রেজাউর রহিম

বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। অনেক দর-কষাকষির পর শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যসুবিধা (জিএসপি) ২০২৯ সাল পর্যন্ত বহাল রাখতে রাজি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এরপর ইইউভুক্ত দেশগুলো ও যুক্তরাজ্যে পণ্য রপ্তানি নির্বিঘ্ন রাখতে তাদের ‘জিএসপি প্লাস’ নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু এ নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তুতি এখনো দৃশ্যমান নয়। ব্যবসায়ী ও সরকারের মধ্যে সমন্বিত কোনো পরিকল্পনার কথাও জানা যাচ্ছে না।
স্বল্প ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য ২০১৫ সালে ‘স্পেশাল ইনসেনটিভ অ্যারেঞ্জমেন্ট ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য-সুবিধা চালু করে ইইউ। এটিই জিএসপি প্লাস হিসেবে পরিচিত। এটির আওতায় ইউরোপের বাজারে ট্যারিফ লাইনের ৬৬ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়। বর্তমানে মাত্র আটটি দেশ এই সুবিধা পায়। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এই সুবিধা পাচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য ইইউ এবং যুক্তরাজ্য। এসব বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে ২৭টি মানবাধিকার ও শ্রম অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতিমালা মানতে হবে। এসব নীতিমালার মধ্যে ১৫টি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) শ্রমমানের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ ছাড়া শ্রম আইন ও মানবাধিকার, সুশাসনের মতো কিছু জটিল বিষয়ও এর সঙ্গে জড়িত। যার সঙ্গে আবার আছে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও।
বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার ইইউভুক্ত দেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। ইইউতে বাংলাদেশ ‘এভরিথিং বাট নট আর্মস’ (ইবিএ) স্কিমের আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাবে। কিন্তু ইইউ ২০২৩ সালের মধ্যে নতুন জিএসপি প্লাস নীতি প্রণয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের জন্য ইবিএ সুবিধা অব্যাহত না থাকারও আশঙ্কা রয়েছে।
জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে অনেকগুলো শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে একটি হলো অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক। অর্থাৎ দেশের শীর্ষ সাতটি পণ্যের মোট রপ্তানিমূল্য জিএসপির আওতায় রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্যের ৭৫ শতাংশ হতে হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জিএসপির আওতায় রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্যের ৯৫ শতাংশ। জিএসপি প্লাস পাওয়ার ক্ষেত্রে এই একটি সূচকেই ইতিবাচক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো, পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে সুতা ও স্থানীয় উৎস থেকে প্রস্তুত বস্ত্র, বোতাম, জিপারের মতো এক্সেসরিজ এর সঙ্গে জড়িত। আমদানিকারক দেশের শর্ত অনুযায়ী, মোট পোশাক রপ্তানির ৮০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা দিয়ে তৈরি হতে হবে। জিএসপি প্লাসের ক্ষেত্রে ‘রুলস অব অরিজিনের’ ডাবল ট্রান্সফরমেশন শর্ত এটি। নিটওয়্যারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অবশ্য এ শর্ত পূরণ করছে। তবে ওভেন পোশাকের ক্ষেত্রে এই হার এখনো ৫০ শতাংশ।
অন্যান্য শর্তের মধ্যে অন্যতম, ইইউ থেকে এলডিসির যেসব দেশ জিএসপি সুবিধা পায়, তার মধ্যে ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি হিস্যা হলে ওই দেশ জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না। বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি বাজার ইউরোপ। ফলে সেখানে বাংলাদেশের হিস্যা বর্তমানে প্রায় ২৬ শতাংশ। তবে বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউয়ের রাষ্ট্রদূতেরা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে ছাড় দিতে রাজি হয়েছেন।
দেশের তৈরি পোশাকশিল্প মালিক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট রপ্তানিকৃত পোশাকের প্রায় ৬২ শতাংশ ও মোট রপ্তানির প্রায় ৫৬ শতাংশের গন্তব্য ইইউভুক্ত দেশ ও যুক্তরাজ্য। ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে চলমান শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা বন্ধ হলে তা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে দেখা দিতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে বাংলাদেশের উত্তরণ পরবর্তী সময়ে ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ‘রুলস অব অরিজিন’-এর ডাবল ট্রান্সফরমেশনের মতো কঠিন শর্তের মুখোমুখি হতে হবে এবং তা মোকাবিলায় ইইউয়ের দেশগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির দিকেও যেতে হবে।
এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ইউরোপের বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রস্তাবিত নতুন নীতিমালায় ‘ইমপোর্ট-শেয়ার ক্রাইটেরিয়া’ বাদ দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরাসরি উপকৃত হতে পারে। তিনি বলেন, জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কাজ চলছে। রপ্তানি বাজার ধরে রাখার জন্য এবং জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি ২০২৯ সালের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী মন্ত্রী।
শর্ত অনুযায়ী ওভেন পোশাকে ফ্যাব্রিক, এক্সেসরিজ আমদানিতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কিংবা আরও বেশি ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের সক্ষমতার বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিটওয়্যারের ক্ষেত্রে আমরা প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। অন্য ক্ষেত্রে তুলা থেকে উৎপাদিত সুতার পরিবর্তে সিনথেটিক ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
জিএসপি প্লাসের অন্যান্য শর্ত পূরণে উদ্যোগের বিষয়ে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সম্প্রতি সংগঠনের ‘অ্যাপারেলস ডিপ্লোমেসির’ অংশ হিসেবে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের বৈঠক হয়েছে। তাঁরা এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বর্তমানে জিএসপি সুবিধার ক্ষেত্রে ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি রপ্তানি হিস্যা হলে জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না-এ শর্ত শিথিল করতে সম্মত হয়েছেন। শিগগির ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত বিল পাস হবে বলে রাষ্ট্রদূতেরা জানিয়েছেন।
সেই সঙ্গে শ্রম অধিকার এবং কারখানাগুলোর কর্ম পরিবেশ নিয়ে সরকার ও উদ্যোক্তাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, মানবাধিকার ও সুশাসনের মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। এ বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই।
চার দশকের পোশাক খাত কেন এখনো স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা, কাপড় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় এক্সেসরিজের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেনি? এ ক্ষেত্রে কেন বিদেশ নির্ভর, বিশেষ করে রপ্তানি বাজারে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের ওপর নির্ভরশীল-এ প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সহসভাপতি বলেন, অনেক সময় বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে এসব আমদানি করতে হয়। তবে এসব ক্ষেত্রে অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল থেকে এলডিসি দেশে উত্তরণ অর্থহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জিএসপি প্লাসের শর্ত পূরণে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের ওপরেই জোর দিয়েছেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হকও।
‘জিএসপি প্লাস’-এর শর্তাবলি পূরণ করতে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান (আমদানি)। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ছয়টি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে বিষয়টিকে বেশ চ্যালেঞ্জিং বলেই মনে করছেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। যেখানে দেশের প্রায় ৮৯ শতাংশ শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং নিরাপত্তার জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
অবশ্য তৈরি পোশাক কারখানাসহ দেশের শিল্প কারখানায় শ্রম পরিবেশের উন্নতি ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা শুধু আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের চাপে নয়, এটা নিজেদের দেশের মানুষের স্বার্থেই করা প্রয়োজন। আর এ জন্য সরকারের নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ঝুঁকি এড়াতে রপ্তানিপণ্যে বৈচিত্র্য আনাটা জরুরি। পোশাক শিল্পে নির্ভরশীলতা কমিয়ে পাট, চামড়া, মাছ এবং অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানির দিকে নজর দিতে হবে। বাজার সম্প্রসারণ, বিশেষ করে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, চিলির পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বাজারের দিকে মনোযোগ দেওয়ার সময় হয়েছে। ইউরোপের আরক বড় বাজার রাশিয়ার দিকেও নজর দিতে হবে। শ্রম পরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতে ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে সক্রিয় করাও প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা।

বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। অনেক দর-কষাকষির পর শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যসুবিধা (জিএসপি) ২০২৯ সাল পর্যন্ত বহাল রাখতে রাজি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এরপর ইইউভুক্ত দেশগুলো ও যুক্তরাজ্যে পণ্য রপ্তানি নির্বিঘ্ন রাখতে তাদের ‘জিএসপি প্লাস’ নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু এ নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তুতি এখনো দৃশ্যমান নয়। ব্যবসায়ী ও সরকারের মধ্যে সমন্বিত কোনো পরিকল্পনার কথাও জানা যাচ্ছে না।
স্বল্প ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য ২০১৫ সালে ‘স্পেশাল ইনসেনটিভ অ্যারেঞ্জমেন্ট ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য-সুবিধা চালু করে ইইউ। এটিই জিএসপি প্লাস হিসেবে পরিচিত। এটির আওতায় ইউরোপের বাজারে ট্যারিফ লাইনের ৬৬ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়। বর্তমানে মাত্র আটটি দেশ এই সুবিধা পায়। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এই সুবিধা পাচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য ইইউ এবং যুক্তরাজ্য। এসব বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে ২৭টি মানবাধিকার ও শ্রম অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতিমালা মানতে হবে। এসব নীতিমালার মধ্যে ১৫টি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) শ্রমমানের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ ছাড়া শ্রম আইন ও মানবাধিকার, সুশাসনের মতো কিছু জটিল বিষয়ও এর সঙ্গে জড়িত। যার সঙ্গে আবার আছে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও।
বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার ইইউভুক্ত দেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। ইইউতে বাংলাদেশ ‘এভরিথিং বাট নট আর্মস’ (ইবিএ) স্কিমের আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাবে। কিন্তু ইইউ ২০২৩ সালের মধ্যে নতুন জিএসপি প্লাস নীতি প্রণয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের জন্য ইবিএ সুবিধা অব্যাহত না থাকারও আশঙ্কা রয়েছে।
জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে অনেকগুলো শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে একটি হলো অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক। অর্থাৎ দেশের শীর্ষ সাতটি পণ্যের মোট রপ্তানিমূল্য জিএসপির আওতায় রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্যের ৭৫ শতাংশ হতে হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জিএসপির আওতায় রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্যের ৯৫ শতাংশ। জিএসপি প্লাস পাওয়ার ক্ষেত্রে এই একটি সূচকেই ইতিবাচক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো, পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে সুতা ও স্থানীয় উৎস থেকে প্রস্তুত বস্ত্র, বোতাম, জিপারের মতো এক্সেসরিজ এর সঙ্গে জড়িত। আমদানিকারক দেশের শর্ত অনুযায়ী, মোট পোশাক রপ্তানির ৮০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা দিয়ে তৈরি হতে হবে। জিএসপি প্লাসের ক্ষেত্রে ‘রুলস অব অরিজিনের’ ডাবল ট্রান্সফরমেশন শর্ত এটি। নিটওয়্যারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অবশ্য এ শর্ত পূরণ করছে। তবে ওভেন পোশাকের ক্ষেত্রে এই হার এখনো ৫০ শতাংশ।
অন্যান্য শর্তের মধ্যে অন্যতম, ইইউ থেকে এলডিসির যেসব দেশ জিএসপি সুবিধা পায়, তার মধ্যে ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি হিস্যা হলে ওই দেশ জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না। বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি বাজার ইউরোপ। ফলে সেখানে বাংলাদেশের হিস্যা বর্তমানে প্রায় ২৬ শতাংশ। তবে বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউয়ের রাষ্ট্রদূতেরা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে ছাড় দিতে রাজি হয়েছেন।
দেশের তৈরি পোশাকশিল্প মালিক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট রপ্তানিকৃত পোশাকের প্রায় ৬২ শতাংশ ও মোট রপ্তানির প্রায় ৫৬ শতাংশের গন্তব্য ইইউভুক্ত দেশ ও যুক্তরাজ্য। ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে চলমান শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা বন্ধ হলে তা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে দেখা দিতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে বাংলাদেশের উত্তরণ পরবর্তী সময়ে ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ‘রুলস অব অরিজিন’-এর ডাবল ট্রান্সফরমেশনের মতো কঠিন শর্তের মুখোমুখি হতে হবে এবং তা মোকাবিলায় ইইউয়ের দেশগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির দিকেও যেতে হবে।
এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ইউরোপের বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রস্তাবিত নতুন নীতিমালায় ‘ইমপোর্ট-শেয়ার ক্রাইটেরিয়া’ বাদ দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরাসরি উপকৃত হতে পারে। তিনি বলেন, জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কাজ চলছে। রপ্তানি বাজার ধরে রাখার জন্য এবং জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি ২০২৯ সালের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী মন্ত্রী।
শর্ত অনুযায়ী ওভেন পোশাকে ফ্যাব্রিক, এক্সেসরিজ আমদানিতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কিংবা আরও বেশি ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের সক্ষমতার বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিটওয়্যারের ক্ষেত্রে আমরা প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। অন্য ক্ষেত্রে তুলা থেকে উৎপাদিত সুতার পরিবর্তে সিনথেটিক ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
জিএসপি প্লাসের অন্যান্য শর্ত পূরণে উদ্যোগের বিষয়ে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সম্প্রতি সংগঠনের ‘অ্যাপারেলস ডিপ্লোমেসির’ অংশ হিসেবে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের বৈঠক হয়েছে। তাঁরা এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বর্তমানে জিএসপি সুবিধার ক্ষেত্রে ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি রপ্তানি হিস্যা হলে জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না-এ শর্ত শিথিল করতে সম্মত হয়েছেন। শিগগির ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত বিল পাস হবে বলে রাষ্ট্রদূতেরা জানিয়েছেন।
সেই সঙ্গে শ্রম অধিকার এবং কারখানাগুলোর কর্ম পরিবেশ নিয়ে সরকার ও উদ্যোক্তাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, মানবাধিকার ও সুশাসনের মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। এ বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই।
চার দশকের পোশাক খাত কেন এখনো স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা, কাপড় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় এক্সেসরিজের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেনি? এ ক্ষেত্রে কেন বিদেশ নির্ভর, বিশেষ করে রপ্তানি বাজারে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের ওপর নির্ভরশীল-এ প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সহসভাপতি বলেন, অনেক সময় বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে এসব আমদানি করতে হয়। তবে এসব ক্ষেত্রে অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল থেকে এলডিসি দেশে উত্তরণ অর্থহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জিএসপি প্লাসের শর্ত পূরণে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের ওপরেই জোর দিয়েছেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হকও।
‘জিএসপি প্লাস’-এর শর্তাবলি পূরণ করতে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান (আমদানি)। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ছয়টি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে বিষয়টিকে বেশ চ্যালেঞ্জিং বলেই মনে করছেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। যেখানে দেশের প্রায় ৮৯ শতাংশ শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং নিরাপত্তার জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
অবশ্য তৈরি পোশাক কারখানাসহ দেশের শিল্প কারখানায় শ্রম পরিবেশের উন্নতি ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা শুধু আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের চাপে নয়, এটা নিজেদের দেশের মানুষের স্বার্থেই করা প্রয়োজন। আর এ জন্য সরকারের নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ঝুঁকি এড়াতে রপ্তানিপণ্যে বৈচিত্র্য আনাটা জরুরি। পোশাক শিল্পে নির্ভরশীলতা কমিয়ে পাট, চামড়া, মাছ এবং অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানির দিকে নজর দিতে হবে। বাজার সম্প্রসারণ, বিশেষ করে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, চিলির পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বাজারের দিকে মনোযোগ দেওয়ার সময় হয়েছে। ইউরোপের আরক বড় বাজার রাশিয়ার দিকেও নজর দিতে হবে। শ্রম পরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতে ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে সক্রিয় করাও প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা।
রেজাউর রহিম

বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। অনেক দর-কষাকষির পর শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যসুবিধা (জিএসপি) ২০২৯ সাল পর্যন্ত বহাল রাখতে রাজি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এরপর ইইউভুক্ত দেশগুলো ও যুক্তরাজ্যে পণ্য রপ্তানি নির্বিঘ্ন রাখতে তাদের ‘জিএসপি প্লাস’ নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু এ নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তুতি এখনো দৃশ্যমান নয়। ব্যবসায়ী ও সরকারের মধ্যে সমন্বিত কোনো পরিকল্পনার কথাও জানা যাচ্ছে না।
স্বল্প ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য ২০১৫ সালে ‘স্পেশাল ইনসেনটিভ অ্যারেঞ্জমেন্ট ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য-সুবিধা চালু করে ইইউ। এটিই জিএসপি প্লাস হিসেবে পরিচিত। এটির আওতায় ইউরোপের বাজারে ট্যারিফ লাইনের ৬৬ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়। বর্তমানে মাত্র আটটি দেশ এই সুবিধা পায়। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এই সুবিধা পাচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য ইইউ এবং যুক্তরাজ্য। এসব বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে ২৭টি মানবাধিকার ও শ্রম অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতিমালা মানতে হবে। এসব নীতিমালার মধ্যে ১৫টি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) শ্রমমানের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ ছাড়া শ্রম আইন ও মানবাধিকার, সুশাসনের মতো কিছু জটিল বিষয়ও এর সঙ্গে জড়িত। যার সঙ্গে আবার আছে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও।
বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার ইইউভুক্ত দেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। ইইউতে বাংলাদেশ ‘এভরিথিং বাট নট আর্মস’ (ইবিএ) স্কিমের আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাবে। কিন্তু ইইউ ২০২৩ সালের মধ্যে নতুন জিএসপি প্লাস নীতি প্রণয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের জন্য ইবিএ সুবিধা অব্যাহত না থাকারও আশঙ্কা রয়েছে।
জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে অনেকগুলো শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে একটি হলো অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক। অর্থাৎ দেশের শীর্ষ সাতটি পণ্যের মোট রপ্তানিমূল্য জিএসপির আওতায় রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্যের ৭৫ শতাংশ হতে হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জিএসপির আওতায় রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্যের ৯৫ শতাংশ। জিএসপি প্লাস পাওয়ার ক্ষেত্রে এই একটি সূচকেই ইতিবাচক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো, পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে সুতা ও স্থানীয় উৎস থেকে প্রস্তুত বস্ত্র, বোতাম, জিপারের মতো এক্সেসরিজ এর সঙ্গে জড়িত। আমদানিকারক দেশের শর্ত অনুযায়ী, মোট পোশাক রপ্তানির ৮০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা দিয়ে তৈরি হতে হবে। জিএসপি প্লাসের ক্ষেত্রে ‘রুলস অব অরিজিনের’ ডাবল ট্রান্সফরমেশন শর্ত এটি। নিটওয়্যারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অবশ্য এ শর্ত পূরণ করছে। তবে ওভেন পোশাকের ক্ষেত্রে এই হার এখনো ৫০ শতাংশ।
অন্যান্য শর্তের মধ্যে অন্যতম, ইইউ থেকে এলডিসির যেসব দেশ জিএসপি সুবিধা পায়, তার মধ্যে ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি হিস্যা হলে ওই দেশ জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না। বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি বাজার ইউরোপ। ফলে সেখানে বাংলাদেশের হিস্যা বর্তমানে প্রায় ২৬ শতাংশ। তবে বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউয়ের রাষ্ট্রদূতেরা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে ছাড় দিতে রাজি হয়েছেন।
দেশের তৈরি পোশাকশিল্প মালিক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট রপ্তানিকৃত পোশাকের প্রায় ৬২ শতাংশ ও মোট রপ্তানির প্রায় ৫৬ শতাংশের গন্তব্য ইইউভুক্ত দেশ ও যুক্তরাজ্য। ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে চলমান শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা বন্ধ হলে তা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে দেখা দিতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে বাংলাদেশের উত্তরণ পরবর্তী সময়ে ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ‘রুলস অব অরিজিন’-এর ডাবল ট্রান্সফরমেশনের মতো কঠিন শর্তের মুখোমুখি হতে হবে এবং তা মোকাবিলায় ইইউয়ের দেশগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির দিকেও যেতে হবে।
এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ইউরোপের বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রস্তাবিত নতুন নীতিমালায় ‘ইমপোর্ট-শেয়ার ক্রাইটেরিয়া’ বাদ দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরাসরি উপকৃত হতে পারে। তিনি বলেন, জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কাজ চলছে। রপ্তানি বাজার ধরে রাখার জন্য এবং জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি ২০২৯ সালের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী মন্ত্রী।
শর্ত অনুযায়ী ওভেন পোশাকে ফ্যাব্রিক, এক্সেসরিজ আমদানিতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কিংবা আরও বেশি ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের সক্ষমতার বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিটওয়্যারের ক্ষেত্রে আমরা প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। অন্য ক্ষেত্রে তুলা থেকে উৎপাদিত সুতার পরিবর্তে সিনথেটিক ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
জিএসপি প্লাসের অন্যান্য শর্ত পূরণে উদ্যোগের বিষয়ে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সম্প্রতি সংগঠনের ‘অ্যাপারেলস ডিপ্লোমেসির’ অংশ হিসেবে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের বৈঠক হয়েছে। তাঁরা এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বর্তমানে জিএসপি সুবিধার ক্ষেত্রে ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি রপ্তানি হিস্যা হলে জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না-এ শর্ত শিথিল করতে সম্মত হয়েছেন। শিগগির ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত বিল পাস হবে বলে রাষ্ট্রদূতেরা জানিয়েছেন।
সেই সঙ্গে শ্রম অধিকার এবং কারখানাগুলোর কর্ম পরিবেশ নিয়ে সরকার ও উদ্যোক্তাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, মানবাধিকার ও সুশাসনের মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। এ বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই।
চার দশকের পোশাক খাত কেন এখনো স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা, কাপড় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় এক্সেসরিজের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেনি? এ ক্ষেত্রে কেন বিদেশ নির্ভর, বিশেষ করে রপ্তানি বাজারে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের ওপর নির্ভরশীল-এ প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সহসভাপতি বলেন, অনেক সময় বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে এসব আমদানি করতে হয়। তবে এসব ক্ষেত্রে অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল থেকে এলডিসি দেশে উত্তরণ অর্থহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জিএসপি প্লাসের শর্ত পূরণে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের ওপরেই জোর দিয়েছেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হকও।
‘জিএসপি প্লাস’-এর শর্তাবলি পূরণ করতে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান (আমদানি)। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ছয়টি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে বিষয়টিকে বেশ চ্যালেঞ্জিং বলেই মনে করছেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। যেখানে দেশের প্রায় ৮৯ শতাংশ শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং নিরাপত্তার জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
অবশ্য তৈরি পোশাক কারখানাসহ দেশের শিল্প কারখানায় শ্রম পরিবেশের উন্নতি ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা শুধু আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের চাপে নয়, এটা নিজেদের দেশের মানুষের স্বার্থেই করা প্রয়োজন। আর এ জন্য সরকারের নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ঝুঁকি এড়াতে রপ্তানিপণ্যে বৈচিত্র্য আনাটা জরুরি। পোশাক শিল্পে নির্ভরশীলতা কমিয়ে পাট, চামড়া, মাছ এবং অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানির দিকে নজর দিতে হবে। বাজার সম্প্রসারণ, বিশেষ করে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, চিলির পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বাজারের দিকে মনোযোগ দেওয়ার সময় হয়েছে। ইউরোপের আরক বড় বাজার রাশিয়ার দিকেও নজর দিতে হবে। শ্রম পরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতে ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে সক্রিয় করাও প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা।

বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। অনেক দর-কষাকষির পর শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যসুবিধা (জিএসপি) ২০২৯ সাল পর্যন্ত বহাল রাখতে রাজি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এরপর ইইউভুক্ত দেশগুলো ও যুক্তরাজ্যে পণ্য রপ্তানি নির্বিঘ্ন রাখতে তাদের ‘জিএসপি প্লাস’ নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু এ নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তুতি এখনো দৃশ্যমান নয়। ব্যবসায়ী ও সরকারের মধ্যে সমন্বিত কোনো পরিকল্পনার কথাও জানা যাচ্ছে না।
স্বল্প ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য ২০১৫ সালে ‘স্পেশাল ইনসেনটিভ অ্যারেঞ্জমেন্ট ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য-সুবিধা চালু করে ইইউ। এটিই জিএসপি প্লাস হিসেবে পরিচিত। এটির আওতায় ইউরোপের বাজারে ট্যারিফ লাইনের ৬৬ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়। বর্তমানে মাত্র আটটি দেশ এই সুবিধা পায়। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এই সুবিধা পাচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য ইইউ এবং যুক্তরাজ্য। এসব বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে ২৭টি মানবাধিকার ও শ্রম অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতিমালা মানতে হবে। এসব নীতিমালার মধ্যে ১৫টি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) শ্রমমানের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ ছাড়া শ্রম আইন ও মানবাধিকার, সুশাসনের মতো কিছু জটিল বিষয়ও এর সঙ্গে জড়িত। যার সঙ্গে আবার আছে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও।
বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার ইইউভুক্ত দেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। ইইউতে বাংলাদেশ ‘এভরিথিং বাট নট আর্মস’ (ইবিএ) স্কিমের আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাবে। কিন্তু ইইউ ২০২৩ সালের মধ্যে নতুন জিএসপি প্লাস নীতি প্রণয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের জন্য ইবিএ সুবিধা অব্যাহত না থাকারও আশঙ্কা রয়েছে।
জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে অনেকগুলো শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে একটি হলো অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক। অর্থাৎ দেশের শীর্ষ সাতটি পণ্যের মোট রপ্তানিমূল্য জিএসপির আওতায় রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্যের ৭৫ শতাংশ হতে হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জিএসপির আওতায় রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্যের ৯৫ শতাংশ। জিএসপি প্লাস পাওয়ার ক্ষেত্রে এই একটি সূচকেই ইতিবাচক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো, পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে সুতা ও স্থানীয় উৎস থেকে প্রস্তুত বস্ত্র, বোতাম, জিপারের মতো এক্সেসরিজ এর সঙ্গে জড়িত। আমদানিকারক দেশের শর্ত অনুযায়ী, মোট পোশাক রপ্তানির ৮০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা দিয়ে তৈরি হতে হবে। জিএসপি প্লাসের ক্ষেত্রে ‘রুলস অব অরিজিনের’ ডাবল ট্রান্সফরমেশন শর্ত এটি। নিটওয়্যারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অবশ্য এ শর্ত পূরণ করছে। তবে ওভেন পোশাকের ক্ষেত্রে এই হার এখনো ৫০ শতাংশ।
অন্যান্য শর্তের মধ্যে অন্যতম, ইইউ থেকে এলডিসির যেসব দেশ জিএসপি সুবিধা পায়, তার মধ্যে ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি হিস্যা হলে ওই দেশ জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না। বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি বাজার ইউরোপ। ফলে সেখানে বাংলাদেশের হিস্যা বর্তমানে প্রায় ২৬ শতাংশ। তবে বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউয়ের রাষ্ট্রদূতেরা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে ছাড় দিতে রাজি হয়েছেন।
দেশের তৈরি পোশাকশিল্প মালিক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট রপ্তানিকৃত পোশাকের প্রায় ৬২ শতাংশ ও মোট রপ্তানির প্রায় ৫৬ শতাংশের গন্তব্য ইইউভুক্ত দেশ ও যুক্তরাজ্য। ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে চলমান শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা বন্ধ হলে তা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে দেখা দিতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে বাংলাদেশের উত্তরণ পরবর্তী সময়ে ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ‘রুলস অব অরিজিন’-এর ডাবল ট্রান্সফরমেশনের মতো কঠিন শর্তের মুখোমুখি হতে হবে এবং তা মোকাবিলায় ইইউয়ের দেশগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির দিকেও যেতে হবে।
এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ইউরোপের বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রস্তাবিত নতুন নীতিমালায় ‘ইমপোর্ট-শেয়ার ক্রাইটেরিয়া’ বাদ দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরাসরি উপকৃত হতে পারে। তিনি বলেন, জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কাজ চলছে। রপ্তানি বাজার ধরে রাখার জন্য এবং জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি ২০২৯ সালের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী মন্ত্রী।
শর্ত অনুযায়ী ওভেন পোশাকে ফ্যাব্রিক, এক্সেসরিজ আমদানিতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কিংবা আরও বেশি ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের সক্ষমতার বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিটওয়্যারের ক্ষেত্রে আমরা প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। অন্য ক্ষেত্রে তুলা থেকে উৎপাদিত সুতার পরিবর্তে সিনথেটিক ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
জিএসপি প্লাসের অন্যান্য শর্ত পূরণে উদ্যোগের বিষয়ে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সম্প্রতি সংগঠনের ‘অ্যাপারেলস ডিপ্লোমেসির’ অংশ হিসেবে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের বৈঠক হয়েছে। তাঁরা এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বর্তমানে জিএসপি সুবিধার ক্ষেত্রে ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি রপ্তানি হিস্যা হলে জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না-এ শর্ত শিথিল করতে সম্মত হয়েছেন। শিগগির ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত বিল পাস হবে বলে রাষ্ট্রদূতেরা জানিয়েছেন।
সেই সঙ্গে শ্রম অধিকার এবং কারখানাগুলোর কর্ম পরিবেশ নিয়ে সরকার ও উদ্যোক্তাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, মানবাধিকার ও সুশাসনের মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। এ বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই।
চার দশকের পোশাক খাত কেন এখনো স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা, কাপড় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় এক্সেসরিজের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেনি? এ ক্ষেত্রে কেন বিদেশ নির্ভর, বিশেষ করে রপ্তানি বাজারে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের ওপর নির্ভরশীল-এ প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সহসভাপতি বলেন, অনেক সময় বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে এসব আমদানি করতে হয়। তবে এসব ক্ষেত্রে অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল থেকে এলডিসি দেশে উত্তরণ অর্থহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জিএসপি প্লাসের শর্ত পূরণে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের ওপরেই জোর দিয়েছেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হকও।
‘জিএসপি প্লাস’-এর শর্তাবলি পূরণ করতে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান (আমদানি)। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ছয়টি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে বিষয়টিকে বেশ চ্যালেঞ্জিং বলেই মনে করছেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। যেখানে দেশের প্রায় ৮৯ শতাংশ শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং নিরাপত্তার জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
অবশ্য তৈরি পোশাক কারখানাসহ দেশের শিল্প কারখানায় শ্রম পরিবেশের উন্নতি ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা শুধু আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের চাপে নয়, এটা নিজেদের দেশের মানুষের স্বার্থেই করা প্রয়োজন। আর এ জন্য সরকারের নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ঝুঁকি এড়াতে রপ্তানিপণ্যে বৈচিত্র্য আনাটা জরুরি। পোশাক শিল্পে নির্ভরশীলতা কমিয়ে পাট, চামড়া, মাছ এবং অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানির দিকে নজর দিতে হবে। বাজার সম্প্রসারণ, বিশেষ করে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, চিলির পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বাজারের দিকে মনোযোগ দেওয়ার সময় হয়েছে। ইউরোপের আরক বড় বাজার রাশিয়ার দিকেও নজর দিতে হবে। শ্রম পরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতে ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে সক্রিয় করাও প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা।

আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৭ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন। বার্ষিক কার্যক্রম ও সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন সেক্রেটারি জেনারেল এলিন ববি। ট্রেজারার মোহাম্মদ শাহরিয়ার হোসেন খান ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিসিএসের ভাইস প্রেসিডেন্ট (অ্যাডমিন) রেজাউল করীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাছেত, ভাইস প্রেসিডেন্ট (একাডেমিক) জয়নাল আবেদীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি (অ্যাডমিন) শরিফুল আনোয়ার, জয়েন্ট সেক্রেটারি (ফিন্যান্স) মো. জারাফাত ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি (একাডেমিক) প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা মাসুদ।
সভা সঞ্চালনা করেন কাউন্সিলর মুহাম্মদ ওমর সিদ্দিক ও মোহাম্মদ হেদায়েতুল হাসান এবং পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মো. আলমগীর। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. মেহেদী হাসান, মো. মোজাহারুল ইসলাম, মো. আসাদ-উজ-জামান, এস এম পারভেজ রানা, মো. ওয়াহিদ মুরাদ, এস এম সাজ্জাদ হোসেন, নিমাই চন্দ্র মণ্ডল, আমিমুল ইহসান, মো. মানিরুল ইসলাম, মো. মারুফ হোসেইন, বায়েজীদ হাসান ভূঞাঁ, মো. তানভিদুল ইসলাম, এস কে হুমায়ন কবীর, মো. মাহফুজ ইসলাম, হাসান আল মনসুর, মোহাম্মদ শফিউদ্দিন প্রমুখ। এ ছাড়া সোসাইটির নিয়মিত সদস্যরাও সভায় অংশ নেন।
সভার আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল—
১. ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন ও অনুমোদন।
২. ২০২৫ সালের হিসাব নিরীক্ষার জন্য অডিটর নিয়োগ ও নিরীক্ষা ফি নির্ধারণ।
৩. বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সংবিধান পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনা।
এই সভার মাধ্যমে সোসাইটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন। বার্ষিক কার্যক্রম ও সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন সেক্রেটারি জেনারেল এলিন ববি। ট্রেজারার মোহাম্মদ শাহরিয়ার হোসেন খান ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিসিএসের ভাইস প্রেসিডেন্ট (অ্যাডমিন) রেজাউল করীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাছেত, ভাইস প্রেসিডেন্ট (একাডেমিক) জয়নাল আবেদীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি (অ্যাডমিন) শরিফুল আনোয়ার, জয়েন্ট সেক্রেটারি (ফিন্যান্স) মো. জারাফাত ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি (একাডেমিক) প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা মাসুদ।
সভা সঞ্চালনা করেন কাউন্সিলর মুহাম্মদ ওমর সিদ্দিক ও মোহাম্মদ হেদায়েতুল হাসান এবং পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মো. আলমগীর। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. মেহেদী হাসান, মো. মোজাহারুল ইসলাম, মো. আসাদ-উজ-জামান, এস এম পারভেজ রানা, মো. ওয়াহিদ মুরাদ, এস এম সাজ্জাদ হোসেন, নিমাই চন্দ্র মণ্ডল, আমিমুল ইহসান, মো. মানিরুল ইসলাম, মো. মারুফ হোসেইন, বায়েজীদ হাসান ভূঞাঁ, মো. তানভিদুল ইসলাম, এস কে হুমায়ন কবীর, মো. মাহফুজ ইসলাম, হাসান আল মনসুর, মোহাম্মদ শফিউদ্দিন প্রমুখ। এ ছাড়া সোসাইটির নিয়মিত সদস্যরাও সভায় অংশ নেন।
সভার আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল—
১. ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন ও অনুমোদন।
২. ২০২৫ সালের হিসাব নিরীক্ষার জন্য অডিটর নিয়োগ ও নিরীক্ষা ফি নির্ধারণ।
৩. বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সংবিধান পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনা।
এই সভার মাধ্যমে সোসাইটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাংলাদেশের মোট রপ্তানিকৃত পোশাকের প্রায় ৬২ শতাংশ ও মোট রপ্তানির প্রায় ৫৬ শতাংশের গন্তব্য ইইউভুক্ত দেশ ও যুক্তরাজ্য। ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে চলমান শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা বন্ধ হলে তা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে দেখা দিতে পারে।
০৫ নভেম্বর ২০২১
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেরোকন উদ্দীন, ঢাকা

রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম (সার্টিফিকেশন মার্কস উইং) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লাইভ বেকারির সংখ্যা এত দ্রুত বাড়ছে যে আমরা এগুলোর হিসাব রাখতে পারছি না। কোনোরকম একটা ট্রেড লাইসেন্স জোগাড় করেই উৎপাদন শুরু করছে এগুলো। আমরা তাদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। এতগুলো প্রতিষ্ঠান তো বন্ধ করে দিতে পারি না। আমাদের লোকবলের সংকট থাকায় যতটা কাজ করার দরকার, তা করতে পারছি না।’
অল্প জায়গায় স্বল্প পুঁজিতে গড়া যায় বলে রাজধানীতে লাইভ বেকারির সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। মুগদা থানাধীন পূর্ব মানিকনগরে ঢোকার মুখ থেকে খালপাড় নতুন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সাড়ে ৮০০ মিটারের মধ্যে ৫টি লাইভ বেকারি দেখা যায়। শুধু মানিকনগর নয়; রাজধানীর কমলাপুর, মতিঝিল, খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী, মোহাম্মদপুরসহ প্রায় সব এলাকার বাজার, পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠছে শত শত লাইভ বেকারি।
ছোট একটি দোকানে ওভেন, মিক্সচার মেশিন, ট্রে টেবিল ও কিছু আসবাব বসিয়ে এসব বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে কেক, বিস্কুট, পাউরুটি, পেটিস, টোস্ট, মিষ্টিসহ নানা খাদ্যপণ্য।
ঝিগাতলার সোনালী ব্যাংকসংলগ্ন ‘বেকার্স বে’ লাইভ বেকারি থেকে দুটি চিজ রোল ও একটি চিকেন রোল কিনে ফিরছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পলাশ মাহমুদ। কীভাবে মান যাচাই করবেন, তা জানা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় খাদ্যপণ্য কিনি স্বাদ দেখে। আর যে চিজ রোল আমি ৪০ টাকায় কিনলাম, এটি ভালো কোনো দোকানে গেলে ৭০-৮০ টাকা লাগবে।’
পূর্ব মানিকনগরের খালিস বেকারির স্বত্বাধিকারী মো. জুবায়ের বলেন, ‘ভালো লাভের আশা দিয়ে আরেক বেকারির মালিক আমারে এই ব্যবসায় নামিয়েছে। কিছু টাকা দিয়ে সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স করেছি। দেড় বছর আগে যখন শুরু করেছিলাম, তখন কিছু কিছু লাভ হতো। কয়েক মাসের মধ্যে আশপাশে বেকারির সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। এখন লোকসানে আছি।’
লাইসেন্স নেই অনেকেরই
প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে কারখানা স্থাপন করতে হয়। তারপর নমুনা পণ্য উৎপাদন করে মান সনদের জন্য বিএসটিআইতে জমা দিতে হয়। এর জন্য হাল নাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, শিল্প-নকশা বা ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রেশনের সত্যায়িত ফটোকপি, ভ্যাট সনদ, প্রিমিসেস লাইসেন্স, কর্মচারীর স্বাস্থ্য সনদ, পণ্যের মোড়কের নকশার কাগজসহ বেশ কিছু নথি দরকার হয়। জানাতে হয় কালার, ফ্লেভার, প্রিজারভেটিভ, আর্টিফিশিয়াল সুইটনারসহ পণ্যের উপকরণ। পরীক্ষণের যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার লে-আউট ও প্রসেস ফ্লো-চার্ট। এরপর পরিদর্শকেরা কারখানা পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট হলে মেলে মান সনদ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই প্রক্রিয়া মানা হচ্ছে না। অনেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই ব্যবসায় নেমে পড়েন। কারও কারও তা-ও নেই। মানসনদ নেই সিংহভাগের। কারিগরদের নেই প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ, স্যানিটেশন সনদ।
বুয়েটের উদ্যোগে ২০২১ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা শহরের ৬৭ শতাংশ পাউরুটির নমুনায় নির্ধারিত মানের চেয়ে বেশি পটাশিয়াম ব্রোমেট রয়েছে। পাউরুটি ফোলাতে এই রাসায়নিকট ব্যবহার হয়। এ ছাড়া বেকারি পণ্যে কাঁচামাল আটার সঙ্গে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট, কৃত্রিম রং ও সোডিয়াম সাইক্লোমেট ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও ওই গবেষণায় বলা হয়।
রাজধানীতে কতটি লাইভ বেকারি রয়েছে, তার কোনো তথ্য নেই সিটি করপোরেশন, বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছেই। বিএসটিআইয়ের তথ্য বলছে, শত শত বেকারির মধ্যে মাত্র ২৭টির মান সনদ রয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপসচিব) মুহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, ‘এসব ট্রেড লাইসেন্স করপোরেশনের জোনগুলো থেকে দেওয়া হয়। কতটি লাইসেন্স হয়েছে, আমাদের কাছে সে তথ্য নেই।’
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি শফিকুজ্জামান বলেন, মানহীন এসব পণ্যে সাধারণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। যারা আইন মেনে উৎপাদন করবে না, তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। দু-একটি বন্ধ করলে বাকিগুলো ঠিক হয়ে যেত।

রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম (সার্টিফিকেশন মার্কস উইং) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লাইভ বেকারির সংখ্যা এত দ্রুত বাড়ছে যে আমরা এগুলোর হিসাব রাখতে পারছি না। কোনোরকম একটা ট্রেড লাইসেন্স জোগাড় করেই উৎপাদন শুরু করছে এগুলো। আমরা তাদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। এতগুলো প্রতিষ্ঠান তো বন্ধ করে দিতে পারি না। আমাদের লোকবলের সংকট থাকায় যতটা কাজ করার দরকার, তা করতে পারছি না।’
অল্প জায়গায় স্বল্প পুঁজিতে গড়া যায় বলে রাজধানীতে লাইভ বেকারির সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। মুগদা থানাধীন পূর্ব মানিকনগরে ঢোকার মুখ থেকে খালপাড় নতুন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সাড়ে ৮০০ মিটারের মধ্যে ৫টি লাইভ বেকারি দেখা যায়। শুধু মানিকনগর নয়; রাজধানীর কমলাপুর, মতিঝিল, খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী, মোহাম্মদপুরসহ প্রায় সব এলাকার বাজার, পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠছে শত শত লাইভ বেকারি।
ছোট একটি দোকানে ওভেন, মিক্সচার মেশিন, ট্রে টেবিল ও কিছু আসবাব বসিয়ে এসব বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে কেক, বিস্কুট, পাউরুটি, পেটিস, টোস্ট, মিষ্টিসহ নানা খাদ্যপণ্য।
ঝিগাতলার সোনালী ব্যাংকসংলগ্ন ‘বেকার্স বে’ লাইভ বেকারি থেকে দুটি চিজ রোল ও একটি চিকেন রোল কিনে ফিরছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পলাশ মাহমুদ। কীভাবে মান যাচাই করবেন, তা জানা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় খাদ্যপণ্য কিনি স্বাদ দেখে। আর যে চিজ রোল আমি ৪০ টাকায় কিনলাম, এটি ভালো কোনো দোকানে গেলে ৭০-৮০ টাকা লাগবে।’
পূর্ব মানিকনগরের খালিস বেকারির স্বত্বাধিকারী মো. জুবায়ের বলেন, ‘ভালো লাভের আশা দিয়ে আরেক বেকারির মালিক আমারে এই ব্যবসায় নামিয়েছে। কিছু টাকা দিয়ে সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স করেছি। দেড় বছর আগে যখন শুরু করেছিলাম, তখন কিছু কিছু লাভ হতো। কয়েক মাসের মধ্যে আশপাশে বেকারির সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। এখন লোকসানে আছি।’
লাইসেন্স নেই অনেকেরই
প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে কারখানা স্থাপন করতে হয়। তারপর নমুনা পণ্য উৎপাদন করে মান সনদের জন্য বিএসটিআইতে জমা দিতে হয়। এর জন্য হাল নাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, শিল্প-নকশা বা ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রেশনের সত্যায়িত ফটোকপি, ভ্যাট সনদ, প্রিমিসেস লাইসেন্স, কর্মচারীর স্বাস্থ্য সনদ, পণ্যের মোড়কের নকশার কাগজসহ বেশ কিছু নথি দরকার হয়। জানাতে হয় কালার, ফ্লেভার, প্রিজারভেটিভ, আর্টিফিশিয়াল সুইটনারসহ পণ্যের উপকরণ। পরীক্ষণের যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার লে-আউট ও প্রসেস ফ্লো-চার্ট। এরপর পরিদর্শকেরা কারখানা পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট হলে মেলে মান সনদ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই প্রক্রিয়া মানা হচ্ছে না। অনেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই ব্যবসায় নেমে পড়েন। কারও কারও তা-ও নেই। মানসনদ নেই সিংহভাগের। কারিগরদের নেই প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ, স্যানিটেশন সনদ।
বুয়েটের উদ্যোগে ২০২১ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা শহরের ৬৭ শতাংশ পাউরুটির নমুনায় নির্ধারিত মানের চেয়ে বেশি পটাশিয়াম ব্রোমেট রয়েছে। পাউরুটি ফোলাতে এই রাসায়নিকট ব্যবহার হয়। এ ছাড়া বেকারি পণ্যে কাঁচামাল আটার সঙ্গে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট, কৃত্রিম রং ও সোডিয়াম সাইক্লোমেট ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও ওই গবেষণায় বলা হয়।
রাজধানীতে কতটি লাইভ বেকারি রয়েছে, তার কোনো তথ্য নেই সিটি করপোরেশন, বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছেই। বিএসটিআইয়ের তথ্য বলছে, শত শত বেকারির মধ্যে মাত্র ২৭টির মান সনদ রয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপসচিব) মুহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, ‘এসব ট্রেড লাইসেন্স করপোরেশনের জোনগুলো থেকে দেওয়া হয়। কতটি লাইসেন্স হয়েছে, আমাদের কাছে সে তথ্য নেই।’
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি শফিকুজ্জামান বলেন, মানহীন এসব পণ্যে সাধারণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। যারা আইন মেনে উৎপাদন করবে না, তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। দু-একটি বন্ধ করলে বাকিগুলো ঠিক হয়ে যেত।

বাংলাদেশের মোট রপ্তানিকৃত পোশাকের প্রায় ৬২ শতাংশ ও মোট রপ্তানির প্রায় ৫৬ শতাংশের গন্তব্য ইইউভুক্ত দেশ ও যুক্তরাজ্য। ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে চলমান শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা বন্ধ হলে তা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে দেখা দিতে পারে।
০৫ নভেম্বর ২০২১
আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৭ ঘণ্টা আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেব্যাংক খাত নিয়ে পিআরআইয়ের আলোচনা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল এবং সুশাসনের ঘাটতি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের আর্থিক স্থিতিশীলতা নষ্ট ও বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। আর এসবের নেপথ্যে শুধু অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাই নয়, বরং রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্বল গভর্ন্যান্সও দায়ী। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এখন সময় এসেছে ধাপে ধাপে সুশাসনভিত্তিক ও আস্থানির্ভর সংস্কারের।
গতকাল রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বর্তমান সংকট কোনো একক কারণে হয়নি। এটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট, স্থানীয় বাস্তবতা এবং অতীতের অনিয়মের মিলিত ফল। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকট, পরবর্তী সুদহার পরিবর্তন এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব দেশের ব্যবসায়িক মডেলকে বদলে দিয়েছে। ব্যাংকিং খাতও নতুন বাস্তবতায় খাপ খাওয়াতে বাধ্য হয়েছে।
লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা ও পুনর্গঠনে রাজনৈতিক প্রভাব মোকাবিলা এখন অপরিহার্য। অনেক ক্ষেত্রে ঋণখেলাপিদের পুনর্বহাল করা হয়, বিশেষ করে যদি ব্যাংকের চেয়ারম্যান রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তির পরিবারের সদস্য হন। এতে গভর্ন্যান্স সংকট তীব্র হচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণ ও আর্থিক অপরাধের কৌশল বিশ্লেষণে একটি ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। মনোবিজ্ঞানী ও আচরণ বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে পেশাদার প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার ওপরও জোর দেন, যাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার আচরণগত ও শৃঙ্খলাগত উন্নয়ন সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আখতার হোসেন সতর্ক করে বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ঋণ বিতরণ, দুর্বল তদারকি এবং প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের চাপ মিলিয়ে ব্যাংক খাত ভঙ্গুর অবস্থায় পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, মূলধন ঘাটতি এবং বড় খেলাপিদের প্রতি নরম মনোভাব সংকটকে আরও গভীর করেছে। এখন সাহসী কাঠামোগত পদক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে পতনের দিকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। উদীয়মান অর্থনীতিতে একটি ব্যাংকের ধস পুরো ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করতে পারে। তিনি মূল কারণ হিসেবে ব্যাংকের পর্ষদে অনিয়ম এবং ঋণ প্রদানে অস্বচ্ছতার কথা তুলে ধরেন। দেশের পাঁচটি বড় ব্যাংক এখন সংকটে, আরও ৫-১০টি একই পথে রয়েছে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে ব্যাংকগুলো দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হতে পারে।
পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান প্রতারণাজনিত ও সাধারণ খেলাপি ঋণ আলাদা করে পরিচালনার জন্য একটি পেশাদার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (এএমসি) গঠনের পরামর্শ দেন। তিনি স্ট্রেস টেস্টিং, রিকভারি প্ল্যান, ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স এবং রেজল্যুশন ফান্ডকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন।
পিআরআই প্রেসিডেন্ট ড. জায়েদী সাত্তার সতর্ক করে বলেন, উন্নত অর্থনীতিতে ‘টু বিগ টু ফেইল’ ধারণা প্রচলিত হলেও বাংলাদেশে কিছু ব্যাংক এখন ‘টু টক্সিক টু ফেইল’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই ব্যাংকের পতন সামগ্রিক অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের ৫ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে আর্থিক খাতে সুশাসন, জবাবদিহি ও শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা অপরিহার্য।

ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল এবং সুশাসনের ঘাটতি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের আর্থিক স্থিতিশীলতা নষ্ট ও বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। আর এসবের নেপথ্যে শুধু অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাই নয়, বরং রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্বল গভর্ন্যান্সও দায়ী। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এখন সময় এসেছে ধাপে ধাপে সুশাসনভিত্তিক ও আস্থানির্ভর সংস্কারের।
গতকাল রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বর্তমান সংকট কোনো একক কারণে হয়নি। এটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট, স্থানীয় বাস্তবতা এবং অতীতের অনিয়মের মিলিত ফল। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকট, পরবর্তী সুদহার পরিবর্তন এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব দেশের ব্যবসায়িক মডেলকে বদলে দিয়েছে। ব্যাংকিং খাতও নতুন বাস্তবতায় খাপ খাওয়াতে বাধ্য হয়েছে।
লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা ও পুনর্গঠনে রাজনৈতিক প্রভাব মোকাবিলা এখন অপরিহার্য। অনেক ক্ষেত্রে ঋণখেলাপিদের পুনর্বহাল করা হয়, বিশেষ করে যদি ব্যাংকের চেয়ারম্যান রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তির পরিবারের সদস্য হন। এতে গভর্ন্যান্স সংকট তীব্র হচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণ ও আর্থিক অপরাধের কৌশল বিশ্লেষণে একটি ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। মনোবিজ্ঞানী ও আচরণ বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে পেশাদার প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার ওপরও জোর দেন, যাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার আচরণগত ও শৃঙ্খলাগত উন্নয়ন সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আখতার হোসেন সতর্ক করে বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ঋণ বিতরণ, দুর্বল তদারকি এবং প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের চাপ মিলিয়ে ব্যাংক খাত ভঙ্গুর অবস্থায় পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, মূলধন ঘাটতি এবং বড় খেলাপিদের প্রতি নরম মনোভাব সংকটকে আরও গভীর করেছে। এখন সাহসী কাঠামোগত পদক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে পতনের দিকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। উদীয়মান অর্থনীতিতে একটি ব্যাংকের ধস পুরো ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করতে পারে। তিনি মূল কারণ হিসেবে ব্যাংকের পর্ষদে অনিয়ম এবং ঋণ প্রদানে অস্বচ্ছতার কথা তুলে ধরেন। দেশের পাঁচটি বড় ব্যাংক এখন সংকটে, আরও ৫-১০টি একই পথে রয়েছে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে ব্যাংকগুলো দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হতে পারে।
পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান প্রতারণাজনিত ও সাধারণ খেলাপি ঋণ আলাদা করে পরিচালনার জন্য একটি পেশাদার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (এএমসি) গঠনের পরামর্শ দেন। তিনি স্ট্রেস টেস্টিং, রিকভারি প্ল্যান, ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স এবং রেজল্যুশন ফান্ডকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন।
পিআরআই প্রেসিডেন্ট ড. জায়েদী সাত্তার সতর্ক করে বলেন, উন্নত অর্থনীতিতে ‘টু বিগ টু ফেইল’ ধারণা প্রচলিত হলেও বাংলাদেশে কিছু ব্যাংক এখন ‘টু টক্সিক টু ফেইল’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই ব্যাংকের পতন সামগ্রিক অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের ৫ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে আর্থিক খাতে সুশাসন, জবাবদিহি ও শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা অপরিহার্য।

বাংলাদেশের মোট রপ্তানিকৃত পোশাকের প্রায় ৬২ শতাংশ ও মোট রপ্তানির প্রায় ৫৬ শতাংশের গন্তব্য ইইউভুক্ত দেশ ও যুক্তরাজ্য। ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে চলমান শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা বন্ধ হলে তা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে দেখা দিতে পারে।
০৫ নভেম্বর ২০২১
আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৭ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত মজুতের কারণে পুরোনো আলুর দাম এখন ২৫ টাকার মধ্যেই। তাই বেশি দামের আশায় যাঁরা অপরিপক্ব অবস্থায়ই আগাম আলু বাজারে এনেছেন, তাঁরা হতাশ।
আলুর দাম আশানুরূপ না হলেও সবজিচাষি ও ব্যবসায়ীরা নতুন পেঁয়াজের ভালো দাম পাচ্ছেন। বাজারে খুচরায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজির ওপরে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে।
বাজারে আমনের নতুন চালও আসতে শুরু করেছে। এতে চালের দাম এক-দুই টাকা কমেছে চলতি সপ্তাহে। এ ছাড়া সবজি, ডিম, মুরগিসহ অন্যান্য পণ্যের বাজারেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।
রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা, মানিকনগরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগাম নতুন আলুর সরবরাহ বেশ বেড়েছে। পাশাপাশি পুরোনো আলুও বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলু মান অনুসারে ৩৫-৪০ টাকা কেজি আর পুরোনো আলু আগের মতোই ২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
সেগুনবাগিচা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মিন্টু বলেন, নতুন আলুর বিক্রি শুরু হয় ১০০-১২০ টাকা কেজিতে। কিন্তু সেই দামে মাত্র কয়েক দিন বিক্রি করা গেছে। এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে দাম কমে ৫০-৬০ টাকায় নেমে আসে। এ সপ্তাহে আরও কমেছে। এবার আলু বিক্রি করে কৃষক, ব্যবসায়ী কেউ খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।
বাজারে এখন তিন ধরনের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে—দেশি নতুন ও পুরোনো এবং আমদানির পেঁয়াজ। বাজারে নতুন আসা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা কেজি। তবে পুরোনো দেশি পেঁয়াজ আগের মতোই ১৩০-১৪০ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দাম ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে।
আমদানির পরও পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার ওপরে থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। মালিবাগ বাজারে আসা ক্রেতা আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভারতে পেঁয়াজের দাম শুনেছি ১০-১২ রুপিতে নেমেছে। সেই পেঁয়াজ দেশে এনে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা; যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যাঁদের আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের নজরদারিতে রাখা উচিত সরকারের।’
ভোজ্যতেলের দাম গত সপ্তাহেই লিটারপ্রতি ৬-৭ টাকা বেড়েছে। বহুল ব্যবহৃত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা লিটার। চিনি, আটা, ময়দা, মসুর ডালসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের দামেই।
এদিকে চালের দাম কিছুটা কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, আমনের দু-একটি জাতের চাল বাজারে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে গুটি স্বর্ণা ও পাইজাম। তাতে অন্য চালের দামও কিছুটা নিম্নমুখী। আমদানির চালের সরবরাহও রয়েছে বাজারে।
বিভিন্ন খুচরা বাজারে নাজিরশাইল, শম্পা কাটারি, জিরাশাইল, মিনিকেটসহ সরু চালগুলোর দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭৮ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ৭০-৮০ টাকা।
নতুন চালে গুটি স্বর্ণার দাম নেমেছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২-৫৬ টাকা কেজি। এ ছাড়া পাইজাম, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৫৬-৬৩ টাকা ছিল।
মানিকনগর বাজারের চাল বিক্রেতা মরিয়ম স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. ইউসুফ বলেন, ‘চালের সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এতে দাম অনেকটাই কমতির দিকে। এ সপ্তাহে এক-দুই টাকা কমেছে অনেক আইটেমে। আশা করছি, সামনের সপ্তাহে আরও কমবে।’
ভোক্তার স্বস্তি ফিরছে সবজিতেও। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে পণ্যটির। খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে তা ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে বরবটি, বেগুন ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ও পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। ফুল ও বাঁধাকপির দাম আরও কমেছে। মাঝারি আকারের ফুল ও বাঁধাকপি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
ডিম ও মুরগির বাজারও স্থিতিশীল। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। কমেছে মুরগির মাংসের দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকার মধ্যে। আর সোনালি মুরগির দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০-২৭০ টাকার মধ্যে।
পোলট্রি খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতে সবজির প্রচুর সরবরাহ থাকলে মুরগি ও ডিমের চাহিদা কিছুটা কমে যায়। এ কারণেই দাম কমেছে।

সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত মজুতের কারণে পুরোনো আলুর দাম এখন ২৫ টাকার মধ্যেই। তাই বেশি দামের আশায় যাঁরা অপরিপক্ব অবস্থায়ই আগাম আলু বাজারে এনেছেন, তাঁরা হতাশ।
আলুর দাম আশানুরূপ না হলেও সবজিচাষি ও ব্যবসায়ীরা নতুন পেঁয়াজের ভালো দাম পাচ্ছেন। বাজারে খুচরায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজির ওপরে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে।
বাজারে আমনের নতুন চালও আসতে শুরু করেছে। এতে চালের দাম এক-দুই টাকা কমেছে চলতি সপ্তাহে। এ ছাড়া সবজি, ডিম, মুরগিসহ অন্যান্য পণ্যের বাজারেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।
রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা, মানিকনগরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগাম নতুন আলুর সরবরাহ বেশ বেড়েছে। পাশাপাশি পুরোনো আলুও বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলু মান অনুসারে ৩৫-৪০ টাকা কেজি আর পুরোনো আলু আগের মতোই ২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
সেগুনবাগিচা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মিন্টু বলেন, নতুন আলুর বিক্রি শুরু হয় ১০০-১২০ টাকা কেজিতে। কিন্তু সেই দামে মাত্র কয়েক দিন বিক্রি করা গেছে। এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে দাম কমে ৫০-৬০ টাকায় নেমে আসে। এ সপ্তাহে আরও কমেছে। এবার আলু বিক্রি করে কৃষক, ব্যবসায়ী কেউ খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।
বাজারে এখন তিন ধরনের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে—দেশি নতুন ও পুরোনো এবং আমদানির পেঁয়াজ। বাজারে নতুন আসা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা কেজি। তবে পুরোনো দেশি পেঁয়াজ আগের মতোই ১৩০-১৪০ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দাম ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে।
আমদানির পরও পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার ওপরে থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। মালিবাগ বাজারে আসা ক্রেতা আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভারতে পেঁয়াজের দাম শুনেছি ১০-১২ রুপিতে নেমেছে। সেই পেঁয়াজ দেশে এনে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা; যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যাঁদের আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের নজরদারিতে রাখা উচিত সরকারের।’
ভোজ্যতেলের দাম গত সপ্তাহেই লিটারপ্রতি ৬-৭ টাকা বেড়েছে। বহুল ব্যবহৃত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা লিটার। চিনি, আটা, ময়দা, মসুর ডালসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের দামেই।
এদিকে চালের দাম কিছুটা কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, আমনের দু-একটি জাতের চাল বাজারে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে গুটি স্বর্ণা ও পাইজাম। তাতে অন্য চালের দামও কিছুটা নিম্নমুখী। আমদানির চালের সরবরাহও রয়েছে বাজারে।
বিভিন্ন খুচরা বাজারে নাজিরশাইল, শম্পা কাটারি, জিরাশাইল, মিনিকেটসহ সরু চালগুলোর দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭৮ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ৭০-৮০ টাকা।
নতুন চালে গুটি স্বর্ণার দাম নেমেছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২-৫৬ টাকা কেজি। এ ছাড়া পাইজাম, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৫৬-৬৩ টাকা ছিল।
মানিকনগর বাজারের চাল বিক্রেতা মরিয়ম স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. ইউসুফ বলেন, ‘চালের সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এতে দাম অনেকটাই কমতির দিকে। এ সপ্তাহে এক-দুই টাকা কমেছে অনেক আইটেমে। আশা করছি, সামনের সপ্তাহে আরও কমবে।’
ভোক্তার স্বস্তি ফিরছে সবজিতেও। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে পণ্যটির। খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে তা ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে বরবটি, বেগুন ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ও পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। ফুল ও বাঁধাকপির দাম আরও কমেছে। মাঝারি আকারের ফুল ও বাঁধাকপি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
ডিম ও মুরগির বাজারও স্থিতিশীল। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। কমেছে মুরগির মাংসের দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকার মধ্যে। আর সোনালি মুরগির দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০-২৭০ টাকার মধ্যে।
পোলট্রি খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতে সবজির প্রচুর সরবরাহ থাকলে মুরগি ও ডিমের চাহিদা কিছুটা কমে যায়। এ কারণেই দাম কমেছে।

বাংলাদেশের মোট রপ্তানিকৃত পোশাকের প্রায় ৬২ শতাংশ ও মোট রপ্তানির প্রায় ৫৬ শতাংশের গন্তব্য ইইউভুক্ত দেশ ও যুক্তরাজ্য। ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে চলমান শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা বন্ধ হলে তা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে দেখা দিতে পারে।
০৫ নভেম্বর ২০২১
আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৭ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে