Ajker Patrika

কালিম্পংয়ে দেখার আছে অনেক কিছু

ইশতিয়াক হাসান
কালিম্পংয়ে দেখার আছে অনেক কিছু

কালিম্পংয়ে ঘুরতে যাবেন যেসব জায়গায়
ভারতের পাহাড়ি শহর কালিম্পং সম্পর্কে ভালোভাবে জানা সমরেশ মজুমদারের অর্জুন সিরিজের বই পড়ে। অর্জুনের সঙ্গে কালিম্পংয়ে ‘সীতাহরণ রহস্যে’ বুঁদ হয়ে ছিলাম রীতিমতো। সেই কালিম্পংয়ে যাওয়া হয় হঠাৎ করেই। দার্জিলিং গিয়েছিলাম।  ভ্রমণের তৃতীয় রাতে মনে হলো, কালিম্পং গেলে কেমন হয়! ব্যাস পরদিন সকালেই একটি গাড়ি ভাড়া করে চললাম কালিম্পং। ভ্রমণে আমার সঙ্গী স্ত্রী পুনম, মেয়ে ওয়াফিকা, শাশুড়ি ও খালা শাশুড়ি।

কালিম্পংয়ের পথে
‘ঘুম’ পর্যন্ত পরিচিত পথ মানে তেনজিং নোরগে রোড ধরে চলল গাড়ি। তারপর জোড় বাংলো পেরিয়ে নতুন এক রাস্তায় ঢুকল। এটা পেশক-রিশি রোড। মুহূর্তে বদলে গেল প্রকৃতি। দার্জিলিং এসে সে অর্থে কোনো জঙ্গলে ঢুঁ না মারায় মন ভার ছিল। এখন দেখলাম দুই পাশে গভীর বনানী। উঁচু উঁচু পাইন, বার্চ গাছ দাঁড়িয়ে। 

আমাদের চালক হিন্দিতে যা বলল, তা আরও আশা জোগাল মনে। দুই পাশের জঙ্গলে ল্যাপার্ড ও লাল পান্ডা আছে। অনুমান করলাম এই উঁচু পাহাড়ি বনটা সেনচাল ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়েরির মধ্যে পড়েছে। ১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সেনচাল, ভারতের সবচেয়ে পুরোনো বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যগুলোর একটি। বড় দুটো লেক আছে জঙ্গলের সীমানায়। দার্জিলিংয়ের অন্য অংশে সিংগালিলার জঙ্গলে লাল পান্ডারা আছে জানি, তবে সেনচালে লাল পান্ডার ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারিনি আসার পরও।

গাড়ি চালকের কথা অনুয়ায়ী পথের ওপর ভোরে বা সন্ধ্যার দিকে হরিণ ওঠে আসে। একটু পরেই মোটামুটি মাঝ রাস্তায় বসে ভোজে ব্যস্ত দুই জোড়া বানরের দেখা মিলল। আমাদের দেখে কেবল এক পাশে সরে পড়ল। ওয়াফিকা এদের দেখে, খোলা জানালা পথে মুখ বের করে, চিৎকার জুড়ে দিল। বানরের দল নতুন পাগলের আমদানিতে একটু অবাকই হলো মনে হয়!

পাহাড়ি শহরের দেখা
দুই পাশে পাহাড়, অরণ্যের মাঝ দিয়ে গাড়ি যখন ছুটছিল তখন মনে হচ্ছিল আহ এই পথ যদি শেষ না হতো! কোনো গন্তব্যে পৌঁছার চেয়ে পথের সৌন্দর্যটা কখনোই কম আনন্দদায়ক নয় আমার কাছে। একটু পর গাড়িটা  যখন বাঁক নিচ্ছে আশ্চর্য একটা জিনিস খেয়াল করলাম। অনেক দূরে উঁচু পাহাড়ের গায়ে অনেকই বাড়ি ঘর। যেন পাহাড়ের বুকে কোনো শহর। চালককে জিজ্ঞেস করে যে উত্তর পেলাম তাতে চমকালাম, ওটাই সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক। একটু পর দূরের আরেক পাহাড়রাজ্যে বাড়ি-ঘর দেখিয়ে নেপালি লোকটা বলল, ওটা কালিম্পং। এরপর আমার চোখ একবার যায় গ্যাংটকের দিকে, আরেকবার কালিম্পংয়ের দিকে।

পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে তিস্তাতিস্তায় মুগ্ধ
পথের চমক এখানেই শেষ হলো না, নেপালি চালক, জানাল সামনে একটা ভিউ পয়েন্ট আছে। ওখান থেকে তিস্তাকে দেখায় অপরূপ! আমরা খুশি মনে নেমে পড়লাম। ডান পাশে পাইনের জঙ্গল। ভিউ পয়েন্টটা একটু উঁচুতে। শান বাধানো এক জায়গা। চারপাশে কয়েকটা দোকান। চা, বিস্কুট, চকলেট এমনকি আশপাশের বাগান থেকে তুলে আনা কমলাও আছে। এক কাপ কফি হাতে এসে দাঁড়ালাম শান বাধানো জায়গাটির কিনারে। সঙ্গে সঙ্গে একটা ধাক্কা খেলাম, এতটাই যে আরেকটু হলে হাত থেকে কাপই পড়ে যেত, বুনো সৌন্দর্যের ধাক্কা।

সবুজ গাছপালায় ঢাকা উঁচু উঁচু পাহাড়, মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে তিস্তা। কোথাও কোথাও পাহাড়ি নদীর পাড়ে চিকন বালুর রেখা, কোথাও আবার জঙ্গলের মধ্যে ছোট্ট একটা বালিয়াড়ির মতো দেখা যাচ্ছে। ভাবছিলাম ইস যদি ওখানে, ওই জল-পাহাড়ের রাজ্যে কতকটা সময় কাটানো যেত! যেন সম্মোহিত এক মানুষ আমি, চোখ সরাতে পারছিলাম না। তারপর অনিচ্ছা সত্ত্বেও আবার চেপে বসলাম গাড়িতে। আমাদের গোমড়ামুখো কিন্তু ভালোমানুষ চালক এই পর্যায়ে দিল নতুন তথ্য পাহাড়ি নদী তিস্তায় আছে র‌্যাফটিং করার ব্যবস্থা।

কালিম্পংয়ের দেখার মতো জায়গার অভাব নেইকালিম্পংয়ের সীমানায়
এক সময় নিচে নেমে এলো গাড়ি, তারপর আবার উঠতে শুরু করল, কালিম্পংয়ের দিকে। এদিকটায়ও পথ অনেকই সুন্দর। এক পাশে রাস্তার পরেই পাহাড়, অন্য পাশে ঢালু হয়ে নেমে গেছে জমি, দূরে পাহাড়ের রেখা। আমাদের পাশ কাটিয়ে টুরিস্ট মিনি বাস গেল, জানলাম কালিম্পং-শিলিগুড়ি রোডে চলে ওগুলো। এক সময় ডানে একটা-দুটো বাড়ি-ঘর, হোটেল দেখা যেতে লাগল। বুঝলাম কালিম্পংয়ের সীমানায় চলে এসেছি।

কালিম্পংয়ের বেশি হোটেল-মোটেল বাজারের ধারে, জায়গাটি বেশ ঘিঞ্জি। একটু খুঁজে-পেতে এখানেই একটা হোটেল ঠিক করে ফেলি। ভাড়া ১৮০০ রুপি। নিচে বার থাকায় কড়া একটা গন্ধ সব সময় মাথা ধরিয়ে তুলত আমার। তবে অন্যদের তেমন হেলদোল দেখিনি। এখানে কালিম্পংয়ের আশপাশে বেশ কয়েকটি দ্রষ্টব্য স্থান দেখার জন্য গাড়ি ঠিক করি। কালিম্পং থেকে গাড়িতে চেপে লাভা, ললেগাঁও, রিসপের মতো জায়গায় চলে যাওয়া যায় অনায়াসে। তবে আজ পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে শহরের ভেতরের কিংবা শহরলগোয়া কিছু স্পটের সঙ্গে। এগুলোর বেশিরভাগেই সশরীরে গিয়েছিলাম কালিম্পং ভ্রমণে।

হনুমানের ত্রিশ ফুট উচ্চতার স্ট্যাচুহনুমান মন্দির
হনুমান টেম্পল বা হনুমান মন্দির আমার আর ওয়াফিকার দুজনেরই দারুণ পছন্দ হয়। শহর থেকে খুব একটা দূরে নয়, একেবারে কাছেও নয়। আট কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পেরিয়ে তবে পৌঁছাই দেলো পাহাড়ের হনুমান টেম্পলের সামনে। কেউ কেউ চেনেন জায়গাটিকে হনুমান পিক নামে। সিঁড়ি ধরে সোজা পৌঁছে যাওয়া যায় বিশালদেহী হনুমান ভাস্কর্যের কাছে।

তবে সোজা পথটা না ধরে, বেশ কতকটা আঁকাবাঁকা কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া ঘুরপথটা ব্যবহার করলে বেশি আনন্দ পাবেন। এখান থেকে চারপাশের পাহাড়রাজ্যের অনেকটাই চোখে পড়ে। একেবারে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে দেখার চেয়ে একটু দূর থেকে দেখলেই হনুমানের ওপর সমীহ জাগে বেশি। ২০০৪ সালে উদ্বোধন হওয়া মূর্তিটির উচ্চতা ত্রিশ ফুট। 

দুর্গা মন্দিরের সুদৃশ্য ঘণ্টাদুর্গা মন্দির
হনুমান টেম্পলের কাছেই দুর্গা মন্দির। কাজেই দেখার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। সব ধরনের পর্যটকই জায়গাটিতে একবার ঢুঁ মেরে যান। কিছুক্ষণ সময় কাটানোর এর জন্য তুলনা নেই। চারপাশে গাছপালা লাগিয়ে বাগানের মতো করা হয়েছে, সুদৃশ্য  একটা ঘণ্টা আছে, আমরা সবাই ওটা বাজালাম, এমনকি ওয়াফিকাকেও উঁচু করে ধরতে হলো। এখান থেকে চারপাশের পাহাড়রাজ্যের অসাধারণ দৃশ্য চোখে পড়ে। 

দেলো পার্ক
যাওয়ার পথটা অনেকই সুন্দর। দেলো হিল কালিম্পং শহরের সবচেয়ে উচ্চতম পয়েন্ট। এটি এখানকার সবচেয়ে মশহুর পর্যটনকেন্দ্রগুলোর একটি। পরিষ্কার দিনে হিমালয় পর্বতমালা, আশপাশের রাজ্য এবং রেল্লি ও তিস্তা উপত্যকার গ্রামগুলোর চমৎকার দৃশ্য উপভোগের সুযোগ পাবেন এখান থেকে। এখানে নানা ধরনের রাইডের ব্যবস্থা আছে। এর মধ্যে বিখ্যাত প্যারা গ্লাইডিং।

পাইন ভিউ নার্সারির ক্যাকটাস রাজ্যেপাইন ভিউ নার্সারি
আতিশা রোডের এই নার্সারিটি উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় পাওয়া যাওয়া হরেক জাতের ক্যাকটাসে ভরপুর। একসঙ্গে এত জাতের কাটার রাজাদের আর কোথাও দেখিনি। কিছুটা সময় কাটিয়েছিলাম এই নার্সারিতে। ওয়াফিকা তো কোনোভাবেই নার্সারি ছেড়ে আসতে রাজি হচ্ছিল না।

কালিম্পংয়ের অন্যতম দর্শনীয় জায়গা মঙ্গলধামমঙ্গলধাম
মঙ্গলধামটাও ঘুরে আসতে ভুলবেন না। মন্দিরটির নির্মাণশৈলী চোখে পড়ার মতো। দুই একর জায়গা নিয়ে মন্দিরটি, ঢোকার মুখেই বাহারি সব বৃক্ষ দেখে মনটা খুশি হয়ে উঠেছিল। ওপরের তলায় মন্দিরের প্রার্থনার জায়গা।

থংসা গুম্ফা
মঙ্গলধামের কাছেই থংসা গুম্ফা। কালিম্পংয়ের সবচেয়ে পুরোনো বৌদ্ধ মন্দির এটি। ভুটান গুম্ফা নামে পরিচিত মনাস্ট্রিটি ১৬৯২ সালে ভুটানের রাজার সরাসরি তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়। পরে কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উনিশ শতকে নতুন করে তৈরি করা হয়।

আর্মি গলফ কোর্সআর্মি গলফ কোর্স
বেশ কতকটা জঙ্গল, পাহাড়কে সঙ্গী করে এগোতে হয় বলে আবার খুব পছন্দ হয়েছিল আর্মি গলফ কোর্সটা। পাহাড়ের ওপর ৯ গর্তের গলফ মাঠটা। ক্লাবের রেস্তোরাঁটি বনেদি, তবে খাবার-দাবারের দাম চড়া। এখানে বসে অনেকটা সময় গলফারদের মনের আনন্দে খেলে বেড়াতে দেখেছি মাঠে।

লেপচা জাদুঘর
মূল শহর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরত্বে লেপচা মিউজিয়ামের অবস্থান। এটি একই সঙ্গে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও। স্থানীয়দের ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা পেতে জায়গাটিতে ভ্রমণ জরুরি। স্থানীয় বাদ্যযন্ত্র, পোশাকসহ নানা সামগ্রী আপনাকে লেপচাদের জীবন সম্পর্কে ধারণা পেতে সাহায্য করবে। 

মরগান’স হাউস
এখন ওয়েস্ট বেঙ্গল টুরিস্ট ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের আওতাধীন পর্যটন বাংলোটি ব্রিটিশ আমলের পুরোনো এক বাংলো। এর নির্মাণশৈলী আপনাকে আকৃষ্ট করবে। তেমনি প্রকৃতিপ্রেমিক হলে ভেতরের নানা জাতের গাছপালা আর পাখিও টানবে। উত্তম কুমার, কিশোর কুমারের মতো মানুষেরা এখানে থেকেছিলেন। শুনে অবাক হবেন ভুতুড়ে হিসেবেও নাম আছে এর।

ব্রিটিশ আমলে তৈরি মরগান’স হাউসখাওয়া-দাওয়া ও অন্যান্য
কালিম্পংয়ে খাওয়া নিয়ে আমার একটু ঝামেলা হয়েছে। পুনম অবশ্য ওদের থালিতে বেশ মানিয়ে নিয়েছিল। আমার ওদের ভাতটা খুব শক্ত লেগেছে। তবে রাস্তার ধারে এক দোকানে মমোটা ভালো জমেছিল।  রাতে বাজারের পাশের একটা পথ ধরে হেঁটেছি অনেকটা, তখন গা কেমন ছম ছম করেছে নির্জনতায়, এখান থেকেই সবুজ পাহাড়গুলোকে দিনে ভারি সুন্দর লেগেছিল।

এ ছাড়াও কালিম্পংয়ে পাবেন আরও অনেক গুম্ফা, জাদুঘর ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা বাজারের কাছে একটা হোটেলে ওঠায় কিছু সুবিধা পেয়েছি সত্যি, তবে আমি বলব আপনারা একটু নীরব এলাকায় কোনো হোটেল কিংবা হোম স্টেতে উঠবেন, যেখান থেকে পাহাড়রাজ্য এমনকি কাঞ্চনজঙ্ঘার ভালো ভিউ পাওয়া যায়। অবশ্য দুনিয়ার তৃতীয় উচ্চতম পাহাড়ের দেখা পেতেই হবে তা নয়, এ ছাড়াও কালিম্পংয়ের সবুজ, কখনো বরফে ঢাকা পাহাড়, বনাঞ্চল অনেকই সুন্দর। কালিম্পং থেকে গিয়েছিলাম লাভা। সেখানকার গল্প জমা থাকুক অন্য কোনো দিনের জন্য। 

কীভাবে যাবেন
ভারত যাওয়ার জন্য ভিসাটা করে নিতে হবে শুরুতে। বাসে গেলে চেংড়াবান্দা (বাংলাদেশ অংশে বুড়িমারী) হয়ে শিলিগুড়ি যাবেন। এ ছাড়া ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেসে করে চলে যেতে পারবেন নিউ জলপাইগুড়ি। জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে জিপ বা বাসে চলে যেতে পারবেন কালিম্পং। সেখান থেকে এক দিনের জন্য গাড়ি ভাড়া করে এই জায়গাগুলি ঘুরে আসতে পারবেন অনায়াসে।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল ট্রায়াঙ্গল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অনুষ্ঠিত হলো দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৬
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন। আর আয়োজনে ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন। আর আয়োজনে ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। ছবি: সংগৃহীত

সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।

গতকাল ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে নামের এই ম্যারাথনটি। ‘এক শহর, এক দৌড়, এক ইতিহাস’ স্লোগানে আয়োজিত এ আন্তর্জাতিক রোড রেসে অংশ নেন হাজারো দৌড়বিদ। এদের মধ্যে ছিলেন দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ রানার ও শৌখিন অ্যাথলেটরা।

৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত
৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার হাতিরঝিল অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে ৩০ কিলোমিটার ক্যাটাগির এ ম্যারাথনের উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়া ১৫ এবং ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেসের উদ্বোধন হয় ভোর ৫টা। অংশগ্রহণকারী দৌড়বিদেরা হাতিরঝিলের চারপাশে বিস্তৃত একটি চ্যালেঞ্জিং ও মনোরম ট্র্যাকে তাঁদের দৌড় সম্পন্ন করেন।

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ ইভেন্টে অন্তর্ভুক্ত ছিল চারটি প্রতিযোগিতা ক্যাটাগরি। এগুলো হলো,

  • ৩০ কিলোমিটার রান
  • ১৫ কিলোমিটার রান
  • ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার রান
  • ১ কিলোমিটার কিডস রান

৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মামুন আহম্মেদ। দৌড়ের পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন হামিদা আক্তার জেবা। তিনি শেষ করতে সময় নিয়েছে ২ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।

এদিকে ১৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন পলাশ শেখ। এ পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ৫৩ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাজিয়া হেপ্পি। তিনি দৌড় শেষ করতে সময় নেন ১ ঘণ্টা ২১ মিনিট ৭ সেকেন্ড।

ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারীদের একজন। ছবি: সংগৃহীত
ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারীদের একজন। ছবি: সংগৃহীত

৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মোস্তাক আহমেদ আভিন। দৌড় শেষ করতে তিনি সময় নেন ২৬ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাবরিনা আক্তার স্বর্ণা। তিনি ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৌড় শেষ করতে সময় নিয়েছেন ৪৩ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।

এ ছাড়া এক কিলোমিটার ওভারল চ্যাম্পিয়ন হয় সাইফান ওময়ের।

দৌড়বিদদের সুবিধার্থে ইভেন্ট এরিয়ায় স্থাপন করা হয়েছিল মেডিকেল সাপোর্ট সিস্টেম, একাধিক হাইড্রেশন ও কুলিং জোন, লাইভ টাইমিং সুবিধা। ইভেন্ট নিরাপদ করতে ছিল শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ইভেন্টে কাজ করেন শতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিবিড় সহযোগিতায় ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা ছিল অত্যন্ত সমন্বিত।

ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারী তরুণদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত
ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারী তরুণদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে ম্যারাথন রেস ডিরেক্টর মো. আল-আমীন বলেন, ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে শুধু একটি রেস নয়, এটি একটি সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের আন্দোলন। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, দৌড়ের পাশাপাশি আমরা চাই ঢাকাকে একটি প্রাণবন্ত ও ইতিবাচক শহরে রূপান্তরিত করতে।’

আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন, বিশাল অংশগ্রহণ, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ আয়োজন, সব মিলিয়ে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে আজ বাংলাদেশের দৌড় ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মানসিক সমস্যার কারণে চুলকানি হলে কী করবেন

ফারিয়া রহমান খান 
দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপে থাকলে শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। ফলে সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হতে পারে। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস
দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপে থাকলে শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। ফলে সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হতে পারে। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস

আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।

অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে হওয়া ‘সোমাটিক সিম্পটম’ বা শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাংজাইটি ইচিং বা সাইকোজেনিক চুলকানি। উদ্বিগ্নতার তীব্রতা বেশি হলে করটিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এর কারণে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি সেরোটোনিন বা ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতার ফলেও অনেক সময় চুলকানি শুরু হয়। এই সমস্যা সাধারণত মাথার তালু, মুখ বা পিঠের উপরিভাগে বেশি দেখা যায়। তাই মানসিক চাপের কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসকের সহায়তা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা ছাড়া মেডিটেশন বা ইয়োগা করা যেতে পারে; পাশাপাশি চুলকানি কমাতে ভালো মানের ময়শ্চরাইজার ব্যবহার করতে হবে, পর্যাপ্ত পানি পান করাসহ অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানি দিয়ে গোসল এড়াতে হবে। ডা. তাহরিয়াত আহমেদ শরীফ, সহকারী রেজিস্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা

মানসিক চাপের কারণে চুলকানি কেন হয়

উদ্বেগ ও চুলকানি আপাতদৃষ্টে সম্পর্কহীন মনে হলেও এই দুটি একে অপরের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে জড়িত। মানসিক চাপের প্রভাবে শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যেগুলোর ফলে চুলকানি হয়। যেমন—

স্ট্রেস হাইভস: মানসিক চাপের কারণে অনেক সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ফলে শরীরে চুলকানিযুক্ত ফুসকুড়ি দেখা দেয়।

ঘামাচি বা র‍্যাশ: উদ্বেগের ফলে ঘাম বেড়ে যায়। ফলে শরীরে ঘামাচি বা র‍্যাশ দেখা দেয়। এগুলো খুবই চুলকায় এবং ২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

বিদ্যমান রোগ বাড়িয়ে দেওয়া: যাদের আগে থেকে একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যা আছে, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ তাদের এই রোগগুলো আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়।

চুলকানির তীব্রতা বৃদ্ধি: মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সামান্য চুলকানির তীব্রতাও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়, যা রোগীর কাছে অসহনীয় মনে হতে পারে।

অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায়

অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমে মানসিক চাপের কারণ বের করে তার সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে। সেগুলো হলো—

  • পরিষ্কার থাকুন। পোশাক, বাড়িঘর ও চারপাশ সব সময় পরিষ্কার রাখুন। চুলকানি থেকে সংক্রমণ কমাতে সব সময় নখ ছোট করে কেটে রাখুন।
  • চুলকানির জায়গায় ক্যালামাইন লোশন বা ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শে কর্টিকোস্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করুন। এতে আরাম পাওয়া যায়।
  • রুক্ষ পোশাকের বদলে সুতির নরম পোশাক পরুন। অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে গোসল করবেন না এবং সূর্যের তাপ এড়িয়ে চলুন।
  • ত্বক আর্দ্র রাখতে নিয়মিত সুগন্ধিবিহীন ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। তা ছাড়া ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা বাড়াতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন।
  • মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম, ধ্যান ও যোগব্যায়াম করুন।
  • সুষম খাদ্য খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম ও নিয়মিত শরীর চর্চা মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। নিয়মিত এগুলো করার চেষ্টা করুন।

কীভাবে অ্যাংজাইটি ইচিং নির্ণয় করা হয়

প্রথমে চিকিৎসক চুলকানির শারীরিক কারণ; যেমন পোকামাকড়ের কামড়, ত্বকের শুষ্কতা, একজিমা বা অ্যালার্জি আছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়। তারপর ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া বা থাইরয়েডের মতো রোগগুলোও খতিয়ে দেখা হয়। সঠিক সিদ্ধান্তে আসার জন্য রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যসহ সম্পূর্ণ রোগের সব তথ্য চিকিৎসককে জানাতে হবে। এর ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসক নিশ্চিত হবেন, চুলকানি মানসিক চাপের জন্য হচ্ছে, নাকি অন্য কোনো কারণে। মানসিক চাপের জন্য চুলকানি হচ্ছে নিশ্চিত হলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসক উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন

কারণ ছাড়া অতিরিক্ত চুলকানি অনেক সময় কোনো অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। মূল কারণ জানা এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অ্যাংজাইটি ইচিং যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করে, ত্বকে সংক্রমণ বা গুরুতর ক্ষতি করে বা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘরোয়া চিকিৎসায়ও না কমে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া চুলকানির সঙ্গে জ্বর, রাতে ঘাম হওয়া বা অস্বাভাবিক হারে ওজন কমার মতো লক্ষণ থাকলেও দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মনে রাখবেন, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমেই অ্যাংজাইটি ইচিংয়ের মতো সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।

সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিলাসিতার স্বাদে মোড়া পৃথিবীর সবচেয়ে দামি খাবার

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৫
সামুদ্রিক খাবারের মুকুট হলো অ্যালমাস ক্যাভিয়ার। ছবি: পেক্সেলস
সামুদ্রিক খাবারের মুকুট হলো অ্যালমাস ক্যাভিয়ার। ছবি: পেক্সেলস

বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে। এই খাবারগুলো কেবল খাদ্য নয় বরং শিল্পের এক একটি অংশ হয়ে উঠেছে। আর তাই এরা তাদের ক্রেতাদের কাছে ক্ষমতা, প্রাচুর্য এবং এক বিশেষ জীবনযাত্রার প্রতীক।

মাটির নিচের অমূল্য রত্ন এবং মসলার রাজা

সবচেয়ে দামি খাবারের তালিকায় প্রথমে আসে সেই মাটির নিচের রহস্য। যা সোনার চেয়েও মূল্যবান। ইতালির পিডমন্ট অঞ্চলের স্থানীয় সাদা ট্রাফল এমনই এক ছত্রাক, যা অত্যন্ত দুর্লভ ও ব্যয়বহুল। একবার চীনের ম্যাকাও-এর এক ক্যাসিনো মালিক প্রায় দেড় কেজি ওজনের একটি ট্রাফল ৩,৩০, ০০০ ডলারে কিনেছিলেন। টাকায় হিসাব করলে যার দাম হয় ৪ কোটি ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪০০ টাকা। অন্যদিকে, মসলার জগতে রাজা হলো জাফরান। যাকে ডাকা হয় ’লাল সোনা’ নামে। এক কেজি জাফরান তৈরি করতে হাজার হাজার ফুল লাগে। এ জন্য এর দাম পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মসলার স্থানে নিয়ে গেছে। ফরাসি দ্বীপ নুয়ারমুতিয়ে-তে জন্মানো লা বোনোটে আলুর ক্ষেত্রেও সেই বিরলতা দেখা যায়। বিশেষ পরিবেশে ও শৈবালের কারণে এদের প্রতি কেজির দাম প্রায় ৬০০ ডলার বা ৭৩,১৭৮ টাকা।

সমুদ্র ও মাংসের জগতের মহার্ঘ উপহার

মাংস এবং সামুদ্রিক খাবারের জগতেও রয়েছে মহাযজ্ঞের ছোঁয়া। জাপানের ওয়াগিউ বিফ কেবল সুস্বাদুই নয়, এর পেছনের প্রক্রিয়াটিও রাজকীয়। এই গরুগুলোকে বিশেষ খাবার দেওয়া হয়। এমনকি প্রতিদিন মালিশও করা হয়। যার ফলস্বরূপ এর ১০০ গ্রাম মাংসের দাম প্রায় ৫০ ডলার। অর্থাৎ ৬০৯৯ টাকা। আরও একধাপ এগিয়ে, ২০১৯ সালে জাপানে একটি স্নো ক্র্যাব। যা নিলামে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৪৬,০০০ ডলারে। তবে সামুদ্রিক খাবারের মুকুট হলো অ্যালমাস ক্যাভিয়ার। এই বিরল বেলুগা ক্যাভিয়ার প্রতি কেজি ৩৪,৫০০ ডলারে বিক্রি হয়ে থাকে। যার বাংলাদেশি মূল্য দাঁড়ায় ৪২,০৮৩১০ টাকা। যা সত্যিকারের বিলাসিতার প্রতিচ্ছবি। অন্যদিকে, স্পেনের ঐতিহ্যবাহী ইবেরিকো হ্যাম-এর এক পা বা লেগ ৪,৫০০ ডলারের মতো দামে বিক্রি হওয়ার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।

মসলার জগতে রাজা হলো জাফরান। যাকে ডাকা হয় ’লাল সোনা’ নামে। ছবি: পেক্সেলস
মসলার জগতে রাজা হলো জাফরান। যাকে ডাকা হয় ’লাল সোনা’ নামে। ছবি: পেক্সেলস

সাধারণ খাবারে অসাধারণ মূল্য সংযোজন

রেস্টুরেন্টে গেলে ৮০০ টাকা থাকে শুরু করে ৩০০০ টাকায় পিৎজা পাওয়া যায়। তবে ১২,০০০ ডলার বা ১,৪৬৩, ৭৬০ টাকার পিৎজা কখনো শুনেছেন? আপনি না শুনে থাকলেও পৃথিবীতে তা আছে। পিৎজা নির্মাতা রেনাটো ভায়োলা তৈরি করেছিলেন লিউস XIII পিৎজা। যার উপাদানগুলোর মধ্যে ছিল তিন ধরনের ক্যাভিয়ার। আবার স্কটল্যান্ডের ডোমিনিকো ক্রলা-এর তৈরি পিৎজা রয়্যাল ০০৭ বিকোয় ৪,২০০ ডলারে। যেখানে কগনাক-এ ম্যারিনেট করা লবস্টার ও শ্যাম্পেনে ভেজানো ক্যাভিয়ার ব্যবহার করা হয়েছিল। মেক্সিকোর গ্র্যান্ড ভেলাস রিসোর্টে পাওয়া গ্র্যান্ড ভেলাস লস কাবোস টাকো। যার মূল্য ২৫,০০০ ডলার, যেখানে ছিল কোবে বিফ এবং সোনা-মিশ্রিত টর্টিলা। এমনকি নিউ ইয়র্কের একটি সাধারণ গ্রিলড চিজ স্যান্ডউইচও যখন শ্যাম্পেনে ভেজানো রুটি আর সোনার ফ্লেক্সের সঙ্গে আসে, তখন সেই কুইন্টেসেনশিয়াল গ্রিলড চিজ-এর দাম দাঁড়ায় ২১৪ ডলার।

ডেজার্ট, পানীয় এবং কফি জগতের বিস্ময়

মিষ্টি এবং পানীয়ের ক্ষেত্রেও বিলাসিতা তার ছাপ ফেলেছে। পেস্ট্রি শেফ জেওং হং-ইয়ংটো এক মাস সময় নিয়ে একটি ক্রিসমাস কেক তৈরি করেছিলেন, যাতে ছিল ২২৩টি হিরা, আর এর দাম ছিল অবিশ্বাস্য ১.৭ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, জাপানি ফলগুলোর মধ্যেও রয়েছে রাজকীয়তা। একটি ডেনসুকে ওয়াটারমেলন নিলামে ৬,১০০ ডলারে বিক্রি হয়েছিল এবং দুটি ইউবারি কিং মেলন ৪৫,০০০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। পানীয়ের ক্ষেত্রে, ১৯৫২ সালের বিরল টুলিবার্ডিন হুইস্কির একটি বোতলের দাম ৪১,০০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছিল। তবে প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালের ফল হলো কপি লুয়াক কফি। সিভেট ক্যাট বা গন্ধগোকুলের হজম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি এই কফি প্রতি কেজি প্রায় ৭০০ ডলারে বিক্রি হয়।

সূত্র: স্টার্স ইনসাইডার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০২৬ সালের জন্য এয়ারবিএনবি-এর পূর্বাভাস

ফিচার ডেস্ক
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ নিয়ে আসছে। আর এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে সাহায্য করার জন্য এয়ারবিএনবি প্রকাশ করেছে ২০২৬ সালের জন্য তাদের ভ্রমণ প্রবণতা পূর্বাভাস।

এই হোম-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আগামী বছর ভ্রমণকারীরা তাদের ছুটি থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে চাইবেন। যা হবে অভিজ্ঞতার কেন্দ্রিক। তাদের রিপোর্টে বেশ কয়েকটি মূল বিষয় উঠে এসেছে। যা আপনাকেও বিশ্ব ভ্রমণের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করতে পারে। এখানে উল্লিখিত পূর্বাভাসগুলো ইঙ্গিত দেয় যে ২০২৬ সালে ভ্রমণ হবে আরও সংক্ষিপ্ত, প্রকৃতির কাছাকাছি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভরপুর এবং অবশ্যই খাদ্য-কেন্দ্রিক। আপনিও আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য এই নতুন ধারাগুলো বিবেচনা করতে পারেন।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

জেনও জিদের আলট্রা-শর্ট আন্তর্জাতিক ট্রিপ

২০২৬ সালে ভ্রমণের সংজ্ঞাই পাল্টে দিচ্ছে জেনারেশন জি বা জেন জি। বিশাল, বহু-সপ্তাহব্যাপী ভ্রমণের পরিকল্পনাকে ভুলে যান। জেন জি আমাদের শেখাচ্ছে কীভাবে ৪৮ ঘণ্টা বা তারও কম সময়ে যেকোনো স্থানে উড়ে যাওয়া যায়। এয়ারবিএনবি-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, জেন জি রা ’কুইক ট্রিপ’-এর ধারণাটি নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে। দীর্ঘ অবকাশের তুলনায় তাদের ১-২ দিনের আন্তর্জাতিক যাত্রা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টিকটক-এর ভাইরাল ডে-ট্রিপ ট্রেন্ড দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, এই তরুণ প্রজন্ম সংস্কৃতি-সমৃদ্ধ, উচ্চ-শক্তির অভিজ্ঞতার জন্য মহাদেশ পাড়ি দিচ্ছে। এয়ারবিএনবি বলছে, জেন জি রা কর্মবিরতি সর্বাধিক ভাবে ব্যবহার করার এক নতুন কৌশল দেখাচ্ছে। তারা শান্ত সমুদ্র সৈকতের বদলে বেছে নিচ্ছে সংগীত, নৃত্য, ঐতিহাসিক স্থান এবং খাঁটি খাবারে পূর্ণ প্রাণবন্ত শহুরে অভিজ্ঞতা। এই প্রজন্মের পছন্দের গন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বুয়েনোস আইরেস (আর্জেন্টিনা), বুসান (দক্ষিণ কোরিয়া), কো সামুই (থাইল্যান্ড), মারাকেশ (মরক্কো), মেক্সিকো সিটি (মেক্সিকো), সান জুয়ান (পুয়ের্তো রিকো) এবং স্টকহোম (সুইডেন)।

প্রকৃতির সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানো

প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করা ২০২৫ সালেও একটি জনপ্রিয় প্রবণতা ছিল। আর ২০২৬ সালে এটি আরও বেগবান হবে। এয়ারবিএনবি জানিয়েছে যে বিশ্বজুড়ে জাতীয় উদ্যানগুলির প্রতি অনুসন্ধান এবং আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি জাতীয় উদ্যানের কাছাকাছি থাকার জায়গা খোঁজার হার আগামী বছরের জন্য ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গ্রেট স্মোকি মাউন্টেনস, শেনানডোহ এবং গ্র্যান্ড টেটনের মতো মার্কিন পার্কগুলোর শতবর্ষ উদ্‌যাপনের কারণে সেগুলোর প্রতি আগ্রহ আরও বাড়ছে। বৈশ্বিক গন্তব্যগুলোর মধ্যে স্যামারিয়া জর্জ ন্যাশনাল পার্কের কাছাকাছি গ্রিসের ক্রিট, ভিয়েনা, ইন্ডিয়ার গোয়া এবং ইতালির সার্ডিনিয়ার মতো স্থানগুলো ভ্রমণকারীদের নজরে রয়েছে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

বড় ইভেন্টগুলোর টানে ভিড় জমছে

২০২৬ সালে ভ্রমণকারীরা বড় ধরনের সাংস্কৃতিক, খেলাধুলা এবং সংগীত অনুষ্ঠানগুলোকে ঘিরে তাদের যাত্রা পরিকল্পনা করছেন। এয়ারবিএনবি-এর তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরের জন্য শীর্ষ-অনুসন্ধান করা তারিখ এবং শহরগুলোর ৬৫ শতাংশই প্রধান ইভেন্টগুলোর সঙ্গে মিলে যায়। যেমন ফিফা বিশ্বকাপ, কার্নিভাল বা কোচেলা। ভ্রমণকারীরা এই অভিজ্ঞতাগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, যেন টিকিটই তাদের পাসপোর্টে পরিণত হচ্ছে। কার্নিভালের জন্য রিউ দে জানেরো, কোচেলার জন্য ইন্ডিয়ো, মার্ডি গ্রাস-এর জন্য নিউ অর্লিন্স এবং ২০২৬ অলিম্পিক উইন্টার গেমসের জন্য ইতালির মিলান শীর্ষ অনুসন্ধান তালিকায় রয়েছে।

একক ভ্রমণের পুনরুত্থান

একাকী ভ্রমণ বা সোল ট্রাভেল আবার তার কৃতিত্ব ফিরে পাচ্ছে। স্ব-আবিষ্কারের অনলাইন আলোচনায় উৎসাহিত হয়ে, একক ভ্রমণকারীরা এখন কেবল পুরোনো জায়গায় ফিরে যাচ্ছেন না বরং নতুন হটস্পট আবিষ্কার করছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার ইডিল্ডওয়াইল্ড, ডোমিনিকান রিপাবলিকের লা আলতাগ্রেসিয়া এবং নরওয়ের ট্রোমসো-এর মতো জায়গাগুলোতে অনুসন্ধান তিন অঙ্কের বৃদ্ধি দেখছে। অন্যান্য জনপ্রিয় একক ভ্রমণের গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে পর্তুগালের আলগার্ভ অঞ্চল, স্পেনের কোস্টা দেল সল, ফ্লোরিডা কিস এবং স্কটল্যান্ডের ইনভারনেস।

রন্ধনশিল্পের প্রতি আকর্ষণ

২০২৬ সালের জন্য খাবার ও পানীয় সম্পর্কিত ভ্রমণ যেন একেবারে আগুন ঝরাচ্ছে। যেখানে বেকারি ক্লাস এবং ওয়াইন অঞ্চলগুলো শীর্ষে রয়েছে। প্যারিসে ক্রোসঁ তৈরির ক্লাস বা টোকিওতে মোচি বানানো শেখার মতন হাতে-কলমে অভিজ্ঞতার দিকে ভ্রমণকারীরা ঝুঁকছেন। ভাইরাল হওয়া টিকটক ফুড ভিডিওগুলো বিশ্বজুড়ে বেকারি এবং রান্নার ক্লাসের প্রতি আগ্রহ তৈরি করছে। ওয়াইন-প্রেমীরা বেঙ্গালুরু (ভারত), ফিঙ্গার লেকস (নিউ ইয়র্ক), মেলবোর্ন (অস্ট্রেলিয়া)-এর মতো উঠতি ওয়াইন অঞ্চলগুলিতে যাচ্ছেন। বেকারি-হটস্পটগুলোর মধ্যে ইস্তাম্বুল, লিসবন, প্যারিস, তাইপে এবং টোকিও বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

সূত্র: ট্রাভেল+লিজার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত