Ajker Patrika

সরকারি খামারে নিলাম: ছাগলের দামে ষাঁড়সহ ৩৭টি গরু বাগিয়ে নিল সিন্ডিকেট

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১১ জুন ২০২৪, ১৭: ৩৮
সরকারি খামারে নিলাম: ছাগলের দামে ষাঁড়সহ ৩৭টি গরু বাগিয়ে নিল সিন্ডিকেট

ষাঁড়টির ওজন ১২ মণ। খামারের কর্মচারী মহাসিন আলী ডাক ধরলেন। সরকারি ডাক ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা। ২০০ টাকা বাড়িয়ে ডাক ধরলেন তাজমুল। এরপর আরও ২০০ টাকা বাড়ালেন মেহেরাব। সবশেষ কালু আরও ২০০ বাড়িয়ে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬০০ টাকায় ষাঁড়টি কিনে নিলেন। কোরবানির হাটে এই ষাঁড়টির দাম অন্তত ৪ লাখ টাকা।

আজ সোমবার সকালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ী হাটে আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারে এভাবেই নিলামে পানির দরে গরু বিক্রি হয়েছে। ছোট আকারের কোনো কোনো গরু ৩০ হাজার টাকাতেও বিক্রি হয়েছে। কোরবানির বাজারে এ দামে একটি মোটাতাজা খাসিও পাওয়া যায় না।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট প্রতিবছরের মতো এবারও ছাগলের দামে সরকারি খামারের গরু কিনে নিয়েছে। নিলামে অংশ নিতে মোট ৩৫৭ জন ব্যাংক ড্রাফট (বিডি) জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু নিলামে ডাক ধরেছেন মাত্র পাঁচজন। অন্যরা নিলামে অংশ নেননি।

নিলাম চলাকালে দেখা গেছে, খামারের কর্মচারী যে সরকারি দর ঘোষণা করছেন, তার চেয়ে ৬০০ টাকা বেশি দরে প্রতিটি গরু বিক্রি হচ্ছে। নিলামের শর্ত ছিল, প্রতিবার ডাক ধরার সময় সরকারি মূল্যের চেয়ে ন্যূনতম ২০০ টাকা করে বেশি বলতে হবে। সে অনুযায়ী সিন্ডিকেটের সদস্যরা ২০০ টাকা করে বেশি ডেকেছেন। তিনজনে ২০০ করে মোট ৬০০ টাকা বাড়িয়ে গরু কিনে নিয়েছেন। প্রতিটি গরু নিলামে পরপর তিনজন ডাকার পর আর কেউ দর বলেননি। বাধ্য হয়ে ঘোষিত সরকারি দরের চেয়ে মাত্র ৬০০ টাকা বেশিতে গরু বিক্রি করে কর্তৃপক্ষ।

খামার কর্তৃপক্ষ এদিন ৪টি ষাঁড়, ২১টি এঁড়ে বাছুর, ১০টি গাভি ও ১৬টি বকনা বাছুর মিলে মোট ৫১টি গরু নিলামের জন্য তোলে। এর মধ্যে ৩৭টি গরু একই সিন্ডিকেট পানির দরে কিনে নেয়।

খামার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গরু কিনে দুপুরের পর একই স্থানে নিলামের মাধ্যমেই গরুগুলো বিক্রি করে এই সিন্ডিকেট। তাদের এ নিলামে সাধারণ মানুষ অংশ নিতে পারে। সিন্ডিকেটের কাছ থেকে বেশি দরে তাদের গরু কিনতে হয়।

খামার কর্তৃপক্ষের নিলামের মাধ্যমে খামার ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের দুই কর্মকর্তা দুটি এঁড়ে বাছুর কিনে নিয়েছেন। ১২টি বকনা বাছুর বিক্রি হয়নি।

নিলামের শুরুতেই ৪৭০ কেজি ওজনের একটি ষাঁড় আনা হয়। ষাঁড়টির সরকারি ডাক হাঁকা হয় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। প্রথমেই কালু ষাঁড়ের দর হাঁকেন ১ লাখ ২৫ হাজার ২০০। এরপর তাজমুল ১ লাখ ২৫ হাজার ৪০০ এবং শেষে মেহেরাব ১ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ টাকা দর হাঁকেন। এরপর আর কেউ ডাকেননি। এক মিনিটের মধ্যে মেহেরাবের দরের ওপর ১, ২, ৩ ঘোষণা দিয়ে তাঁর কাছে গরুটি বিক্রি করা হয়। এ সময় উপস্থিত সিন্ডিকেটের শতাধিক সদস্য হাততালি দিতে থাকে।

দ্বিতীয় লটে প্রায় একই ওজনের আরেকটি ষাঁড়ের সরকারি দর হাঁকা হয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এরপর সেই তাজমুল, মেহেরাব ও কালু ২০০ টাকা করে বাড়িয়ে ষাঁড়টির দর হাঁকেন। শেষে ১ লাখ ২০ হাজার ৬০০ টাকায় ষাঁড়টি কেনা হয় কালুর নামে। আরেকটি বড় ষাঁড়ের দর হাঁকা হয় ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। আবার সেই মেহেরাব, কালু ও তাজমুল ২০০ টাকা করে বাড়িয়ে দর হাঁকেন। ১ লাখ ২৮ হাজার ৬০০ টাকায় এ ষাঁড়টি কেনা হয় তাজমুলের নামে। মেহেরাব, কালু ও তাজমুলের বাইরে একইভাবে ২০০ টাকা করে দর বাড়িয়ে গরু কিনেছেন উৎসব ও লতিফ। এই পাঁচজনের বাইরে আর কেউ নিলামে অংশ নেননি।

নিলাম চলাকালে দেখা গেছে, কর্মকর্তাদের কাছে থাকা শিডিউলের খাতায় প্রতিটি গরুর ওজন এবং দর লেখা আছে। তবে যে দর লেখা আছে, তার চেয়ে ১ থেকে ২ হাজার টাকা করে বেশি ধরে সরকারি দর হাঁকা হয়। ৮৫ কেজি ওজনের একটি বকনার দর ছিল ২৩ হাজার ৩৭৫ টাকা। এটির দর হাঁকা হয় ২৫ হাজার। ১৩৩ কেজি ওজনের একটি এঁড়ের দর ছিল ৫৭ হাজার ৭৫০ টাকা। এটির দর হাঁকা হয় ৫৯ হাজার টাকা। ডাকে ৫৯ হাজার ৬০০ টাকায় এটি বিক্রি হয়।

শিডিউলের মূল্য অপেক্ষা বেশি দর হাঁকার বিষয়ে জানতে চাইলে খামারের উপপরিচালক ইসমাইল হক বলেন, জীবন্ত গরুর মূল্য ধরা হয়েছে প্রতি কেজি ২৭৫ টাকা। গরুর ওজন নেওয়া হয়েছে দুই মাস আগে। নিলামের প্রক্রিয়া শেষ করতে করতেই প্রায় দুই মাস চলে গেছে। এই সময়ের মধ্যে গরু খামারের খাবার খেয়েছে। একটু বড় হয়েছে। তাই শিডিউল অপেক্ষা এক–দুই হাজার টাকা বেশি দর ধরা হচ্ছে। এ টাকা সরকারি কোষাগারেই জমা হবে।

নিলামের সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন। সিন্ডিকেট নিয়ে জানতে চাইলে তিনি অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘খামার থেকে যখনই গরু নিলামে তোলা হয় তখনই সিন্ডিকেট করে এলাকার কিছু লোক গরু কিনে নেয়। পরে তারা সেই গরু খামারেই বিক্রি করে।’

ড. জুলফিকার বলেন, অন্য কেউ নিলামে অংশ না নিলে তাঁদের কিছু করার থাকে না। নিলাম বাতিল করলেও লাভ হবে না। যখন নিলাম হবে, তখনই সিন্ডিকেট হবে। তিনি বলেন, ‘৩৫৭ জন বিডি জমা দিয়েছেন নিলামে অংশ নিতে। কিন্তু পাঁচজনের বাইরে কেউ ডাকলেন না। এমন নয় যে কেউ কাউকে ডাকতে বাধা দিয়েছে। বাধা যেন দিতে না পারে তার জন্য পুলিশ রাখা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও কেউ ডাকেনি।’

এই নিলামের সিন্ডিকেটে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন জেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমন মণ্ডল। কথা বলার জন্য তাঁকে দুবার ফোন কল করা হলে তিনি ধরেননি। তৃতীয়বার কেটে দেন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যা, আটক ৩

বগুড়া প্রতিনিধি
ব্যবসায়ীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাচ্ছে দৃর্বৃত্তরা (ইনসেটে) নিহত পিন্টু আকন্দ। ছবি: সংগৃহীত
ব্যবসায়ীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাচ্ছে দৃর্বৃত্তরা (ইনসেটে) নিহত পিন্টু আকন্দ। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরে মাইক্রোবাসের মালিকের বুদ্ধিমত্তায় পুলিশ মাইক্রোবাসের চালককে আটক এবং লাশ উদ্ধার করেছে। নিহত ব্যক্তির নাম পিন্টু আকন্দ (৩৮)। তিনি দুপচাঁচিয়া বাজার এলাকায় লোটো শোরুমের ব্যবস্থাপক ছিলেন।

সোমবার রাত ১২টার দিকে আদমদীঘি থানার কোমারভোগ গ্রামের একটি রাস্তা থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করে পুলিশ। এ সময় গাড়িটির পেছনের সিট থেকে পিন্টু আকন্দের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর নাক ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে প্যাঁচানো ছিল। ঘটনাস্থল থেকে মাইক্রোবাসের চালক সানোয়ার হোসেনকে (৪০) আটক করা হয়।

পিন্টু আকন্দ নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার লৌহচড়া গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি চার বছর ধরে দুপচাঁচিয়া বাজার এলাকায় বসবাস করছিলেন এবং তাঁর শ্যালক বাবু ও ইলাহীর মালিকানাধীন লোটো শোরুমে ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন।

স্থানীয় লোকজন জানায়, সোমবার রাত সোয়া ৯টার দিকে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাস দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদ সড়কের খন্দকার মার্কেটের সামনে থামে। মাইক্রোবাস থেকে তিন-চার ব্যক্তি নেমে শোরুমে প্রবেশ করে কয়েক মিনিটের মধ্যেই পিন্টু আকন্দকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে তালোড়ার দিকে নিয়ে যান।

মাইক্রোবাসের মালিক মশিউর রহমান পান্না জানান, সোমবার বিকেলে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে রাজশাহীতে আসামি ধরতে যাওয়ার কথা বলে দুপচাঁচিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাঁর গাড়িটি ভাড়া নেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টার পর ডিবি পুলিশ পরিচয় দেওয়া পাঁচ-ছয়জন দুপচাঁচিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে মাইক্রোবাসে উঠে সান্তাহারের দিকে যান।

মশিউর রহমান বলেন, ‘গাড়িটি ভাড়া দেওয়ার পর থেকে জিপিএসের মাধ্যমে এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছিলাম এবং চালকের সঙ্গে নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রাখছিলাম। পরে গাড়িটি সান্তাহার থেকে আবার দুপচাঁচিয়ায় ফিরে এলে চালক জানায়, রাজশাহী যাওয়া বাতিল হয়েছে, তালোড়ায় আসামি ধরতে যাবে। এর আগে দুপচাঁচিয়া থানা থেকে দুই পুলিশ সদস্য গাড়িতে উঠবেন বলেও জানায়।’

মশিউর রহমান পান্না আরও জানান, রাত ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাইক্রোবাসে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের ভিডিও দেখতে পান। এরপর জিপিএসের মাধ্যমে দেখতে পান, গাড়িটি তালোড়া হয়ে নন্দীগ্রাম, সিংড়ার কালীগঞ্জ হয়ে নওগাঁর রাণীনগর এলাকায় ঘুরে সান্তাহারে আসে এবং পরে আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রামে অবস্থান নেয়। এ সময় চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তিনি দুপচাঁচিয়া থানায় বিষয়টি জানান। পরে রাত ১১টার দিকে জিপিএসের মাধ্যমে গাড়িটি বন্ধ করে দেন।

এরপর সহকারী পুলিশ সুপার (আদমদীঘি সার্কেল) আসিফ হোসেনের নেতৃত্বে আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে আদমদীঘি থানার কোমারভোগ গ্রামমুখী সড়কে তোফাজ্জল হোসেনের বাড়ির সামনে থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করে। এ সময় চালককে আটক করা হয় এবং গাড়ি থেকে পিন্টু আকন্দের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার হোসেন বলেন, মাইক্রোবাসের চালকসহ তিনজনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুরো ঘটনা জানতে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে আগুনে পুড়ল ১০টি বসতঘর, সর্বস্ব হারালেন ভাড়াটিয়ারা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
আজ সকাল ৬টার দিকে শ্রীপুরের জৈনা বাজার এলাকার রবিকুল ইসলাম রবির মালিকানাধীন বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৬টার দিকে শ্রীপুরের জৈনা বাজার এলাকার রবিকুল ইসলাম রবির মালিকানাধীন বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে ১০টি বসতঘর। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের জৈনা বাজার এলাকার রবিকুল ইসলাম রবির মালিকানাধীন বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোরে হঠাৎ একটি তালাবদ্ধ কক্ষে আগুন দেখতে পান এলাকাবাসী। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের আরও ৯টি ঘরে। এতে বাড়িতে বসবাসরত ভাড়াটিয়াদের ঘরের আসবাব, নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকারসহ প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান সামগ্রী সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়।

ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়া মোফাজ্জল হোসেন জানান, সবাই তখন ঘুমে ছিল। কিছু বোঝার আগেই সব শেষ হয়ে যায়। কোনো কিছুই রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মাওনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দুটি ইউনিট।

শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর নূরুল করিম জানান, প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। প্রাথমিকভাবে শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ তদন্ত শেষে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চালককে শ্বাসরোধ করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের চেষ্টা, পটিয়ায় জনতার হাতে যুবক আটক

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি  
অভিযুক্ত যুবক মো. হারুন ওরফে সাগর। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযুক্ত যুবক মো. হারুন ওরফে সাগর। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের পটিয়ায় যাত্রী সেজে চালককে শ্বাসরোধ করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে এক যুবককে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া বাইপাস সড়ক-সংলগ্ন ভাটিখাইন ইউনিয়নের বাকখালী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

আটক যুবকের নাম মো. হারুন ওরফে সাগর (৩০)। তিনি পটিয়া উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের পাঠানপাড়া এলাকার মো. সেলিমের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে আমির হোসেন গাড়িটি নিয়ে বের হন। বেলা ১টার দিকে পটিয়া পোস্ট অফিসের সামনে যাত্রী সেজে মো. হারুন অটোরিকশায় ওঠেন।

প্রথমে তিনি বাইপাস এলাকায় যাওয়ার কথা বললেও পরে সারা দিন ঘোরাঘুরির জন্য ৮০০ টাকা ভাড়া দেওয়ার কথা বলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে একটি নির্জন এলাকায় পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাগর পেছনের সিট থেকে চালকের গলায় কোমরের বেল্ট পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেন।

চালকের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ঘটনাস্থল থেকে সাগরকে অটোরিকশাসহ আটক করে। এ সময় উত্তেজিত জনতা তাঁকে মারধর করে। খবর পেয়ে পটিয়া থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে এবং অটোরিকশাটি জব্দ করে। আহত চালক ও আটক ব্যক্তিকে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনার পর অটোরিকশার মালিক শয়ন মজুমদার বাদী হয়ে সোমবার রাতে পটিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক বলেন, ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আটক ব্যক্তিকে আজ মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর পটিয়া উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের কেচিয়াপাড়া এলাকায় ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় এক রিকশাচালককে হত্যা করা হয়। নিহত ওই চালক গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সাদা মিয়ার ছেলে। ওই ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপির সেই নেতা হলেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি  
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে নেতা-কর্মী নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে যাচ্ছেন আব্দুর রউফ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে নেতা-কর্মী নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে যাচ্ছেন আব্দুর রউফ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামালপুর-১ (বকশীগঞ্জ-দেওয়ানগঞ্জ) আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুর রউফ তালুকদার। গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

এর আগে ১৩ ডিসেম্বর তিনি ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীমের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে দলটিতে যোগ দেন।

আব্দুর রউফ তালুকদার ১৭ বছর বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বাড়ি বকশীগঞ্জ পৌর শহরের মধ্যবাজার এলাকায়। তিনি চার মেয়াদে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক জনপ্রিয় থাকায় এলাকাবাসী দল-মতনির্বিশেষে অভিভাবক মেনে প্রবীণ এই নেতাকে বটগাছ উপাধিতে ভূষিত করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রউফ তালুকদার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আব্দুর রউফ ও তাঁর সমর্থকেরা আবদুল কাইয়ুমকে জামালপুর-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু আসনটিতে কেন্দ্রীয় বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাতকে দলীয় প্রার্থী করা হয়েছে।

পরে গত ১৯ নভেম্বর আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন আব্দুর রউফ তালুকদার। এর পর থেকে তাঁর সমর্থকেরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন। এর মধ্যে হঠাৎ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগদান করেন আব্দুর রউফ তালুকদার।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বকশীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মাওনালা আবদুল মজিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বটগাছ উপাধিতে ভূষিত আব্দুর রউফ তালুকদার ইসলামী আন্দোলনের মনোনয়ন পেয়েছেন।’

এ বিষয়ে আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনে যোগ দিয়েছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। আশা রাখি, আমরা বিজয়ী হব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত