েক মাইল গেলেই শেষ হয়ে যায় মহানগরীর সীমানা। এর প্রান্তসীমার গ্রামই মিজমিজি। জেলার তালিকায় পড়েছে নারায়ণগঞ্জে। পুলিশ প্রশাসনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা। পাশেই একসময় ছিল দেশের বৃহত্তম আদমজী পাটকল। নদীশিকস্তি এই গ্রামের মাঝ দিয়ে একসময় অনেক নদী প্রবহমান ছিল। যখন গেলাম, দেখলাম নদী আর নেই; শুকিয়ে মরা খাল হয়ে পড়ে আছে। গ্রামটি আরেকটি কারণে বিখ্যাত, শহীদ সাংবাদিকের কন্যা শারমিন রীমা খুন হয়েছিলেন এই গ্রামের রাস্তায়।
দুই দিন আগে সিআইডির এএসপি মুসলিমের টিম এই গ্রাম থেকে কয়েকটি শিশুকে উদ্ধার করে, সঙ্গে কয়েকজন নারী-পুরুষ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পর জানতে পারেন, দুবাইয়ে উটের দৌড়ে ব্যবহার করা শিশুদের পাচার করা হয় এই গ্রাম থেকে। এখানে একটি শক্তিশালী চক্র আছে, যারা শত শত মাকে প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের কোলের শিশুকে পাচারকারীদের হাতে তুলে দিয়েছে।
মুসলিম আমাকে বলেছিলেন, এটা একটি আজব গ্রাম, অদ্ভুত এখানকার মা-বাবা। গ্রামের প্রায় ঘরেই আছে উটের জকি। পিতামাতার আয়ের স্বপ্নপূরণে সেই গ্রামের শিশুদের পাঠানো হয়েছে সুদূর মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমিতে। সেখানে উটের দৌড়ের জুয়ায় জকি হতে গিয়ে কেউ কেউ অকালে প্রাণ হারিয়েছে, কেউবা চিরতরে পঙ্গু হয়েছে। কেউ ফিরে এসেছে আঁতকে ওঠার মতো স্মৃতি নিয়ে। আবার দু-একজন আছে, যারা প্রচুর টাকা কামিয়ে মা-বাবার স্বপ্নপূরণে সক্ষম হয়েছে।
প্রথম দিন আমি একাই সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু গ্রামের লোক আমাকে বিশ্বাস করেনি। মুসলিম আমাকে বলেছিলেন তাঁদের লোকের সঙ্গে যেতে। কিন্তু পুলিশের লোকদের সঙ্গে গেলে যা পাওয়া যাবে, তা দিয়ে ভালো কোনো প্রতিবেদন হবে না। তাই একাই গেলাম। ফিরে আসার পর আমার মাথায় এল খলিলের কথা।
জনকণ্ঠের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান। প্রথমে ভেবেছিলাম, খলিল এলাকার ছেলে, তাঁকে বাদ দিয়ে নিজের মতো করে অনুসন্ধান করব। কিন্তু হালে পানি না পেয়ে শেষ পর্যন্ত খলিলের দ্বারস্থ হলাম। তিনি আমাকে পথের দিশা দিলেন। তাঁর সাহায্য নিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করলাম। যত কথা বলি তত বিস্মিত হই।
এই গ্রামের তরুণ ঠিকাদার ফজলুল হক আমাকে বললেন, একসময় এই গ্রামের মানুষের কাজই ছিল আদমজী পাটকলকেন্দ্রিক নানা ধরনের ব্যবসা করা। এরপর আদমজীতে ধস নামতে শুরু করলে অনেক লোক বেকার হয়ে পড়েন। বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য শুরু হয় বিদেশ যাওয়া। অনেকে ঢাকার ট্রাভেল এজেন্টদের দালালের হাত ধরে বিদেশ যেতে থাকেন। গ্রামে গড়ে ওঠে আদম পাচারের দালাল চক্র। একপর্যায়ে শুরু হয় উটের জকি পাচার। গ্রামে প্রথম এই কারবারের সূচনা করেন মোতালেব নামের এক প্রকৌশলী। তিনি একসময় আদমজীতে চাকরি করতেন। চাকরি চলে যাওয়ার পর ট্রাভেল ব্যবসার নামে দুবাই, সৌদি আরবে লোক পাঠাতে শুরু করেন। সেই লোক পাঠানোর সঙ্গে তিনি কয়েকটি শিশুকে দুবাই পাঠান। অল্প দিনেই এটি যে লাভজনক, সে খবর গ্রামে তা রটে যায়। এরপর অনেকে এই কারবারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ধীরে ধীরে সেখানে একটা চক্র গড়ে ওঠে। এদের কেউ মুদিদোকানি, কেউ পাইকারি ফড়িয়া আবার কেউ বেকার। শুরু হয় গ্রামের দরিদ্র মানুষকে দ্রুত বড় লোক হওয়ার লোভ দেখানো। সেই লোভে অনেক মা-বাবা তাঁদের বাচ্চাদের তুলে দেন চক্রের হাতে।
আমি সেখানে খোঁজ করতে গিয়ে অনেককে পেয়েছিলামও। যেমন সর্দারপাড়ার জহির আহমেদের পুত্র মহিউদ্দিন। তাকে পাচার করেছিল এলাকার আলাউদ্দিন নামের এক যুবক। কয়েক বছর পর ফিরে এসেছিল জহির। দুবাই যাওয়ার সুবাদে তার পরিবার উঠে যায় পাকা বাড়িতে। মহিউদ্দিনের মতো আরেকজন আজিবপুরের সুবেদ আলীর ছেলে হোসেন তখন মিজমিজির বেতিমোহন স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত। সাত-আট বছর আগে তাকে পাঠানো হয়েছিল উটের জকি হিসেবে।
গ্রামের আরেক পিতা নূর মোহাম্মদ আব্দুলের পুলপাড়ে বাড়ি। তাঁর দুই সন্তান শাহাবুদ্দিন ও মহিউদ্দিন। এই দুই সন্তানকে নিয়ে নূর মোহাম্মদ দুবাই গিয়েছিলেন। নিজের সন্তানকে লাগিয়েছিলেন জকির কাজে। একদিন উটের পিঠ থেকে পড়ে এক ছেলে মারা যায়। আমি নূর মোহাম্মদের স্ত্রী জমিলার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। জমিলা বলেছিলেন, আমার ছেলে গেছে, কিন্তু ভাগ্য তো ফিরেছে। এখন তাঁদের অনেক আয়-রোজগার। বাড়িও পাকা হয়েছে। নূর মোহাম্মদ বঙ্গবাজারে টুপির কারবার করেন। তাঁর ছেলে শাহাবুদিন তখন কলেজে পড়ত। সে আমাকে বলেছিল, সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো তাকে তাড়া করে ফেরে।
সে সময় ওই গ্রামের লোকদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছিল, মিজমিজি থেকে উটের জকি হিসেবে শিশু পাচারের ঘটনা সেখানে ওপেন সিক্রেট। গ্রামের সাধারণ মানুষ যেমন জানে বিষয়টি, তেমনি জানেন পুলিশ-প্রশাসনসহ স্থানীয় কর্মকর্তারা। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তখন ওসি ছিলেন ইসমাইল হোসেন খন্দকার। তিনি বলেছিলেন, কিছুই জানেন না। নারায়ণগঞ্জের এসপি ছিলেন শফিকুল ইসলাম। তিনিও একই সুরে কথা বললেন। কিন্তু আমি মাত্র তিন দিনে সে গ্রাম থেকে দুই শতাধিক শিশু পাচারের তথ্য পেয়েছিলাম।
গ্রামের অনেকে আমাকে বলেছিলেন, চিটাগাং রোডের দুই কসাই চান মিয়া আর কুব্বতের স্ত্রীরাও দুবাইতে থাকেন। প্রতিবছর তাঁরা দেশে এসে একটি করে বাচ্চা নিয়ে যান। পুলপাড়ের বেগমের ছেলে গ্রামে বসে এ কাজ করেন। গ্রামের আরেকজন ইসমাইলের ভাই নাসির দুটি বাচ্চা নিয়ে দুবাই যান। একটি বাচ্চা ফেরত এসেছে, অন্যটি এখনো আসেনি। পাচার হওয়া অনেক বাচ্চার মতো সেই বাচ্চাও উটের পায়ের তলায় পড়ে মারা যায়।
পাচারকারী চক্রের সদস্য আলিম মুনশির দুই ছেলে ইবরা ও হোসেন এমন একটি মরা বাচ্চা নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। পরে এ নিয়ে গ্রামে সালিস হয়। এরপর তিন লাখ টাকায় মিটমাট হয়ে যায়। গ্রাম থেকে পাচার হওয়া আরেক শিশু নাজমুল উটের দৌড়ের সময় পড়ে গিয়ে আহত হলে তাকে ফেরত পাঠানো হয়।
তখনকার পিজি হাসপাতালে শিশুটি মারা যায় ২০০১ সালের ১১ এপ্রিল। শিশু পাচার নিয়ে আমার সিরিজ প্রতিবেদনটি ছাপা শুরু হয়েছিল ২০০২ সালের ২০ মে থেকে। এই প্রতিবেদন করতে গিয়ে মানুষের যে ভয়াবহ রূপ দেখেছি, তা আমাকে ব্যথিত করেছিল।
শিশু নাজমুল মারা যাওয়ার পর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের হিউম্যান রাইটস মনিটরিং সেলের আইনজীবী দিলরুবা আফতাবী ও ইসরাত ফাতেমা একটি মামলাও করেন আদালতে। প্রথম প্রথম সবকিছু ভালোই চলছিল। একদিন ফলোআপ করতে গিয়ে শুনি, দিলরুবার মন খারাপ। নাজমুলের মা নাজমা আর মামলা চালাতে চান না। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে সব মিটমাট করে ফেলেছেন। এরপর পাচারকারীদের পরামর্শে নাজমুলের মা অজ্ঞাত স্থানে চলে যান। দিলরুবা একটি টানা নিশ্বাস ছেড়ে বললেন, দারিদ্র্য, লোভ ও হুমকির কাছে হার মেনে গেল মাতৃস্নেহ। আমাদের জীবন বোধ হয় এ রকমই ভাই।
দিলরুবার কথায় আমারও খুব মন খারাপ হলো। তাঁর কথার কোনো জবাব না দিয়েই ফিরে এলাম।
আরও পড়ুন:

আমার অবস্থা তখন জীবনানন্দ দাশের কবিতার মতো, ‘অতিদূর সমুদ্রের ’পর হাল ভেঙে যে-নাবিক হারায়েছে দিশা’। দিনভর তন্নতন্ন করে খুঁজেও কোনো কূলকিনারা করতে পারছি না। স্থানীয় লোকজন আমাকে সাহায্য না করে উল্টো সন্দেহ করতে শুরু করেছে। এ রকম অবস্থায় তথ্য সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, তাতে সমূহ আশঙ্কা থাকে। একবার ভাবছি ফিরে যাব। এভাবে ফিরে যাওয়াকে বলে ‘রণে ভঙ্গ দেওয়া’, মানে পরাজিত হয়ে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালানো। কিন্তু আমার সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। শেষমেশ চন্দ্রবিন্দুর ‘এভাবেও ফিরে আসা যায়’ গাইতে গাইতে রাজ্যের ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঢাকায় ফিরে এলাম।
পরদিন সিআইডির এএসপি মোহাম্মদ মুসলিমকে (বর্তমানে চট্টগ্রাম সিআইডির প্রধান) পুরো ঘটনা খুলে বলতেই তিনি মৃদৃ ভর্ৎসনা করে বললেন, একলা গেলেন কেন, আপনার কি মাথা খারাপ! মুসলিমের কথা শুনেই আমি সেখানে গিয়েছিলাম। আমার ধারণা ছিল, খুব সহজেই সবকিছু জানতে পারব। কিন্তু গিয়ে দেখলাম, পুলিশি অভিযানের কারণে সবাই সেখানে সতর্ক। অচেনা লোক দেখলেই সন্দেহ করছে।
যে গ্রামের কথা বলছি, তার নাম মিজমিজি। আলোঝলমলে রাজধানীর অদূরে তখন এক অজগাঁ। ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে কয়েক মাইল গেলেই শেষ হয়ে যায় মহানগরীর সীমানা। এর প্রান্তসীমার গ্রামই মিজমিজি। জেলার তালিকায় পড়েছে নারায়ণগঞ্জে। পুলিশ প্রশাসনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা। পাশেই একসময় ছিল দেশের বৃহত্তম আদমজী পাটকল। নদীশিকস্তি এই গ্রামের মাঝ দিয়ে একসময় অনেক নদী প্রবহমান ছিল। যখন গেলাম, দেখলাম নদী আর নেই; শুকিয়ে মরা খাল হয়ে পড়ে আছে। গ্রামটি আরেকটি কারণে বিখ্যাত, শহীদ সাংবাদিকের কন্যা শারমিন রীমা খুন হয়েছিলেন এই গ্রামের রাস্তায়।
দুই দিন আগে সিআইডির এএসপি মুসলিমের টিম এই গ্রাম থেকে কয়েকটি শিশুকে উদ্ধার করে, সঙ্গে কয়েকজন নারী-পুরুষ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পর জানতে পারেন, দুবাইয়ে উটের দৌড়ে ব্যবহার করা শিশুদের পাচার করা হয় এই গ্রাম থেকে। এখানে একটি শক্তিশালী চক্র আছে, যারা শত শত মাকে প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের কোলের শিশুকে পাচারকারীদের হাতে তুলে দিয়েছে।
মুসলিম আমাকে বলেছিলেন, এটা একটি আজব গ্রাম, অদ্ভুত এখানকার মা-বাবা। গ্রামের প্রায় ঘরেই আছে উটের জকি। পিতামাতার আয়ের স্বপ্নপূরণে সেই গ্রামের শিশুদের পাঠানো হয়েছে সুদূর মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমিতে। সেখানে উটের দৌড়ের জুয়ায় জকি হতে গিয়ে কেউ কেউ অকালে প্রাণ হারিয়েছে, কেউবা চিরতরে পঙ্গু হয়েছে। কেউ ফিরে এসেছে আঁতকে ওঠার মতো স্মৃতি নিয়ে। আবার দু-একজন আছে, যারা প্রচুর টাকা কামিয়ে মা-বাবার স্বপ্নপূরণে সক্ষম হয়েছে।
প্রথম দিন আমি একাই সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু গ্রামের লোক আমাকে বিশ্বাস করেনি। মুসলিম আমাকে বলেছিলেন তাঁদের লোকের সঙ্গে যেতে। কিন্তু পুলিশের লোকদের সঙ্গে গেলে যা পাওয়া যাবে, তা দিয়ে ভালো কোনো প্রতিবেদন হবে না। তাই একাই গেলাম। ফিরে আসার পর আমার মাথায় এল খলিলের কথা।
জনকণ্ঠের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান। প্রথমে ভেবেছিলাম, খলিল এলাকার ছেলে, তাঁকে বাদ দিয়ে নিজের মতো করে অনুসন্ধান করব। কিন্তু হালে পানি না পেয়ে শেষ পর্যন্ত খলিলের দ্বারস্থ হলাম। তিনি আমাকে পথের দিশা দিলেন। তাঁর সাহায্য নিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করলাম। যত কথা বলি তত বিস্মিত হই।
এই গ্রামের তরুণ ঠিকাদার ফজলুল হক আমাকে বললেন, একসময় এই গ্রামের মানুষের কাজই ছিল আদমজী পাটকলকেন্দ্রিক নানা ধরনের ব্যবসা করা। এরপর আদমজীতে ধস নামতে শুরু করলে অনেক লোক বেকার হয়ে পড়েন। বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য শুরু হয় বিদেশ যাওয়া। অনেকে ঢাকার ট্রাভেল এজেন্টদের দালালের হাত ধরে বিদেশ যেতে থাকেন। গ্রামে গড়ে ওঠে আদম পাচারের দালাল চক্র। একপর্যায়ে শুরু হয় উটের জকি পাচার। গ্রামে প্রথম এই কারবারের সূচনা করেন মোতালেব নামের এক প্রকৌশলী। তিনি একসময় আদমজীতে চাকরি করতেন। চাকরি চলে যাওয়ার পর ট্রাভেল ব্যবসার নামে দুবাই, সৌদি আরবে লোক পাঠাতে শুরু করেন। সেই লোক পাঠানোর সঙ্গে তিনি কয়েকটি শিশুকে দুবাই পাঠান। অল্প দিনেই এটি যে লাভজনক, সে খবর গ্রামে তা রটে যায়। এরপর অনেকে এই কারবারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ধীরে ধীরে সেখানে একটা চক্র গড়ে ওঠে। এদের কেউ মুদিদোকানি, কেউ পাইকারি ফড়িয়া আবার কেউ বেকার। শুরু হয় গ্রামের দরিদ্র মানুষকে দ্রুত বড় লোক হওয়ার লোভ দেখানো। সেই লোভে অনেক মা-বাবা তাঁদের বাচ্চাদের তুলে দেন চক্রের হাতে।
আমি সেখানে খোঁজ করতে গিয়ে অনেককে পেয়েছিলামও। যেমন সর্দারপাড়ার জহির আহমেদের পুত্র মহিউদ্দিন। তাকে পাচার করেছিল এলাকার আলাউদ্দিন নামের এক যুবক। কয়েক বছর পর ফিরে এসেছিল জহির। দুবাই যাওয়ার সুবাদে তার পরিবার উঠে যায় পাকা বাড়িতে। মহিউদ্দিনের মতো আরেকজন আজিবপুরের সুবেদ আলীর ছেলে হোসেন তখন মিজমিজির বেতিমোহন স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত। সাত-আট বছর আগে তাকে পাঠানো হয়েছিল উটের জকি হিসেবে।
গ্রামের আরেক পিতা নূর মোহাম্মদ আব্দুলের পুলপাড়ে বাড়ি। তাঁর দুই সন্তান শাহাবুদ্দিন ও মহিউদ্দিন। এই দুই সন্তানকে নিয়ে নূর মোহাম্মদ দুবাই গিয়েছিলেন। নিজের সন্তানকে লাগিয়েছিলেন জকির কাজে। একদিন উটের পিঠ থেকে পড়ে এক ছেলে মারা যায়। আমি নূর মোহাম্মদের স্ত্রী জমিলার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। জমিলা বলেছিলেন, আমার ছেলে গেছে, কিন্তু ভাগ্য তো ফিরেছে। এখন তাঁদের অনেক আয়-রোজগার। বাড়িও পাকা হয়েছে। নূর মোহাম্মদ বঙ্গবাজারে টুপির কারবার করেন। তাঁর ছেলে শাহাবুদিন তখন কলেজে পড়ত। সে আমাকে বলেছিল, সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো তাকে তাড়া করে ফেরে।
সে সময় ওই গ্রামের লোকদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছিল, মিজমিজি থেকে উটের জকি হিসেবে শিশু পাচারের ঘটনা সেখানে ওপেন সিক্রেট। গ্রামের সাধারণ মানুষ যেমন জানে বিষয়টি, তেমনি জানেন পুলিশ-প্রশাসনসহ স্থানীয় কর্মকর্তারা। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তখন ওসি ছিলেন ইসমাইল হোসেন খন্দকার। তিনি বলেছিলেন, কিছুই জানেন না। নারায়ণগঞ্জের এসপি ছিলেন শফিকুল ইসলাম। তিনিও একই সুরে কথা বললেন। কিন্তু আমি মাত্র তিন দিনে সে গ্রাম থেকে দুই শতাধিক শিশু পাচারের তথ্য পেয়েছিলাম।
গ্রামের অনেকে আমাকে বলেছিলেন, চিটাগাং রোডের দুই কসাই চান মিয়া আর কুব্বতের স্ত্রীরাও দুবাইতে থাকেন। প্রতিবছর তাঁরা দেশে এসে একটি করে বাচ্চা নিয়ে যান। পুলপাড়ের বেগমের ছেলে গ্রামে বসে এ কাজ করেন। গ্রামের আরেকজন ইসমাইলের ভাই নাসির দুটি বাচ্চা নিয়ে দুবাই যান। একটি বাচ্চা ফেরত এসেছে, অন্যটি এখনো আসেনি। পাচার হওয়া অনেক বাচ্চার মতো সেই বাচ্চাও উটের পায়ের তলায় পড়ে মারা যায়।
পাচারকারী চক্রের সদস্য আলিম মুনশির দুই ছেলে ইবরা ও হোসেন এমন একটি মরা বাচ্চা নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। পরে এ নিয়ে গ্রামে সালিস হয়। এরপর তিন লাখ টাকায় মিটমাট হয়ে যায়। গ্রাম থেকে পাচার হওয়া আরেক শিশু নাজমুল উটের দৌড়ের সময় পড়ে গিয়ে আহত হলে তাকে ফেরত পাঠানো হয়।
তখনকার পিজি হাসপাতালে শিশুটি মারা যায় ২০০১ সালের ১১ এপ্রিল। শিশু পাচার নিয়ে আমার সিরিজ প্রতিবেদনটি ছাপা শুরু হয়েছিল ২০০২ সালের ২০ মে থেকে। এই প্রতিবেদন করতে গিয়ে মানুষের যে ভয়াবহ রূপ দেখেছি, তা আমাকে ব্যথিত করেছিল।
শিশু নাজমুল মারা যাওয়ার পর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের হিউম্যান রাইটস মনিটরিং সেলের আইনজীবী দিলরুবা আফতাবী ও ইসরাত ফাতেমা একটি মামলাও করেন আদালতে। প্রথম প্রথম সবকিছু ভালোই চলছিল। একদিন ফলোআপ করতে গিয়ে শুনি, দিলরুবার মন খারাপ। নাজমুলের মা নাজমা আর মামলা চালাতে চান না। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে সব মিটমাট করে ফেলেছেন। এরপর পাচারকারীদের পরামর্শে নাজমুলের মা অজ্ঞাত স্থানে চলে যান। দিলরুবা একটি টানা নিশ্বাস ছেড়ে বললেন, দারিদ্র্য, লোভ ও হুমকির কাছে হার মেনে গেল মাতৃস্নেহ। আমাদের জীবন বোধ হয় এ রকমই ভাই।
দিলরুবার কথায় আমারও খুব মন খারাপ হলো। তাঁর কথার কোনো জবাব না দিয়েই ফিরে এলাম।
আরও পড়ুন:

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

আমার অবস্থা তখন জীবনানন্দ দাশের কবিতার মতো, ‘অতিদূর সমুদ্রের ’পর হাল ভেঙে যে-নাবিক হারায়েছে দিশা’। দিনভর তন্নতন্ন করে খুঁজেও কোনো কূলকিনারা করতে পারছি না। স্থানীয় লোকজন আমাকে সাহায্য না করে উল্টো সন্দেহ করতে শুরু করেছে। এ রকম অবস্থায় তথ্য সংগ্রহের কাজ চালিয়ে
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

আমার অবস্থা তখন জীবনানন্দ দাশের কবিতার মতো, ‘অতিদূর সমুদ্রের ’পর হাল ভেঙে যে-নাবিক হারায়েছে দিশা’। দিনভর তন্নতন্ন করে খুঁজেও কোনো কূলকিনারা করতে পারছি না। স্থানীয় লোকজন আমাকে সাহায্য না করে উল্টো সন্দেহ করতে শুরু করেছে। এ রকম অবস্থায় তথ্য সংগ্রহের কাজ চালিয়ে
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

আমার অবস্থা তখন জীবনানন্দ দাশের কবিতার মতো, ‘অতিদূর সমুদ্রের ’পর হাল ভেঙে যে-নাবিক হারায়েছে দিশা’। দিনভর তন্নতন্ন করে খুঁজেও কোনো কূলকিনারা করতে পারছি না। স্থানীয় লোকজন আমাকে সাহায্য না করে উল্টো সন্দেহ করতে শুরু করেছে। এ রকম অবস্থায় তথ্য সংগ্রহের কাজ চালিয়ে
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

আমার অবস্থা তখন জীবনানন্দ দাশের কবিতার মতো, ‘অতিদূর সমুদ্রের ’পর হাল ভেঙে যে-নাবিক হারায়েছে দিশা’। দিনভর তন্নতন্ন করে খুঁজেও কোনো কূলকিনারা করতে পারছি না। স্থানীয় লোকজন আমাকে সাহায্য না করে উল্টো সন্দেহ করতে শুরু করেছে। এ রকম অবস্থায় তথ্য সংগ্রহের কাজ চালিয়ে
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে