অনলাইন ডেস্ক
আজ থেকে ২১ বছর আগে ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হাতে তালেবানদের পরাজয় ঘটেছিল। তার আগে পর্যন্ত সহিংসতা, ধর্মান্ধতা, দুর্বৃত্তপনা শব্দগুলো ছিল তালেবানের সমার্থক। গত বছরের আগস্টে একটি বিপর্যয়কর অবস্থার মধ্যে মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ছেড়ে গেলে তালেবানরা আবার ক্ষমতায় ফিরে আসে। ক্ষমতার গদিতে বসেই তারা যে বক্তব্য দিয়েছিল, তা অনেকটা এ রকম—আগের তালেবান আর এই তালেবান এক নয়, একটি উন্নত তালেবান এবার দেশ পরিচালনা করতে এসেছে। আফগানিস্তানে এখন থেকে শান্তি ও সম্প্রীতি বিরাজ করবে। তালেবান এখন থেকে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করবে। অর্থনীতিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করবে তারা। এমনকি বিদ্বেষ ভুলে অন্যান্য শত্রুদেশের সঙ্গেও একযোগে কাজ করবে তালেবান সরকার।
কিন্তু তাদের এসব প্রতিশ্রুতি দিন শেষে ‘কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’ প্রবাদে পরিণত হয়েছে। তারা আবার আগের ফর্মে ফিরে এসেছে। গত মার্চে স্কুলপড়ুয়া কিশোরী মেয়েরা স্কুলে গিয়ে দেখে, তাদের জন্য দুয়ার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রবেশাধিকার নেই সেখানে। সশস্ত্র লোকেরা পাহারা দিচ্ছে স্কুলের সামনে। এরপর গত ৮ মে আফগান নারীদের জীবনে নেমে আসে আরেক কালো অধ্যায়। দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নারীরা এখন থেকে আর বোরকা ছাড়া বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না। বাইরে যেতে হলে পা থেকে মাথা অবধি কাপড় দিয়ে ঢেকে বের হতে হবে।
তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানে হাজারা সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর সহিংসতা বেড়েছে। হাজারা হচ্ছে শিয়া মুসলিমদের একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। বিপরীতে তালেবানরা সুন্নি সম্প্রদায়। তারা শিয়াদের অধিকার রক্ষার কথা আমলেই নিচ্ছে না। তালেবানরা ধরে ধরে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের হত্যা করছে। তালেবান প্রশাসকেরা কখনো পানি সরবরাহ কিংবা বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করেনি। ফলে তাঁরা সুষ্ঠুভাবে এসব পরিচালনা করতে পারছে না। দেশটির অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। প্রতি ১০টি পরিবারের মধ্যে ৯টি পরিবারই ক্ষুধার সঙ্গে লড়াই করছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ৪ কোটি মানুষের দেশ আফগানিস্তানে খুব শিগগিরই অর্ধেকেরও বেশি মানুষের জন্য খাদ্যসহায়তার দরকার হবে।
কাবুলের সঙ্গে অন্যান্য দেশ এখন কেমন আচরণ করবে, তা নির্ভর করছে ওপরের সংকটগুলোর ওপর। তালেবানকে কোনো দেশ এখন অবধি সম্পূর্ণ কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেয়নি। আবার পশ্চিমা দেশগুলো দিয়েছে আরেক শর্ত। তারা বলেছে, তালেবান যদি ‘মানবাধিকার ও শাসনের উন্নতি ঘটায়’ তবেই তাদের সঙ্গে কাজ করবে তারা।
এই শর্তগুলো খুবই আকর্ষণীয়, সন্দেহ নেই। একই সঙ্গে এ ব্যাপারেও সন্দেহ নেই যে তালেবান নানা দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো তালেবান সরকারের সঙ্গে আদৌ কাজ করবে কি না, সে ব্যাপারে গভীর সংশয় রয়েছে। তবে তালেবান সরকারের সঙ্গে কাজ না করা কিংবা তাদের সহযোগিতা না করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। আফগানিস্তানে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ দূত টমাস নিকোলাস বলেছেন, ‘আফগানিস্তানে সব ধরনের সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া খুবই খারাপ একটি কাজ হবে। বিশেষ করে আফগানদের মানবিক সহায়তা খুবই প্রয়োজন।’
আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশ ইরান। তারা আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারকে স্বাগত জানিয়েছে। এমনকি তেহরানে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকারী তালেবান কর্মকর্তাদের স্বীকৃতিও দিয়েছে ইরান। তার পরও তালেবানের প্রতি বিশ্বাসে চির ধরেছে তেহরানের। তালেবান যখন ক্রমাগত শিয়াদের ওপর নির্যাতন করে যাচ্ছে, শিয়া মসজিদে বোমা হামলা করছে, শিয়াদের ওপর কোনো হামলাই প্রতিরোধ করতে পারছে না তালেবান সরকার, তখন বিশ্বাসে চির ধরাই কি স্বাভাবিক নয়? তা ছাড়া সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ উভয় দেশেরই আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।
আফগানিস্তানের আরেক প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। তাদের সঙ্গেও তালেবানের সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে। পাকিস্তানি সেনাদের নেতৃত্বাধীন সংস্থাগুলো কয়েক দশক ধরে তালেবানদের লালন-পালন করছিল। ফলে তারা তালেবানের কাছ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে তালেবানরা ‘সাপের পাঁচ পা দেখা’ আচরণ শুরু করেছে। পাকিস্তান সীমান্তে তারা প্রায়ই লড়াইয়ে লিপ্ত হচ্ছে। এতেই থেমে থাকেনি, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। এটি একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এরা পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা বাড়িয়েছে। পাকিস্তানও পাল্টা হামলা করছে। গত মাসে তথাকথিত টিটিপি ক্যাম্পে পাকিস্তানি বিমান হামলায় কয়েক ডজন আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
আবার উত্তর সীমান্তের প্রতিবেশী উজবেকিস্তানের সঙ্গেও তালেবানের সম্পর্ক নাজুক। অস্থির তালেবানদের সামলে রাখাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেছে উজবেক সরকার। উজবেকিস্তানের সঙ্গে তালেবানের একটি কার্যকর সম্পর্ক রয়েছে। সেটি হচ্ছে, এই দেশের টারমেজ অঞ্চলের সীমান্ত পারাপার পথটি আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রধান সরবরাহপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই পথ যদি বন্ধ হয়ে যায়, তবে আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা সরবরাহও বন্ধ হয়ে যাবে। আখেরে তা আফগানিস্তানের জন্য মোটেও সুখকর কোনো ঘটনা হবে না।
উজবেকিস্তানের প্রধান বাণিজ্য রুট রাশিয়া হয়ে ইউরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এবং রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার কারণে এই রুটের ব্যবহার পুরোপুরি দুর্গম না হলেও অনেকটাই অচল হয়ে যাবে। এদিকে পাকিস্তানের বন্দরগুলোর সঙ্গে সংযোগকারী একটি ট্রান্স-আফগান রেলওয়ে পথ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে উজবেকিস্তান। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দরকার অর্থ। কিন্তু তালেবানি দুঃশাসনের কারণে বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে সহায়তা দেবে বলে মনে হয় না।
আরও একটি উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, টিটিপিকে পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি আফগানিস্তানের মাটিতে আলকায়েদার পুনরুত্থানকে তালেবান নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সবকিছু মিলিয়ে তালেবানের স্বীকৃতির পথ দিনে দিনে কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে। তারা স্বীকৃতি চায় বটে, তবে তার জন্য কাজ করছে না।
সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
অনুবাদ: মারুফ ইসলাম
আফগানিস্তান সম্পর্কিত পড়ুন:
আজ থেকে ২১ বছর আগে ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হাতে তালেবানদের পরাজয় ঘটেছিল। তার আগে পর্যন্ত সহিংসতা, ধর্মান্ধতা, দুর্বৃত্তপনা শব্দগুলো ছিল তালেবানের সমার্থক। গত বছরের আগস্টে একটি বিপর্যয়কর অবস্থার মধ্যে মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ছেড়ে গেলে তালেবানরা আবার ক্ষমতায় ফিরে আসে। ক্ষমতার গদিতে বসেই তারা যে বক্তব্য দিয়েছিল, তা অনেকটা এ রকম—আগের তালেবান আর এই তালেবান এক নয়, একটি উন্নত তালেবান এবার দেশ পরিচালনা করতে এসেছে। আফগানিস্তানে এখন থেকে শান্তি ও সম্প্রীতি বিরাজ করবে। তালেবান এখন থেকে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করবে। অর্থনীতিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করবে তারা। এমনকি বিদ্বেষ ভুলে অন্যান্য শত্রুদেশের সঙ্গেও একযোগে কাজ করবে তালেবান সরকার।
কিন্তু তাদের এসব প্রতিশ্রুতি দিন শেষে ‘কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’ প্রবাদে পরিণত হয়েছে। তারা আবার আগের ফর্মে ফিরে এসেছে। গত মার্চে স্কুলপড়ুয়া কিশোরী মেয়েরা স্কুলে গিয়ে দেখে, তাদের জন্য দুয়ার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রবেশাধিকার নেই সেখানে। সশস্ত্র লোকেরা পাহারা দিচ্ছে স্কুলের সামনে। এরপর গত ৮ মে আফগান নারীদের জীবনে নেমে আসে আরেক কালো অধ্যায়। দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নারীরা এখন থেকে আর বোরকা ছাড়া বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না। বাইরে যেতে হলে পা থেকে মাথা অবধি কাপড় দিয়ে ঢেকে বের হতে হবে।
তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানে হাজারা সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর সহিংসতা বেড়েছে। হাজারা হচ্ছে শিয়া মুসলিমদের একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। বিপরীতে তালেবানরা সুন্নি সম্প্রদায়। তারা শিয়াদের অধিকার রক্ষার কথা আমলেই নিচ্ছে না। তালেবানরা ধরে ধরে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের হত্যা করছে। তালেবান প্রশাসকেরা কখনো পানি সরবরাহ কিংবা বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করেনি। ফলে তাঁরা সুষ্ঠুভাবে এসব পরিচালনা করতে পারছে না। দেশটির অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। প্রতি ১০টি পরিবারের মধ্যে ৯টি পরিবারই ক্ষুধার সঙ্গে লড়াই করছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ৪ কোটি মানুষের দেশ আফগানিস্তানে খুব শিগগিরই অর্ধেকেরও বেশি মানুষের জন্য খাদ্যসহায়তার দরকার হবে।
কাবুলের সঙ্গে অন্যান্য দেশ এখন কেমন আচরণ করবে, তা নির্ভর করছে ওপরের সংকটগুলোর ওপর। তালেবানকে কোনো দেশ এখন অবধি সম্পূর্ণ কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেয়নি। আবার পশ্চিমা দেশগুলো দিয়েছে আরেক শর্ত। তারা বলেছে, তালেবান যদি ‘মানবাধিকার ও শাসনের উন্নতি ঘটায়’ তবেই তাদের সঙ্গে কাজ করবে তারা।
এই শর্তগুলো খুবই আকর্ষণীয়, সন্দেহ নেই। একই সঙ্গে এ ব্যাপারেও সন্দেহ নেই যে তালেবান নানা দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো তালেবান সরকারের সঙ্গে আদৌ কাজ করবে কি না, সে ব্যাপারে গভীর সংশয় রয়েছে। তবে তালেবান সরকারের সঙ্গে কাজ না করা কিংবা তাদের সহযোগিতা না করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। আফগানিস্তানে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ দূত টমাস নিকোলাস বলেছেন, ‘আফগানিস্তানে সব ধরনের সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া খুবই খারাপ একটি কাজ হবে। বিশেষ করে আফগানদের মানবিক সহায়তা খুবই প্রয়োজন।’
আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশ ইরান। তারা আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারকে স্বাগত জানিয়েছে। এমনকি তেহরানে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকারী তালেবান কর্মকর্তাদের স্বীকৃতিও দিয়েছে ইরান। তার পরও তালেবানের প্রতি বিশ্বাসে চির ধরেছে তেহরানের। তালেবান যখন ক্রমাগত শিয়াদের ওপর নির্যাতন করে যাচ্ছে, শিয়া মসজিদে বোমা হামলা করছে, শিয়াদের ওপর কোনো হামলাই প্রতিরোধ করতে পারছে না তালেবান সরকার, তখন বিশ্বাসে চির ধরাই কি স্বাভাবিক নয়? তা ছাড়া সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ উভয় দেশেরই আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।
আফগানিস্তানের আরেক প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। তাদের সঙ্গেও তালেবানের সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে। পাকিস্তানি সেনাদের নেতৃত্বাধীন সংস্থাগুলো কয়েক দশক ধরে তালেবানদের লালন-পালন করছিল। ফলে তারা তালেবানের কাছ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে তালেবানরা ‘সাপের পাঁচ পা দেখা’ আচরণ শুরু করেছে। পাকিস্তান সীমান্তে তারা প্রায়ই লড়াইয়ে লিপ্ত হচ্ছে। এতেই থেমে থাকেনি, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। এটি একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এরা পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা বাড়িয়েছে। পাকিস্তানও পাল্টা হামলা করছে। গত মাসে তথাকথিত টিটিপি ক্যাম্পে পাকিস্তানি বিমান হামলায় কয়েক ডজন আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
আবার উত্তর সীমান্তের প্রতিবেশী উজবেকিস্তানের সঙ্গেও তালেবানের সম্পর্ক নাজুক। অস্থির তালেবানদের সামলে রাখাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেছে উজবেক সরকার। উজবেকিস্তানের সঙ্গে তালেবানের একটি কার্যকর সম্পর্ক রয়েছে। সেটি হচ্ছে, এই দেশের টারমেজ অঞ্চলের সীমান্ত পারাপার পথটি আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রধান সরবরাহপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই পথ যদি বন্ধ হয়ে যায়, তবে আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা সরবরাহও বন্ধ হয়ে যাবে। আখেরে তা আফগানিস্তানের জন্য মোটেও সুখকর কোনো ঘটনা হবে না।
উজবেকিস্তানের প্রধান বাণিজ্য রুট রাশিয়া হয়ে ইউরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এবং রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার কারণে এই রুটের ব্যবহার পুরোপুরি দুর্গম না হলেও অনেকটাই অচল হয়ে যাবে। এদিকে পাকিস্তানের বন্দরগুলোর সঙ্গে সংযোগকারী একটি ট্রান্স-আফগান রেলওয়ে পথ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে উজবেকিস্তান। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দরকার অর্থ। কিন্তু তালেবানি দুঃশাসনের কারণে বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে সহায়তা দেবে বলে মনে হয় না।
আরও একটি উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, টিটিপিকে পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি আফগানিস্তানের মাটিতে আলকায়েদার পুনরুত্থানকে তালেবান নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সবকিছু মিলিয়ে তালেবানের স্বীকৃতির পথ দিনে দিনে কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে। তারা স্বীকৃতি চায় বটে, তবে তার জন্য কাজ করছে না।
সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
অনুবাদ: মারুফ ইসলাম
আফগানিস্তান সম্পর্কিত পড়ুন:
সম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
১০ ঘণ্টা আগেএকটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
১৮ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৫ দিন আগে