আল–জাজিরার বিশ্লেষণ

সিআইএ কর্মকর্তা আসিফ রহমানের বিরুদ্ধে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি গত অক্টোবরে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলার প্রস্তুতি সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করেছেন। এ ঘটনায় কয়েক দশক ধরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান আঞ্চলিক সংঘাতের ছায়াযুদ্ধ প্রকাশ্যে এসেছে। এটি মূলত গোয়েন্দাগিরি ও পাল্টা গোয়েন্দাগিরির খেলা!
ইরানভিত্তিক একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে রহমানের তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আনা হয়েছে। চ্যানেলটি ইরানের সরকারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তবে এ ঘটনা মার্কিন প্রশাসনকে যথেষ্ট বিব্রত করেছে। এর আগে পেন্টাগনের নথি ফাঁসের দায়ে দপ্তরের কর্মকর্তা জ্যাক টিক্সেরা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।
ইরানি চ্যানেলে ফাঁস হওয়া তথ্য ইরান, ইসরায়েলি ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অস্বচ্ছ সম্পর্ককে উন্মোচন করেছে। এই সম্পর্ক বর্তমান সংঘাতের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিও প্রভাবিত হচ্ছে।
অক্টোবরের শেষ দিকে, ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিনবেত পূর্ব জেরুজালেমে সাতজন ইসরায়েলি নাগরিককে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। তাঁরা ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর একদিন আগে, হাইফায় আরও সাত ইসরায়েলি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাবস্থায় ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে। এদের প্রায় সবাই ইহুদি!
ইসরায়েলি পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশটিতে ইরান সমর্থিত আরও কয়েকটি নেটওয়ার্ক সক্রিয় রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
তবে এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও, গত সেপ্টেম্বরে ৭৩ বছর বয়সী ইসরায়েলি ব্যবসায়ী মোতি মামানকে ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। শিনবেত এবং ইসরায়েলি পুলিশের দাবি, তিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর বিনিময়ে তিনি ইরানের কাছ থেকে ১০ লাখ ডলার চেয়েছিলেন।
অন্য দিকে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলাকালেই তেহরান বেশ কয়েকজন ইরানিকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে সহযোগিতা করেছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে ইরান তিন পুরুষ ও এক নারীকে ফাঁসি দেয়। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা মোসাদের হয়ে কাজ করেছেন এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে শুরু করে ইরানি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের অপহরণ পর্যন্ত বিভিন্ন কাজে জড়িত ছিলেন।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে, লেবাননে ইরানের মিত্র হিজবুল্লাহর যোগাযোগ ব্যবস্থায় (পেজার–ওয়াকিটকি) ইসরায়েলের হামলার পর ইরান ১২ জন নাগরিককে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতা এবং ইরানে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়।
ইলেকট্রনিক নজরদারি, সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং ও অন্যান্য নজরদারি আজকাল গুপ্তচরবৃত্তির গুরুত্বপূর্ণ টুল বা হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তবে তথ্য সংগ্রহ এবং সামরিক লক্ষ্য নির্ধারণে গুপ্তচর হিসেবে মানুষ এখনো কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।
মার্কিন থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির সিনিয়র ফেলো সিনা টুসি বলেন, ‘গুপ্তচর হিসেবে মানুষকে ব্যবহার ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান ছায়াযুদ্ধের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উভয় দেশই গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যাপকভাবে কাজ করছে। দেশ দুটির গোয়েন্দাগিরি ও পাল্টা গোয়েন্দাগিরি কার্যক্রম তাদের বৃহত্তর কৌশলগত হিসাব-নিকাশে ভূমিকা রাখে।’
হাইফায় আটক হওয়া ইসরায়েলিরা ইরানের হয়ে গত দুই বছরে ৬০০–৭০০টি গোয়েন্দা মিশন পরিচালনা করেছে বলে অভিযোগ করেছে তেল আবিব। এসব পরিকল্পনার মধ্যে একটি ছিল— ইসরায়েলের এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে হত্যা করা। এটি সম্ভবত ইসরায়েলের হাইপ্রোফাইল হত্যাকাণ্ডের মতো একটি সম্ভাব্য গুপ্তহত্যা পরিকল্পনা। যেমনটা ছিল, গত জুলাইয়ে ইরানে হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ড।
এ বিষয়ে সিনা টুসি বলেন, ‘একাধিক হাইপ্রোফাইল হত্যাকাণ্ড এবং অন্তর্ঘাতমূলক মিশনের মাধ্যমে ইসরায়েল ইরানে তাদের সক্ষমতা দেখিয়েছে। যা মূলত দেশটিতে মোসাদের গভীর অনুপ্রবেশকেই নির্দেশ করে। অন্যদিকে, ইরান ইসরায়েলে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে এবং এই বিষয়টি ইরানের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কয়েকজন ইসরায়েলি নাগরিককে গ্রেপ্তার করার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে।’
একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক হামজা আত্তার এমনটাই জানিয়েছেন। তবে বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলোকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যার ফলে ইসরায়েলি সমাজে মৌলিক পরিবর্তন এসেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সেই বিভাজনগুলোর ফাটল দিয়ে এখন প্রবেশ করছে ইরানি গোয়েন্দা সংস্থা। হাইফায় আটক হওয়া ১৪ জন এজেন্টের প্রথম দলটি ১০ বছর আগে আজারবাইজান থেকে ইসরায়েলে গিয়েছিল। দ্বিতীয় দলটি আরব–ইসরায়েলি হিসেবে পরিচিত। এই দুটি দলই ইসরায়েলি সমাজের মূলধারার বাইরের বলে মনে করা হলেও—এই পরিবর্তনকে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বলে মনে করেন আত্তার।
তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একটা সময়ে পুরো ইসরায়েলকে একটি একক পরিচয়ের আওতায় ধরা হতো...তাদের এমনভাবে পড়ানো হতো যে, তারা তাদের আরব প্রতিবেশীদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত আক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে আছে। যদি ইরান এই দুই দলকে নিজের পক্ষে কাজ করতে রাজি করিয়ে থাকতে পারে, তবে তারা আরও অনেককেই তাদের দলে ভেড়াতে পেরেছে বলেই মনে হয়।’
ইসরায়েলি সমাজে ইরানের প্রবেশের প্রচেষ্টা সম্প্রতি সামনে এলেও ইসরায়েল যে দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে আসছে, সে বিষয়ে আগেই অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ইসরায়েলের প্রচেষ্টাকে সহায়তা করছে ইরানের বিশাল আয়তন, যেখানে জনসংখ্যা ইসরায়েলের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৯ গুণ। ইরানের সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভাজন ইসরায়েলকে সুবিধা দিয়েছে।
লন্ডনের কিংস কলেজের যুদ্ধ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক আহরন ব্রেগম্যান বলেন, ‘১৯৭৯ সালের ইরান বিপ্লবের পর থেকে ইসরায়েলের ঘোষিত লক্ষ্য হচ্ছে, দেশটির শাসকগোষ্ঠীকে ভেতর থেকে উৎখাত করা। এটাই তাদের (ইসরায়েলের) কাজের পদ্ধতির মূলে। ইরানের ভেতরে গুপ্তচরবৃত্তি পরিচালনার পরিকল্পনা করা, চর নিয়োগ দেওয়ার ও গোয়েন্দাগিরি শক্তিশালী করার জন্য ইসরায়েল হাতে অনেক সময় পেয়েছে।’
অন্যদিকে, ইরান সম্ভবত তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অনেকাংশেই মিত্রদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে বিনিয়োগ করেছে। যেমন, লেবাননের হিজবুল্লাহ, যারা তাদের তথ্য সরবরাহ করে। ইরানি গোয়েন্দা কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য ছিল মূলত ইসরায়েলে কাজ করা ফিলিস্তিনিদের নিয়োগ দেওয়া। যারা সেখানে প্রায়ই বৈষম্যের শিকার হয়। এ ছাড়া সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে ইসরায়েলি সমাজে প্রবেশের চেষ্টাও ইরান করেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইসরায়েলের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইরানি গোয়েন্দারা বিচারবিভাগীয় সংস্কারের বিরুদ্ধে জনবিক্ষোভ এবং গাজায় আটক বন্দীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা কাজে লাগিয়ে বিরোধ সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। তারা ইসরায়েলিদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন স্থাপনার ছবি তুলতে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছিল।
তবে ইরান ইসরায়েলে ততটা সফল নয়, যতটা সফল ইরানে ইসরায়েল। এই বিষয়ে সিনা টুসি বলেন, ‘তবে, ইরানে ইসরায়েলের গোয়েন্দা কার্যক্রম অনেক বেশি উন্নত এবং বিস্তৃত বলে মনে হয়। ইরানি বিজ্ঞানীদের হত্যা, ইসমাইল হানিয়ার মতো উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের টার্গেট করা, পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে অন্তর্ঘাত চালানো এবং ইরানের গভীরে ইসরায়েলের হামলা চালানোর সক্ষমতা ইঙ্গিত দেয় যে, ইসরায়েল ইরানের সবচেয়ে সংবেদনশীল স্থানগুলোতে কতটা কার্যকরভাবে অনুপ্রবেশ করেছে।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরান বিরোধী গুপ্তচর সংস্থাগুলোর কাছে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরে এবং তা প্রকাশিত হতে দেয় এবং আবার পরে সেই তথ্যকে মিথ্যা প্রমাণিত করে তারাই। বিরোধী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আস্থার সংকটে ফেলে দিতে এটা একটি শক্তিশালী অস্ত্র হতে পারে।
নিউইয়র্কভিত্তিক সেঞ্চুরি ফাউন্ডেশনের ফেলো ভিনা আলী খান বলেন, ‘ইরানের ইতিহাসে পশ্চিমা গণমাধ্যমে মিথ্যা খবর প্রচার করার নজির রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ইসরায়েল ও উপসাগরীয় দেশগুলোতে কাজ করা সেসব দেশের ভাষার কিন্তু ইরান থেকে পরিচালিত গণমাধ্যম রয়েছে। খবর ছড়ানোর পর ইরান সেগুলোকে নিজেরাই মিথ্যা প্রমাণ করে এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অধিকতর বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে।’
উদাহরণ হিসেবে ভিনা আলী বলেন, ‘ইসরায়েলি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, ইরানের বিপ্লবী গার্ডবাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল ক্বানি মারা গেছেন বা আটক হয়েছেন। কিন্তু পরে ইরান তাঁকে জীবিত প্রমাণ করে। এভাবে, ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পুনরায় এমন সব বার্তা প্রচার করে—যার মাধ্যমে দেশটি প্রমাণ করে দেয় যে, পশ্চিমা গণমাধ্যম পুরোপুরি ভুল ছিল। এ কারণে পশ্চিমা গণমাধ্যমের ওপর বিশ্বাস করা উচিত নয়।’
পাবলিক ন্যারেটিভ বা জনগণের কাছে প্রচলিত বয়ানকে নিয়ন্ত্রণ করা গুপ্তচরবৃত্তির জগতে প্রতিপক্ষকে দমিয়ে রাখার অন্যতম কৌশল। এ বিষয়ে ব্রেগম্যান বলেন, এটি প্রতিপক্ষকে দুর্বল করার জন্যও জরুরি। শিনবেত ও পুলিশ সচেতনভাবে ইরানি গুপ্তচর গ্রেপ্তারের খবর প্রচার করছে। এটি মূলত অন্যদের ভয় দেখানোর জন্য। তারা (ইসরায়েল) তাদের প্রচেষ্টাগুলো প্রকাশ করছে। তারা মানুষকে জানিয়ে দিচ্ছে যে, তারা তৎপর আছে এবং যারা ইরানের হয়ে কাজ করবে তাদের পাকড়াও করা হবে।’
একইভাবে, সিনা টুসি উল্লেখ করেছেন, সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রাধান্য দেওয়ার পেছনে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক ব্যর্থতা ঢাকা পড়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ছিল গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার বিষয়টি আগেভাগে জানতে না পারা।
টুসি বলেন, ‘এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে, ইসরায়েলি এস্টাবলিশমেন্ট এবং এর সমর্থক গণমাধ্যম ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার অদৃশ্য শক্তির যে ছবি তুলে ধরে তা বাস্তবতার সঙ্গে সব সময় মেলে না। ইসরায়েলের কৌশলগত সাফল্য থাকার পরও গোপনীয় গোয়েন্দা কার্যক্রম বা অন্য যে কোনো ক্ষেত্রে ইসরায়েলের অপ্রতিরোধ্য হওয়ার ধারণা দেশের ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীল কৌশলগত পরিস্থিতির কারণে বড় ধরনের ধাক্কা খাচ্ছে।’
টুসি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের গোয়েন্দা সক্ষমতা যথেষ্ট শক্তিশালী, তবে এটি এখন একাধিক শত্রু ও বড় চ্যালেঞ্জের মুখে।’
অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

সিআইএ কর্মকর্তা আসিফ রহমানের বিরুদ্ধে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি গত অক্টোবরে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলার প্রস্তুতি সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করেছেন। এ ঘটনায় কয়েক দশক ধরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান আঞ্চলিক সংঘাতের ছায়াযুদ্ধ প্রকাশ্যে এসেছে। এটি মূলত গোয়েন্দাগিরি ও পাল্টা গোয়েন্দাগিরির খেলা!
ইরানভিত্তিক একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে রহমানের তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আনা হয়েছে। চ্যানেলটি ইরানের সরকারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তবে এ ঘটনা মার্কিন প্রশাসনকে যথেষ্ট বিব্রত করেছে। এর আগে পেন্টাগনের নথি ফাঁসের দায়ে দপ্তরের কর্মকর্তা জ্যাক টিক্সেরা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।
ইরানি চ্যানেলে ফাঁস হওয়া তথ্য ইরান, ইসরায়েলি ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অস্বচ্ছ সম্পর্ককে উন্মোচন করেছে। এই সম্পর্ক বর্তমান সংঘাতের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিও প্রভাবিত হচ্ছে।
অক্টোবরের শেষ দিকে, ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিনবেত পূর্ব জেরুজালেমে সাতজন ইসরায়েলি নাগরিককে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। তাঁরা ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর একদিন আগে, হাইফায় আরও সাত ইসরায়েলি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাবস্থায় ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে। এদের প্রায় সবাই ইহুদি!
ইসরায়েলি পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশটিতে ইরান সমর্থিত আরও কয়েকটি নেটওয়ার্ক সক্রিয় রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
তবে এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও, গত সেপ্টেম্বরে ৭৩ বছর বয়সী ইসরায়েলি ব্যবসায়ী মোতি মামানকে ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। শিনবেত এবং ইসরায়েলি পুলিশের দাবি, তিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর বিনিময়ে তিনি ইরানের কাছ থেকে ১০ লাখ ডলার চেয়েছিলেন।
অন্য দিকে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলাকালেই তেহরান বেশ কয়েকজন ইরানিকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে সহযোগিতা করেছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে ইরান তিন পুরুষ ও এক নারীকে ফাঁসি দেয়। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা মোসাদের হয়ে কাজ করেছেন এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে শুরু করে ইরানি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের অপহরণ পর্যন্ত বিভিন্ন কাজে জড়িত ছিলেন।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে, লেবাননে ইরানের মিত্র হিজবুল্লাহর যোগাযোগ ব্যবস্থায় (পেজার–ওয়াকিটকি) ইসরায়েলের হামলার পর ইরান ১২ জন নাগরিককে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতা এবং ইরানে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়।
ইলেকট্রনিক নজরদারি, সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং ও অন্যান্য নজরদারি আজকাল গুপ্তচরবৃত্তির গুরুত্বপূর্ণ টুল বা হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তবে তথ্য সংগ্রহ এবং সামরিক লক্ষ্য নির্ধারণে গুপ্তচর হিসেবে মানুষ এখনো কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।
মার্কিন থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির সিনিয়র ফেলো সিনা টুসি বলেন, ‘গুপ্তচর হিসেবে মানুষকে ব্যবহার ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান ছায়াযুদ্ধের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উভয় দেশই গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যাপকভাবে কাজ করছে। দেশ দুটির গোয়েন্দাগিরি ও পাল্টা গোয়েন্দাগিরি কার্যক্রম তাদের বৃহত্তর কৌশলগত হিসাব-নিকাশে ভূমিকা রাখে।’
হাইফায় আটক হওয়া ইসরায়েলিরা ইরানের হয়ে গত দুই বছরে ৬০০–৭০০টি গোয়েন্দা মিশন পরিচালনা করেছে বলে অভিযোগ করেছে তেল আবিব। এসব পরিকল্পনার মধ্যে একটি ছিল— ইসরায়েলের এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে হত্যা করা। এটি সম্ভবত ইসরায়েলের হাইপ্রোফাইল হত্যাকাণ্ডের মতো একটি সম্ভাব্য গুপ্তহত্যা পরিকল্পনা। যেমনটা ছিল, গত জুলাইয়ে ইরানে হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ড।
এ বিষয়ে সিনা টুসি বলেন, ‘একাধিক হাইপ্রোফাইল হত্যাকাণ্ড এবং অন্তর্ঘাতমূলক মিশনের মাধ্যমে ইসরায়েল ইরানে তাদের সক্ষমতা দেখিয়েছে। যা মূলত দেশটিতে মোসাদের গভীর অনুপ্রবেশকেই নির্দেশ করে। অন্যদিকে, ইরান ইসরায়েলে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে এবং এই বিষয়টি ইরানের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কয়েকজন ইসরায়েলি নাগরিককে গ্রেপ্তার করার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে।’
একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক হামজা আত্তার এমনটাই জানিয়েছেন। তবে বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলোকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যার ফলে ইসরায়েলি সমাজে মৌলিক পরিবর্তন এসেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সেই বিভাজনগুলোর ফাটল দিয়ে এখন প্রবেশ করছে ইরানি গোয়েন্দা সংস্থা। হাইফায় আটক হওয়া ১৪ জন এজেন্টের প্রথম দলটি ১০ বছর আগে আজারবাইজান থেকে ইসরায়েলে গিয়েছিল। দ্বিতীয় দলটি আরব–ইসরায়েলি হিসেবে পরিচিত। এই দুটি দলই ইসরায়েলি সমাজের মূলধারার বাইরের বলে মনে করা হলেও—এই পরিবর্তনকে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বলে মনে করেন আত্তার।
তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একটা সময়ে পুরো ইসরায়েলকে একটি একক পরিচয়ের আওতায় ধরা হতো...তাদের এমনভাবে পড়ানো হতো যে, তারা তাদের আরব প্রতিবেশীদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত আক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে আছে। যদি ইরান এই দুই দলকে নিজের পক্ষে কাজ করতে রাজি করিয়ে থাকতে পারে, তবে তারা আরও অনেককেই তাদের দলে ভেড়াতে পেরেছে বলেই মনে হয়।’
ইসরায়েলি সমাজে ইরানের প্রবেশের প্রচেষ্টা সম্প্রতি সামনে এলেও ইসরায়েল যে দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে আসছে, সে বিষয়ে আগেই অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ইসরায়েলের প্রচেষ্টাকে সহায়তা করছে ইরানের বিশাল আয়তন, যেখানে জনসংখ্যা ইসরায়েলের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৯ গুণ। ইরানের সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভাজন ইসরায়েলকে সুবিধা দিয়েছে।
লন্ডনের কিংস কলেজের যুদ্ধ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক আহরন ব্রেগম্যান বলেন, ‘১৯৭৯ সালের ইরান বিপ্লবের পর থেকে ইসরায়েলের ঘোষিত লক্ষ্য হচ্ছে, দেশটির শাসকগোষ্ঠীকে ভেতর থেকে উৎখাত করা। এটাই তাদের (ইসরায়েলের) কাজের পদ্ধতির মূলে। ইরানের ভেতরে গুপ্তচরবৃত্তি পরিচালনার পরিকল্পনা করা, চর নিয়োগ দেওয়ার ও গোয়েন্দাগিরি শক্তিশালী করার জন্য ইসরায়েল হাতে অনেক সময় পেয়েছে।’
অন্যদিকে, ইরান সম্ভবত তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অনেকাংশেই মিত্রদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে বিনিয়োগ করেছে। যেমন, লেবাননের হিজবুল্লাহ, যারা তাদের তথ্য সরবরাহ করে। ইরানি গোয়েন্দা কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য ছিল মূলত ইসরায়েলে কাজ করা ফিলিস্তিনিদের নিয়োগ দেওয়া। যারা সেখানে প্রায়ই বৈষম্যের শিকার হয়। এ ছাড়া সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে ইসরায়েলি সমাজে প্রবেশের চেষ্টাও ইরান করেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইসরায়েলের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইরানি গোয়েন্দারা বিচারবিভাগীয় সংস্কারের বিরুদ্ধে জনবিক্ষোভ এবং গাজায় আটক বন্দীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা কাজে লাগিয়ে বিরোধ সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। তারা ইসরায়েলিদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন স্থাপনার ছবি তুলতে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছিল।
তবে ইরান ইসরায়েলে ততটা সফল নয়, যতটা সফল ইরানে ইসরায়েল। এই বিষয়ে সিনা টুসি বলেন, ‘তবে, ইরানে ইসরায়েলের গোয়েন্দা কার্যক্রম অনেক বেশি উন্নত এবং বিস্তৃত বলে মনে হয়। ইরানি বিজ্ঞানীদের হত্যা, ইসমাইল হানিয়ার মতো উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের টার্গেট করা, পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে অন্তর্ঘাত চালানো এবং ইরানের গভীরে ইসরায়েলের হামলা চালানোর সক্ষমতা ইঙ্গিত দেয় যে, ইসরায়েল ইরানের সবচেয়ে সংবেদনশীল স্থানগুলোতে কতটা কার্যকরভাবে অনুপ্রবেশ করেছে।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরান বিরোধী গুপ্তচর সংস্থাগুলোর কাছে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরে এবং তা প্রকাশিত হতে দেয় এবং আবার পরে সেই তথ্যকে মিথ্যা প্রমাণিত করে তারাই। বিরোধী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আস্থার সংকটে ফেলে দিতে এটা একটি শক্তিশালী অস্ত্র হতে পারে।
নিউইয়র্কভিত্তিক সেঞ্চুরি ফাউন্ডেশনের ফেলো ভিনা আলী খান বলেন, ‘ইরানের ইতিহাসে পশ্চিমা গণমাধ্যমে মিথ্যা খবর প্রচার করার নজির রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ইসরায়েল ও উপসাগরীয় দেশগুলোতে কাজ করা সেসব দেশের ভাষার কিন্তু ইরান থেকে পরিচালিত গণমাধ্যম রয়েছে। খবর ছড়ানোর পর ইরান সেগুলোকে নিজেরাই মিথ্যা প্রমাণ করে এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অধিকতর বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে।’
উদাহরণ হিসেবে ভিনা আলী বলেন, ‘ইসরায়েলি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, ইরানের বিপ্লবী গার্ডবাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল ক্বানি মারা গেছেন বা আটক হয়েছেন। কিন্তু পরে ইরান তাঁকে জীবিত প্রমাণ করে। এভাবে, ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পুনরায় এমন সব বার্তা প্রচার করে—যার মাধ্যমে দেশটি প্রমাণ করে দেয় যে, পশ্চিমা গণমাধ্যম পুরোপুরি ভুল ছিল। এ কারণে পশ্চিমা গণমাধ্যমের ওপর বিশ্বাস করা উচিত নয়।’
পাবলিক ন্যারেটিভ বা জনগণের কাছে প্রচলিত বয়ানকে নিয়ন্ত্রণ করা গুপ্তচরবৃত্তির জগতে প্রতিপক্ষকে দমিয়ে রাখার অন্যতম কৌশল। এ বিষয়ে ব্রেগম্যান বলেন, এটি প্রতিপক্ষকে দুর্বল করার জন্যও জরুরি। শিনবেত ও পুলিশ সচেতনভাবে ইরানি গুপ্তচর গ্রেপ্তারের খবর প্রচার করছে। এটি মূলত অন্যদের ভয় দেখানোর জন্য। তারা (ইসরায়েল) তাদের প্রচেষ্টাগুলো প্রকাশ করছে। তারা মানুষকে জানিয়ে দিচ্ছে যে, তারা তৎপর আছে এবং যারা ইরানের হয়ে কাজ করবে তাদের পাকড়াও করা হবে।’
একইভাবে, সিনা টুসি উল্লেখ করেছেন, সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রাধান্য দেওয়ার পেছনে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক ব্যর্থতা ঢাকা পড়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ছিল গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার বিষয়টি আগেভাগে জানতে না পারা।
টুসি বলেন, ‘এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে, ইসরায়েলি এস্টাবলিশমেন্ট এবং এর সমর্থক গণমাধ্যম ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার অদৃশ্য শক্তির যে ছবি তুলে ধরে তা বাস্তবতার সঙ্গে সব সময় মেলে না। ইসরায়েলের কৌশলগত সাফল্য থাকার পরও গোপনীয় গোয়েন্দা কার্যক্রম বা অন্য যে কোনো ক্ষেত্রে ইসরায়েলের অপ্রতিরোধ্য হওয়ার ধারণা দেশের ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীল কৌশলগত পরিস্থিতির কারণে বড় ধরনের ধাক্কা খাচ্ছে।’
টুসি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের গোয়েন্দা সক্ষমতা যথেষ্ট শক্তিশালী, তবে এটি এখন একাধিক শত্রু ও বড় চ্যালেঞ্জের মুখে।’
অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
২২ নভেম্বর ২০২৪
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
২২ নভেম্বর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
২২ নভেম্বর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
২২ নভেম্বর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে