রিক্তা রিচি, ঢাকা

বনলতা সেন চুলের যত্নে কী করতেন, কবি সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তাই সেই টোটকার কথা আমরা জানি না। কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে যেটা জেনেছি সেটা হলো, ঘন কালো, ঝলমলে, প্রাণবন্ত ও সুন্দর চুলের জন্য যত্ন চাই। যত্নহীন যেমন গাছ বাঁচে না, তেমনি চুলও টিকে থাকে না।
সাধারণত একটি চুলের গড় আয়ু দুই থেকে পাঁচ বছর। কেউ কেউ বলেন আরও কম। এরপর চুল এমনিতেই ঝরে যায়। চ্যালেঞ্জের বিষয় হলো চুল পড়ার পাশাপাশি নতুন চুল গজানো। নতুন চুল গজালে চুল পড়লেও মাথায় চুলের পরিমাণ ঠিক থাকে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মেনে চলতে হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ঘুম, দুশ্চিন্তাহীন জীবন, যত্নে ভালো পণ্যের ব্যবহার ইত্যাদি সুন্দর চুলের সঙ্গে যুক্ত।
১. স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া
চুলের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে সবার আগে আসে খাদ্যাভ্যাস। কিছু বিশেষ খাবার চুলের যত্নে বেশ সহায়ক—
ডিম
প্রোটিন ও বায়োটিনের খুব ভালো উৎস হলো ডিম। চুল ভালো রাখার জন্য এ দুই উপাদান খুব গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ না করা হলে চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়। অতিরিক্ত চুল পড়ে। প্রোটিন ও বায়োটিন ছাড়াও ডিমে আছে জিংক, সেলেনিয়াম এবং চুলের জন্য উপকারী পুষ্টি উপাদান। তাই চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাদ্যতালিকায় ডিম রাখুন।
বেরি তথা জাম
স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি ইত্যাদি চুলের বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে। এ ধরনের ফলে আছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি অক্সিডেন্টসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি দূর করে। এক কাপ স্ট্রবেরিতে ১৪৪ গ্রাম ভিটামিন সি থাকে, যা প্রতিদিনের ভিটামিন সি-এর চাহিদার ১৪১ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করে। এ ছাড়া অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ফ্রি র্যাডিকেলের হাত থেকে ত্বককেও রক্ষা করে।
পালং শাক
আমাদের খুব পরিচিত পালং শাক। এতে রয়েছে উপকারী উপাদান, যেমন ফোলেট, আয়রন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি। এগুলো দ্রুত চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ ত্বকের গ্রন্থিতে সিবাম উৎপাদন করতে সহায়তা করে। এতে মাথার ত্বক সতেজ থাকে। এক কাপ বা ৩০ গ্রাম পালং শাক ভিটামিন এ-এর দৈনিক চাহিদার ৫৪ শতাংশ পূরণ করে। পালং শাকে উচ্চ পরিমাণে আয়রন আছে। এটি চুলের বৃদ্ধিতে উপকারী ভূমিকা রাখে।
তৈলাক্ত মাছ
সব ধরনের তৈলাক্ত মাছ চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। স্যামন, রুই, কাতলাসহ ছোট-বড় সব মাছ খাদ্যতালিকায় রাখুন। কারণ, মাছে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তৈলাক্ত মাছে আরও আছে প্রোটিন, সেলেনিয়াম, ভিটামিন ডি৩, ভিটামিন বি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। এগুলো চুল ভালো রাখে। চুলে প্রাণ ফেরায়।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে থাকে বিটা ক্যারোটিন। শরীর বিটা ক্যারোটিনকে ভেঙে ভিটামিন এ-তে রূপান্তর করে। বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ চুলের জন্য উপকারী। যদি চুল পড়া কমাতে চান, তাহলে খাদ্যতালিকায় মিষ্টি আলু রাখুন।
বাদাম
চীনাবাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম ইত্যাদি সব ধরনের বাদাম চুল ভালো রাখতে সহায়তা করে। বাদামে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন ই, জিংক এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড। এক আউন্স বা ২৮ গ্রাম কাঠবাদাম দৈনিক চাহিদার ৩৭ শতাংশ পূরণ করে। রোজ বাদাম খেলে চুল তো ভালো থাকেই। সেই সঙ্গে হার্ট ভালো থাকে।

বীজ
বিভিন্ন ধরনের বিচি ও বীজ খাদ্যতালিকায় রাখুন। এগুলো চুল পড়া বন্ধ করে এবং চুলে পুষ্টি জোগায়। বিচি ও বীজে থাকে চুলের জন্য উপকারী ভিটামিন ই, জিংক ও সেলেনিয়াম। মটরশুঁটি, শিমের বিচিসহ এ জাতীয় খাবারেও পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান থাকে। থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এ উপাদানগুলো চুলের ভেঙে যাওয়া রোধ করে এবং চুলের বৃদ্ধি অব্যাহত রাখে।
মাংস
চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সপ্তাহে নির্দিষ্ট পরিমাণে মাংস খান। কারণ, এতে আছে উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন। আর প্রোটিন খেলে চুল শক্ত ও মজবুত থাকে। মাংস খেলে চুলের ফলিকলগুলো ভালো থাকে।
২. চুলের যত্নে ঘরোয়া হেয়ার প্যাক
চুলের যত্নে ঘরোয়া কিছু হেয়ার প্যাক ভীষণ কাজে দেয়—
মেথি পেস্ট
মেথি চুলের জন্য উপকারী। এতে শর্করা, প্রোটিন, চর্বি, আয়রন, ম্যাংগানিজ, কপার, ম্যাগনেশিয়াম আছে। এতে আরও আছে বায়োটিন, ফোলেট, সেলেনিয়াম, জিংক। এই উপাদানগুলো চুলের জন্য উপকারী। মেথি চুল পড়া কমাতে, নতুন চুল গজাতে কাজ করে। মেথি ও মেথি ভেজানো পানি দুই-ই কাজে লাগে।
সারা রাত মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা পানিটা আরেকটি পাত্রে রেখে দিন। সেই পানি স্প্রে বোতলে ভরে চুলে লাগালে নতুন চুল গজায়। চুল ভালো থাকে। মেথি পেস্ট করে প্রতি সপ্তাহে একদিন মাথায় লাগালে চুলের গোড়া শক্ত হয়। চুল পড়া বন্ধ হয় এবং মাথায় নতুন চুল গজায়।
ডিমের হেয়ার প্যাক
ডিম চুল ভালো রাখে। চুল সিল্কি ও ঝরঝরে করতে ডিমের জুড়ি নেই। একটি ডিমের সঙ্গে এক কাপ দুধ, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস এবং দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ২০ মিনিট ঢেকে রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। চুল পড়া বন্ধ করে।
কলার হেয়ার মাস্ক
কলায় আছে উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম, প্রাকৃতিক তেল ও ভিটামিন। এ উপাদানগুলো চুল পড়া কমায়। দুটি কলা, এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, এক টেবিল চামচ নারকেল তেল এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। সবগুলো উপাদান ব্লেন্ড করে প্যাক তৈরি করে নিন। প্যাকটি কিছুক্ষণ রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এ হেয়ার মাস্কটি চুলকে সতেজ করবে, চুলের ড্যামেজ দূর করবে, চুলের খুশকি দূর করবে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াবে।
দইয়ের হেয়ার মাস্ক
চুল নরম ও সুন্দর রাখতে দইয়ের জুড়ি নেই। চুলে পুষ্টি জোগাতে কাজ করে দই। এক কাপ দইয়ের সঙ্গে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। হেয়ার মাস্কটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এর পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কারি পাতা ও নারকেল তেলের হেয়ার মাস্ক
কারি পাতা চুলের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে। চুল কালো করতে এবং অকালে চুল পাকা রোধ করতে সহায়তা করে। ১০ থেকে ১২টি কারি পাতার সঙ্গে দুই টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এই পেস্ট মাথার ত্বকে ও চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। এর পর শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দুবার ব্যবহারে ভালো উপকার পাবেন।
ক্যাস্টর অয়েলের মাস্ক
ক্যাস্টর অয়েলে উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন আছে। এটি ব্যবহারে খুশকি দূর হয়। চুলের রুক্ষতা দূর করে চুলকে প্রাণবন্ত করে ক্যাস্টর ওয়েল। এর সঙ্গে ডিম মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। যাদের চুল কোঁকড়ানো, তারা এই প্যাক লাগাতে পারেন। ডিম ও প্যাক চুল স্ট্রেইট তথা সোজা করতে সাহায্য করে।

ভিটামিন ই ক্যাপের ব্যবহার
ভিটামিন ই-তে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে চুল পড়া বন্ধ করতে সহায়তা করে। ভিটামিন ই-তে টোকোফেরল রয়েছে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান। এগুলো মাথার ত্বক সুস্থ রাখে।
দুটি ভিটামিন ই ক্যাপের সঙ্গে এক টেবিল চামচ আমন্ড তেল, এক টেবিল চামচ নারকেল তেল, এক চা-চামচ ক্যাস্টর অয়েল এবং কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ সারা রাত মাথায় লাগিয়ে রাখুন। সকালে চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিনবার এটি ব্যবহার করলে রুক্ষ চুলে প্রাণ ফিরবে।
৩. চুলে ভালো ব্রাশ ব্যবহার করা
মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে চুলে ভালো ব্রাশ ব্যবহার করুন। যাদের বেশি চুল পড়ে অথবা যাদের চুলে জট লাগে, তারা মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন। মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে চুল পড়া কমে। চুল ভালো রাখতে প্যাডল ব্রাশের চিরুনি, পিন ব্রাশ, কুইল ব্রাশ, বোর ব্রিশল ব্রাশের চিরুনি কিনতে পারেন।
৪. প্রয়োজনে হট অয়েল ম্যাসাজ
চুলে প্রাণ ফেরাতে হট অয়েল ম্যাসাজ করুন। একটি পাত্রে তেল নিয়ে কুসুম গরম করে নিন। তারপর চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে।
৫. নিয়মিত চুলে তেল দেওয়া
মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে মরা চামড়া থেকে অনেক খুশকি হয়। তাই মাথার ত্বক কোমল ও সতেজ রাখতে তেল ব্যবহারের বিকল্প নেই। সপ্তাহে তিন দিন চুলে তেল দিলে চুল ভালো থাকবে। আপনার মাথায় সহ্য হয়, এমন যেকোনো তেল ব্যবহার করতে পারেন।
৬. ভালো বালিশ ব্যবহার করা
চুল ও ত্বক ভালো রাখতে সিল্কের বালিশ কভার ব্যবহার করার পরামর্শ দেন রূপবিশেষজ্ঞরা। সুতি কভারের বালিশে ঘুমালে ঘষা লেগে চুল নষ্ট হতে পারে। সিল্ক ও সাটিনের বালিশের কভার ব্যবহার করলে চুল ও বালিশের মধ্যে ঘর্ষণ কম হয়। এতে চুলে জট বাঁধা ও ক্ষয় কম হয়।
৭. সঠিক উপায়ে বেণি করা
অনেকে ঘুমানোর আগে শক্ত করে বেণি করেন। এতে চুল ভেঙে যাওয়া কিংবা ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বেণি আঁটসাঁটভাবে না করে, কিছুটা হালকাভাবে করতে হবে। এতে চুল কুঁকড়ে যাবে না।
৮. আলতোভাবে চুলে তোয়ালে ব্যবহার করা
গোসলের পর ভেজা চুল তোয়ালে দিয়ে শক্তভাবে না বেঁধে আলতোভাবে বাঁধুন। বেশি শক্ত করে বাঁধলে এবং ভেজা চুল আঁচড়ালে চুল বেশি পড়ে।
৯. হেয়ার স্ট্রেইটনার বেশি বেশি ব্যবহার না করা
আপনি জানেন কি, বেশি বেশি হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে চুল ভেঙে যায়? এ ছাড়া বেশি বেশি হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে চুল পড়া বাড়ে। হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে চুলের আর্দ্রতা কমে যায়। চুল শুষ্ক হয়ে চুলের আগা ফেটে যায়। চুলে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করলেও চুলের ক্ষতি হয়। অকালে চুল ঝরে পড়ে।
১০. হেয়ার প্রোডাক্ট ঘন ঘন পরিবর্তন না করা
চুল ভালো রাখতে আপনার চুলের জন্য যেসব শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও প্যাক উপকারী, সেগুলো ব্যবহার করুন। তবে দীর্ঘদিন একই পণ্য ব্যবহার করবেন না। কারণ, বয়স, আবহাওয়া ইত্যাদির সঙ্গে সঙ্গে ত্বক ও চুলে পরিবর্তন আসে। মাঝেমধ্যে ভিন্ন ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। তবে আজ এক শ্যাম্পু বা প্যাক, কাল অন্য একটি, পরের দিন আরেকটি পণ্য ব্যবহার করবেন না। ঘন ঘন পণ্য পরিবর্তন করলে চুলের কিউটিকলের ক্ষতি হতে পারে।

১১. হেয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করা
যাদের চুল খুব রুক্ষ, প্রাণহীন তারা অবশ্যই চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে শ্যাম্পু করার পর। ভুলেও চুলের গোড়ায় কন্ডিশনার লাগাবেন না। কন্ডিশনার লাগাতে হয় চুলে। চুলে কন্ডিশনার লাগানোর পর সঙ্গে সঙ্গে না ধুয়ে ৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুতে হবে।
১২. চুলে অ্যালোভেরার ব্যবহার
অ্যালোভেরা প্রাকৃতিকভাবে চুলকে সতেজ, কোমল ও ঝলমলে রাখে। এটি মাথার ত্বকের অ্যালার্জি দূর করে, খুশকি ও রুক্ষতা দূর করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে। মাথায় নতুন চুল গজাতে ত্বকে অ্যালোভেরা জেল ঘষতে পারেন। ঘষে ১ ঘণ্টার মতো রেখে ধুয়ে ফেলুন। যেকোনো হেয়ার প্যাকের সঙ্গে অ্যালোভেরার জেল মিশিয়ে নিতে পারেন। যারা নিয়মিত মেহেদি প্যাক ব্যবহার করেন, সেখানেও অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মাথায় লাগাতে পারেন। একটি পাত্রে অ্যালোভেরার জেল, নারকেল তেল ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে, কুসুম গরম করে মাথায় লাগালেও উপকার পাবেন।
১৩. চুলের যত্নে ডিম
ডিম চুল ভালো রাখে। চুল সিল্কি ও ঝরঝরে করতে এর জুড়ি নেই। কারণ, ডিমে আছে প্রোটিন ও বায়োটিন। এ দুই উপাদান চুল ভালো রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। একটি ডিমের সঙ্গে এক কাপ দুধ, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস এবং দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ২০ মিনিট ঢেকে রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। চুল পড়া বন্ধ করে।
মেথি পেস্ট কিংবা অন্য যেকোনো প্যাকের সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে লাগাতে পারেন। এতেও দারুণ উপকার পাবেন।
১৪. চুলে পেঁয়াজের ব্যবহার
চুল পড়া কমিয়ে মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে পেঁয়াজের রস। কারণ, এতে আছে সালফার। এটি চুল ভালো রাখতে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। যাদের প্রচুর চুল পড়ে, তাঁরা পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে তার রসটুকু মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চুল ঘন হবে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন
পেঁয়াজ, ডিম, কলা, দই, মসুর ডাল, মেথি ইত্যাদি উপাদানগুলো দিয়ে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া যায়।
পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে তার রসটুকু মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। লাগানোর পর ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত ব্যবহারে চুল ঘন হবে।
মসুর ডালের পানি, মেথির পেস্ট ও ডিম একসঙ্গে মিশিয়ে ৩০ মিনিট চুলে লাগিয়ে রাখুন। এর পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
কলা ও ডিম ব্লেন্ড করে তার সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপ মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন।
দই চুল ভালো রাখে। দইয়ের সঙ্গে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। এই প্যাক চুলে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন।
দইয়ের সঙ্গে মধু ও ঘৃতকুমারীর জেল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাক চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এর পর কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
চুলের জন্য ভালো শ্যাম্পু
টাকা খরচ করে যেসব শ্যাম্পু আমরা কিনি, সেসব শ্যাম্পুতে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান চুলের ক্ষতি করে। যেসব শ্যাম্পুতে সোডিয়াম ক্লোরাইড, পলিথিলিন গ্লাইকল, ডাইথেনোসেমিন অথবা ট্রাইএথোলেনিনের মতো উপাদান রয়েছে, সেগুলো চুলের জন্য ভালো নয়। শ্যাম্পু কেনার আগে দেখে নেবেন শ্যাম্পুতে অ্যামোনিয়াম লরেথ সালফেট এবং সোডিয়াম লরেথ সালফেট আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে সে শ্যাম্পু কিনবেন না। কারণ, অ্যামোনিয়াম লরেথ সালফেট এবং সোডিয়াম লরেথ সালফেট চুলের জন্য ক্ষতিকর। শ্যাম্পুতে থাকা প্যারাবিন, ফরমালডিহাইডও চুলের ক্ষতি করে। তাই একটু ভালো ব্র্যান্ডের দামি শ্যাম্পু কিনুন। কম দামি শ্যাম্পুতে বেশি ফেনা হলেও, সেগুলোতে বেশি ক্ষতিকর উপাদান থাকে।
জাফরান হেয়ার অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
চুল শক্ত ও মজবুত করে জাফরান হেয়ার অয়েল। এর সঙ্গে নারকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েল সামান্য গরম করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। এতে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়বে।
রুক্ষ চুলের যত্ন
রুক্ষ চুলের যত্নে সপ্তাহে ৩ দিন চুলে নারকেল তেলের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপ ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে লাগাতে পারেন। চুলে প্রাণ ফেরাতে ডিম ও দইয়ের জুড়ি নেই। ডিম, দই, কলা একসঙ্গে ব্লেন্ড করে সপ্তাহে একদিন চুলে লাগাতে পারেন। এতে চুলের রুক্ষতা দূর হবে।
ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
ক্যাস্টর অয়েলে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান আছে। ত্বকের পিএইচ লেভেলের পাশাপাশি মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে এটি।
মাথায় ক্যাস্টর অয়েল লাগানোর আগে হাতে গ্লাভস পরে নিন। কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল হাতে নিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। তারপর পুরো চুলে ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে নিন। তারপর একবার চুল আঁচড়ে নিতে পারেন। একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে নিয়ে দুই ঘণ্টা রেখে দিন। এর পর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

বনলতা সেন চুলের যত্নে কী করতেন, কবি সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তাই সেই টোটকার কথা আমরা জানি না। কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে যেটা জেনেছি সেটা হলো, ঘন কালো, ঝলমলে, প্রাণবন্ত ও সুন্দর চুলের জন্য যত্ন চাই। যত্নহীন যেমন গাছ বাঁচে না, তেমনি চুলও টিকে থাকে না।
সাধারণত একটি চুলের গড় আয়ু দুই থেকে পাঁচ বছর। কেউ কেউ বলেন আরও কম। এরপর চুল এমনিতেই ঝরে যায়। চ্যালেঞ্জের বিষয় হলো চুল পড়ার পাশাপাশি নতুন চুল গজানো। নতুন চুল গজালে চুল পড়লেও মাথায় চুলের পরিমাণ ঠিক থাকে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মেনে চলতে হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ঘুম, দুশ্চিন্তাহীন জীবন, যত্নে ভালো পণ্যের ব্যবহার ইত্যাদি সুন্দর চুলের সঙ্গে যুক্ত।
১. স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া
চুলের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে সবার আগে আসে খাদ্যাভ্যাস। কিছু বিশেষ খাবার চুলের যত্নে বেশ সহায়ক—
ডিম
প্রোটিন ও বায়োটিনের খুব ভালো উৎস হলো ডিম। চুল ভালো রাখার জন্য এ দুই উপাদান খুব গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ না করা হলে চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়। অতিরিক্ত চুল পড়ে। প্রোটিন ও বায়োটিন ছাড়াও ডিমে আছে জিংক, সেলেনিয়াম এবং চুলের জন্য উপকারী পুষ্টি উপাদান। তাই চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাদ্যতালিকায় ডিম রাখুন।
বেরি তথা জাম
স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি ইত্যাদি চুলের বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে। এ ধরনের ফলে আছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি অক্সিডেন্টসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি দূর করে। এক কাপ স্ট্রবেরিতে ১৪৪ গ্রাম ভিটামিন সি থাকে, যা প্রতিদিনের ভিটামিন সি-এর চাহিদার ১৪১ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করে। এ ছাড়া অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ফ্রি র্যাডিকেলের হাত থেকে ত্বককেও রক্ষা করে।
পালং শাক
আমাদের খুব পরিচিত পালং শাক। এতে রয়েছে উপকারী উপাদান, যেমন ফোলেট, আয়রন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি। এগুলো দ্রুত চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ ত্বকের গ্রন্থিতে সিবাম উৎপাদন করতে সহায়তা করে। এতে মাথার ত্বক সতেজ থাকে। এক কাপ বা ৩০ গ্রাম পালং শাক ভিটামিন এ-এর দৈনিক চাহিদার ৫৪ শতাংশ পূরণ করে। পালং শাকে উচ্চ পরিমাণে আয়রন আছে। এটি চুলের বৃদ্ধিতে উপকারী ভূমিকা রাখে।
তৈলাক্ত মাছ
সব ধরনের তৈলাক্ত মাছ চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। স্যামন, রুই, কাতলাসহ ছোট-বড় সব মাছ খাদ্যতালিকায় রাখুন। কারণ, মাছে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তৈলাক্ত মাছে আরও আছে প্রোটিন, সেলেনিয়াম, ভিটামিন ডি৩, ভিটামিন বি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। এগুলো চুল ভালো রাখে। চুলে প্রাণ ফেরায়।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে থাকে বিটা ক্যারোটিন। শরীর বিটা ক্যারোটিনকে ভেঙে ভিটামিন এ-তে রূপান্তর করে। বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ চুলের জন্য উপকারী। যদি চুল পড়া কমাতে চান, তাহলে খাদ্যতালিকায় মিষ্টি আলু রাখুন।
বাদাম
চীনাবাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম ইত্যাদি সব ধরনের বাদাম চুল ভালো রাখতে সহায়তা করে। বাদামে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন ই, জিংক এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড। এক আউন্স বা ২৮ গ্রাম কাঠবাদাম দৈনিক চাহিদার ৩৭ শতাংশ পূরণ করে। রোজ বাদাম খেলে চুল তো ভালো থাকেই। সেই সঙ্গে হার্ট ভালো থাকে।

বীজ
বিভিন্ন ধরনের বিচি ও বীজ খাদ্যতালিকায় রাখুন। এগুলো চুল পড়া বন্ধ করে এবং চুলে পুষ্টি জোগায়। বিচি ও বীজে থাকে চুলের জন্য উপকারী ভিটামিন ই, জিংক ও সেলেনিয়াম। মটরশুঁটি, শিমের বিচিসহ এ জাতীয় খাবারেও পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান থাকে। থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এ উপাদানগুলো চুলের ভেঙে যাওয়া রোধ করে এবং চুলের বৃদ্ধি অব্যাহত রাখে।
মাংস
চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সপ্তাহে নির্দিষ্ট পরিমাণে মাংস খান। কারণ, এতে আছে উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন। আর প্রোটিন খেলে চুল শক্ত ও মজবুত থাকে। মাংস খেলে চুলের ফলিকলগুলো ভালো থাকে।
২. চুলের যত্নে ঘরোয়া হেয়ার প্যাক
চুলের যত্নে ঘরোয়া কিছু হেয়ার প্যাক ভীষণ কাজে দেয়—
মেথি পেস্ট
মেথি চুলের জন্য উপকারী। এতে শর্করা, প্রোটিন, চর্বি, আয়রন, ম্যাংগানিজ, কপার, ম্যাগনেশিয়াম আছে। এতে আরও আছে বায়োটিন, ফোলেট, সেলেনিয়াম, জিংক। এই উপাদানগুলো চুলের জন্য উপকারী। মেথি চুল পড়া কমাতে, নতুন চুল গজাতে কাজ করে। মেথি ও মেথি ভেজানো পানি দুই-ই কাজে লাগে।
সারা রাত মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা পানিটা আরেকটি পাত্রে রেখে দিন। সেই পানি স্প্রে বোতলে ভরে চুলে লাগালে নতুন চুল গজায়। চুল ভালো থাকে। মেথি পেস্ট করে প্রতি সপ্তাহে একদিন মাথায় লাগালে চুলের গোড়া শক্ত হয়। চুল পড়া বন্ধ হয় এবং মাথায় নতুন চুল গজায়।
ডিমের হেয়ার প্যাক
ডিম চুল ভালো রাখে। চুল সিল্কি ও ঝরঝরে করতে ডিমের জুড়ি নেই। একটি ডিমের সঙ্গে এক কাপ দুধ, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস এবং দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ২০ মিনিট ঢেকে রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। চুল পড়া বন্ধ করে।
কলার হেয়ার মাস্ক
কলায় আছে উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম, প্রাকৃতিক তেল ও ভিটামিন। এ উপাদানগুলো চুল পড়া কমায়। দুটি কলা, এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, এক টেবিল চামচ নারকেল তেল এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। সবগুলো উপাদান ব্লেন্ড করে প্যাক তৈরি করে নিন। প্যাকটি কিছুক্ষণ রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এ হেয়ার মাস্কটি চুলকে সতেজ করবে, চুলের ড্যামেজ দূর করবে, চুলের খুশকি দূর করবে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াবে।
দইয়ের হেয়ার মাস্ক
চুল নরম ও সুন্দর রাখতে দইয়ের জুড়ি নেই। চুলে পুষ্টি জোগাতে কাজ করে দই। এক কাপ দইয়ের সঙ্গে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। হেয়ার মাস্কটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এর পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কারি পাতা ও নারকেল তেলের হেয়ার মাস্ক
কারি পাতা চুলের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে। চুল কালো করতে এবং অকালে চুল পাকা রোধ করতে সহায়তা করে। ১০ থেকে ১২টি কারি পাতার সঙ্গে দুই টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এই পেস্ট মাথার ত্বকে ও চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। এর পর শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দুবার ব্যবহারে ভালো উপকার পাবেন।
ক্যাস্টর অয়েলের মাস্ক
ক্যাস্টর অয়েলে উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন আছে। এটি ব্যবহারে খুশকি দূর হয়। চুলের রুক্ষতা দূর করে চুলকে প্রাণবন্ত করে ক্যাস্টর ওয়েল। এর সঙ্গে ডিম মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। যাদের চুল কোঁকড়ানো, তারা এই প্যাক লাগাতে পারেন। ডিম ও প্যাক চুল স্ট্রেইট তথা সোজা করতে সাহায্য করে।

ভিটামিন ই ক্যাপের ব্যবহার
ভিটামিন ই-তে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে চুল পড়া বন্ধ করতে সহায়তা করে। ভিটামিন ই-তে টোকোফেরল রয়েছে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান। এগুলো মাথার ত্বক সুস্থ রাখে।
দুটি ভিটামিন ই ক্যাপের সঙ্গে এক টেবিল চামচ আমন্ড তেল, এক টেবিল চামচ নারকেল তেল, এক চা-চামচ ক্যাস্টর অয়েল এবং কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ সারা রাত মাথায় লাগিয়ে রাখুন। সকালে চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিনবার এটি ব্যবহার করলে রুক্ষ চুলে প্রাণ ফিরবে।
৩. চুলে ভালো ব্রাশ ব্যবহার করা
মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে চুলে ভালো ব্রাশ ব্যবহার করুন। যাদের বেশি চুল পড়ে অথবা যাদের চুলে জট লাগে, তারা মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন। মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে চুল পড়া কমে। চুল ভালো রাখতে প্যাডল ব্রাশের চিরুনি, পিন ব্রাশ, কুইল ব্রাশ, বোর ব্রিশল ব্রাশের চিরুনি কিনতে পারেন।
৪. প্রয়োজনে হট অয়েল ম্যাসাজ
চুলে প্রাণ ফেরাতে হট অয়েল ম্যাসাজ করুন। একটি পাত্রে তেল নিয়ে কুসুম গরম করে নিন। তারপর চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে।
৫. নিয়মিত চুলে তেল দেওয়া
মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে মরা চামড়া থেকে অনেক খুশকি হয়। তাই মাথার ত্বক কোমল ও সতেজ রাখতে তেল ব্যবহারের বিকল্প নেই। সপ্তাহে তিন দিন চুলে তেল দিলে চুল ভালো থাকবে। আপনার মাথায় সহ্য হয়, এমন যেকোনো তেল ব্যবহার করতে পারেন।
৬. ভালো বালিশ ব্যবহার করা
চুল ও ত্বক ভালো রাখতে সিল্কের বালিশ কভার ব্যবহার করার পরামর্শ দেন রূপবিশেষজ্ঞরা। সুতি কভারের বালিশে ঘুমালে ঘষা লেগে চুল নষ্ট হতে পারে। সিল্ক ও সাটিনের বালিশের কভার ব্যবহার করলে চুল ও বালিশের মধ্যে ঘর্ষণ কম হয়। এতে চুলে জট বাঁধা ও ক্ষয় কম হয়।
৭. সঠিক উপায়ে বেণি করা
অনেকে ঘুমানোর আগে শক্ত করে বেণি করেন। এতে চুল ভেঙে যাওয়া কিংবা ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বেণি আঁটসাঁটভাবে না করে, কিছুটা হালকাভাবে করতে হবে। এতে চুল কুঁকড়ে যাবে না।
৮. আলতোভাবে চুলে তোয়ালে ব্যবহার করা
গোসলের পর ভেজা চুল তোয়ালে দিয়ে শক্তভাবে না বেঁধে আলতোভাবে বাঁধুন। বেশি শক্ত করে বাঁধলে এবং ভেজা চুল আঁচড়ালে চুল বেশি পড়ে।
৯. হেয়ার স্ট্রেইটনার বেশি বেশি ব্যবহার না করা
আপনি জানেন কি, বেশি বেশি হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে চুল ভেঙে যায়? এ ছাড়া বেশি বেশি হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে চুল পড়া বাড়ে। হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে চুলের আর্দ্রতা কমে যায়। চুল শুষ্ক হয়ে চুলের আগা ফেটে যায়। চুলে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করলেও চুলের ক্ষতি হয়। অকালে চুল ঝরে পড়ে।
১০. হেয়ার প্রোডাক্ট ঘন ঘন পরিবর্তন না করা
চুল ভালো রাখতে আপনার চুলের জন্য যেসব শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও প্যাক উপকারী, সেগুলো ব্যবহার করুন। তবে দীর্ঘদিন একই পণ্য ব্যবহার করবেন না। কারণ, বয়স, আবহাওয়া ইত্যাদির সঙ্গে সঙ্গে ত্বক ও চুলে পরিবর্তন আসে। মাঝেমধ্যে ভিন্ন ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। তবে আজ এক শ্যাম্পু বা প্যাক, কাল অন্য একটি, পরের দিন আরেকটি পণ্য ব্যবহার করবেন না। ঘন ঘন পণ্য পরিবর্তন করলে চুলের কিউটিকলের ক্ষতি হতে পারে।

১১. হেয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করা
যাদের চুল খুব রুক্ষ, প্রাণহীন তারা অবশ্যই চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে শ্যাম্পু করার পর। ভুলেও চুলের গোড়ায় কন্ডিশনার লাগাবেন না। কন্ডিশনার লাগাতে হয় চুলে। চুলে কন্ডিশনার লাগানোর পর সঙ্গে সঙ্গে না ধুয়ে ৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুতে হবে।
১২. চুলে অ্যালোভেরার ব্যবহার
অ্যালোভেরা প্রাকৃতিকভাবে চুলকে সতেজ, কোমল ও ঝলমলে রাখে। এটি মাথার ত্বকের অ্যালার্জি দূর করে, খুশকি ও রুক্ষতা দূর করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে। মাথায় নতুন চুল গজাতে ত্বকে অ্যালোভেরা জেল ঘষতে পারেন। ঘষে ১ ঘণ্টার মতো রেখে ধুয়ে ফেলুন। যেকোনো হেয়ার প্যাকের সঙ্গে অ্যালোভেরার জেল মিশিয়ে নিতে পারেন। যারা নিয়মিত মেহেদি প্যাক ব্যবহার করেন, সেখানেও অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মাথায় লাগাতে পারেন। একটি পাত্রে অ্যালোভেরার জেল, নারকেল তেল ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে, কুসুম গরম করে মাথায় লাগালেও উপকার পাবেন।
১৩. চুলের যত্নে ডিম
ডিম চুল ভালো রাখে। চুল সিল্কি ও ঝরঝরে করতে এর জুড়ি নেই। কারণ, ডিমে আছে প্রোটিন ও বায়োটিন। এ দুই উপাদান চুল ভালো রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। একটি ডিমের সঙ্গে এক কাপ দুধ, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস এবং দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ২০ মিনিট ঢেকে রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। চুল পড়া বন্ধ করে।
মেথি পেস্ট কিংবা অন্য যেকোনো প্যাকের সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে লাগাতে পারেন। এতেও দারুণ উপকার পাবেন।
১৪. চুলে পেঁয়াজের ব্যবহার
চুল পড়া কমিয়ে মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে পেঁয়াজের রস। কারণ, এতে আছে সালফার। এটি চুল ভালো রাখতে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। যাদের প্রচুর চুল পড়ে, তাঁরা পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে তার রসটুকু মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চুল ঘন হবে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন
পেঁয়াজ, ডিম, কলা, দই, মসুর ডাল, মেথি ইত্যাদি উপাদানগুলো দিয়ে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া যায়।
পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে তার রসটুকু মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। লাগানোর পর ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত ব্যবহারে চুল ঘন হবে।
মসুর ডালের পানি, মেথির পেস্ট ও ডিম একসঙ্গে মিশিয়ে ৩০ মিনিট চুলে লাগিয়ে রাখুন। এর পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
কলা ও ডিম ব্লেন্ড করে তার সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপ মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন।
দই চুল ভালো রাখে। দইয়ের সঙ্গে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। এই প্যাক চুলে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন।
দইয়ের সঙ্গে মধু ও ঘৃতকুমারীর জেল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাক চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এর পর কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
চুলের জন্য ভালো শ্যাম্পু
টাকা খরচ করে যেসব শ্যাম্পু আমরা কিনি, সেসব শ্যাম্পুতে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান চুলের ক্ষতি করে। যেসব শ্যাম্পুতে সোডিয়াম ক্লোরাইড, পলিথিলিন গ্লাইকল, ডাইথেনোসেমিন অথবা ট্রাইএথোলেনিনের মতো উপাদান রয়েছে, সেগুলো চুলের জন্য ভালো নয়। শ্যাম্পু কেনার আগে দেখে নেবেন শ্যাম্পুতে অ্যামোনিয়াম লরেথ সালফেট এবং সোডিয়াম লরেথ সালফেট আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে সে শ্যাম্পু কিনবেন না। কারণ, অ্যামোনিয়াম লরেথ সালফেট এবং সোডিয়াম লরেথ সালফেট চুলের জন্য ক্ষতিকর। শ্যাম্পুতে থাকা প্যারাবিন, ফরমালডিহাইডও চুলের ক্ষতি করে। তাই একটু ভালো ব্র্যান্ডের দামি শ্যাম্পু কিনুন। কম দামি শ্যাম্পুতে বেশি ফেনা হলেও, সেগুলোতে বেশি ক্ষতিকর উপাদান থাকে।
জাফরান হেয়ার অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
চুল শক্ত ও মজবুত করে জাফরান হেয়ার অয়েল। এর সঙ্গে নারকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েল সামান্য গরম করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। এতে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়বে।
রুক্ষ চুলের যত্ন
রুক্ষ চুলের যত্নে সপ্তাহে ৩ দিন চুলে নারকেল তেলের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপ ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে লাগাতে পারেন। চুলে প্রাণ ফেরাতে ডিম ও দইয়ের জুড়ি নেই। ডিম, দই, কলা একসঙ্গে ব্লেন্ড করে সপ্তাহে একদিন চুলে লাগাতে পারেন। এতে চুলের রুক্ষতা দূর হবে।
ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
ক্যাস্টর অয়েলে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান আছে। ত্বকের পিএইচ লেভেলের পাশাপাশি মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে এটি।
মাথায় ক্যাস্টর অয়েল লাগানোর আগে হাতে গ্লাভস পরে নিন। কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল হাতে নিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। তারপর পুরো চুলে ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে নিন। তারপর একবার চুল আঁচড়ে নিতে পারেন। একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে নিয়ে দুই ঘণ্টা রেখে দিন। এর পর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
রিক্তা রিচি, ঢাকা

বনলতা সেন চুলের যত্নে কী করতেন, কবি সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তাই সেই টোটকার কথা আমরা জানি না। কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে যেটা জেনেছি সেটা হলো, ঘন কালো, ঝলমলে, প্রাণবন্ত ও সুন্দর চুলের জন্য যত্ন চাই। যত্নহীন যেমন গাছ বাঁচে না, তেমনি চুলও টিকে থাকে না।
সাধারণত একটি চুলের গড় আয়ু দুই থেকে পাঁচ বছর। কেউ কেউ বলেন আরও কম। এরপর চুল এমনিতেই ঝরে যায়। চ্যালেঞ্জের বিষয় হলো চুল পড়ার পাশাপাশি নতুন চুল গজানো। নতুন চুল গজালে চুল পড়লেও মাথায় চুলের পরিমাণ ঠিক থাকে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মেনে চলতে হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ঘুম, দুশ্চিন্তাহীন জীবন, যত্নে ভালো পণ্যের ব্যবহার ইত্যাদি সুন্দর চুলের সঙ্গে যুক্ত।
১. স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া
চুলের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে সবার আগে আসে খাদ্যাভ্যাস। কিছু বিশেষ খাবার চুলের যত্নে বেশ সহায়ক—
ডিম
প্রোটিন ও বায়োটিনের খুব ভালো উৎস হলো ডিম। চুল ভালো রাখার জন্য এ দুই উপাদান খুব গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ না করা হলে চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়। অতিরিক্ত চুল পড়ে। প্রোটিন ও বায়োটিন ছাড়াও ডিমে আছে জিংক, সেলেনিয়াম এবং চুলের জন্য উপকারী পুষ্টি উপাদান। তাই চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাদ্যতালিকায় ডিম রাখুন।
বেরি তথা জাম
স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি ইত্যাদি চুলের বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে। এ ধরনের ফলে আছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি অক্সিডেন্টসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি দূর করে। এক কাপ স্ট্রবেরিতে ১৪৪ গ্রাম ভিটামিন সি থাকে, যা প্রতিদিনের ভিটামিন সি-এর চাহিদার ১৪১ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করে। এ ছাড়া অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ফ্রি র্যাডিকেলের হাত থেকে ত্বককেও রক্ষা করে।
পালং শাক
আমাদের খুব পরিচিত পালং শাক। এতে রয়েছে উপকারী উপাদান, যেমন ফোলেট, আয়রন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি। এগুলো দ্রুত চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ ত্বকের গ্রন্থিতে সিবাম উৎপাদন করতে সহায়তা করে। এতে মাথার ত্বক সতেজ থাকে। এক কাপ বা ৩০ গ্রাম পালং শাক ভিটামিন এ-এর দৈনিক চাহিদার ৫৪ শতাংশ পূরণ করে। পালং শাকে উচ্চ পরিমাণে আয়রন আছে। এটি চুলের বৃদ্ধিতে উপকারী ভূমিকা রাখে।
তৈলাক্ত মাছ
সব ধরনের তৈলাক্ত মাছ চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। স্যামন, রুই, কাতলাসহ ছোট-বড় সব মাছ খাদ্যতালিকায় রাখুন। কারণ, মাছে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তৈলাক্ত মাছে আরও আছে প্রোটিন, সেলেনিয়াম, ভিটামিন ডি৩, ভিটামিন বি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। এগুলো চুল ভালো রাখে। চুলে প্রাণ ফেরায়।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে থাকে বিটা ক্যারোটিন। শরীর বিটা ক্যারোটিনকে ভেঙে ভিটামিন এ-তে রূপান্তর করে। বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ চুলের জন্য উপকারী। যদি চুল পড়া কমাতে চান, তাহলে খাদ্যতালিকায় মিষ্টি আলু রাখুন।
বাদাম
চীনাবাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম ইত্যাদি সব ধরনের বাদাম চুল ভালো রাখতে সহায়তা করে। বাদামে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন ই, জিংক এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড। এক আউন্স বা ২৮ গ্রাম কাঠবাদাম দৈনিক চাহিদার ৩৭ শতাংশ পূরণ করে। রোজ বাদাম খেলে চুল তো ভালো থাকেই। সেই সঙ্গে হার্ট ভালো থাকে।

বীজ
বিভিন্ন ধরনের বিচি ও বীজ খাদ্যতালিকায় রাখুন। এগুলো চুল পড়া বন্ধ করে এবং চুলে পুষ্টি জোগায়। বিচি ও বীজে থাকে চুলের জন্য উপকারী ভিটামিন ই, জিংক ও সেলেনিয়াম। মটরশুঁটি, শিমের বিচিসহ এ জাতীয় খাবারেও পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান থাকে। থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এ উপাদানগুলো চুলের ভেঙে যাওয়া রোধ করে এবং চুলের বৃদ্ধি অব্যাহত রাখে।
মাংস
চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সপ্তাহে নির্দিষ্ট পরিমাণে মাংস খান। কারণ, এতে আছে উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন। আর প্রোটিন খেলে চুল শক্ত ও মজবুত থাকে। মাংস খেলে চুলের ফলিকলগুলো ভালো থাকে।
২. চুলের যত্নে ঘরোয়া হেয়ার প্যাক
চুলের যত্নে ঘরোয়া কিছু হেয়ার প্যাক ভীষণ কাজে দেয়—
মেথি পেস্ট
মেথি চুলের জন্য উপকারী। এতে শর্করা, প্রোটিন, চর্বি, আয়রন, ম্যাংগানিজ, কপার, ম্যাগনেশিয়াম আছে। এতে আরও আছে বায়োটিন, ফোলেট, সেলেনিয়াম, জিংক। এই উপাদানগুলো চুলের জন্য উপকারী। মেথি চুল পড়া কমাতে, নতুন চুল গজাতে কাজ করে। মেথি ও মেথি ভেজানো পানি দুই-ই কাজে লাগে।
সারা রাত মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা পানিটা আরেকটি পাত্রে রেখে দিন। সেই পানি স্প্রে বোতলে ভরে চুলে লাগালে নতুন চুল গজায়। চুল ভালো থাকে। মেথি পেস্ট করে প্রতি সপ্তাহে একদিন মাথায় লাগালে চুলের গোড়া শক্ত হয়। চুল পড়া বন্ধ হয় এবং মাথায় নতুন চুল গজায়।
ডিমের হেয়ার প্যাক
ডিম চুল ভালো রাখে। চুল সিল্কি ও ঝরঝরে করতে ডিমের জুড়ি নেই। একটি ডিমের সঙ্গে এক কাপ দুধ, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস এবং দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ২০ মিনিট ঢেকে রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। চুল পড়া বন্ধ করে।
কলার হেয়ার মাস্ক
কলায় আছে উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম, প্রাকৃতিক তেল ও ভিটামিন। এ উপাদানগুলো চুল পড়া কমায়। দুটি কলা, এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, এক টেবিল চামচ নারকেল তেল এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। সবগুলো উপাদান ব্লেন্ড করে প্যাক তৈরি করে নিন। প্যাকটি কিছুক্ষণ রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এ হেয়ার মাস্কটি চুলকে সতেজ করবে, চুলের ড্যামেজ দূর করবে, চুলের খুশকি দূর করবে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াবে।
দইয়ের হেয়ার মাস্ক
চুল নরম ও সুন্দর রাখতে দইয়ের জুড়ি নেই। চুলে পুষ্টি জোগাতে কাজ করে দই। এক কাপ দইয়ের সঙ্গে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। হেয়ার মাস্কটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এর পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কারি পাতা ও নারকেল তেলের হেয়ার মাস্ক
কারি পাতা চুলের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে। চুল কালো করতে এবং অকালে চুল পাকা রোধ করতে সহায়তা করে। ১০ থেকে ১২টি কারি পাতার সঙ্গে দুই টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এই পেস্ট মাথার ত্বকে ও চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। এর পর শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দুবার ব্যবহারে ভালো উপকার পাবেন।
ক্যাস্টর অয়েলের মাস্ক
ক্যাস্টর অয়েলে উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন আছে। এটি ব্যবহারে খুশকি দূর হয়। চুলের রুক্ষতা দূর করে চুলকে প্রাণবন্ত করে ক্যাস্টর ওয়েল। এর সঙ্গে ডিম মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। যাদের চুল কোঁকড়ানো, তারা এই প্যাক লাগাতে পারেন। ডিম ও প্যাক চুল স্ট্রেইট তথা সোজা করতে সাহায্য করে।

ভিটামিন ই ক্যাপের ব্যবহার
ভিটামিন ই-তে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে চুল পড়া বন্ধ করতে সহায়তা করে। ভিটামিন ই-তে টোকোফেরল রয়েছে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান। এগুলো মাথার ত্বক সুস্থ রাখে।
দুটি ভিটামিন ই ক্যাপের সঙ্গে এক টেবিল চামচ আমন্ড তেল, এক টেবিল চামচ নারকেল তেল, এক চা-চামচ ক্যাস্টর অয়েল এবং কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ সারা রাত মাথায় লাগিয়ে রাখুন। সকালে চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিনবার এটি ব্যবহার করলে রুক্ষ চুলে প্রাণ ফিরবে।
৩. চুলে ভালো ব্রাশ ব্যবহার করা
মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে চুলে ভালো ব্রাশ ব্যবহার করুন। যাদের বেশি চুল পড়ে অথবা যাদের চুলে জট লাগে, তারা মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন। মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে চুল পড়া কমে। চুল ভালো রাখতে প্যাডল ব্রাশের চিরুনি, পিন ব্রাশ, কুইল ব্রাশ, বোর ব্রিশল ব্রাশের চিরুনি কিনতে পারেন।
৪. প্রয়োজনে হট অয়েল ম্যাসাজ
চুলে প্রাণ ফেরাতে হট অয়েল ম্যাসাজ করুন। একটি পাত্রে তেল নিয়ে কুসুম গরম করে নিন। তারপর চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে।
৫. নিয়মিত চুলে তেল দেওয়া
মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে মরা চামড়া থেকে অনেক খুশকি হয়। তাই মাথার ত্বক কোমল ও সতেজ রাখতে তেল ব্যবহারের বিকল্প নেই। সপ্তাহে তিন দিন চুলে তেল দিলে চুল ভালো থাকবে। আপনার মাথায় সহ্য হয়, এমন যেকোনো তেল ব্যবহার করতে পারেন।
৬. ভালো বালিশ ব্যবহার করা
চুল ও ত্বক ভালো রাখতে সিল্কের বালিশ কভার ব্যবহার করার পরামর্শ দেন রূপবিশেষজ্ঞরা। সুতি কভারের বালিশে ঘুমালে ঘষা লেগে চুল নষ্ট হতে পারে। সিল্ক ও সাটিনের বালিশের কভার ব্যবহার করলে চুল ও বালিশের মধ্যে ঘর্ষণ কম হয়। এতে চুলে জট বাঁধা ও ক্ষয় কম হয়।
৭. সঠিক উপায়ে বেণি করা
অনেকে ঘুমানোর আগে শক্ত করে বেণি করেন। এতে চুল ভেঙে যাওয়া কিংবা ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বেণি আঁটসাঁটভাবে না করে, কিছুটা হালকাভাবে করতে হবে। এতে চুল কুঁকড়ে যাবে না।
৮. আলতোভাবে চুলে তোয়ালে ব্যবহার করা
গোসলের পর ভেজা চুল তোয়ালে দিয়ে শক্তভাবে না বেঁধে আলতোভাবে বাঁধুন। বেশি শক্ত করে বাঁধলে এবং ভেজা চুল আঁচড়ালে চুল বেশি পড়ে।
৯. হেয়ার স্ট্রেইটনার বেশি বেশি ব্যবহার না করা
আপনি জানেন কি, বেশি বেশি হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে চুল ভেঙে যায়? এ ছাড়া বেশি বেশি হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে চুল পড়া বাড়ে। হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে চুলের আর্দ্রতা কমে যায়। চুল শুষ্ক হয়ে চুলের আগা ফেটে যায়। চুলে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করলেও চুলের ক্ষতি হয়। অকালে চুল ঝরে পড়ে।
১০. হেয়ার প্রোডাক্ট ঘন ঘন পরিবর্তন না করা
চুল ভালো রাখতে আপনার চুলের জন্য যেসব শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও প্যাক উপকারী, সেগুলো ব্যবহার করুন। তবে দীর্ঘদিন একই পণ্য ব্যবহার করবেন না। কারণ, বয়স, আবহাওয়া ইত্যাদির সঙ্গে সঙ্গে ত্বক ও চুলে পরিবর্তন আসে। মাঝেমধ্যে ভিন্ন ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। তবে আজ এক শ্যাম্পু বা প্যাক, কাল অন্য একটি, পরের দিন আরেকটি পণ্য ব্যবহার করবেন না। ঘন ঘন পণ্য পরিবর্তন করলে চুলের কিউটিকলের ক্ষতি হতে পারে।

১১. হেয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করা
যাদের চুল খুব রুক্ষ, প্রাণহীন তারা অবশ্যই চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে শ্যাম্পু করার পর। ভুলেও চুলের গোড়ায় কন্ডিশনার লাগাবেন না। কন্ডিশনার লাগাতে হয় চুলে। চুলে কন্ডিশনার লাগানোর পর সঙ্গে সঙ্গে না ধুয়ে ৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুতে হবে।
১২. চুলে অ্যালোভেরার ব্যবহার
অ্যালোভেরা প্রাকৃতিকভাবে চুলকে সতেজ, কোমল ও ঝলমলে রাখে। এটি মাথার ত্বকের অ্যালার্জি দূর করে, খুশকি ও রুক্ষতা দূর করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে। মাথায় নতুন চুল গজাতে ত্বকে অ্যালোভেরা জেল ঘষতে পারেন। ঘষে ১ ঘণ্টার মতো রেখে ধুয়ে ফেলুন। যেকোনো হেয়ার প্যাকের সঙ্গে অ্যালোভেরার জেল মিশিয়ে নিতে পারেন। যারা নিয়মিত মেহেদি প্যাক ব্যবহার করেন, সেখানেও অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মাথায় লাগাতে পারেন। একটি পাত্রে অ্যালোভেরার জেল, নারকেল তেল ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে, কুসুম গরম করে মাথায় লাগালেও উপকার পাবেন।
১৩. চুলের যত্নে ডিম
ডিম চুল ভালো রাখে। চুল সিল্কি ও ঝরঝরে করতে এর জুড়ি নেই। কারণ, ডিমে আছে প্রোটিন ও বায়োটিন। এ দুই উপাদান চুল ভালো রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। একটি ডিমের সঙ্গে এক কাপ দুধ, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস এবং দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ২০ মিনিট ঢেকে রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। চুল পড়া বন্ধ করে।
মেথি পেস্ট কিংবা অন্য যেকোনো প্যাকের সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে লাগাতে পারেন। এতেও দারুণ উপকার পাবেন।
১৪. চুলে পেঁয়াজের ব্যবহার
চুল পড়া কমিয়ে মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে পেঁয়াজের রস। কারণ, এতে আছে সালফার। এটি চুল ভালো রাখতে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। যাদের প্রচুর চুল পড়ে, তাঁরা পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে তার রসটুকু মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চুল ঘন হবে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন
পেঁয়াজ, ডিম, কলা, দই, মসুর ডাল, মেথি ইত্যাদি উপাদানগুলো দিয়ে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া যায়।
পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে তার রসটুকু মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। লাগানোর পর ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত ব্যবহারে চুল ঘন হবে।
মসুর ডালের পানি, মেথির পেস্ট ও ডিম একসঙ্গে মিশিয়ে ৩০ মিনিট চুলে লাগিয়ে রাখুন। এর পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
কলা ও ডিম ব্লেন্ড করে তার সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপ মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন।
দই চুল ভালো রাখে। দইয়ের সঙ্গে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। এই প্যাক চুলে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন।
দইয়ের সঙ্গে মধু ও ঘৃতকুমারীর জেল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাক চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এর পর কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
চুলের জন্য ভালো শ্যাম্পু
টাকা খরচ করে যেসব শ্যাম্পু আমরা কিনি, সেসব শ্যাম্পুতে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান চুলের ক্ষতি করে। যেসব শ্যাম্পুতে সোডিয়াম ক্লোরাইড, পলিথিলিন গ্লাইকল, ডাইথেনোসেমিন অথবা ট্রাইএথোলেনিনের মতো উপাদান রয়েছে, সেগুলো চুলের জন্য ভালো নয়। শ্যাম্পু কেনার আগে দেখে নেবেন শ্যাম্পুতে অ্যামোনিয়াম লরেথ সালফেট এবং সোডিয়াম লরেথ সালফেট আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে সে শ্যাম্পু কিনবেন না। কারণ, অ্যামোনিয়াম লরেথ সালফেট এবং সোডিয়াম লরেথ সালফেট চুলের জন্য ক্ষতিকর। শ্যাম্পুতে থাকা প্যারাবিন, ফরমালডিহাইডও চুলের ক্ষতি করে। তাই একটু ভালো ব্র্যান্ডের দামি শ্যাম্পু কিনুন। কম দামি শ্যাম্পুতে বেশি ফেনা হলেও, সেগুলোতে বেশি ক্ষতিকর উপাদান থাকে।
জাফরান হেয়ার অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
চুল শক্ত ও মজবুত করে জাফরান হেয়ার অয়েল। এর সঙ্গে নারকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েল সামান্য গরম করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। এতে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়বে।
রুক্ষ চুলের যত্ন
রুক্ষ চুলের যত্নে সপ্তাহে ৩ দিন চুলে নারকেল তেলের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপ ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে লাগাতে পারেন। চুলে প্রাণ ফেরাতে ডিম ও দইয়ের জুড়ি নেই। ডিম, দই, কলা একসঙ্গে ব্লেন্ড করে সপ্তাহে একদিন চুলে লাগাতে পারেন। এতে চুলের রুক্ষতা দূর হবে।
ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
ক্যাস্টর অয়েলে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান আছে। ত্বকের পিএইচ লেভেলের পাশাপাশি মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে এটি।
মাথায় ক্যাস্টর অয়েল লাগানোর আগে হাতে গ্লাভস পরে নিন। কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল হাতে নিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। তারপর পুরো চুলে ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে নিন। তারপর একবার চুল আঁচড়ে নিতে পারেন। একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে নিয়ে দুই ঘণ্টা রেখে দিন। এর পর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

বনলতা সেন চুলের যত্নে কী করতেন, কবি সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তাই সেই টোটকার কথা আমরা জানি না। কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে যেটা জেনেছি সেটা হলো, ঘন কালো, ঝলমলে, প্রাণবন্ত ও সুন্দর চুলের জন্য যত্ন চাই। যত্নহীন যেমন গাছ বাঁচে না, তেমনি চুলও টিকে থাকে না।
সাধারণত একটি চুলের গড় আয়ু দুই থেকে পাঁচ বছর। কেউ কেউ বলেন আরও কম। এরপর চুল এমনিতেই ঝরে যায়। চ্যালেঞ্জের বিষয় হলো চুল পড়ার পাশাপাশি নতুন চুল গজানো। নতুন চুল গজালে চুল পড়লেও মাথায় চুলের পরিমাণ ঠিক থাকে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মেনে চলতে হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ঘুম, দুশ্চিন্তাহীন জীবন, যত্নে ভালো পণ্যের ব্যবহার ইত্যাদি সুন্দর চুলের সঙ্গে যুক্ত।
১. স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া
চুলের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে সবার আগে আসে খাদ্যাভ্যাস। কিছু বিশেষ খাবার চুলের যত্নে বেশ সহায়ক—
ডিম
প্রোটিন ও বায়োটিনের খুব ভালো উৎস হলো ডিম। চুল ভালো রাখার জন্য এ দুই উপাদান খুব গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ না করা হলে চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়। অতিরিক্ত চুল পড়ে। প্রোটিন ও বায়োটিন ছাড়াও ডিমে আছে জিংক, সেলেনিয়াম এবং চুলের জন্য উপকারী পুষ্টি উপাদান। তাই চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাদ্যতালিকায় ডিম রাখুন।
বেরি তথা জাম
স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি ইত্যাদি চুলের বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে। এ ধরনের ফলে আছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি অক্সিডেন্টসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি দূর করে। এক কাপ স্ট্রবেরিতে ১৪৪ গ্রাম ভিটামিন সি থাকে, যা প্রতিদিনের ভিটামিন সি-এর চাহিদার ১৪১ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করে। এ ছাড়া অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ফ্রি র্যাডিকেলের হাত থেকে ত্বককেও রক্ষা করে।
পালং শাক
আমাদের খুব পরিচিত পালং শাক। এতে রয়েছে উপকারী উপাদান, যেমন ফোলেট, আয়রন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি। এগুলো দ্রুত চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ ত্বকের গ্রন্থিতে সিবাম উৎপাদন করতে সহায়তা করে। এতে মাথার ত্বক সতেজ থাকে। এক কাপ বা ৩০ গ্রাম পালং শাক ভিটামিন এ-এর দৈনিক চাহিদার ৫৪ শতাংশ পূরণ করে। পালং শাকে উচ্চ পরিমাণে আয়রন আছে। এটি চুলের বৃদ্ধিতে উপকারী ভূমিকা রাখে।
তৈলাক্ত মাছ
সব ধরনের তৈলাক্ত মাছ চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। স্যামন, রুই, কাতলাসহ ছোট-বড় সব মাছ খাদ্যতালিকায় রাখুন। কারণ, মাছে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তৈলাক্ত মাছে আরও আছে প্রোটিন, সেলেনিয়াম, ভিটামিন ডি৩, ভিটামিন বি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। এগুলো চুল ভালো রাখে। চুলে প্রাণ ফেরায়।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে থাকে বিটা ক্যারোটিন। শরীর বিটা ক্যারোটিনকে ভেঙে ভিটামিন এ-তে রূপান্তর করে। বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ চুলের জন্য উপকারী। যদি চুল পড়া কমাতে চান, তাহলে খাদ্যতালিকায় মিষ্টি আলু রাখুন।
বাদাম
চীনাবাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম ইত্যাদি সব ধরনের বাদাম চুল ভালো রাখতে সহায়তা করে। বাদামে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন ই, জিংক এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড। এক আউন্স বা ২৮ গ্রাম কাঠবাদাম দৈনিক চাহিদার ৩৭ শতাংশ পূরণ করে। রোজ বাদাম খেলে চুল তো ভালো থাকেই। সেই সঙ্গে হার্ট ভালো থাকে।

বীজ
বিভিন্ন ধরনের বিচি ও বীজ খাদ্যতালিকায় রাখুন। এগুলো চুল পড়া বন্ধ করে এবং চুলে পুষ্টি জোগায়। বিচি ও বীজে থাকে চুলের জন্য উপকারী ভিটামিন ই, জিংক ও সেলেনিয়াম। মটরশুঁটি, শিমের বিচিসহ এ জাতীয় খাবারেও পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান থাকে। থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এ উপাদানগুলো চুলের ভেঙে যাওয়া রোধ করে এবং চুলের বৃদ্ধি অব্যাহত রাখে।
মাংস
চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সপ্তাহে নির্দিষ্ট পরিমাণে মাংস খান। কারণ, এতে আছে উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন। আর প্রোটিন খেলে চুল শক্ত ও মজবুত থাকে। মাংস খেলে চুলের ফলিকলগুলো ভালো থাকে।
২. চুলের যত্নে ঘরোয়া হেয়ার প্যাক
চুলের যত্নে ঘরোয়া কিছু হেয়ার প্যাক ভীষণ কাজে দেয়—
মেথি পেস্ট
মেথি চুলের জন্য উপকারী। এতে শর্করা, প্রোটিন, চর্বি, আয়রন, ম্যাংগানিজ, কপার, ম্যাগনেশিয়াম আছে। এতে আরও আছে বায়োটিন, ফোলেট, সেলেনিয়াম, জিংক। এই উপাদানগুলো চুলের জন্য উপকারী। মেথি চুল পড়া কমাতে, নতুন চুল গজাতে কাজ করে। মেথি ও মেথি ভেজানো পানি দুই-ই কাজে লাগে।
সারা রাত মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা পানিটা আরেকটি পাত্রে রেখে দিন। সেই পানি স্প্রে বোতলে ভরে চুলে লাগালে নতুন চুল গজায়। চুল ভালো থাকে। মেথি পেস্ট করে প্রতি সপ্তাহে একদিন মাথায় লাগালে চুলের গোড়া শক্ত হয়। চুল পড়া বন্ধ হয় এবং মাথায় নতুন চুল গজায়।
ডিমের হেয়ার প্যাক
ডিম চুল ভালো রাখে। চুল সিল্কি ও ঝরঝরে করতে ডিমের জুড়ি নেই। একটি ডিমের সঙ্গে এক কাপ দুধ, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস এবং দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ২০ মিনিট ঢেকে রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। চুল পড়া বন্ধ করে।
কলার হেয়ার মাস্ক
কলায় আছে উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম, প্রাকৃতিক তেল ও ভিটামিন। এ উপাদানগুলো চুল পড়া কমায়। দুটি কলা, এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, এক টেবিল চামচ নারকেল তেল এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। সবগুলো উপাদান ব্লেন্ড করে প্যাক তৈরি করে নিন। প্যাকটি কিছুক্ষণ রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এ হেয়ার মাস্কটি চুলকে সতেজ করবে, চুলের ড্যামেজ দূর করবে, চুলের খুশকি দূর করবে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াবে।
দইয়ের হেয়ার মাস্ক
চুল নরম ও সুন্দর রাখতে দইয়ের জুড়ি নেই। চুলে পুষ্টি জোগাতে কাজ করে দই। এক কাপ দইয়ের সঙ্গে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। হেয়ার মাস্কটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এর পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কারি পাতা ও নারকেল তেলের হেয়ার মাস্ক
কারি পাতা চুলের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে। চুল কালো করতে এবং অকালে চুল পাকা রোধ করতে সহায়তা করে। ১০ থেকে ১২টি কারি পাতার সঙ্গে দুই টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এই পেস্ট মাথার ত্বকে ও চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। এর পর শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দুবার ব্যবহারে ভালো উপকার পাবেন।
ক্যাস্টর অয়েলের মাস্ক
ক্যাস্টর অয়েলে উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন আছে। এটি ব্যবহারে খুশকি দূর হয়। চুলের রুক্ষতা দূর করে চুলকে প্রাণবন্ত করে ক্যাস্টর ওয়েল। এর সঙ্গে ডিম মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। যাদের চুল কোঁকড়ানো, তারা এই প্যাক লাগাতে পারেন। ডিম ও প্যাক চুল স্ট্রেইট তথা সোজা করতে সাহায্য করে।

ভিটামিন ই ক্যাপের ব্যবহার
ভিটামিন ই-তে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে চুল পড়া বন্ধ করতে সহায়তা করে। ভিটামিন ই-তে টোকোফেরল রয়েছে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান। এগুলো মাথার ত্বক সুস্থ রাখে।
দুটি ভিটামিন ই ক্যাপের সঙ্গে এক টেবিল চামচ আমন্ড তেল, এক টেবিল চামচ নারকেল তেল, এক চা-চামচ ক্যাস্টর অয়েল এবং কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ সারা রাত মাথায় লাগিয়ে রাখুন। সকালে চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিনবার এটি ব্যবহার করলে রুক্ষ চুলে প্রাণ ফিরবে।
৩. চুলে ভালো ব্রাশ ব্যবহার করা
মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে চুলে ভালো ব্রাশ ব্যবহার করুন। যাদের বেশি চুল পড়ে অথবা যাদের চুলে জট লাগে, তারা মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন। মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে চুল পড়া কমে। চুল ভালো রাখতে প্যাডল ব্রাশের চিরুনি, পিন ব্রাশ, কুইল ব্রাশ, বোর ব্রিশল ব্রাশের চিরুনি কিনতে পারেন।
৪. প্রয়োজনে হট অয়েল ম্যাসাজ
চুলে প্রাণ ফেরাতে হট অয়েল ম্যাসাজ করুন। একটি পাত্রে তেল নিয়ে কুসুম গরম করে নিন। তারপর চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে।
৫. নিয়মিত চুলে তেল দেওয়া
মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে মরা চামড়া থেকে অনেক খুশকি হয়। তাই মাথার ত্বক কোমল ও সতেজ রাখতে তেল ব্যবহারের বিকল্প নেই। সপ্তাহে তিন দিন চুলে তেল দিলে চুল ভালো থাকবে। আপনার মাথায় সহ্য হয়, এমন যেকোনো তেল ব্যবহার করতে পারেন।
৬. ভালো বালিশ ব্যবহার করা
চুল ও ত্বক ভালো রাখতে সিল্কের বালিশ কভার ব্যবহার করার পরামর্শ দেন রূপবিশেষজ্ঞরা। সুতি কভারের বালিশে ঘুমালে ঘষা লেগে চুল নষ্ট হতে পারে। সিল্ক ও সাটিনের বালিশের কভার ব্যবহার করলে চুল ও বালিশের মধ্যে ঘর্ষণ কম হয়। এতে চুলে জট বাঁধা ও ক্ষয় কম হয়।
৭. সঠিক উপায়ে বেণি করা
অনেকে ঘুমানোর আগে শক্ত করে বেণি করেন। এতে চুল ভেঙে যাওয়া কিংবা ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বেণি আঁটসাঁটভাবে না করে, কিছুটা হালকাভাবে করতে হবে। এতে চুল কুঁকড়ে যাবে না।
৮. আলতোভাবে চুলে তোয়ালে ব্যবহার করা
গোসলের পর ভেজা চুল তোয়ালে দিয়ে শক্তভাবে না বেঁধে আলতোভাবে বাঁধুন। বেশি শক্ত করে বাঁধলে এবং ভেজা চুল আঁচড়ালে চুল বেশি পড়ে।
৯. হেয়ার স্ট্রেইটনার বেশি বেশি ব্যবহার না করা
আপনি জানেন কি, বেশি বেশি হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে চুল ভেঙে যায়? এ ছাড়া বেশি বেশি হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে চুল পড়া বাড়ে। হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে চুলের আর্দ্রতা কমে যায়। চুল শুষ্ক হয়ে চুলের আগা ফেটে যায়। চুলে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করলেও চুলের ক্ষতি হয়। অকালে চুল ঝরে পড়ে।
১০. হেয়ার প্রোডাক্ট ঘন ঘন পরিবর্তন না করা
চুল ভালো রাখতে আপনার চুলের জন্য যেসব শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও প্যাক উপকারী, সেগুলো ব্যবহার করুন। তবে দীর্ঘদিন একই পণ্য ব্যবহার করবেন না। কারণ, বয়স, আবহাওয়া ইত্যাদির সঙ্গে সঙ্গে ত্বক ও চুলে পরিবর্তন আসে। মাঝেমধ্যে ভিন্ন ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। তবে আজ এক শ্যাম্পু বা প্যাক, কাল অন্য একটি, পরের দিন আরেকটি পণ্য ব্যবহার করবেন না। ঘন ঘন পণ্য পরিবর্তন করলে চুলের কিউটিকলের ক্ষতি হতে পারে।

১১. হেয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করা
যাদের চুল খুব রুক্ষ, প্রাণহীন তারা অবশ্যই চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে শ্যাম্পু করার পর। ভুলেও চুলের গোড়ায় কন্ডিশনার লাগাবেন না। কন্ডিশনার লাগাতে হয় চুলে। চুলে কন্ডিশনার লাগানোর পর সঙ্গে সঙ্গে না ধুয়ে ৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুতে হবে।
১২. চুলে অ্যালোভেরার ব্যবহার
অ্যালোভেরা প্রাকৃতিকভাবে চুলকে সতেজ, কোমল ও ঝলমলে রাখে। এটি মাথার ত্বকের অ্যালার্জি দূর করে, খুশকি ও রুক্ষতা দূর করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে। মাথায় নতুন চুল গজাতে ত্বকে অ্যালোভেরা জেল ঘষতে পারেন। ঘষে ১ ঘণ্টার মতো রেখে ধুয়ে ফেলুন। যেকোনো হেয়ার প্যাকের সঙ্গে অ্যালোভেরার জেল মিশিয়ে নিতে পারেন। যারা নিয়মিত মেহেদি প্যাক ব্যবহার করেন, সেখানেও অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মাথায় লাগাতে পারেন। একটি পাত্রে অ্যালোভেরার জেল, নারকেল তেল ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে, কুসুম গরম করে মাথায় লাগালেও উপকার পাবেন।
১৩. চুলের যত্নে ডিম
ডিম চুল ভালো রাখে। চুল সিল্কি ও ঝরঝরে করতে এর জুড়ি নেই। কারণ, ডিমে আছে প্রোটিন ও বায়োটিন। এ দুই উপাদান চুল ভালো রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। একটি ডিমের সঙ্গে এক কাপ দুধ, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস এবং দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ২০ মিনিট ঢেকে রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। চুল পড়া বন্ধ করে।
মেথি পেস্ট কিংবা অন্য যেকোনো প্যাকের সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে লাগাতে পারেন। এতেও দারুণ উপকার পাবেন।
১৪. চুলে পেঁয়াজের ব্যবহার
চুল পড়া কমিয়ে মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে পেঁয়াজের রস। কারণ, এতে আছে সালফার। এটি চুল ভালো রাখতে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। যাদের প্রচুর চুল পড়ে, তাঁরা পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে তার রসটুকু মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চুল ঘন হবে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন
পেঁয়াজ, ডিম, কলা, দই, মসুর ডাল, মেথি ইত্যাদি উপাদানগুলো দিয়ে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া যায়।
পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে তার রসটুকু মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। লাগানোর পর ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত ব্যবহারে চুল ঘন হবে।
মসুর ডালের পানি, মেথির পেস্ট ও ডিম একসঙ্গে মিশিয়ে ৩০ মিনিট চুলে লাগিয়ে রাখুন। এর পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
কলা ও ডিম ব্লেন্ড করে তার সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপ মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন।
দই চুল ভালো রাখে। দইয়ের সঙ্গে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। এই প্যাক চুলে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন।
দইয়ের সঙ্গে মধু ও ঘৃতকুমারীর জেল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাক চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এর পর কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
চুলের জন্য ভালো শ্যাম্পু
টাকা খরচ করে যেসব শ্যাম্পু আমরা কিনি, সেসব শ্যাম্পুতে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান চুলের ক্ষতি করে। যেসব শ্যাম্পুতে সোডিয়াম ক্লোরাইড, পলিথিলিন গ্লাইকল, ডাইথেনোসেমিন অথবা ট্রাইএথোলেনিনের মতো উপাদান রয়েছে, সেগুলো চুলের জন্য ভালো নয়। শ্যাম্পু কেনার আগে দেখে নেবেন শ্যাম্পুতে অ্যামোনিয়াম লরেথ সালফেট এবং সোডিয়াম লরেথ সালফেট আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে সে শ্যাম্পু কিনবেন না। কারণ, অ্যামোনিয়াম লরেথ সালফেট এবং সোডিয়াম লরেথ সালফেট চুলের জন্য ক্ষতিকর। শ্যাম্পুতে থাকা প্যারাবিন, ফরমালডিহাইডও চুলের ক্ষতি করে। তাই একটু ভালো ব্র্যান্ডের দামি শ্যাম্পু কিনুন। কম দামি শ্যাম্পুতে বেশি ফেনা হলেও, সেগুলোতে বেশি ক্ষতিকর উপাদান থাকে।
জাফরান হেয়ার অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
চুল শক্ত ও মজবুত করে জাফরান হেয়ার অয়েল। এর সঙ্গে নারকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েল সামান্য গরম করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। এতে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়বে।
রুক্ষ চুলের যত্ন
রুক্ষ চুলের যত্নে সপ্তাহে ৩ দিন চুলে নারকেল তেলের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপ ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে লাগাতে পারেন। চুলে প্রাণ ফেরাতে ডিম ও দইয়ের জুড়ি নেই। ডিম, দই, কলা একসঙ্গে ব্লেন্ড করে সপ্তাহে একদিন চুলে লাগাতে পারেন। এতে চুলের রুক্ষতা দূর হবে।
ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
ক্যাস্টর অয়েলে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান আছে। ত্বকের পিএইচ লেভেলের পাশাপাশি মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে এটি।
মাথায় ক্যাস্টর অয়েল লাগানোর আগে হাতে গ্লাভস পরে নিন। কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল হাতে নিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। তারপর পুরো চুলে ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে নিন। তারপর একবার চুল আঁচড়ে নিতে পারেন। একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে নিয়ে দুই ঘণ্টা রেখে দিন। এর পর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
৪ ঘণ্টা আগে
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
৬ ঘণ্টা আগে
আজ আপনার আত্মবিশ্বাস এমন তুঙ্গে থাকবে যে মনে হবে একাই পুরো অফিস সামলে দিতে পারেন। বস কোনো জটিল কাজ দিলে সেটাকে চ্যালেঞ্জ মনে করে হাতে নেবেন, আর মাঝপথে গিয়ে বুঝবেন, এটা আসলে শুধু আপনার ওপর কাজের পাহাড় চাপানোর একটা চক্রান্ত! অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বশে পাড়ার চায়ের দোকানে রাজনৈতিক তর্কে জড়িয়ে...
৭ ঘণ্টা আগে
শীতকাল মানেই প্রকৃতির এক স্নিগ্ধ পরিবর্তন। কিন্তু ঠান্ডা পড়তে শুরু করলেই শুষ্ক হয়ে যায় প্রকৃতি। আর সেই সঙ্গে আমাদের ত্বকের জন্য নিয়ে আসে রুক্ষতা, শুষ্কতা এবং চুলকানির মতো সমস্যা। বাইরে তীক্ষ্ণ ঠান্ডা বাতাস আর ঘরের ভেতরের শুষ্ক উষ্ণ বাতাস।
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে। এই খাবারগুলো কেবল খাদ্য নয় বরং শিল্পের এক একটি অংশ হয়ে উঠেছে। আর তাই এরা তাদের ক্রেতাদের কাছে ক্ষমতা, প্রাচুর্য এবং এক বিশেষ জীবনযাত্রার প্রতীক।
মাটির নিচের অমূল্য রত্ন এবং মসলার রাজা
সবচেয়ে দামি খাবারের তালিকায় প্রথমে আসে সেই মাটির নিচের রহস্য। যা সোনার চেয়েও মূল্যবান। ইতালির পিডমন্ট অঞ্চলের স্থানীয় সাদা ট্রাফল এমনই এক ছত্রাক, যা অত্যন্ত দুর্লভ ও ব্যয়বহুল। একবার চীনের ম্যাকাও-এর এক ক্যাসিনো মালিক প্রায় দেড় কেজি ওজনের একটি ট্রাফল ৩,৩০, ০০০ ডলারে কিনেছিলেন। টাকায় হিসাব করলে যার দাম হয় ৪ কোটি ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪০০ টাকা। অন্যদিকে, মসলার জগতে রাজা হলো জাফরান। যাকে ডাকা হয় ’লাল সোনা’ নামে। এক কেজি জাফরান তৈরি করতে হাজার হাজার ফুল লাগে। এ জন্য এর দাম পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মসলার স্থানে নিয়ে গেছে। ফরাসি দ্বীপ নুয়ারমুতিয়ে-তে জন্মানো লা বোনোটে আলুর ক্ষেত্রেও সেই বিরলতা দেখা যায়। বিশেষ পরিবেশে ও শৈবালের কারণে এদের প্রতি কেজির দাম প্রায় ৬০০ ডলার বা ৭৩,১৭৮ টাকা।
সমুদ্র ও মাংসের জগতের মহার্ঘ উপহার
মাংস এবং সামুদ্রিক খাবারের জগতেও রয়েছে মহাযজ্ঞের ছোঁয়া। জাপানের ওয়াগিউ বিফ কেবল সুস্বাদুই নয়, এর পেছনের প্রক্রিয়াটিও রাজকীয়। এই গরুগুলোকে বিশেষ খাবার দেওয়া হয়। এমনকি প্রতিদিন মালিশও করা হয়। যার ফলস্বরূপ এর ১০০ গ্রাম মাংসের দাম প্রায় ৫০ ডলার। অর্থাৎ ৬০৯৯ টাকা। আরও একধাপ এগিয়ে, ২০১৯ সালে জাপানে একটি স্নো ক্র্যাব। যা নিলামে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৪৬,০০০ ডলারে। তবে সামুদ্রিক খাবারের মুকুট হলো অ্যালমাস ক্যাভিয়ার। এই বিরল বেলুগা ক্যাভিয়ার প্রতি কেজি ৩৪,৫০০ ডলারে বিক্রি হয়ে থাকে। যার বাংলাদেশি মূল্য দাঁড়ায় ৪২,০৮৩১০ টাকা। যা সত্যিকারের বিলাসিতার প্রতিচ্ছবি। অন্যদিকে, স্পেনের ঐতিহ্যবাহী ইবেরিকো হ্যাম-এর এক পা বা লেগ ৪,৫০০ ডলারের মতো দামে বিক্রি হওয়ার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।

সাধারণ খাবারে অসাধারণ মূল্য সংযোজন
রেস্টুরেন্টে গেলে ৮০০ টাকা থাকে শুরু করে ৩০০০ টাকায় পিৎজা পাওয়া যায়। তবে ১২,০০০ ডলার বা ১,৪৬৩, ৭৬০ টাকার পিৎজা কখনো শুনেছেন? আপনি না শুনে থাকলেও পৃথিবীতে তা আছে। পিৎজা নির্মাতা রেনাটো ভায়োলা তৈরি করেছিলেন লিউস XIII পিৎজা। যার উপাদানগুলোর মধ্যে ছিল তিন ধরনের ক্যাভিয়ার। আবার স্কটল্যান্ডের ডোমিনিকো ক্রলা-এর তৈরি পিৎজা রয়্যাল ০০৭ বিকোয় ৪,২০০ ডলারে। যেখানে কগনাক-এ ম্যারিনেট করা লবস্টার ও শ্যাম্পেনে ভেজানো ক্যাভিয়ার ব্যবহার করা হয়েছিল। মেক্সিকোর গ্র্যান্ড ভেলাস রিসোর্টে পাওয়া গ্র্যান্ড ভেলাস লস কাবোস টাকো। যার মূল্য ২৫,০০০ ডলার, যেখানে ছিল কোবে বিফ এবং সোনা-মিশ্রিত টর্টিলা। এমনকি নিউ ইয়র্কের একটি সাধারণ গ্রিলড চিজ স্যান্ডউইচও যখন শ্যাম্পেনে ভেজানো রুটি আর সোনার ফ্লেক্সের সঙ্গে আসে, তখন সেই কুইন্টেসেনশিয়াল গ্রিলড চিজ-এর দাম দাঁড়ায় ২১৪ ডলার।
ডেজার্ট, পানীয় এবং কফি জগতের বিস্ময়
মিষ্টি এবং পানীয়ের ক্ষেত্রেও বিলাসিতা তার ছাপ ফেলেছে। পেস্ট্রি শেফ জেওং হং-ইয়ংটো এক মাস সময় নিয়ে একটি ক্রিসমাস কেক তৈরি করেছিলেন, যাতে ছিল ২২৩টি হিরা, আর এর দাম ছিল অবিশ্বাস্য ১.৭ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, জাপানি ফলগুলোর মধ্যেও রয়েছে রাজকীয়তা। একটি ডেনসুকে ওয়াটারমেলন নিলামে ৬,১০০ ডলারে বিক্রি হয়েছিল এবং দুটি ইউবারি কিং মেলন ৪৫,০০০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। পানীয়ের ক্ষেত্রে, ১৯৫২ সালের বিরল টুলিবার্ডিন হুইস্কির একটি বোতলের দাম ৪১,০০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছিল। তবে প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালের ফল হলো কপি লুয়াক কফি। সিভেট ক্যাট বা গন্ধগোকুলের হজম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি এই কফি প্রতি কেজি প্রায় ৭০০ ডলারে বিক্রি হয়।
সূত্র: স্টার্স ইনসাইডার

বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে। এই খাবারগুলো কেবল খাদ্য নয় বরং শিল্পের এক একটি অংশ হয়ে উঠেছে। আর তাই এরা তাদের ক্রেতাদের কাছে ক্ষমতা, প্রাচুর্য এবং এক বিশেষ জীবনযাত্রার প্রতীক।
মাটির নিচের অমূল্য রত্ন এবং মসলার রাজা
সবচেয়ে দামি খাবারের তালিকায় প্রথমে আসে সেই মাটির নিচের রহস্য। যা সোনার চেয়েও মূল্যবান। ইতালির পিডমন্ট অঞ্চলের স্থানীয় সাদা ট্রাফল এমনই এক ছত্রাক, যা অত্যন্ত দুর্লভ ও ব্যয়বহুল। একবার চীনের ম্যাকাও-এর এক ক্যাসিনো মালিক প্রায় দেড় কেজি ওজনের একটি ট্রাফল ৩,৩০, ০০০ ডলারে কিনেছিলেন। টাকায় হিসাব করলে যার দাম হয় ৪ কোটি ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪০০ টাকা। অন্যদিকে, মসলার জগতে রাজা হলো জাফরান। যাকে ডাকা হয় ’লাল সোনা’ নামে। এক কেজি জাফরান তৈরি করতে হাজার হাজার ফুল লাগে। এ জন্য এর দাম পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মসলার স্থানে নিয়ে গেছে। ফরাসি দ্বীপ নুয়ারমুতিয়ে-তে জন্মানো লা বোনোটে আলুর ক্ষেত্রেও সেই বিরলতা দেখা যায়। বিশেষ পরিবেশে ও শৈবালের কারণে এদের প্রতি কেজির দাম প্রায় ৬০০ ডলার বা ৭৩,১৭৮ টাকা।
সমুদ্র ও মাংসের জগতের মহার্ঘ উপহার
মাংস এবং সামুদ্রিক খাবারের জগতেও রয়েছে মহাযজ্ঞের ছোঁয়া। জাপানের ওয়াগিউ বিফ কেবল সুস্বাদুই নয়, এর পেছনের প্রক্রিয়াটিও রাজকীয়। এই গরুগুলোকে বিশেষ খাবার দেওয়া হয়। এমনকি প্রতিদিন মালিশও করা হয়। যার ফলস্বরূপ এর ১০০ গ্রাম মাংসের দাম প্রায় ৫০ ডলার। অর্থাৎ ৬০৯৯ টাকা। আরও একধাপ এগিয়ে, ২০১৯ সালে জাপানে একটি স্নো ক্র্যাব। যা নিলামে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৪৬,০০০ ডলারে। তবে সামুদ্রিক খাবারের মুকুট হলো অ্যালমাস ক্যাভিয়ার। এই বিরল বেলুগা ক্যাভিয়ার প্রতি কেজি ৩৪,৫০০ ডলারে বিক্রি হয়ে থাকে। যার বাংলাদেশি মূল্য দাঁড়ায় ৪২,০৮৩১০ টাকা। যা সত্যিকারের বিলাসিতার প্রতিচ্ছবি। অন্যদিকে, স্পেনের ঐতিহ্যবাহী ইবেরিকো হ্যাম-এর এক পা বা লেগ ৪,৫০০ ডলারের মতো দামে বিক্রি হওয়ার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।

সাধারণ খাবারে অসাধারণ মূল্য সংযোজন
রেস্টুরেন্টে গেলে ৮০০ টাকা থাকে শুরু করে ৩০০০ টাকায় পিৎজা পাওয়া যায়। তবে ১২,০০০ ডলার বা ১,৪৬৩, ৭৬০ টাকার পিৎজা কখনো শুনেছেন? আপনি না শুনে থাকলেও পৃথিবীতে তা আছে। পিৎজা নির্মাতা রেনাটো ভায়োলা তৈরি করেছিলেন লিউস XIII পিৎজা। যার উপাদানগুলোর মধ্যে ছিল তিন ধরনের ক্যাভিয়ার। আবার স্কটল্যান্ডের ডোমিনিকো ক্রলা-এর তৈরি পিৎজা রয়্যাল ০০৭ বিকোয় ৪,২০০ ডলারে। যেখানে কগনাক-এ ম্যারিনেট করা লবস্টার ও শ্যাম্পেনে ভেজানো ক্যাভিয়ার ব্যবহার করা হয়েছিল। মেক্সিকোর গ্র্যান্ড ভেলাস রিসোর্টে পাওয়া গ্র্যান্ড ভেলাস লস কাবোস টাকো। যার মূল্য ২৫,০০০ ডলার, যেখানে ছিল কোবে বিফ এবং সোনা-মিশ্রিত টর্টিলা। এমনকি নিউ ইয়র্কের একটি সাধারণ গ্রিলড চিজ স্যান্ডউইচও যখন শ্যাম্পেনে ভেজানো রুটি আর সোনার ফ্লেক্সের সঙ্গে আসে, তখন সেই কুইন্টেসেনশিয়াল গ্রিলড চিজ-এর দাম দাঁড়ায় ২১৪ ডলার।
ডেজার্ট, পানীয় এবং কফি জগতের বিস্ময়
মিষ্টি এবং পানীয়ের ক্ষেত্রেও বিলাসিতা তার ছাপ ফেলেছে। পেস্ট্রি শেফ জেওং হং-ইয়ংটো এক মাস সময় নিয়ে একটি ক্রিসমাস কেক তৈরি করেছিলেন, যাতে ছিল ২২৩টি হিরা, আর এর দাম ছিল অবিশ্বাস্য ১.৭ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, জাপানি ফলগুলোর মধ্যেও রয়েছে রাজকীয়তা। একটি ডেনসুকে ওয়াটারমেলন নিলামে ৬,১০০ ডলারে বিক্রি হয়েছিল এবং দুটি ইউবারি কিং মেলন ৪৫,০০০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। পানীয়ের ক্ষেত্রে, ১৯৫২ সালের বিরল টুলিবার্ডিন হুইস্কির একটি বোতলের দাম ৪১,০০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছিল। তবে প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালের ফল হলো কপি লুয়াক কফি। সিভেট ক্যাট বা গন্ধগোকুলের হজম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি এই কফি প্রতি কেজি প্রায় ৭০০ ডলারে বিক্রি হয়।
সূত্র: স্টার্স ইনসাইডার

সাধারণত একটি চুলের গড় আয়ু ২ থেকে ৫ বছর। কেউ কেউ বলেন আরও কম। এর পর চুল এমনিতেই ঝরে যায়। চ্যালেঞ্জের বিষয় হলো, চুল পড়ার পাশাপাশি নতুন চুল গজানো। নতুন চুল গজালে চুল পড়লেও মাথায় চুলের পরিমাণ ঠিক থাকে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মেনে চলতে হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ঘুম, দুশ্চিন্তা
১৭ নভেম্বর ২০২১
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
৬ ঘণ্টা আগে
আজ আপনার আত্মবিশ্বাস এমন তুঙ্গে থাকবে যে মনে হবে একাই পুরো অফিস সামলে দিতে পারেন। বস কোনো জটিল কাজ দিলে সেটাকে চ্যালেঞ্জ মনে করে হাতে নেবেন, আর মাঝপথে গিয়ে বুঝবেন, এটা আসলে শুধু আপনার ওপর কাজের পাহাড় চাপানোর একটা চক্রান্ত! অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বশে পাড়ার চায়ের দোকানে রাজনৈতিক তর্কে জড়িয়ে...
৭ ঘণ্টা আগে
শীতকাল মানেই প্রকৃতির এক স্নিগ্ধ পরিবর্তন। কিন্তু ঠান্ডা পড়তে শুরু করলেই শুষ্ক হয়ে যায় প্রকৃতি। আর সেই সঙ্গে আমাদের ত্বকের জন্য নিয়ে আসে রুক্ষতা, শুষ্কতা এবং চুলকানির মতো সমস্যা। বাইরে তীক্ষ্ণ ঠান্ডা বাতাস আর ঘরের ভেতরের শুষ্ক উষ্ণ বাতাস।
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ নিয়ে আসছে। আর এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে সাহায্য করার জন্য এয়ারবিএনবি প্রকাশ করেছে ২০২৬ সালের জন্য তাদের ভ্রমণ প্রবণতা পূর্বাভাস।
এই হোম-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আগামী বছর ভ্রমণকারীরা তাদের ছুটি থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে চাইবেন। যা হবে অভিজ্ঞতার কেন্দ্রিক। তাদের রিপোর্টে বেশ কয়েকটি মূল বিষয় উঠে এসেছে। যা আপনাকেও বিশ্ব ভ্রমণের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করতে পারে। এখানে উল্লিখিত পূর্বাভাসগুলো ইঙ্গিত দেয় যে ২০২৬ সালে ভ্রমণ হবে আরও সংক্ষিপ্ত, প্রকৃতির কাছাকাছি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভরপুর এবং অবশ্যই খাদ্য-কেন্দ্রিক। আপনিও আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য এই নতুন ধারাগুলো বিবেচনা করতে পারেন।

জেনও জিদের আলট্রা-শর্ট আন্তর্জাতিক ট্রিপ
২০২৬ সালে ভ্রমণের সংজ্ঞাই পাল্টে দিচ্ছে জেনারেশন জি বা জেন জি। বিশাল, বহু-সপ্তাহব্যাপী ভ্রমণের পরিকল্পনাকে ভুলে যান। জেন জি আমাদের শেখাচ্ছে কীভাবে ৪৮ ঘণ্টা বা তারও কম সময়ে যেকোনো স্থানে উড়ে যাওয়া যায়। এয়ারবিএনবি-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, জেন জি রা ’কুইক ট্রিপ’-এর ধারণাটি নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে। দীর্ঘ অবকাশের তুলনায় তাদের ১-২ দিনের আন্তর্জাতিক যাত্রা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টিকটক-এর ভাইরাল ডে-ট্রিপ ট্রেন্ড দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, এই তরুণ প্রজন্ম সংস্কৃতি-সমৃদ্ধ, উচ্চ-শক্তির অভিজ্ঞতার জন্য মহাদেশ পাড়ি দিচ্ছে। এয়ারবিএনবি বলছে, জেন জি রা কর্মবিরতি সর্বাধিক ভাবে ব্যবহার করার এক নতুন কৌশল দেখাচ্ছে। তারা শান্ত সমুদ্র সৈকতের বদলে বেছে নিচ্ছে সংগীত, নৃত্য, ঐতিহাসিক স্থান এবং খাঁটি খাবারে পূর্ণ প্রাণবন্ত শহুরে অভিজ্ঞতা। এই প্রজন্মের পছন্দের গন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বুয়েনোস আইরেস (আর্জেন্টিনা), বুসান (দক্ষিণ কোরিয়া), কো সামুই (থাইল্যান্ড), মারাকেশ (মরক্কো), মেক্সিকো সিটি (মেক্সিকো), সান জুয়ান (পুয়ের্তো রিকো) এবং স্টকহোম (সুইডেন)।
প্রকৃতির সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানো
প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করা ২০২৫ সালেও একটি জনপ্রিয় প্রবণতা ছিল। আর ২০২৬ সালে এটি আরও বেগবান হবে। এয়ারবিএনবি জানিয়েছে যে বিশ্বজুড়ে জাতীয় উদ্যানগুলির প্রতি অনুসন্ধান এবং আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি জাতীয় উদ্যানের কাছাকাছি থাকার জায়গা খোঁজার হার আগামী বছরের জন্য ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গ্রেট স্মোকি মাউন্টেনস, শেনানডোহ এবং গ্র্যান্ড টেটনের মতো মার্কিন পার্কগুলোর শতবর্ষ উদ্যাপনের কারণে সেগুলোর প্রতি আগ্রহ আরও বাড়ছে। বৈশ্বিক গন্তব্যগুলোর মধ্যে স্যামারিয়া জর্জ ন্যাশনাল পার্কের কাছাকাছি গ্রিসের ক্রিট, ভিয়েনা, ইন্ডিয়ার গোয়া এবং ইতালির সার্ডিনিয়ার মতো স্থানগুলো ভ্রমণকারীদের নজরে রয়েছে।

বড় ইভেন্টগুলোর টানে ভিড় জমছে
২০২৬ সালে ভ্রমণকারীরা বড় ধরনের সাংস্কৃতিক, খেলাধুলা এবং সংগীত অনুষ্ঠানগুলোকে ঘিরে তাদের যাত্রা পরিকল্পনা করছেন। এয়ারবিএনবি-এর তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরের জন্য শীর্ষ-অনুসন্ধান করা তারিখ এবং শহরগুলোর ৬৫ শতাংশই প্রধান ইভেন্টগুলোর সঙ্গে মিলে যায়। যেমন ফিফা বিশ্বকাপ, কার্নিভাল বা কোচেলা। ভ্রমণকারীরা এই অভিজ্ঞতাগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, যেন টিকিটই তাদের পাসপোর্টে পরিণত হচ্ছে। কার্নিভালের জন্য রিউ দে জানেরো, কোচেলার জন্য ইন্ডিয়ো, মার্ডি গ্রাস-এর জন্য নিউ অর্লিন্স এবং ২০২৬ অলিম্পিক উইন্টার গেমসের জন্য ইতালির মিলান শীর্ষ অনুসন্ধান তালিকায় রয়েছে।
একক ভ্রমণের পুনরুত্থান
একাকী ভ্রমণ বা সোল ট্রাভেল আবার তার কৃতিত্ব ফিরে পাচ্ছে। স্ব-আবিষ্কারের অনলাইন আলোচনায় উৎসাহিত হয়ে, একক ভ্রমণকারীরা এখন কেবল পুরোনো জায়গায় ফিরে যাচ্ছেন না বরং নতুন হটস্পট আবিষ্কার করছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার ইডিল্ডওয়াইল্ড, ডোমিনিকান রিপাবলিকের লা আলতাগ্রেসিয়া এবং নরওয়ের ট্রোমসো-এর মতো জায়গাগুলোতে অনুসন্ধান তিন অঙ্কের বৃদ্ধি দেখছে। অন্যান্য জনপ্রিয় একক ভ্রমণের গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে পর্তুগালের আলগার্ভ অঞ্চল, স্পেনের কোস্টা দেল সল, ফ্লোরিডা কিস এবং স্কটল্যান্ডের ইনভারনেস।
রন্ধনশিল্পের প্রতি আকর্ষণ
২০২৬ সালের জন্য খাবার ও পানীয় সম্পর্কিত ভ্রমণ যেন একেবারে আগুন ঝরাচ্ছে। যেখানে বেকারি ক্লাস এবং ওয়াইন অঞ্চলগুলো শীর্ষে রয়েছে। প্যারিসে ক্রোসঁ তৈরির ক্লাস বা টোকিওতে মোচি বানানো শেখার মতন হাতে-কলমে অভিজ্ঞতার দিকে ভ্রমণকারীরা ঝুঁকছেন। ভাইরাল হওয়া টিকটক ফুড ভিডিওগুলো বিশ্বজুড়ে বেকারি এবং রান্নার ক্লাসের প্রতি আগ্রহ তৈরি করছে। ওয়াইন-প্রেমীরা বেঙ্গালুরু (ভারত), ফিঙ্গার লেকস (নিউ ইয়র্ক), মেলবোর্ন (অস্ট্রেলিয়া)-এর মতো উঠতি ওয়াইন অঞ্চলগুলিতে যাচ্ছেন। বেকারি-হটস্পটগুলোর মধ্যে ইস্তাম্বুল, লিসবন, প্যারিস, তাইপে এবং টোকিও বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
সূত্র: ট্রাভেল+লিজার

আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ নিয়ে আসছে। আর এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে সাহায্য করার জন্য এয়ারবিএনবি প্রকাশ করেছে ২০২৬ সালের জন্য তাদের ভ্রমণ প্রবণতা পূর্বাভাস।
এই হোম-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আগামী বছর ভ্রমণকারীরা তাদের ছুটি থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে চাইবেন। যা হবে অভিজ্ঞতার কেন্দ্রিক। তাদের রিপোর্টে বেশ কয়েকটি মূল বিষয় উঠে এসেছে। যা আপনাকেও বিশ্ব ভ্রমণের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করতে পারে। এখানে উল্লিখিত পূর্বাভাসগুলো ইঙ্গিত দেয় যে ২০২৬ সালে ভ্রমণ হবে আরও সংক্ষিপ্ত, প্রকৃতির কাছাকাছি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভরপুর এবং অবশ্যই খাদ্য-কেন্দ্রিক। আপনিও আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য এই নতুন ধারাগুলো বিবেচনা করতে পারেন।

জেনও জিদের আলট্রা-শর্ট আন্তর্জাতিক ট্রিপ
২০২৬ সালে ভ্রমণের সংজ্ঞাই পাল্টে দিচ্ছে জেনারেশন জি বা জেন জি। বিশাল, বহু-সপ্তাহব্যাপী ভ্রমণের পরিকল্পনাকে ভুলে যান। জেন জি আমাদের শেখাচ্ছে কীভাবে ৪৮ ঘণ্টা বা তারও কম সময়ে যেকোনো স্থানে উড়ে যাওয়া যায়। এয়ারবিএনবি-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, জেন জি রা ’কুইক ট্রিপ’-এর ধারণাটি নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে। দীর্ঘ অবকাশের তুলনায় তাদের ১-২ দিনের আন্তর্জাতিক যাত্রা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টিকটক-এর ভাইরাল ডে-ট্রিপ ট্রেন্ড দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, এই তরুণ প্রজন্ম সংস্কৃতি-সমৃদ্ধ, উচ্চ-শক্তির অভিজ্ঞতার জন্য মহাদেশ পাড়ি দিচ্ছে। এয়ারবিএনবি বলছে, জেন জি রা কর্মবিরতি সর্বাধিক ভাবে ব্যবহার করার এক নতুন কৌশল দেখাচ্ছে। তারা শান্ত সমুদ্র সৈকতের বদলে বেছে নিচ্ছে সংগীত, নৃত্য, ঐতিহাসিক স্থান এবং খাঁটি খাবারে পূর্ণ প্রাণবন্ত শহুরে অভিজ্ঞতা। এই প্রজন্মের পছন্দের গন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বুয়েনোস আইরেস (আর্জেন্টিনা), বুসান (দক্ষিণ কোরিয়া), কো সামুই (থাইল্যান্ড), মারাকেশ (মরক্কো), মেক্সিকো সিটি (মেক্সিকো), সান জুয়ান (পুয়ের্তো রিকো) এবং স্টকহোম (সুইডেন)।
প্রকৃতির সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানো
প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করা ২০২৫ সালেও একটি জনপ্রিয় প্রবণতা ছিল। আর ২০২৬ সালে এটি আরও বেগবান হবে। এয়ারবিএনবি জানিয়েছে যে বিশ্বজুড়ে জাতীয় উদ্যানগুলির প্রতি অনুসন্ধান এবং আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি জাতীয় উদ্যানের কাছাকাছি থাকার জায়গা খোঁজার হার আগামী বছরের জন্য ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গ্রেট স্মোকি মাউন্টেনস, শেনানডোহ এবং গ্র্যান্ড টেটনের মতো মার্কিন পার্কগুলোর শতবর্ষ উদ্যাপনের কারণে সেগুলোর প্রতি আগ্রহ আরও বাড়ছে। বৈশ্বিক গন্তব্যগুলোর মধ্যে স্যামারিয়া জর্জ ন্যাশনাল পার্কের কাছাকাছি গ্রিসের ক্রিট, ভিয়েনা, ইন্ডিয়ার গোয়া এবং ইতালির সার্ডিনিয়ার মতো স্থানগুলো ভ্রমণকারীদের নজরে রয়েছে।

বড় ইভেন্টগুলোর টানে ভিড় জমছে
২০২৬ সালে ভ্রমণকারীরা বড় ধরনের সাংস্কৃতিক, খেলাধুলা এবং সংগীত অনুষ্ঠানগুলোকে ঘিরে তাদের যাত্রা পরিকল্পনা করছেন। এয়ারবিএনবি-এর তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরের জন্য শীর্ষ-অনুসন্ধান করা তারিখ এবং শহরগুলোর ৬৫ শতাংশই প্রধান ইভেন্টগুলোর সঙ্গে মিলে যায়। যেমন ফিফা বিশ্বকাপ, কার্নিভাল বা কোচেলা। ভ্রমণকারীরা এই অভিজ্ঞতাগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, যেন টিকিটই তাদের পাসপোর্টে পরিণত হচ্ছে। কার্নিভালের জন্য রিউ দে জানেরো, কোচেলার জন্য ইন্ডিয়ো, মার্ডি গ্রাস-এর জন্য নিউ অর্লিন্স এবং ২০২৬ অলিম্পিক উইন্টার গেমসের জন্য ইতালির মিলান শীর্ষ অনুসন্ধান তালিকায় রয়েছে।
একক ভ্রমণের পুনরুত্থান
একাকী ভ্রমণ বা সোল ট্রাভেল আবার তার কৃতিত্ব ফিরে পাচ্ছে। স্ব-আবিষ্কারের অনলাইন আলোচনায় উৎসাহিত হয়ে, একক ভ্রমণকারীরা এখন কেবল পুরোনো জায়গায় ফিরে যাচ্ছেন না বরং নতুন হটস্পট আবিষ্কার করছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার ইডিল্ডওয়াইল্ড, ডোমিনিকান রিপাবলিকের লা আলতাগ্রেসিয়া এবং নরওয়ের ট্রোমসো-এর মতো জায়গাগুলোতে অনুসন্ধান তিন অঙ্কের বৃদ্ধি দেখছে। অন্যান্য জনপ্রিয় একক ভ্রমণের গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে পর্তুগালের আলগার্ভ অঞ্চল, স্পেনের কোস্টা দেল সল, ফ্লোরিডা কিস এবং স্কটল্যান্ডের ইনভারনেস।
রন্ধনশিল্পের প্রতি আকর্ষণ
২০২৬ সালের জন্য খাবার ও পানীয় সম্পর্কিত ভ্রমণ যেন একেবারে আগুন ঝরাচ্ছে। যেখানে বেকারি ক্লাস এবং ওয়াইন অঞ্চলগুলো শীর্ষে রয়েছে। প্যারিসে ক্রোসঁ তৈরির ক্লাস বা টোকিওতে মোচি বানানো শেখার মতন হাতে-কলমে অভিজ্ঞতার দিকে ভ্রমণকারীরা ঝুঁকছেন। ভাইরাল হওয়া টিকটক ফুড ভিডিওগুলো বিশ্বজুড়ে বেকারি এবং রান্নার ক্লাসের প্রতি আগ্রহ তৈরি করছে। ওয়াইন-প্রেমীরা বেঙ্গালুরু (ভারত), ফিঙ্গার লেকস (নিউ ইয়র্ক), মেলবোর্ন (অস্ট্রেলিয়া)-এর মতো উঠতি ওয়াইন অঞ্চলগুলিতে যাচ্ছেন। বেকারি-হটস্পটগুলোর মধ্যে ইস্তাম্বুল, লিসবন, প্যারিস, তাইপে এবং টোকিও বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
সূত্র: ট্রাভেল+লিজার

সাধারণত একটি চুলের গড় আয়ু ২ থেকে ৫ বছর। কেউ কেউ বলেন আরও কম। এর পর চুল এমনিতেই ঝরে যায়। চ্যালেঞ্জের বিষয় হলো, চুল পড়ার পাশাপাশি নতুন চুল গজানো। নতুন চুল গজালে চুল পড়লেও মাথায় চুলের পরিমাণ ঠিক থাকে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মেনে চলতে হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ঘুম, দুশ্চিন্তা
১৭ নভেম্বর ২০২১
বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
৪ ঘণ্টা আগে
আজ আপনার আত্মবিশ্বাস এমন তুঙ্গে থাকবে যে মনে হবে একাই পুরো অফিস সামলে দিতে পারেন। বস কোনো জটিল কাজ দিলে সেটাকে চ্যালেঞ্জ মনে করে হাতে নেবেন, আর মাঝপথে গিয়ে বুঝবেন, এটা আসলে শুধু আপনার ওপর কাজের পাহাড় চাপানোর একটা চক্রান্ত! অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বশে পাড়ার চায়ের দোকানে রাজনৈতিক তর্কে জড়িয়ে...
৭ ঘণ্টা আগে
শীতকাল মানেই প্রকৃতির এক স্নিগ্ধ পরিবর্তন। কিন্তু ঠান্ডা পড়তে শুরু করলেই শুষ্ক হয়ে যায় প্রকৃতি। আর সেই সঙ্গে আমাদের ত্বকের জন্য নিয়ে আসে রুক্ষতা, শুষ্কতা এবং চুলকানির মতো সমস্যা। বাইরে তীক্ষ্ণ ঠান্ডা বাতাস আর ঘরের ভেতরের শুষ্ক উষ্ণ বাতাস।
৮ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আজ আপনার আত্মবিশ্বাস এমন তুঙ্গে থাকবে যে মনে হবে একাই পুরো অফিস সামলে দিতে পারেন। বস কোনো জটিল কাজ দিলে সেটাকে চ্যালেঞ্জ মনে করে হাতে নেবেন, আর মাঝপথে গিয়ে বুঝবেন, এটা আসলে শুধু আপনার ওপর কাজের পাহাড় চাপানোর একটা চক্রান্ত! অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বশে পাড়ার চায়ের দোকানে রাজনৈতিক তর্কে জড়িয়ে পড়তে পারেন। ‘না’ বলতে শিখুন। বিশেষ করে যদি স্ত্রী আপনাকে রাতের বাসন ধুতে বলে।
বৃষ
দিনের শুরুতেই আপনার ব্যস্ততা শুরু। তবে কিসের ব্যস্ততা? আলমারি গোছানো বা অফিসের ফাইল নয়, আপনি আজ ঠিক করবেন কোন বিরল রেসিপিটা রান্না করবেন। রান্না শেষ হওয়ার আগেই সব এনার্জি শেষ! আর খরচ? বাজারে গিয়ে দুই টাকার ধনেপাতা কিনতে গিয়ে ৫০০ টাকার চিপস কিনে ফেলবেন। দুপুরের মেনু নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তর্কের আশঙ্কা আছে। তাই আজ ডায়েটের কথা ভুলেও ভাববেন না।
মিথুন
আজ একই সঙ্গে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে চাইবেন—একদিকে নতুন চাকরি, অন্যদিকে পুরোনো প্রেমিক/প্রেমিকার সঙ্গে ফের যোগাযোগ। মন আপনাকে বলবে, ‘যা মন চায় কর!’ আর বুদ্ধি বলবে, ‘আগে দেখে নাও, কোথাও ঠকছো না তো!’ প্রিয়জনের কাছ থেকে আজ সামান্য প্রতারণা পেতে পারেন। হয়তো তিনি কফি শপে এসে বলবেন, ‘তোমার কফির বিলটাও আমাকে দিতে হবে!’ মোবাইল চার্জে দিয়ে বিছানায় শুয়ে চ্যাট করবেন না। বিদ্যুতের বিল বাড়বে। জমি নিয়ে আজ ভাবুন। প্রেম নিয়ে কাল ভাবা যাবে।
কর্কট
আর্থিক অবস্থার অবনতি হবে—এই চিন্তা মনকে এমন খারাপ করে দেবে যে হয়তো পুরোনো প্রেমিক/প্রেমিকার ছবি দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলবেন। দিনের প্রথম ভাগ যাবে হতাশায়। তবে সন্ধ্যার দিকে একটি ভালো খবর আসতে পারে। হতে পারে হারিয়ে যাওয়া রিমোট কন্ট্রোলটি আজ সোফার নিচ থেকে খুঁজে পাবেন। এটাই আপনার জন্য আর্থিক লাভ! দীর্ঘ ভ্রমণ পরিহার করুন। পাশের বাড়ির ছাদ পর্যন্ত হাঁটাচলাও আজ এড়িয়ে চলুন। ঠান্ডা পানীয় থেকে দূরে থাকুন। আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
সিংহ
আজ আপনি রাজা। আপনার নতুন বাড়ি কেনার স্বপ্ন সত্যি হতে পারে, কিন্তু আপনার রানি (জীবনসঙ্গী) হয়তো অভিযোগ করবেন যে রান্নাঘরের সিঙ্কটা কেন এখনো ঠিক হলো না! ফলে আপনার ‘রাজকীয় ঘোষণা’ ভেস্তে যাবে সামান্য গৃহস্থালির চাপে। শিশুদের উপহার কিনে তাদের মন জয় করার চেষ্টা করুন। শ্বশুরবাড়ি সংক্রান্ত কোনো আলোচনা আজ বিপজ্জনক, এড়িয়ে চলুন। চুপ করে থাকুন। সুগারের রোগীরা আজ মিষ্টি দেখলে মাথা গরম করবেন না। নিজেকে সংযত রাখুন।
কন্যা
আপনার শান্ত মন আজ অনেক কাজ সহজে মিটিয়ে দেবে। কিন্তু কোনো সহকর্মী সামান্য ভুল করলে আপনার ‘খুঁতখুঁতে’ স্বভাব আজ চাগাড় দেবে। হঠকারী সিদ্ধান্ত এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে যখন অফিসের ক্যানটিনে খাবার অর্ডার দেবেন। দুর্ঘটনাবশত গাড়ির বদলে বাইকে বেশি গতি দিতে পারেন, তাই রাস্তায় সাবধানে থাকুন। সাফল্যের চাবিকাঠি হলো সকালে ঘুম থেকে উঠে বিছানার চাদর ভাঁজ করা। ধার দেওয়া টাকা ফেরত পেতে পারেন। সেই টাকা দিয়ে চটজলদি একটা নতুন ব্যাগ কিনে ফেলুন!
তুলা
আজ আপনার মধ্যে এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি কাজ করবে। অফিসে নতুন সুযোগ আসতেই পারে, কিন্তু পুরোনো স্থগিত পরিকল্পনাগুলো আপনাকে আজ তাড়া করবে। বসের কাছে বাহবা পাবেন, কিন্তু সহকর্মীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য ফাঁস করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার কপালে ভ্রমণ লেখা আছে; তবে সেটা হতে পারে ফ্রিজে কী আছে, তা দেখতে রান্নাঘর পর্যন্ত যাওয়া। প্রেমের জীবন মিষ্টি থাকবে, কিন্তু সঙ্গী মিষ্টি আনতে ভুলে যেতে পারেন। পরিবারের বিবাদ দেখে আজ চুপ করে থাকুন। শুধু পপকর্ন খান।
বৃশ্চিক
আপনার চিন্তাভাবনায় আজ স্বচ্ছতা আসবে। মনে হবে, আপনি যেন একটি নতুন গোয়েন্দা উপন্যাস লিখছেন! অপ্রয়োজনীয় রাগ এড়িয়ে চলুন। কর্মক্ষেত্রে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ‘অতিরঞ্জন’ করবেন না; যেমন আপনার কলমটি কে ধার নিয়েছিল, সেই তদন্ত বন্ধ করুন। পুরোনো বন্ধু আর্থিক সাহায্য চাইতে পারে। অবশ্যই সাহায্য করুন, তবে পরে যাতে সেই টাকা চাইতে গিয়ে আপনাকে ‘ডিটেকটিভ’ হতে না হয়! হিসাবের খাতায় যেন কোনো ভুল না হয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যান। প্রচুর ছবি তুলুন।
ধনু
আজ একটি রোমাঞ্চকর দিন হতে চলেছে! আগের চেয়ে বেশি পজিটিভ বোধ করবেন। কিন্তু এই রোমাঞ্চ সম্ভবত নতুন কোনো সিরিজের প্রথম অ্যাপিসোড দেখার উত্তেজনা। পারিবারিক পরিবেশ সুখের হবে; হয়তো বাড়ির সবাই মিলে আজ একসঙ্গে চা খাবেন। পেশাগত জীবনে আপনার কাজ প্রশংসিত হবে, বিশেষত যদি আপনি সময়মতো টিফিন খেয়ে ফেলেন। সবচেয়ে বড় পুরস্কার হলো, দুপুরের খাবারের পর একটি পাওয়ার ন্যাপ। আজ কোনো গুরুগম্ভীর আলোচনা করবেন না। হালকা থাকুন।
মকর
আজ কঠোর পরিশ্রমের সম্পূর্ণ ফল পাবেন। কাজের প্রতি আপনার সংকল্প এতটা দৃঢ় থাকবে যে মনে হবে ছুটি নিয়েও কাজ করছেন! পেশাগত জীবনে ভালো সুযোগ আসার সম্ভাবনা। তবে হ্যাঁ, যদি আপনি লক্ষ্য থেকে একটুও সরে যান, তাহলে কিন্তু আপনার মা অথবা স্ত্রী আজ আপনার কঠোর সমালোচনা করতে পারেন। লক্ষ্যের ওপর মনোযোগ বাড়ান। অন্যথায় ডিম ভাজতে গিয়ে সবজি কেটে ফেলবেন। আর্থিক লেনদেনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করুন, মানে পকেট থেকে টাকা বের করতে দ্বিধা করবেন না।
কুম্ভ
ধূর্ত লোকদের অযৌক্তিক যুক্তিতে আজ পা দেবেন না। তার মানে, যদি কেউ এসে বলে যে ডান পা আগে ফেললে আপনার কপাল খুলবে, আপনি তা হেসে উড়িয়ে দিন। স্বাস্থ্য সচেতন হোন, বিশেষত অতিরিক্ত ওজন তোলা এড়িয়ে চলুন। অর্থাৎ দয়া করে বাজার থেকে একসঙ্গে তিন দিনের সবজি কিনে আনবেন না। পরিস্থিতি সামান্য চাপের হতে পারে, যখন আপনি বুঝবেন যে ফ্রিজে পছন্দের মিষ্টিটি নেই। বিভ্রান্তি ও প্রতারণার বিপদ অপেক্ষা করছে। গরিবদের সাহায্য করুন, বিশেষত যারা আপনার কাছ থেকে চায়ের টাকা ধার নিয়েছে।
মীন
আজ আপনার মন মেঘে ভাসবে। কল্পনার জগৎ আজ বাস্তবের চেয়েও বেশি সুন্দর মনে হবে। যদি আর্ট, সাহিত্য বা সৃজনশীল কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তাহলে আজ আপনার মস্তিষ্কের জট খুলে যাবে। কিন্তু সাবধান, আপনার এই ভাবুক স্বভাবের জন্য অফিসে নামডাক হলেও আপনি শুনতে পাবেন না। স্বপ্নের জগতে ডুব দেবেন, যা আপনার সঙ্গীকে ঈর্ষান্বিত করতে পারে। দিনে অন্তত একবার চোখ খুলে চারপাশটা দেখে নিন। বাস্তবের মাটিতে থাকুন।

মেষ
আজ আপনার আত্মবিশ্বাস এমন তুঙ্গে থাকবে যে মনে হবে একাই পুরো অফিস সামলে দিতে পারেন। বস কোনো জটিল কাজ দিলে সেটাকে চ্যালেঞ্জ মনে করে হাতে নেবেন, আর মাঝপথে গিয়ে বুঝবেন, এটা আসলে শুধু আপনার ওপর কাজের পাহাড় চাপানোর একটা চক্রান্ত! অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বশে পাড়ার চায়ের দোকানে রাজনৈতিক তর্কে জড়িয়ে পড়তে পারেন। ‘না’ বলতে শিখুন। বিশেষ করে যদি স্ত্রী আপনাকে রাতের বাসন ধুতে বলে।
বৃষ
দিনের শুরুতেই আপনার ব্যস্ততা শুরু। তবে কিসের ব্যস্ততা? আলমারি গোছানো বা অফিসের ফাইল নয়, আপনি আজ ঠিক করবেন কোন বিরল রেসিপিটা রান্না করবেন। রান্না শেষ হওয়ার আগেই সব এনার্জি শেষ! আর খরচ? বাজারে গিয়ে দুই টাকার ধনেপাতা কিনতে গিয়ে ৫০০ টাকার চিপস কিনে ফেলবেন। দুপুরের মেনু নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তর্কের আশঙ্কা আছে। তাই আজ ডায়েটের কথা ভুলেও ভাববেন না।
মিথুন
আজ একই সঙ্গে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে চাইবেন—একদিকে নতুন চাকরি, অন্যদিকে পুরোনো প্রেমিক/প্রেমিকার সঙ্গে ফের যোগাযোগ। মন আপনাকে বলবে, ‘যা মন চায় কর!’ আর বুদ্ধি বলবে, ‘আগে দেখে নাও, কোথাও ঠকছো না তো!’ প্রিয়জনের কাছ থেকে আজ সামান্য প্রতারণা পেতে পারেন। হয়তো তিনি কফি শপে এসে বলবেন, ‘তোমার কফির বিলটাও আমাকে দিতে হবে!’ মোবাইল চার্জে দিয়ে বিছানায় শুয়ে চ্যাট করবেন না। বিদ্যুতের বিল বাড়বে। জমি নিয়ে আজ ভাবুন। প্রেম নিয়ে কাল ভাবা যাবে।
কর্কট
আর্থিক অবস্থার অবনতি হবে—এই চিন্তা মনকে এমন খারাপ করে দেবে যে হয়তো পুরোনো প্রেমিক/প্রেমিকার ছবি দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলবেন। দিনের প্রথম ভাগ যাবে হতাশায়। তবে সন্ধ্যার দিকে একটি ভালো খবর আসতে পারে। হতে পারে হারিয়ে যাওয়া রিমোট কন্ট্রোলটি আজ সোফার নিচ থেকে খুঁজে পাবেন। এটাই আপনার জন্য আর্থিক লাভ! দীর্ঘ ভ্রমণ পরিহার করুন। পাশের বাড়ির ছাদ পর্যন্ত হাঁটাচলাও আজ এড়িয়ে চলুন। ঠান্ডা পানীয় থেকে দূরে থাকুন। আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
সিংহ
আজ আপনি রাজা। আপনার নতুন বাড়ি কেনার স্বপ্ন সত্যি হতে পারে, কিন্তু আপনার রানি (জীবনসঙ্গী) হয়তো অভিযোগ করবেন যে রান্নাঘরের সিঙ্কটা কেন এখনো ঠিক হলো না! ফলে আপনার ‘রাজকীয় ঘোষণা’ ভেস্তে যাবে সামান্য গৃহস্থালির চাপে। শিশুদের উপহার কিনে তাদের মন জয় করার চেষ্টা করুন। শ্বশুরবাড়ি সংক্রান্ত কোনো আলোচনা আজ বিপজ্জনক, এড়িয়ে চলুন। চুপ করে থাকুন। সুগারের রোগীরা আজ মিষ্টি দেখলে মাথা গরম করবেন না। নিজেকে সংযত রাখুন।
কন্যা
আপনার শান্ত মন আজ অনেক কাজ সহজে মিটিয়ে দেবে। কিন্তু কোনো সহকর্মী সামান্য ভুল করলে আপনার ‘খুঁতখুঁতে’ স্বভাব আজ চাগাড় দেবে। হঠকারী সিদ্ধান্ত এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে যখন অফিসের ক্যানটিনে খাবার অর্ডার দেবেন। দুর্ঘটনাবশত গাড়ির বদলে বাইকে বেশি গতি দিতে পারেন, তাই রাস্তায় সাবধানে থাকুন। সাফল্যের চাবিকাঠি হলো সকালে ঘুম থেকে উঠে বিছানার চাদর ভাঁজ করা। ধার দেওয়া টাকা ফেরত পেতে পারেন। সেই টাকা দিয়ে চটজলদি একটা নতুন ব্যাগ কিনে ফেলুন!
তুলা
আজ আপনার মধ্যে এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি কাজ করবে। অফিসে নতুন সুযোগ আসতেই পারে, কিন্তু পুরোনো স্থগিত পরিকল্পনাগুলো আপনাকে আজ তাড়া করবে। বসের কাছে বাহবা পাবেন, কিন্তু সহকর্মীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য ফাঁস করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার কপালে ভ্রমণ লেখা আছে; তবে সেটা হতে পারে ফ্রিজে কী আছে, তা দেখতে রান্নাঘর পর্যন্ত যাওয়া। প্রেমের জীবন মিষ্টি থাকবে, কিন্তু সঙ্গী মিষ্টি আনতে ভুলে যেতে পারেন। পরিবারের বিবাদ দেখে আজ চুপ করে থাকুন। শুধু পপকর্ন খান।
বৃশ্চিক
আপনার চিন্তাভাবনায় আজ স্বচ্ছতা আসবে। মনে হবে, আপনি যেন একটি নতুন গোয়েন্দা উপন্যাস লিখছেন! অপ্রয়োজনীয় রাগ এড়িয়ে চলুন। কর্মক্ষেত্রে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ‘অতিরঞ্জন’ করবেন না; যেমন আপনার কলমটি কে ধার নিয়েছিল, সেই তদন্ত বন্ধ করুন। পুরোনো বন্ধু আর্থিক সাহায্য চাইতে পারে। অবশ্যই সাহায্য করুন, তবে পরে যাতে সেই টাকা চাইতে গিয়ে আপনাকে ‘ডিটেকটিভ’ হতে না হয়! হিসাবের খাতায় যেন কোনো ভুল না হয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যান। প্রচুর ছবি তুলুন।
ধনু
আজ একটি রোমাঞ্চকর দিন হতে চলেছে! আগের চেয়ে বেশি পজিটিভ বোধ করবেন। কিন্তু এই রোমাঞ্চ সম্ভবত নতুন কোনো সিরিজের প্রথম অ্যাপিসোড দেখার উত্তেজনা। পারিবারিক পরিবেশ সুখের হবে; হয়তো বাড়ির সবাই মিলে আজ একসঙ্গে চা খাবেন। পেশাগত জীবনে আপনার কাজ প্রশংসিত হবে, বিশেষত যদি আপনি সময়মতো টিফিন খেয়ে ফেলেন। সবচেয়ে বড় পুরস্কার হলো, দুপুরের খাবারের পর একটি পাওয়ার ন্যাপ। আজ কোনো গুরুগম্ভীর আলোচনা করবেন না। হালকা থাকুন।
মকর
আজ কঠোর পরিশ্রমের সম্পূর্ণ ফল পাবেন। কাজের প্রতি আপনার সংকল্প এতটা দৃঢ় থাকবে যে মনে হবে ছুটি নিয়েও কাজ করছেন! পেশাগত জীবনে ভালো সুযোগ আসার সম্ভাবনা। তবে হ্যাঁ, যদি আপনি লক্ষ্য থেকে একটুও সরে যান, তাহলে কিন্তু আপনার মা অথবা স্ত্রী আজ আপনার কঠোর সমালোচনা করতে পারেন। লক্ষ্যের ওপর মনোযোগ বাড়ান। অন্যথায় ডিম ভাজতে গিয়ে সবজি কেটে ফেলবেন। আর্থিক লেনদেনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করুন, মানে পকেট থেকে টাকা বের করতে দ্বিধা করবেন না।
কুম্ভ
ধূর্ত লোকদের অযৌক্তিক যুক্তিতে আজ পা দেবেন না। তার মানে, যদি কেউ এসে বলে যে ডান পা আগে ফেললে আপনার কপাল খুলবে, আপনি তা হেসে উড়িয়ে দিন। স্বাস্থ্য সচেতন হোন, বিশেষত অতিরিক্ত ওজন তোলা এড়িয়ে চলুন। অর্থাৎ দয়া করে বাজার থেকে একসঙ্গে তিন দিনের সবজি কিনে আনবেন না। পরিস্থিতি সামান্য চাপের হতে পারে, যখন আপনি বুঝবেন যে ফ্রিজে পছন্দের মিষ্টিটি নেই। বিভ্রান্তি ও প্রতারণার বিপদ অপেক্ষা করছে। গরিবদের সাহায্য করুন, বিশেষত যারা আপনার কাছ থেকে চায়ের টাকা ধার নিয়েছে।
মীন
আজ আপনার মন মেঘে ভাসবে। কল্পনার জগৎ আজ বাস্তবের চেয়েও বেশি সুন্দর মনে হবে। যদি আর্ট, সাহিত্য বা সৃজনশীল কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তাহলে আজ আপনার মস্তিষ্কের জট খুলে যাবে। কিন্তু সাবধান, আপনার এই ভাবুক স্বভাবের জন্য অফিসে নামডাক হলেও আপনি শুনতে পাবেন না। স্বপ্নের জগতে ডুব দেবেন, যা আপনার সঙ্গীকে ঈর্ষান্বিত করতে পারে। দিনে অন্তত একবার চোখ খুলে চারপাশটা দেখে নিন। বাস্তবের মাটিতে থাকুন।

সাধারণত একটি চুলের গড় আয়ু ২ থেকে ৫ বছর। কেউ কেউ বলেন আরও কম। এর পর চুল এমনিতেই ঝরে যায়। চ্যালেঞ্জের বিষয় হলো, চুল পড়ার পাশাপাশি নতুন চুল গজানো। নতুন চুল গজালে চুল পড়লেও মাথায় চুলের পরিমাণ ঠিক থাকে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মেনে চলতে হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ঘুম, দুশ্চিন্তা
১৭ নভেম্বর ২০২১
বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
৪ ঘণ্টা আগে
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
৬ ঘণ্টা আগে
শীতকাল মানেই প্রকৃতির এক স্নিগ্ধ পরিবর্তন। কিন্তু ঠান্ডা পড়তে শুরু করলেই শুষ্ক হয়ে যায় প্রকৃতি। আর সেই সঙ্গে আমাদের ত্বকের জন্য নিয়ে আসে রুক্ষতা, শুষ্কতা এবং চুলকানির মতো সমস্যা। বাইরে তীক্ষ্ণ ঠান্ডা বাতাস আর ঘরের ভেতরের শুষ্ক উষ্ণ বাতাস।
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

শীতকাল মানেই প্রকৃতির এক স্নিগ্ধ পরিবর্তন। কিন্তু ঠান্ডা পড়তে শুরু করলেই শুষ্ক হয়ে যায় প্রকৃতি। আর সেই সঙ্গে আমাদের ত্বকের জন্য নিয়ে আসে রুক্ষতা, শুষ্কতা এবং চুলকানির মতো সমস্যা। বাইরে তীক্ষ্ণ ঠান্ডা বাতাস আর ঘরের ভেতরের শুষ্ক উষ্ণ বাতাস। সব মিলিয়ে ত্বক যেন বাড়তি যত্নের আবদার করে। আর এটাই জানান দেওয়ার জন্য হয় শুষ্কতা ও চুলকানির মতন সমস্যাগুলো। যদিও লোশন ও ক্রিম দ্রুত সমাধান দেয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু প্রাকৃতিক ও সহজ ঘরোয়া প্রতিকার নিয়মিত ব্যবহার করলে শীতেও ত্বক থাকতে পারে কোমল, সতেজ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা
শীতকালীন ত্বকের যত্নে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে, যা সরাসরি আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। কারণ ঠান্ডায় শরীর কোর টেম্পারেচার ধরে রাখতে রক্তনালি কিছুটা সংকুচিত হয়। ফলে ত্বকে রক্ত, অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ কমে যায়, ত্বক হয়ে পড়ে ডিহাইড্রেটেড।
নারকেল তেল: নারকেল তেল শীতকালীন যত্নে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এমনকি শীতকালে ঘরে ঘরে এর ব্যবহার বেড়ে যায় বিশেষ করে চুল ও ত্বকের জন্য। এতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বকের আর্দ্রতা স্তর বজায় রাখতে সাহায্য করে। এর সুবিধা পেতে, গোসলের ঠিক পরে উষ্ণ নারকেল তেল ত্বকে মালিশ করুন। উষ্ণতা আর্দ্রতা আটকে রাখে, ফলে ত্বক সারা দিন হাইড্রেটেড থাকে।
মধু: মধু শীতকালে ত্বকের জন্য চমৎকার, কারণ এটি ত্বককে আর্দ্র রাখে। মধু পাতলা স্তরে মুখে বা শুষ্ক স্থানে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক নরম এবং সতেজ অনুভূত হবে।
অ্যালোভেরা: শুষ্ক ও জ্বালা করা ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা উচিত। এটি শীতলতা প্রদান করে এবং প্রদাহ কমায়, ফলে ত্বকের লালচে ভাব ও শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন দুবার, বিশেষ করে ঠান্ডা আবহাওয়ার পরে এটি ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

দুধের সর বা মালাই: ’মালাই’ বা দুধের তাজা সর শীতকালে শুষ্ক ত্বকের চিকিৎসায় দারুণ কার্যকর। কসমেটোলজিস্টের মতে, মালাই-এ ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে যা মৃত ত্বক সরাতে সাহায্য করে এবং এর ফ্যাট ত্বককে গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজার করে। এটি ১০ মিনিটের জন্য লাগিয়ে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেললে ত্বক শিশুর মতো নরম হয়।
জলপাই তেল: রান্নার বাইরেও জলপাই তেল ত্বকের যত্নে দারুণ। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই থাকে। স্নানের আগে সামান্য জলপাই তেল হালকা গরম করে আলতোভাবে ত্বকে মালিশ করতে পারেন। বাড়তি সুবিধার জন্য জলপাই তেলের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে প্রাকৃতিক স্ক্রাব তৈরি করে মৃত কোষ দূর করা যেতে পারে।
গ্লিসারিন ও গোলাপ জলের মিশ্রণ: একটি স্প্রে বোতলে সমপরিমাণ গ্লিসারিন ও গোলাপ জল মিশিয়ে স্প্রে তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি চুলকানি শান্ত করতে এবং ত্বকে একটি সুন্দর আভা আনতে চমৎকার কাজ করে। রাতে মুখ, হাত ও পায়ে এটি ব্যবহার করলে ত্বক হাইড্রেটেড এবং আরামদায়ক থাকে।
অন্যান্য প্রতিকার
গোসল করার সময় বিশেষ কিছু পদ্ধতি বা উপকরণের ব্যবহার শীতে ত্বকের চুলকানি ও রুক্ষতা উপশম করতে পারে। শীতকালে ওটমিল দিয়ে গোসল করলে চুলকানিযুক্ত ত্বক শান্ত করতে সাহায্য করে। মিহিভাবে গুঁড়ো করা ওটসে থাকা বিটা-গ্লুকানস জ্বালা কমায় এবং ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। হালকা গরম পানিতে ১ কাপ ওটস মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে ত্বকে আরাম অনুভূত হয় এবং ত্বক মসৃণ থাকে। মধু, টকদই, পেঁপে বা কলার সঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করুন। ৫-৭ মিনিটের বেশি সময় ধরে গোসল করবেন না। গোসলের সময় এসএলএস বা এসএলইএস যুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না। ক্রিম-বেসড বা লিপিড-রিপ্লেনিশিং বডিওয়াশ ব্যবহার করুন।
সূত্র: হেলথ শর্টস

শীতকাল মানেই প্রকৃতির এক স্নিগ্ধ পরিবর্তন। কিন্তু ঠান্ডা পড়তে শুরু করলেই শুষ্ক হয়ে যায় প্রকৃতি। আর সেই সঙ্গে আমাদের ত্বকের জন্য নিয়ে আসে রুক্ষতা, শুষ্কতা এবং চুলকানির মতো সমস্যা। বাইরে তীক্ষ্ণ ঠান্ডা বাতাস আর ঘরের ভেতরের শুষ্ক উষ্ণ বাতাস। সব মিলিয়ে ত্বক যেন বাড়তি যত্নের আবদার করে। আর এটাই জানান দেওয়ার জন্য হয় শুষ্কতা ও চুলকানির মতন সমস্যাগুলো। যদিও লোশন ও ক্রিম দ্রুত সমাধান দেয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু প্রাকৃতিক ও সহজ ঘরোয়া প্রতিকার নিয়মিত ব্যবহার করলে শীতেও ত্বক থাকতে পারে কোমল, সতেজ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা
শীতকালীন ত্বকের যত্নে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে, যা সরাসরি আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। কারণ ঠান্ডায় শরীর কোর টেম্পারেচার ধরে রাখতে রক্তনালি কিছুটা সংকুচিত হয়। ফলে ত্বকে রক্ত, অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ কমে যায়, ত্বক হয়ে পড়ে ডিহাইড্রেটেড।
নারকেল তেল: নারকেল তেল শীতকালীন যত্নে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এমনকি শীতকালে ঘরে ঘরে এর ব্যবহার বেড়ে যায় বিশেষ করে চুল ও ত্বকের জন্য। এতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বকের আর্দ্রতা স্তর বজায় রাখতে সাহায্য করে। এর সুবিধা পেতে, গোসলের ঠিক পরে উষ্ণ নারকেল তেল ত্বকে মালিশ করুন। উষ্ণতা আর্দ্রতা আটকে রাখে, ফলে ত্বক সারা দিন হাইড্রেটেড থাকে।
মধু: মধু শীতকালে ত্বকের জন্য চমৎকার, কারণ এটি ত্বককে আর্দ্র রাখে। মধু পাতলা স্তরে মুখে বা শুষ্ক স্থানে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক নরম এবং সতেজ অনুভূত হবে।
অ্যালোভেরা: শুষ্ক ও জ্বালা করা ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা উচিত। এটি শীতলতা প্রদান করে এবং প্রদাহ কমায়, ফলে ত্বকের লালচে ভাব ও শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন দুবার, বিশেষ করে ঠান্ডা আবহাওয়ার পরে এটি ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

দুধের সর বা মালাই: ’মালাই’ বা দুধের তাজা সর শীতকালে শুষ্ক ত্বকের চিকিৎসায় দারুণ কার্যকর। কসমেটোলজিস্টের মতে, মালাই-এ ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে যা মৃত ত্বক সরাতে সাহায্য করে এবং এর ফ্যাট ত্বককে গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজার করে। এটি ১০ মিনিটের জন্য লাগিয়ে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেললে ত্বক শিশুর মতো নরম হয়।
জলপাই তেল: রান্নার বাইরেও জলপাই তেল ত্বকের যত্নে দারুণ। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই থাকে। স্নানের আগে সামান্য জলপাই তেল হালকা গরম করে আলতোভাবে ত্বকে মালিশ করতে পারেন। বাড়তি সুবিধার জন্য জলপাই তেলের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে প্রাকৃতিক স্ক্রাব তৈরি করে মৃত কোষ দূর করা যেতে পারে।
গ্লিসারিন ও গোলাপ জলের মিশ্রণ: একটি স্প্রে বোতলে সমপরিমাণ গ্লিসারিন ও গোলাপ জল মিশিয়ে স্প্রে তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি চুলকানি শান্ত করতে এবং ত্বকে একটি সুন্দর আভা আনতে চমৎকার কাজ করে। রাতে মুখ, হাত ও পায়ে এটি ব্যবহার করলে ত্বক হাইড্রেটেড এবং আরামদায়ক থাকে।
অন্যান্য প্রতিকার
গোসল করার সময় বিশেষ কিছু পদ্ধতি বা উপকরণের ব্যবহার শীতে ত্বকের চুলকানি ও রুক্ষতা উপশম করতে পারে। শীতকালে ওটমিল দিয়ে গোসল করলে চুলকানিযুক্ত ত্বক শান্ত করতে সাহায্য করে। মিহিভাবে গুঁড়ো করা ওটসে থাকা বিটা-গ্লুকানস জ্বালা কমায় এবং ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। হালকা গরম পানিতে ১ কাপ ওটস মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে ত্বকে আরাম অনুভূত হয় এবং ত্বক মসৃণ থাকে। মধু, টকদই, পেঁপে বা কলার সঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করুন। ৫-৭ মিনিটের বেশি সময় ধরে গোসল করবেন না। গোসলের সময় এসএলএস বা এসএলইএস যুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না। ক্রিম-বেসড বা লিপিড-রিপ্লেনিশিং বডিওয়াশ ব্যবহার করুন।
সূত্র: হেলথ শর্টস

সাধারণত একটি চুলের গড় আয়ু ২ থেকে ৫ বছর। কেউ কেউ বলেন আরও কম। এর পর চুল এমনিতেই ঝরে যায়। চ্যালেঞ্জের বিষয় হলো, চুল পড়ার পাশাপাশি নতুন চুল গজানো। নতুন চুল গজালে চুল পড়লেও মাথায় চুলের পরিমাণ ঠিক থাকে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মেনে চলতে হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ঘুম, দুশ্চিন্তা
১৭ নভেম্বর ২০২১
বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
৪ ঘণ্টা আগে
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
৬ ঘণ্টা আগে
আজ আপনার আত্মবিশ্বাস এমন তুঙ্গে থাকবে যে মনে হবে একাই পুরো অফিস সামলে দিতে পারেন। বস কোনো জটিল কাজ দিলে সেটাকে চ্যালেঞ্জ মনে করে হাতে নেবেন, আর মাঝপথে গিয়ে বুঝবেন, এটা আসলে শুধু আপনার ওপর কাজের পাহাড় চাপানোর একটা চক্রান্ত! অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বশে পাড়ার চায়ের দোকানে রাজনৈতিক তর্কে জড়িয়ে...
৭ ঘণ্টা আগে