গোলাম ওয়াদুদ, ঢাকা

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে। মজার বিষয় হলো দুটি আন্দোলন থেকেই শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছে ফুটওভার ব্রিজ বা পদচারী-সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি শুনে। যেন দুর্ঘটনাস্থলে ফুটওভার ব্রিজ হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে।
প্রথম ঘটনার দিকে তাকানো যাক, ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ প্রতিদিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য ভোর ৭টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বসুন্ধরার গেটে অপেক্ষা করছিলেন আবরার আহমেদ চৌধুরী। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস আসার আগেই তাঁকে চাপা দেয় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস। আবরারকে সেদিন বাসে তুলে দিতে সঙ্গে এসেছিলেন তাঁর বাবা। আবরার পড়তেন ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিউপি)। এ ঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা করেন আবরারের বাবা।
আবরার নিহত হওয়ার পর তাঁর সহপাঠীরা রাস্তা বন্ধ করে এর বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে। সেই আন্দোলন প্রগতি সরণি ছাপিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মধ্যেই বাসচালক সিরাজুলকে (২৯) আটক করে পুলিশ। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন ঘটনাস্থলে যান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেদিন তিনি আবরার আহমেদ চৌধুরী নামে সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।
এর দুই বছর পর রাজধানীর গুলিস্তানে নটর ডেম শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাড়ি ধাক্কা দিলে সেখানেই মারা যায় নাঈম। তাঁর মৃত্যুর বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থীরা। একে একে সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পুরো রাজধানীতে। এবারও আন্দোলনের মূল দাবি নিরাপদ সড়ক।
এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ফজলে নূর তাপস ঘোষণা দেন, যেখানে নাঈমের মৃত্যু হয়েছে সেখানে ‘শহীদ নাঈম’ নামে একটি ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করে দেওয়া হবে।
উভয় প্রতিশ্রুতির পর শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছেন। তাঁদের ফিরতে হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এই প্রতিশ্রুতিকে এমনভাবে সামনে হাজির করা হয়েছে, যেন ফুটওভার ব্রিজ করে দেওয়া হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে। শুধু এ দুই ক্ষেত্রেই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত শুধু রাজধানীতে ১১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছে।
এর মধ্যে পথচারী ৬২ জন, মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ৩৩ জন এবং অন্যান্য যানবাহনের যাত্রী ও আরোহী ২৪ জন। এই প্রতিটি মৃত্যুতে মানুষ ফুঁসে ওঠেনি। যে দু-একটিতে মানুষ ফুঁসে ওঠে, তাতে ফুটওভার ব্রিজ ও স্পিড ব্রেকার বা গতিরোধক স্থাপনের মতো প্রতিশ্রুতি আসে সমাধান হিসেবে।
সঙ্গে আরও নানা কথা বলা হয়। এই যেমন ২০১৯ সালে দু-তিন দিনের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডিএনসিসির মেয়র। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘এ ঘটনায় আপনাদের মাঝ থেকে ২-৫ জনকে নিয়ে আমরা একটি কমিটি গঠন করব। প্রয়োজনে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। আপনাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করব।’ বলেছিলেন, ‘এ ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাসের মালিকদের সংযুক্ত করা হবে। এ ছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব না। এ কাজটি আমরা খুব দ্রুত করব।’
কথিত সেই ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধনও করেছিলেন মেয়র। কিন্তু বাকি কোনো কিছুই আর সামনে আসেনি। সেই কমিটি, বাসমালিকদের সংযুক্ত করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ বা সড়কে শৃঙ্খলা আনয়ন—কোনোটিই হয়নি। এবারও নাঈমের মৃত্যুর পর প্রায় একই প্রতিশ্রুতি সামনে এসেছে। কিন্তু এই ফুটওভার ব্রিজ বা স্পিড ব্রেকারই কি সড়ককে নিরাপদ করার জন্য যথেষ্ট?
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজ নিরাপদ সড়কের জন্য যথেষ্ট নয়। সমস্যা হচ্ছে, তাঁরা শুধু মুখ দিয়ে কথাই বলেন, কাজ করেন না। সিটি করপোরেশনের গাড়িচালকদেরই ঠিক করতে পারলেন না তাঁরা, আবার মানুষকে ঠিক করবেন কীভাবে। নেতারা সারা জীবনই খালি মুখ দিয়ে মানুষকে সান্ত্বনা দিয়ে যান।’ তিনি বলেন, ‘আর দেখুন সিটি করপোরেশনের গাড়ি রাতে চলার কথা। কিন্তু তারা সব সময় চালায়। তারা একেকজন পাওয়ার দেখায় যে, তারা মেয়রের লোক।’
আবার বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও পথচারীদের সেগুলো ব্যবহার করতে দেখা যায় কম। অনেক সময় ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে পথচারীদের রাস্তা পার হতে দেখা যায়। রাস্তা পারাপারকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে ফুটওভার ব্রিজকে সমাধান হিসেবে দেখতে নারাজ ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজগুলো মানুষের জন্য খুব কষ্টদায়ক। আমি সব সময় সাজেস্ট করি আন্ডারপাস করার জন্য। আন্ডারপাস করলে মানুষের কষ্ট অর্ধেক হয়ে যায়। ফুটওভার ব্রিজ করতে নানা দিক ভাবতে হয়, বাস, ট্রাক ইত্যাদি, ট্রাকের ওপর মালপত্র নেয়। এগুলোর কথা চিন্তা করে এগুলো উঁচু করা হয়। তাই মানুষের উঠতে কষ্ট হয়। আর যদি আপনি আন্ডারগ্রাউন্ড করেন, একটা মানুষের যে উচ্চতা, তার থেকে ২ ফুট উঁচু রাখলেই চলে, যা মানুষের কষ্ট অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।’
দুর্ঘটনা ঘটলেই যে সমাধান হিসেবে ফুটওভার ব্রিজের কথা সামনে আসে—এ নিয়েও সমালোচনা করেন কাঞ্চন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এটা তাঁদের পলিসি। শহরে দুর্ঘটনা ঘটলে বলে ফুটওভার ব্রিজ; আর গ্রামে হলে স্পিড ব্রেকার। এগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মানুষকে শান্ত করার জন্য তারা বলে। যখন শান্ত হয়ে যায়, তখন আর এসবের দরকার পড়ে না। আবার যখন কেউ মরবে, তখন আবার উত্তপ্ত হয়ে যাবে। জনগণ তো বারবার একত্র হতে পারবে না। মেয়র সাহেবদের সময় পাঁচ বছর। যদি দুবার এই ঘটনা ঘটে, তাহলে তো দুবার ফুটওভার ব্রিজের কথা বলে সময় পার করে দিতে পারেন।’
নিরাপদ সড়ক নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে যাওয়া কর্মীরাও মনে করেন এই প্রতিশ্রুতিগুলো আদতে মানুষকে তাৎক্ষণিকভাবে শান্ত করার জন্যই করা হয়। সড়ক নিরাপদ করার কোনো উদ্যোগ প্রশাসনের নেই। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ওপরও কিছুটা দায় চাপাতে চান তাঁরা। তাঁদের ভাষ্য, মানুষ সবকিছুতেই তাৎক্ষণিক ফল চায়। তাঁরা ভাবেন, এক দিন ধর্মঘট করলেই, অবরোধ করলেই সমাধান আসবে। প্রশাসন এই সুযোগটিই নেয়। যেনতেনভাবে একটা সমাধান হাজির করে তারা। অথচ জনগণ এক হয়ে দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগ মেনে নিতে পারলে সমস্যা দূর হতো। না হলে বারবার ফুটওভার ব্রিজের মতো সমাধানই আসবে।
আবরার বা নাঈমের পরিবার কি এতে তাদের সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে থাকতে পারছেন? ভুলে থাকতে পারছে রাজীব ও দিয়ার পরিবার? সেটা অবশ্য ২০১৮ সালের ঘটনা। ২০১৮ সালে ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দ্রুতগতির দুই বাসের সংঘর্ষে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাজীব ও দিয়া নিহত হয় এবং ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এই সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিহত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের মাধ্যমে শুরু হওয়া বিক্ষোভ পরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং নৌমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামে। সেই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা যে সংকট পেয়েছিল, সেই একই সংকট ২০২১ সালের শেষে এসেও বিদ্যমান। এখনো প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের গাড়িতে লাইসেন্সবিহীন চালক থাকে। এখনো বেপরোয়া যানবাহনের গতির প্রতিযোগিতায় জিম্মি সাধারণ যাত্রী ও পথচারী। নিরাপদ সড়কের যে প্রতিশ্রুতি ২০১৮ সালে সরকার দিয়েছিল, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বাস্তবায়ন হলে নাঈমকে চাপা দেওয়া গাড়িটি চালকই চালাতেন এবং তাঁর লাইসেন্সও থাকত। বাস্তবায়ন হলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি এখনো রাস্তায় চলত না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘আগে সিস্টেমটাকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। আমাদের এখানে লিজ সিস্টেমে গাড়ি চলে, ব্যবসাটা করে চালক; মালিক এখানে নাই বললেই চলে। যখন চালক আয়ের চাপে গাড়ি চালান, তখন তিনি রাস্তার দিকে তাকাবেন নাকি যাত্রীর দিকে তাকাবেন? ওটাকে ঠিক না করে আমি যতই ফুটওভার ব্রিজ বানাই না কেন, তা হচ্ছে আনাড়িপনা।’
এসব প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আমরা যত ধরনের প্রতিশ্রুতি দেখি, তা উপসর্গ ধরে; কিন্তু রিফর্ম দরকার, এখানে বিনিয়োগ দরকার। পরিবহনে রিফর্ম দরকার। কেন চালক ব্যবসায় থাকবেন, তাঁকে তো সব সময় রাস্তার দিকে নজর রাখতে হবে। তাঁর তো একজন বেতনভোগী কর্মচারী হওয়ার কথা। কেন এটা হচ্ছে না, তার উত্তর জেনে যদি সাজানো যায় হাতিরঝিলের মতো; অবশ্য সেখানে কিছু সমস্যা থাকলেও বিশৃঙ্খলা হয় না।’ তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনাটা আমরা সুন্দর করলাম, সেলফ এনফোর্স হলো। এতে পুলিশ অত্যন্ত বেজার হয়ে গেছে। তার একটা ইনকাম ছিল, তা সেখানে নেই।’
বুয়েটের এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি, তাই রাস্তায় তারা প্রতিযোগিতা করছে। প্রতিযোগিতাবিহীন গণপরিবহনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ওপরমহলের লোক যদি না বোঝে, তাহলে সম্ভব না। বিশেষ করে মেয়র হচ্ছেন নগরপতি। তাঁর সব বোঝার দরকার নাই, তাঁর তো কিছু থিংক ট্যাংক থাকার কথা, যা দিয়ে তিনি দৃশ্যমান উন্নতি দেখাতে পারবেন।’
সবচেয়ে সরল জিনিস হলো অবকাঠামোর উন্নয়ন। এই অবকাঠামো উন্নয়নের মধ্যে কিছু দৃশ্যমান উন্নয়নের দিকেই অধিকাংশের নজর রয়েছে উল্লেখ করে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আন্দোলনকে ঠেকা দেওয়ার জন্য ফুটওভার ব্রিজ সামনে আসে। আমরা মুভমেন্ট করছি, আমাদের বিবেকের ভিত নড়ে গেছে, তোমরা দেখিয়ে দিয়েছ—এসবই বোঝানো হয়। (সে সময়) আমার সবচেয়ে বেশি আগ্রহটা ছিল পুলিশের বিষয়ে। এর আগে যে বড় মুভমেন্ট হলো, তখন পুলিশের আইজিপি বলল, তাঁরা একটা মডেল করিডর করছেন, নির্দিষ্ট বাসের জায়গায় চিহ্ন দেওয়া হবে, সেখানেই দাঁড়াতে হবে, পুলিশের নিজস্ব লোক থাকবে। ধাপে ধাপে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি।’
এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রসঙ্গটিও জড়িত একটু ঘুরপথে। বিষয়টি সামনে আনলেন পুরকৌশল বিভাগের এই অধ্যাপকই। তিনি বলেন, ‘বড় সমস্যাটা হচ্ছে, আমাদের পরিকল্পনায় অভাব আছে অনেক; কিন্তু কেউ বলছে না—এটা ঠিক করা যাবে না। সবাই বলছে ঠিক হবে। এখানেই সমস্যা। তখন আপনারা-আমরা কথা বললে সরকারের উচ্চপর্যায়ের লোকেরা মনে করে—“এরা উন্নয়ন চায় না, আমাদের লোকেরা তো সব ঠিকই করবে বলছে। ” আমাদের বিশৃঙ্খল অবস্থা রেখে যারা উন্নয়নের কথা বলে তারা এনজিওদের মতো। একসময় আমাদের অপুষ্টি দেখিয়ে বিদেশ থেকে লোন আনত তারা। যখন পুষ্টি সমস্যার সমাধান হলো, তখন তাদের ঝামেলা হয়ে গেল। সুতরাং যানজট বিশৃঙ্খলা যদি চলে যায়, তাহলে বিনিয়োগ তো আসবে না। কেন আমি হাতির ঝিলের মতো করব? পুলিশও এটা চাইবে না, যারা নেতা আছে, তাঁরাও এমনটা চাইবেন না। কারণ, চাঁদা তুলতে পারবে না।’
আরও পড়ুন:

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে। মজার বিষয় হলো দুটি আন্দোলন থেকেই শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছে ফুটওভার ব্রিজ বা পদচারী-সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি শুনে। যেন দুর্ঘটনাস্থলে ফুটওভার ব্রিজ হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে।
প্রথম ঘটনার দিকে তাকানো যাক, ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ প্রতিদিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য ভোর ৭টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বসুন্ধরার গেটে অপেক্ষা করছিলেন আবরার আহমেদ চৌধুরী। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস আসার আগেই তাঁকে চাপা দেয় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস। আবরারকে সেদিন বাসে তুলে দিতে সঙ্গে এসেছিলেন তাঁর বাবা। আবরার পড়তেন ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিউপি)। এ ঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা করেন আবরারের বাবা।
আবরার নিহত হওয়ার পর তাঁর সহপাঠীরা রাস্তা বন্ধ করে এর বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে। সেই আন্দোলন প্রগতি সরণি ছাপিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মধ্যেই বাসচালক সিরাজুলকে (২৯) আটক করে পুলিশ। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন ঘটনাস্থলে যান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেদিন তিনি আবরার আহমেদ চৌধুরী নামে সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।
এর দুই বছর পর রাজধানীর গুলিস্তানে নটর ডেম শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাড়ি ধাক্কা দিলে সেখানেই মারা যায় নাঈম। তাঁর মৃত্যুর বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থীরা। একে একে সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পুরো রাজধানীতে। এবারও আন্দোলনের মূল দাবি নিরাপদ সড়ক।
এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ফজলে নূর তাপস ঘোষণা দেন, যেখানে নাঈমের মৃত্যু হয়েছে সেখানে ‘শহীদ নাঈম’ নামে একটি ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করে দেওয়া হবে।
উভয় প্রতিশ্রুতির পর শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছেন। তাঁদের ফিরতে হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এই প্রতিশ্রুতিকে এমনভাবে সামনে হাজির করা হয়েছে, যেন ফুটওভার ব্রিজ করে দেওয়া হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে। শুধু এ দুই ক্ষেত্রেই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত শুধু রাজধানীতে ১১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছে।
এর মধ্যে পথচারী ৬২ জন, মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ৩৩ জন এবং অন্যান্য যানবাহনের যাত্রী ও আরোহী ২৪ জন। এই প্রতিটি মৃত্যুতে মানুষ ফুঁসে ওঠেনি। যে দু-একটিতে মানুষ ফুঁসে ওঠে, তাতে ফুটওভার ব্রিজ ও স্পিড ব্রেকার বা গতিরোধক স্থাপনের মতো প্রতিশ্রুতি আসে সমাধান হিসেবে।
সঙ্গে আরও নানা কথা বলা হয়। এই যেমন ২০১৯ সালে দু-তিন দিনের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডিএনসিসির মেয়র। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘এ ঘটনায় আপনাদের মাঝ থেকে ২-৫ জনকে নিয়ে আমরা একটি কমিটি গঠন করব। প্রয়োজনে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। আপনাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করব।’ বলেছিলেন, ‘এ ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাসের মালিকদের সংযুক্ত করা হবে। এ ছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব না। এ কাজটি আমরা খুব দ্রুত করব।’
কথিত সেই ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধনও করেছিলেন মেয়র। কিন্তু বাকি কোনো কিছুই আর সামনে আসেনি। সেই কমিটি, বাসমালিকদের সংযুক্ত করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ বা সড়কে শৃঙ্খলা আনয়ন—কোনোটিই হয়নি। এবারও নাঈমের মৃত্যুর পর প্রায় একই প্রতিশ্রুতি সামনে এসেছে। কিন্তু এই ফুটওভার ব্রিজ বা স্পিড ব্রেকারই কি সড়ককে নিরাপদ করার জন্য যথেষ্ট?
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজ নিরাপদ সড়কের জন্য যথেষ্ট নয়। সমস্যা হচ্ছে, তাঁরা শুধু মুখ দিয়ে কথাই বলেন, কাজ করেন না। সিটি করপোরেশনের গাড়িচালকদেরই ঠিক করতে পারলেন না তাঁরা, আবার মানুষকে ঠিক করবেন কীভাবে। নেতারা সারা জীবনই খালি মুখ দিয়ে মানুষকে সান্ত্বনা দিয়ে যান।’ তিনি বলেন, ‘আর দেখুন সিটি করপোরেশনের গাড়ি রাতে চলার কথা। কিন্তু তারা সব সময় চালায়। তারা একেকজন পাওয়ার দেখায় যে, তারা মেয়রের লোক।’
আবার বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও পথচারীদের সেগুলো ব্যবহার করতে দেখা যায় কম। অনেক সময় ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে পথচারীদের রাস্তা পার হতে দেখা যায়। রাস্তা পারাপারকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে ফুটওভার ব্রিজকে সমাধান হিসেবে দেখতে নারাজ ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজগুলো মানুষের জন্য খুব কষ্টদায়ক। আমি সব সময় সাজেস্ট করি আন্ডারপাস করার জন্য। আন্ডারপাস করলে মানুষের কষ্ট অর্ধেক হয়ে যায়। ফুটওভার ব্রিজ করতে নানা দিক ভাবতে হয়, বাস, ট্রাক ইত্যাদি, ট্রাকের ওপর মালপত্র নেয়। এগুলোর কথা চিন্তা করে এগুলো উঁচু করা হয়। তাই মানুষের উঠতে কষ্ট হয়। আর যদি আপনি আন্ডারগ্রাউন্ড করেন, একটা মানুষের যে উচ্চতা, তার থেকে ২ ফুট উঁচু রাখলেই চলে, যা মানুষের কষ্ট অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।’
দুর্ঘটনা ঘটলেই যে সমাধান হিসেবে ফুটওভার ব্রিজের কথা সামনে আসে—এ নিয়েও সমালোচনা করেন কাঞ্চন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এটা তাঁদের পলিসি। শহরে দুর্ঘটনা ঘটলে বলে ফুটওভার ব্রিজ; আর গ্রামে হলে স্পিড ব্রেকার। এগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মানুষকে শান্ত করার জন্য তারা বলে। যখন শান্ত হয়ে যায়, তখন আর এসবের দরকার পড়ে না। আবার যখন কেউ মরবে, তখন আবার উত্তপ্ত হয়ে যাবে। জনগণ তো বারবার একত্র হতে পারবে না। মেয়র সাহেবদের সময় পাঁচ বছর। যদি দুবার এই ঘটনা ঘটে, তাহলে তো দুবার ফুটওভার ব্রিজের কথা বলে সময় পার করে দিতে পারেন।’
নিরাপদ সড়ক নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে যাওয়া কর্মীরাও মনে করেন এই প্রতিশ্রুতিগুলো আদতে মানুষকে তাৎক্ষণিকভাবে শান্ত করার জন্যই করা হয়। সড়ক নিরাপদ করার কোনো উদ্যোগ প্রশাসনের নেই। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ওপরও কিছুটা দায় চাপাতে চান তাঁরা। তাঁদের ভাষ্য, মানুষ সবকিছুতেই তাৎক্ষণিক ফল চায়। তাঁরা ভাবেন, এক দিন ধর্মঘট করলেই, অবরোধ করলেই সমাধান আসবে। প্রশাসন এই সুযোগটিই নেয়। যেনতেনভাবে একটা সমাধান হাজির করে তারা। অথচ জনগণ এক হয়ে দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগ মেনে নিতে পারলে সমস্যা দূর হতো। না হলে বারবার ফুটওভার ব্রিজের মতো সমাধানই আসবে।
আবরার বা নাঈমের পরিবার কি এতে তাদের সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে থাকতে পারছেন? ভুলে থাকতে পারছে রাজীব ও দিয়ার পরিবার? সেটা অবশ্য ২০১৮ সালের ঘটনা। ২০১৮ সালে ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দ্রুতগতির দুই বাসের সংঘর্ষে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাজীব ও দিয়া নিহত হয় এবং ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এই সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিহত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের মাধ্যমে শুরু হওয়া বিক্ষোভ পরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং নৌমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামে। সেই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা যে সংকট পেয়েছিল, সেই একই সংকট ২০২১ সালের শেষে এসেও বিদ্যমান। এখনো প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের গাড়িতে লাইসেন্সবিহীন চালক থাকে। এখনো বেপরোয়া যানবাহনের গতির প্রতিযোগিতায় জিম্মি সাধারণ যাত্রী ও পথচারী। নিরাপদ সড়কের যে প্রতিশ্রুতি ২০১৮ সালে সরকার দিয়েছিল, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বাস্তবায়ন হলে নাঈমকে চাপা দেওয়া গাড়িটি চালকই চালাতেন এবং তাঁর লাইসেন্সও থাকত। বাস্তবায়ন হলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি এখনো রাস্তায় চলত না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘আগে সিস্টেমটাকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। আমাদের এখানে লিজ সিস্টেমে গাড়ি চলে, ব্যবসাটা করে চালক; মালিক এখানে নাই বললেই চলে। যখন চালক আয়ের চাপে গাড়ি চালান, তখন তিনি রাস্তার দিকে তাকাবেন নাকি যাত্রীর দিকে তাকাবেন? ওটাকে ঠিক না করে আমি যতই ফুটওভার ব্রিজ বানাই না কেন, তা হচ্ছে আনাড়িপনা।’
এসব প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আমরা যত ধরনের প্রতিশ্রুতি দেখি, তা উপসর্গ ধরে; কিন্তু রিফর্ম দরকার, এখানে বিনিয়োগ দরকার। পরিবহনে রিফর্ম দরকার। কেন চালক ব্যবসায় থাকবেন, তাঁকে তো সব সময় রাস্তার দিকে নজর রাখতে হবে। তাঁর তো একজন বেতনভোগী কর্মচারী হওয়ার কথা। কেন এটা হচ্ছে না, তার উত্তর জেনে যদি সাজানো যায় হাতিরঝিলের মতো; অবশ্য সেখানে কিছু সমস্যা থাকলেও বিশৃঙ্খলা হয় না।’ তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনাটা আমরা সুন্দর করলাম, সেলফ এনফোর্স হলো। এতে পুলিশ অত্যন্ত বেজার হয়ে গেছে। তার একটা ইনকাম ছিল, তা সেখানে নেই।’
বুয়েটের এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি, তাই রাস্তায় তারা প্রতিযোগিতা করছে। প্রতিযোগিতাবিহীন গণপরিবহনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ওপরমহলের লোক যদি না বোঝে, তাহলে সম্ভব না। বিশেষ করে মেয়র হচ্ছেন নগরপতি। তাঁর সব বোঝার দরকার নাই, তাঁর তো কিছু থিংক ট্যাংক থাকার কথা, যা দিয়ে তিনি দৃশ্যমান উন্নতি দেখাতে পারবেন।’
সবচেয়ে সরল জিনিস হলো অবকাঠামোর উন্নয়ন। এই অবকাঠামো উন্নয়নের মধ্যে কিছু দৃশ্যমান উন্নয়নের দিকেই অধিকাংশের নজর রয়েছে উল্লেখ করে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আন্দোলনকে ঠেকা দেওয়ার জন্য ফুটওভার ব্রিজ সামনে আসে। আমরা মুভমেন্ট করছি, আমাদের বিবেকের ভিত নড়ে গেছে, তোমরা দেখিয়ে দিয়েছ—এসবই বোঝানো হয়। (সে সময়) আমার সবচেয়ে বেশি আগ্রহটা ছিল পুলিশের বিষয়ে। এর আগে যে বড় মুভমেন্ট হলো, তখন পুলিশের আইজিপি বলল, তাঁরা একটা মডেল করিডর করছেন, নির্দিষ্ট বাসের জায়গায় চিহ্ন দেওয়া হবে, সেখানেই দাঁড়াতে হবে, পুলিশের নিজস্ব লোক থাকবে। ধাপে ধাপে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি।’
এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রসঙ্গটিও জড়িত একটু ঘুরপথে। বিষয়টি সামনে আনলেন পুরকৌশল বিভাগের এই অধ্যাপকই। তিনি বলেন, ‘বড় সমস্যাটা হচ্ছে, আমাদের পরিকল্পনায় অভাব আছে অনেক; কিন্তু কেউ বলছে না—এটা ঠিক করা যাবে না। সবাই বলছে ঠিক হবে। এখানেই সমস্যা। তখন আপনারা-আমরা কথা বললে সরকারের উচ্চপর্যায়ের লোকেরা মনে করে—“এরা উন্নয়ন চায় না, আমাদের লোকেরা তো সব ঠিকই করবে বলছে। ” আমাদের বিশৃঙ্খল অবস্থা রেখে যারা উন্নয়নের কথা বলে তারা এনজিওদের মতো। একসময় আমাদের অপুষ্টি দেখিয়ে বিদেশ থেকে লোন আনত তারা। যখন পুষ্টি সমস্যার সমাধান হলো, তখন তাদের ঝামেলা হয়ে গেল। সুতরাং যানজট বিশৃঙ্খলা যদি চলে যায়, তাহলে বিনিয়োগ তো আসবে না। কেন আমি হাতির ঝিলের মতো করব? পুলিশও এটা চাইবে না, যারা নেতা আছে, তাঁরাও এমনটা চাইবেন না। কারণ, চাঁদা তুলতে পারবে না।’
আরও পড়ুন:

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক কৃষকের বাড়ির ইটের দেয়াল ভেঙে গোয়ালঘর থেকে তিনটি ষাঁড় চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা। শুধু তাই নয়, ওই সময় বাড়ির উঠানে রাখা একটি মোটরসাইকেলের তার ছিঁড়ে বিকল করে এর ট্যাংকি থেকে তেলও বের করে নিয়ে যায় তারা।
১৬ মিনিট আগে
সিলেটের জকিগঞ্জে অবৈধ ও দ্রুতগতির ট্রলির ধাক্কায় মাওলানা বদরুল ইসলাম নামে মসজিদের এক ইমাম মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার আটগ্রাম স্টেশন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটমচালক মো. সবুজ হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ পলাতক ৭১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ফেনী সদর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল...
১ ঘণ্টা আগে
ঢাকা মেডিকেলে রেখে যাওয়া মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তাঁর নাম রাশেদা আক্তার (২২)। প্রতিবেশী নয়ন ইসলাম তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহত রাশেদার পরিচয় শনাক্ত করেন তাঁর বড় বোন খালেদা আক্তার ও দুলাভাই মো. মামুন।
১ ঘণ্টা আগেআক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক কৃষকের বাড়ির ইটের দেয়াল ভেঙে গোয়ালঘর থেকে তিনটি ষাঁড় চুরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই সময় বাড়ির উঠানে রাখা একটি মোটরসাইকেলের তার ছিঁড়ে বিকল করে এর ট্যাংকি থেকে তেলও বের করে নিয়ে যায় চোরেরা।
সোমবার দিবাগত রাতে (২৩ ডিসেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রুকিন্দিপুর ইউনিয়নের আওয়ালগাড়ী গ্রামের মাঠপাড়া এলাকায়।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ফেরদৌস ইসলাম (৩৫) ওই এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। চুরি যাওয়া তিনটি গরুর আনুমানিক মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা বলে জানান তিনি।
ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন ফেরদৌস ইসলামের মা আসমা বেগম। তাঁর চিৎকার শুনে ফেরদৌস ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে দেন। পরে গোয়ালঘরে গিয়ে তিনি দেখতে পান, ভেতরে বাঁধা তিনটি গরু নেই। গোয়ালঘরের দেয়ালের ইট ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। বাড়ির উঠানে রাখা মোটরসাইকেলটিও পড়ে ছিল বিকল হয়ে।
ফেরদৌস বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে গরুগুলো লালন পালন করছিলাম। আগামী কোরবানির ঈদে বিক্রি করতাম। চোরেরা বাড়ির ইটের দেয়াল ভেঙে তিনটি ষাঁড় গরু নিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় তাঁরা মোটরসাইকেলটির তেলও নিয়ে গেছে। আমি পুলিশকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন রেজা জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী কৃষক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক কৃষকের বাড়ির ইটের দেয়াল ভেঙে গোয়ালঘর থেকে তিনটি ষাঁড় চুরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই সময় বাড়ির উঠানে রাখা একটি মোটরসাইকেলের তার ছিঁড়ে বিকল করে এর ট্যাংকি থেকে তেলও বের করে নিয়ে যায় চোরেরা।
সোমবার দিবাগত রাতে (২৩ ডিসেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রুকিন্দিপুর ইউনিয়নের আওয়ালগাড়ী গ্রামের মাঠপাড়া এলাকায়।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ফেরদৌস ইসলাম (৩৫) ওই এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। চুরি যাওয়া তিনটি গরুর আনুমানিক মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা বলে জানান তিনি।
ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন ফেরদৌস ইসলামের মা আসমা বেগম। তাঁর চিৎকার শুনে ফেরদৌস ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে দেন। পরে গোয়ালঘরে গিয়ে তিনি দেখতে পান, ভেতরে বাঁধা তিনটি গরু নেই। গোয়ালঘরের দেয়ালের ইট ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। বাড়ির উঠানে রাখা মোটরসাইকেলটিও পড়ে ছিল বিকল হয়ে।
ফেরদৌস বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে গরুগুলো লালন পালন করছিলাম। আগামী কোরবানির ঈদে বিক্রি করতাম। চোরেরা বাড়ির ইটের দেয়াল ভেঙে তিনটি ষাঁড় গরু নিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় তাঁরা মোটরসাইকেলটির তেলও নিয়ে গেছে। আমি পুলিশকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন রেজা জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী কৃষক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
সিলেটের জকিগঞ্জে অবৈধ ও দ্রুতগতির ট্রলির ধাক্কায় মাওলানা বদরুল ইসলাম নামে মসজিদের এক ইমাম মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার আটগ্রাম স্টেশন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটমচালক মো. সবুজ হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ পলাতক ৭১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ফেনী সদর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল...
১ ঘণ্টা আগে
ঢাকা মেডিকেলে রেখে যাওয়া মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তাঁর নাম রাশেদা আক্তার (২২)। প্রতিবেশী নয়ন ইসলাম তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহত রাশেদার পরিচয় শনাক্ত করেন তাঁর বড় বোন খালেদা আক্তার ও দুলাভাই মো. মামুন।
১ ঘণ্টা আগেসিলেট প্রতিনিধি

সিলেটের জকিগঞ্জে অবৈধ ও দ্রুতগতির ট্রলির ধাক্কায় মাওলানা বদরুল ইসলাম নামে মসজিদের এক ইমাম মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার আটগ্রাম স্টেশন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মাওলানা বদরুল ইসলাম (৫৫) কাজলসার ইউনিয়নের কাজিরপাতন গ্রামের ইলিয়াস আলীর ছেলে । তিনি জগন্নাথপুর উপজেলার একটি মসজিদের ইমাম হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মাওলানা বদরুল ইসলাম বাড়ি থেকে বের হয়ে জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কে উঠলে দ্রুতগতির একটি ট্রলি তাঁকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জকিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. সুজন মিয়া জানান, নিহতের পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের প্রক্রিয়া চলছে। ঘাতক ট্রলিটি জব্দে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

সিলেটের জকিগঞ্জে অবৈধ ও দ্রুতগতির ট্রলির ধাক্কায় মাওলানা বদরুল ইসলাম নামে মসজিদের এক ইমাম মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার আটগ্রাম স্টেশন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মাওলানা বদরুল ইসলাম (৫৫) কাজলসার ইউনিয়নের কাজিরপাতন গ্রামের ইলিয়াস আলীর ছেলে । তিনি জগন্নাথপুর উপজেলার একটি মসজিদের ইমাম হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মাওলানা বদরুল ইসলাম বাড়ি থেকে বের হয়ে জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কে উঠলে দ্রুতগতির একটি ট্রলি তাঁকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জকিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. সুজন মিয়া জানান, নিহতের পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের প্রক্রিয়া চলছে। ঘাতক ট্রলিটি জব্দে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক কৃষকের বাড়ির ইটের দেয়াল ভেঙে গোয়ালঘর থেকে তিনটি ষাঁড় চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা। শুধু তাই নয়, ওই সময় বাড়ির উঠানে রাখা একটি মোটরসাইকেলের তার ছিঁড়ে বিকল করে এর ট্যাংকি থেকে তেলও বের করে নিয়ে যায় তারা।
১৬ মিনিট আগে
ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটমচালক মো. সবুজ হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ পলাতক ৭১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ফেনী সদর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল...
১ ঘণ্টা আগে
ঢাকা মেডিকেলে রেখে যাওয়া মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তাঁর নাম রাশেদা আক্তার (২২)। প্রতিবেশী নয়ন ইসলাম তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহত রাশেদার পরিচয় শনাক্ত করেন তাঁর বড় বোন খালেদা আক্তার ও দুলাভাই মো. মামুন।
১ ঘণ্টা আগেফেনী প্রতিনিধি

ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটমচালক মো. সবুজ হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ পলাতক ৭১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ফেনী সদর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসান এই আদেশ দেন।
মামলার নথিসূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নির্বিচার গুলিতে প্রাণ হারান টমটমচালক মো. সবুজ। ঘটনার ৯ দিন পর ১৩ আগস্ট নিহত সবুজের ভাই মো. ইউছুফ বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলায় ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, সাবেক ফেনী পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীসহ ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ফেনী মডেল থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক মো. ফারুক মিয়া জানান, ৯ ডিসেম্বর এ মামলায় এজাহারভুক্ত ৬৫ জন, তদন্তে প্রাপ্ত আরও ৫৯ জনসহ মোট ১২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ১২ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগপত্র পর্যালোচনা করেন। এ পর্যন্ত মামলায় এজাহারনামীয় পাঁচজন, সন্দেহভাজন ৪৯ জনসহ মোট ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাতজনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কেউ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।
ফেনী আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগপত্রে ১২৪ জনকে আসামি করা হলেও বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫৪ জন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৩ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। পলাতক ৭১ জনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। দু-এক দিনের মধ্যে পরোয়ানার কপি সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হবে।

ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটমচালক মো. সবুজ হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ পলাতক ৭১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ফেনী সদর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসান এই আদেশ দেন।
মামলার নথিসূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নির্বিচার গুলিতে প্রাণ হারান টমটমচালক মো. সবুজ। ঘটনার ৯ দিন পর ১৩ আগস্ট নিহত সবুজের ভাই মো. ইউছুফ বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলায় ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, সাবেক ফেনী পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীসহ ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ফেনী মডেল থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক মো. ফারুক মিয়া জানান, ৯ ডিসেম্বর এ মামলায় এজাহারভুক্ত ৬৫ জন, তদন্তে প্রাপ্ত আরও ৫৯ জনসহ মোট ১২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ১২ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগপত্র পর্যালোচনা করেন। এ পর্যন্ত মামলায় এজাহারনামীয় পাঁচজন, সন্দেহভাজন ৪৯ জনসহ মোট ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাতজনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কেউ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।
ফেনী আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগপত্রে ১২৪ জনকে আসামি করা হলেও বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫৪ জন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৩ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। পলাতক ৭১ জনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। দু-এক দিনের মধ্যে পরোয়ানার কপি সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হবে।

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক কৃষকের বাড়ির ইটের দেয়াল ভেঙে গোয়ালঘর থেকে তিনটি ষাঁড় চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা। শুধু তাই নয়, ওই সময় বাড়ির উঠানে রাখা একটি মোটরসাইকেলের তার ছিঁড়ে বিকল করে এর ট্যাংকি থেকে তেলও বের করে নিয়ে যায় তারা।
১৬ মিনিট আগে
সিলেটের জকিগঞ্জে অবৈধ ও দ্রুতগতির ট্রলির ধাক্কায় মাওলানা বদরুল ইসলাম নামে মসজিদের এক ইমাম মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার আটগ্রাম স্টেশন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ঢাকা মেডিকেলে রেখে যাওয়া মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তাঁর নাম রাশেদা আক্তার (২২)। প্রতিবেশী নয়ন ইসলাম তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহত রাশেদার পরিচয় শনাক্ত করেন তাঁর বড় বোন খালেদা আক্তার ও দুলাভাই মো. মামুন।
১ ঘণ্টা আগেঢামেক প্রতিবেদক

ঢাকা মেডিকেলে রেখে যাওয়া মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তাঁর নাম রাশেদা আক্তার (২২)। প্রতিবেশী নয়ন ইসলাম তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহত রাশেদার পরিচয় শনাক্ত করেন তাঁর বড় বোন খালেদা আক্তার ও দুলাভাই মো. মামুন।
এর আগে, সোমবার রাতে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের সামনে ওই তরুণীর মরদেহ রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত যুবক।
নিহত রাশেদার বড় বোন খালেদা আক্তার জানান, তাঁদের বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার পুখুরিয়া গ্রামে। বাবার নাম মৃত আবু বক্কর সিদ্দিক। রাশেদা মাগুরার আলোকদিয়া অমরেশ বসু ডিগ্রি কলেজ থেকে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন। কিছুদিন আগে খালেদা ঢাকায় মিরপুর-১ আনসার ক্যাম্পে এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় এসে থাকতে শুরু করেন এবং মিরপুরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। তাঁর দেখাদেখি ছোট বোন রাশেদাও উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর চলতি মাসের ৭ তারিখে মিরপুরে একই বাসায় এসে ওঠেন। এরপর তিনি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
খালেদা আরও জানান, শনিবার রাশেদা গার্মেন্টসে যাননি। সারা দিন বাসাতেই ছিলেন। রাত ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হন। এরপর আর বাসায় ফেরেননি। পরে তাঁরা জানতে পারেন, শনিবার রাতে নিজ গ্রামের পাশের বাড়ির মতিউর রহমানের ছেলে নয়ন ইসলাম ঢাকায় এসে মিরপুরের ওই বাসার সামনে রাশেদার সঙ্গে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে একটি দোকানের সামনে বসে দুজন তুমুল ঝগড়াও করেন। কিছুক্ষণ পর দুজনই সেখান থেকে চলে যান। এরপর আর কোনো খবর মিলছিল না রাশেদার। ফোনেও পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁকে।
রাশেদার দুলাভাই মামুন বলেন, মঙ্গলবার সকালে গ্রাম থেকে একজন রাশেদার বড় বোন খালেদাকে ফোন করে জানায়, গ্রামের লোকজন বলাবলি করছে নয়ন রাশেদাকে মেরে ফেলেছে। নয়নের বাড়ির সবাই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। রাশেদার লাশ ঢাকা মেডিকেল রয়েছে।
এই খবরের ভিত্তিতে বোন ও দুলাভাই ঢাকা মেডিকেলের মর্গে গিয়ে রাশেদার মরদেহ শনাক্ত করেন।
বোন খালেদা অভিযোগ করে বলেন, ‘অনেক দিন ধরে নয়ন আমার বোনকে ডিস্টার্ব করত। ওর জন্য আমার বোন পড়তেও পারত না। ওই নয়নই আমার বোনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। মরদেহ মেডিকেলে রেখে পালিয়েছে সে। নয়নের কঠিন বিচার চাই আমরা। এই ঘটনার সঙ্গে আর কে কে জড়িত আছে, তাদেরও বিচার চাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আজম জানান, ওই তরুণীর স্বজনেরা মঙ্গলবার রাতে থানায় এসে অভিযোগ দিয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীকালে বিস্তারিত বলা যাবে।

ঢাকা মেডিকেলে রেখে যাওয়া মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তাঁর নাম রাশেদা আক্তার (২২)। প্রতিবেশী নয়ন ইসলাম তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহত রাশেদার পরিচয় শনাক্ত করেন তাঁর বড় বোন খালেদা আক্তার ও দুলাভাই মো. মামুন।
এর আগে, সোমবার রাতে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের সামনে ওই তরুণীর মরদেহ রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত যুবক।
নিহত রাশেদার বড় বোন খালেদা আক্তার জানান, তাঁদের বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার পুখুরিয়া গ্রামে। বাবার নাম মৃত আবু বক্কর সিদ্দিক। রাশেদা মাগুরার আলোকদিয়া অমরেশ বসু ডিগ্রি কলেজ থেকে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন। কিছুদিন আগে খালেদা ঢাকায় মিরপুর-১ আনসার ক্যাম্পে এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় এসে থাকতে শুরু করেন এবং মিরপুরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। তাঁর দেখাদেখি ছোট বোন রাশেদাও উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর চলতি মাসের ৭ তারিখে মিরপুরে একই বাসায় এসে ওঠেন। এরপর তিনি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
খালেদা আরও জানান, শনিবার রাশেদা গার্মেন্টসে যাননি। সারা দিন বাসাতেই ছিলেন। রাত ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হন। এরপর আর বাসায় ফেরেননি। পরে তাঁরা জানতে পারেন, শনিবার রাতে নিজ গ্রামের পাশের বাড়ির মতিউর রহমানের ছেলে নয়ন ইসলাম ঢাকায় এসে মিরপুরের ওই বাসার সামনে রাশেদার সঙ্গে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে একটি দোকানের সামনে বসে দুজন তুমুল ঝগড়াও করেন। কিছুক্ষণ পর দুজনই সেখান থেকে চলে যান। এরপর আর কোনো খবর মিলছিল না রাশেদার। ফোনেও পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁকে।
রাশেদার দুলাভাই মামুন বলেন, মঙ্গলবার সকালে গ্রাম থেকে একজন রাশেদার বড় বোন খালেদাকে ফোন করে জানায়, গ্রামের লোকজন বলাবলি করছে নয়ন রাশেদাকে মেরে ফেলেছে। নয়নের বাড়ির সবাই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। রাশেদার লাশ ঢাকা মেডিকেল রয়েছে।
এই খবরের ভিত্তিতে বোন ও দুলাভাই ঢাকা মেডিকেলের মর্গে গিয়ে রাশেদার মরদেহ শনাক্ত করেন।
বোন খালেদা অভিযোগ করে বলেন, ‘অনেক দিন ধরে নয়ন আমার বোনকে ডিস্টার্ব করত। ওর জন্য আমার বোন পড়তেও পারত না। ওই নয়নই আমার বোনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। মরদেহ মেডিকেলে রেখে পালিয়েছে সে। নয়নের কঠিন বিচার চাই আমরা। এই ঘটনার সঙ্গে আর কে কে জড়িত আছে, তাদেরও বিচার চাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আজম জানান, ওই তরুণীর স্বজনেরা মঙ্গলবার রাতে থানায় এসে অভিযোগ দিয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীকালে বিস্তারিত বলা যাবে।

২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক কৃষকের বাড়ির ইটের দেয়াল ভেঙে গোয়ালঘর থেকে তিনটি ষাঁড় চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা। শুধু তাই নয়, ওই সময় বাড়ির উঠানে রাখা একটি মোটরসাইকেলের তার ছিঁড়ে বিকল করে এর ট্যাংকি থেকে তেলও বের করে নিয়ে যায় তারা।
১৬ মিনিট আগে
সিলেটের জকিগঞ্জে অবৈধ ও দ্রুতগতির ট্রলির ধাক্কায় মাওলানা বদরুল ইসলাম নামে মসজিদের এক ইমাম মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার আটগ্রাম স্টেশন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটমচালক মো. সবুজ হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ পলাতক ৭১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ফেনী সদর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল...
১ ঘণ্টা আগে