ফজলুল কবির
আফগানিস্তানে আর একজনও মার্কিন সেনা নেই। দেশটিতে টানা দুই দশকের মার্কিন সমর উপস্থিতির শেষ হলো গত সোমবার। কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে যাওয়ার মাত্র ২ সপ্তাহের ব্যবধানে দেশটি থেকে ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এখনো দেশ ছাড়ার জন্য কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে অপেক্ষায় আছে হাজারো আফগান। রয়েছে মার্কিন বেসামরিক নাগরিকেরাও।
কাবুল থেকে শেষ মার্কিন সেনাকে সরিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে বাইডেন তাঁর প্রতিশ্রুতি রাখলেন। কিন্তু লাখো আফগানকে দুই দশক ধরে যে আমেরিকান ড্রিম দেখানো হলো, তার কী হবে? যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ‘আশ্রয়ের দরজা খোলা’ জানিয়েই তাদের কাজ সেরেছে। অথচ আফগানরা দেখল, তাদের চোখের সামনেই একে একে বিভিন্ন দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বিশেষত আফগান নারীরা ২০০১ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন তালেবান সরকারের চূড়ান্ত পতনের মধ্য দিয়ে যে নতুন সময়ের দিশা পেয়েছিলেন, তা হঠাৎ করেই যেন নাই হয়ে গেল। অনেকের মতেই বদলে যাওয়া তালেবান যদিও বলছে, তারা ছেলেমেয়ে সবার জন্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশাধিকার দেবে, উচ্চশিক্ষা বা কর্মক্ষেত্রে নারীরা প্রবেশের সুযোগ পাবে। কিন্তু নারীরা এতে আস্থা পাচ্ছে না। এরই মধ্যে নানা কসরত করে দেশ ছাড়া কয়েকজন নারীর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। সেসব গল্প শুনলেই বোঝা যায়, তারা নিজের দেশ ছেড়ে পালাতে কতটা মরিয়া।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার হামলার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে দীর্ঘস্থায়ী কথিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধ শুরু করেছিল, তা শেষ হলো অবশেষে। টানা ২ দশকের মার্কিন আগ্রাসন এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো—এটা ঠিক। কিন্তু যে স্বপ্ন ও আশার কথা বলে, যে মুক্তি ও গণতন্ত্রের কথা বলে এই আগ্রাসন চালানো হয়েছিল, তার কী হলো। আফগান সাধারণ জনগণ এখন কি সেই ২০ বছর আগের বাস্তবতাই দেখছে না? সেই একই শঙ্কা, একই রুদ্ধ সংস্কৃতিই তো আবার ফিরে এল।
সিনেমা তো আগেই খারিজ। আফগানিস্তান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিউজিক (এএনআইএম)। আফগানিস্তানের ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে গান শিখত সেখানে। সুনসান এই স্কুলে এখন তালেবান সেনারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। মুক্ত সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তালেবানের কথায় আস্থা পাচ্ছেন না সাংবাদিকেরা। যে যেদিকে পারছেন ছুটছেন। শুধু মেক্সিকোতেই আশ্রয় নিয়েছেন ২১০ আফগান সাংবাদিক।
এরা সবাই যে আফগানিস্তানে তালেবানের তাড়া খেয়ে পালিয়েছেন, তা নয়। বরং তালেবান তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টাই করেছে। কিন্তু তাও তারা থাকেনি, থাকতে চায়নি। এখনো এমন অনেকে আছে, যারা আফগানিস্তান ছাড়তে মরিয়া। কারণ, তালেবান যে পন্থায় দেশ পরিচালনা করতে চায়, তাদের মতবাদী যে অবস্থান, তাতে এই মানুষদের মুক্ত বোধ আহত হয়। তারা দমবন্ধ বোধ করেন। তাই যেকোনো মূল্যে সীমানা পেরিয়ে মুক্ত হাওয়া নিতে চান।
যুক্তরাষ্ট্র দুই দশকের এই যুদ্ধে ২ লাখ ৮৬ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে। এই এত অর্থ এখন নিরর্থক হয়ে গেছে এই মানুষদের জন্য। যে গণতন্ত্র ও মুক্ত সমাজের স্বপ্ন তারা দেখিয়েছিল, তার পুরোটাই হাওয়া। অথচ এই অর্থে কী না করা যেত! পুরোটাই সামরিক খাতে ব্যয় হওয়া এ অর্থ দিয়ে ৫ লাখের বেশি ভালো মানের স্কুল প্রতিষ্ঠা (যুক্তরাষ্ট্রে ভালো মানের একটি বেসরকারি স্কুল ফ্র্যাঞ্চাইজি কিনতে গড়ে ৫০ হাজার ডলার ব্যয় হয়) করা যেত। সে ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের শিক্ষাব্যবস্থা কোন মাত্রায় যেত। অথচ, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে থাকার সময়েও দেশটির শিক্ষার্থীদের প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিতে হয়েছে ভালো মানের শিক্ষার খোঁজে।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারকে যুক্তরাষ্ট্র বিবেচনা করছে জয়-পরাজয় দিয়ে। তালেবান পক্ষেও হিসাব অনেকটা একই রকম। অন্য পক্ষে দৃশ্য নতুন হাজির হওয়া ইসলামিক স্টেট-খোরাসানের (আইএস-কে) দৃষ্টি প্রভাব বিস্তারের দিকে। এই সমীকরণের অন্য সব পক্ষই কোনো না কোনো নিজস্ব হিসাব নিয়েই মত্ত। অথচ যে আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে এত সব, সেখানকার মানুষেরাই যেন ঊহ্য থেকে যাচ্ছে। মার্কিন সেনারা চলে যাওয়ার পর মঙ্গলবার তালেবান মুখপাত্র যাবিউল্লাহ মুজাহিদ সংবাদ সম্মেলনে যে ‘স্বাধীনতার’ কথা বললেন, সেখানে এমনকি এই দুই দশকে হারিয়ে যাওয়া মানুষদের উল্লেখ পর্যন্ত থাকল না। মার্কিন পক্ষ যখন, ২০ বছরের সেনা উপস্থিতি সমাপ্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিল, সেখানেও নেই কোনো লোকক্ষয়ের চিত্র। যেন এমনটাই ছিল।
অথচ এই দুই দশকে শুধু মার্কিন সমর্থিত আফগান বাহিনীরই ৭০ হাজার লোক নিহত হয়েছে বলে এক গবেষণায় জানিয়েছে ব্রাউন ইউনিভার্সিটি। এই দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩ হাজার সেনা নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে অন্তত অর্ধকোটি মানুষ। তালেবানসহ বেসামরিক মানুষের নিহত হওয়ার পরিসংখ্যানটি এ থেকেই বোঝা সম্ভব। প্রতিনিয়ত হামলা-পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আফগানিস্তান। চলে যাওয়ার সময় এই ধ্বংসস্তূপের দিকে ফিরেও তাকাল না যুক্তরাষ্ট্র। অথচ এই দুই দশকের সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধে ইসলামিক স্টেটের মতো একটি ভয়াবহ কট্টর গোষ্ঠীর জন্ম হলো, যাদের এমনকি তালেবানও হুমকি মনে করে। এমন একটি পরিণতির কারণ সম্পর্কে একটি টুঁ শব্দ পর্যন্ত করল না তারা। ছেড়ে আসার সময় মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি শুধু বললেন, তালেবান ক্ষমতায় ফেরায় তিনি উদ্বেগ বোধ করছেন। সঙ্গে আইএসের মতো একটি গোষ্ঠী সেখানে ঘাঁটি গাড়ায় তাঁর এ উদ্বেগ নাকি আরও বেশি।
তাহলে এই দুই দশকের কী হলো? দুই দশক আগে-পরে যদি উদ্বেগই একমাত্র বাস্তবতা হয়, তবে এত প্রাণ এত অর্থক্ষয়ের যুক্তি কী? আফগান নারী-শিশুসহ তরুণ প্রজন্মকে যে আশ্বাস, যে সংস্কৃতির স্বাদ যুক্তরাষ্ট্র এই দুই দশকে দিয়েছিল, হঠাৎ তা হারিয়ে ফেললে কী হবে, এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কেমন হবে বা একটি গোটা অঞ্চলকে অস্থির করার মতো বিস্ফোরক এর মধ্যে আছে কিনা, তা কি যুক্তরাষ্ট্র ভেবেছে। আজ মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সামগ্রিক বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখবেন। কিন্তু তিনি এসব ব্যাখ্যার পথে হাঁটবেন বলে মনে হয় না, যেমনটি হাঁটেনি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন।
আফগানিস্তানে আর একজনও মার্কিন সেনা নেই। দেশটিতে টানা দুই দশকের মার্কিন সমর উপস্থিতির শেষ হলো গত সোমবার। কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে যাওয়ার মাত্র ২ সপ্তাহের ব্যবধানে দেশটি থেকে ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এখনো দেশ ছাড়ার জন্য কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে অপেক্ষায় আছে হাজারো আফগান। রয়েছে মার্কিন বেসামরিক নাগরিকেরাও।
কাবুল থেকে শেষ মার্কিন সেনাকে সরিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে বাইডেন তাঁর প্রতিশ্রুতি রাখলেন। কিন্তু লাখো আফগানকে দুই দশক ধরে যে আমেরিকান ড্রিম দেখানো হলো, তার কী হবে? যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ‘আশ্রয়ের দরজা খোলা’ জানিয়েই তাদের কাজ সেরেছে। অথচ আফগানরা দেখল, তাদের চোখের সামনেই একে একে বিভিন্ন দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বিশেষত আফগান নারীরা ২০০১ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন তালেবান সরকারের চূড়ান্ত পতনের মধ্য দিয়ে যে নতুন সময়ের দিশা পেয়েছিলেন, তা হঠাৎ করেই যেন নাই হয়ে গেল। অনেকের মতেই বদলে যাওয়া তালেবান যদিও বলছে, তারা ছেলেমেয়ে সবার জন্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশাধিকার দেবে, উচ্চশিক্ষা বা কর্মক্ষেত্রে নারীরা প্রবেশের সুযোগ পাবে। কিন্তু নারীরা এতে আস্থা পাচ্ছে না। এরই মধ্যে নানা কসরত করে দেশ ছাড়া কয়েকজন নারীর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। সেসব গল্প শুনলেই বোঝা যায়, তারা নিজের দেশ ছেড়ে পালাতে কতটা মরিয়া।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার হামলার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে দীর্ঘস্থায়ী কথিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধ শুরু করেছিল, তা শেষ হলো অবশেষে। টানা ২ দশকের মার্কিন আগ্রাসন এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো—এটা ঠিক। কিন্তু যে স্বপ্ন ও আশার কথা বলে, যে মুক্তি ও গণতন্ত্রের কথা বলে এই আগ্রাসন চালানো হয়েছিল, তার কী হলো। আফগান সাধারণ জনগণ এখন কি সেই ২০ বছর আগের বাস্তবতাই দেখছে না? সেই একই শঙ্কা, একই রুদ্ধ সংস্কৃতিই তো আবার ফিরে এল।
সিনেমা তো আগেই খারিজ। আফগানিস্তান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিউজিক (এএনআইএম)। আফগানিস্তানের ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে গান শিখত সেখানে। সুনসান এই স্কুলে এখন তালেবান সেনারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। মুক্ত সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তালেবানের কথায় আস্থা পাচ্ছেন না সাংবাদিকেরা। যে যেদিকে পারছেন ছুটছেন। শুধু মেক্সিকোতেই আশ্রয় নিয়েছেন ২১০ আফগান সাংবাদিক।
এরা সবাই যে আফগানিস্তানে তালেবানের তাড়া খেয়ে পালিয়েছেন, তা নয়। বরং তালেবান তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টাই করেছে। কিন্তু তাও তারা থাকেনি, থাকতে চায়নি। এখনো এমন অনেকে আছে, যারা আফগানিস্তান ছাড়তে মরিয়া। কারণ, তালেবান যে পন্থায় দেশ পরিচালনা করতে চায়, তাদের মতবাদী যে অবস্থান, তাতে এই মানুষদের মুক্ত বোধ আহত হয়। তারা দমবন্ধ বোধ করেন। তাই যেকোনো মূল্যে সীমানা পেরিয়ে মুক্ত হাওয়া নিতে চান।
যুক্তরাষ্ট্র দুই দশকের এই যুদ্ধে ২ লাখ ৮৬ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে। এই এত অর্থ এখন নিরর্থক হয়ে গেছে এই মানুষদের জন্য। যে গণতন্ত্র ও মুক্ত সমাজের স্বপ্ন তারা দেখিয়েছিল, তার পুরোটাই হাওয়া। অথচ এই অর্থে কী না করা যেত! পুরোটাই সামরিক খাতে ব্যয় হওয়া এ অর্থ দিয়ে ৫ লাখের বেশি ভালো মানের স্কুল প্রতিষ্ঠা (যুক্তরাষ্ট্রে ভালো মানের একটি বেসরকারি স্কুল ফ্র্যাঞ্চাইজি কিনতে গড়ে ৫০ হাজার ডলার ব্যয় হয়) করা যেত। সে ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের শিক্ষাব্যবস্থা কোন মাত্রায় যেত। অথচ, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে থাকার সময়েও দেশটির শিক্ষার্থীদের প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিতে হয়েছে ভালো মানের শিক্ষার খোঁজে।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারকে যুক্তরাষ্ট্র বিবেচনা করছে জয়-পরাজয় দিয়ে। তালেবান পক্ষেও হিসাব অনেকটা একই রকম। অন্য পক্ষে দৃশ্য নতুন হাজির হওয়া ইসলামিক স্টেট-খোরাসানের (আইএস-কে) দৃষ্টি প্রভাব বিস্তারের দিকে। এই সমীকরণের অন্য সব পক্ষই কোনো না কোনো নিজস্ব হিসাব নিয়েই মত্ত। অথচ যে আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে এত সব, সেখানকার মানুষেরাই যেন ঊহ্য থেকে যাচ্ছে। মার্কিন সেনারা চলে যাওয়ার পর মঙ্গলবার তালেবান মুখপাত্র যাবিউল্লাহ মুজাহিদ সংবাদ সম্মেলনে যে ‘স্বাধীনতার’ কথা বললেন, সেখানে এমনকি এই দুই দশকে হারিয়ে যাওয়া মানুষদের উল্লেখ পর্যন্ত থাকল না। মার্কিন পক্ষ যখন, ২০ বছরের সেনা উপস্থিতি সমাপ্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিল, সেখানেও নেই কোনো লোকক্ষয়ের চিত্র। যেন এমনটাই ছিল।
অথচ এই দুই দশকে শুধু মার্কিন সমর্থিত আফগান বাহিনীরই ৭০ হাজার লোক নিহত হয়েছে বলে এক গবেষণায় জানিয়েছে ব্রাউন ইউনিভার্সিটি। এই দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩ হাজার সেনা নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে অন্তত অর্ধকোটি মানুষ। তালেবানসহ বেসামরিক মানুষের নিহত হওয়ার পরিসংখ্যানটি এ থেকেই বোঝা সম্ভব। প্রতিনিয়ত হামলা-পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আফগানিস্তান। চলে যাওয়ার সময় এই ধ্বংসস্তূপের দিকে ফিরেও তাকাল না যুক্তরাষ্ট্র। অথচ এই দুই দশকের সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধে ইসলামিক স্টেটের মতো একটি ভয়াবহ কট্টর গোষ্ঠীর জন্ম হলো, যাদের এমনকি তালেবানও হুমকি মনে করে। এমন একটি পরিণতির কারণ সম্পর্কে একটি টুঁ শব্দ পর্যন্ত করল না তারা। ছেড়ে আসার সময় মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি শুধু বললেন, তালেবান ক্ষমতায় ফেরায় তিনি উদ্বেগ বোধ করছেন। সঙ্গে আইএসের মতো একটি গোষ্ঠী সেখানে ঘাঁটি গাড়ায় তাঁর এ উদ্বেগ নাকি আরও বেশি।
তাহলে এই দুই দশকের কী হলো? দুই দশক আগে-পরে যদি উদ্বেগই একমাত্র বাস্তবতা হয়, তবে এত প্রাণ এত অর্থক্ষয়ের যুক্তি কী? আফগান নারী-শিশুসহ তরুণ প্রজন্মকে যে আশ্বাস, যে সংস্কৃতির স্বাদ যুক্তরাষ্ট্র এই দুই দশকে দিয়েছিল, হঠাৎ তা হারিয়ে ফেললে কী হবে, এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কেমন হবে বা একটি গোটা অঞ্চলকে অস্থির করার মতো বিস্ফোরক এর মধ্যে আছে কিনা, তা কি যুক্তরাষ্ট্র ভেবেছে। আজ মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সামগ্রিক বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখবেন। কিন্তু তিনি এসব ব্যাখ্যার পথে হাঁটবেন বলে মনে হয় না, যেমনটি হাঁটেনি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন।
ট্রাম্প ফিরে আসায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে পারে, সামান্য কিছু পরিবর্তন নিয়ে। ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পেছনের সারিতে থাকলেও বাংলাদেশ,
২ ঘণ্টা আগেড. ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন পুরো জাতি তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবে তাঁকে পরিষ্কারভাবে এই পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে যে, তিনি কীভাবে দেশ শাসন করবেন এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
১ দিন আগেসম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
২ দিন আগেএকটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
২ দিন আগে