রাফায়েল লস
অ্যাঙ্গেলা মের্কেল যুগের অবসানের পর জার্মানির বর্তমান সরকারের প্রথম ১০০ দিন ক্ষমার অযোগ্য বলেই মনে হচ্ছে। কারণ, চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা গত ৪ ডিসেম্বর দায়িত্ব গ্রহণের পর ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা মোতায়েন এবং ন্যাটোর পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকির মধ্য দিয়ে ইউরোপকে একটি বড় যুদ্ধের আশঙ্কার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু সরকারের কর্মকাণ্ড এই সংকট উত্তরণে জার্মানির সক্ষমতা সম্পর্কে খুব একটা আত্মবিশ্বাস জোগায় না।
জার্মানির প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার প্রায় অর্ধেকই মেটানো হয় রাশিয়া থেকে আসা গ্যাস দিয়ে। এদিকে জার্মানি কয়লা ও পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়া একযোগে বন্ধ করে দেওয়ায় রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরতা আরও বাড়বে। আবার জার্মান পণ্যের অন্যতম একটি বড় বাজার হলো রাশিয়া। এ ছাড়া ঐতিহাসিক কারণেই জার্মান নেতৃবৃন্দের কাছে রাশিয়ার সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্কও বহুল কাঙ্ক্ষিত। কিন্তু কালক্রমে জার্মানি নিজেই ক্রেমলিনের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে একটি দুর্বল অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছে।
রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানির সম্পর্ক বেশ জটিল, যা ইউরোপের অন্য দেশগুলোর তুলনায় আলাদা। ১৯৬৯ সালে জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসডিপি) চ্যান্সেলর উইলি ব্র্যান্ডট প্রথমবারের মতো রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের উদ্যোগ নেন। সে সময় ব্র্যান্ডট গৃহীত ‘অস্টপলিটিক’ বা ‘অরাজনৈতিক’ নীতি পূর্ব জার্মানির সঙ্গ পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সুযোগ তৈরি করেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে ইউরোপের দেশগুলোর সীমানা নির্ধারক চুক্তি হেলসিঙ্কি অ্যাক্টের পথও প্রশস্ত করেছিল। জার্মানির এই পদক্ষেপ অধিভুক্ত দেশগুলো হারানোর ভয়ে ভীত তৎকালীন সোভিয়েত নেতাদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, এর মাধ্যমে সোভিয়েত বলয়ের দেশগুলোর সীমানাও নির্ধারিত হয়েছিল। ফলে সোভিয়েত বলয় তার স্পষ্ট সীমানা পেয়েছিল। একই সঙ্গে ব্র্যান্ডটের নীতি তখনকার সোভিয়েত সাম্রাজ্যের ভিন্নমতাবলম্বী এবং নাগরিক অধিকারকর্মীদের উদারবাদী সংস্কারের দিকনির্দেশনাও দিয়েছিল।
কিন্তু ২০২২ সালের রাশিয়া, স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী রাশিয়া থেকে অনেক পরিবর্তিত একটি রাষ্ট্র। বর্তমান রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্র এবং ন্যাটোর সামনে ইউরোপ ও রাশিয়ার সামগ্রিক নিরাপত্তার সুস্পষ্ট ও দৃঢ় দাবি উত্থাপন করতে পেরেছে। অথচ, ১৯৯০ সালের আগের রাশিয়া পশ্চিমের রাজনৈতিক মৈত্রী, এমনকি পশ্চিমের কাছে নগদ অর্থ সহায়তা চাওয়ার কাতারে ছিল। কিন্তু বর্তমান রাশিয়া কোনোভাবেই সে পথে হাঁটবে না। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এরই মধ্যে ইউরোপের ন্যাটো জোটের রূপ ধরে আমেরিকার অব্যাহত উপস্থিতিকে বাঁকা চোখে দেখতে আরম্ভ করেছেন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে দুর্বল ও বিভক্ত হিসেবে এবং উদার গণতন্ত্রকে ধ্বংসাত্মক বলে মনে করেন।
তবে রুশ প্রেসিডেন্টের পশ্চিম বিরোধিতার শুরু এখানে নয়। ২০০৭ সালে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে পুতিন প্রথমবারের মতো সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। এর সাত বছর পর ২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অধিভুক্ত করে নেওয়ার কয়েক মাস পর পুতিন মস্কোভিত্তিক থিংক ট্যাংক ‘ভালদাই ডিসকাশন ক্লাব’-এর এক সম্মেলনে বক্তৃতা দেন। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ক সেই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল: ‘নিউ রুলস অর গেম উইদাউট রুলস’। সম্প্রতি ইউক্রেন আক্রমণের রুশ হুমকি সেই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ইউরোপকে, ‘নিউ রুলস অর গেম উইদাউট রুলস’-এর উত্তর খুঁজতে বাধ্য করছে। একই সঙ্গে বিগত দুই দশকে জার্মানির রাশিয়া নীতিকে প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে।
২০০০ সালের পর থেকে জার্মানির ক্ষমতায় থাকা দুই চ্যান্সেলরের একজন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির গেরহার্ড শ্রোয়েডার এবং ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির অ্যাঙ্গেলা মের্কেল। এর মধ্যে শ্রোয়েডারের সঙ্গে রাশিয়ার ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। অন্যদিকে, অ্যাঙ্গেলা মের্কেল দুই দেশের মধ্যকার পারস্পরিক সুবিধা, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য সম্পর্ককে আরও গভীর করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জার্মানির এই সদিচ্ছা এবং রাশিয়ার প্রতি জার্মান নির্ভরতাকে জার্মানিকেই চাপে ফেলার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। এ জন্য তিনি জার্মান-রুশ সম্পর্কের দুর্বল জায়গাগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন।
কেবল তাই-ই নয়, রুশ প্রেসিডেন্ট জার্মানির দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সংক্রান্ত অপরাধবোধকেও খুব চমৎকারভাবে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। নাৎসি জার্মানরা পূর্ব ইউরোপ, বিশেষ করে রাশিয়ায় যে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তা নিয়ে জার্মান অপরাধবোধকে চমৎকারভাবে কাজে লাগিয়েছেন তিনি। যদিও পোলিশ, বেলারুশিয়ান ও ইউক্রেনীয়রা আনুপাতিকভাবে আরও বেশি মৃত্যু ও ধ্বংসের শিকার হয়েছিল। বিনিময়ে সামান্যই সহানুভূতি পেয়েছে তারা। এ ছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এবং ১৯৪৫ সালের পর থেকে পূর্ব ইউরোপে সোভিয়েত দখলদারত্বের সময় জার্মান-সোভিয়েত সহযোগিতার কারণে পূর্ব ইউরোপীয়রা যে মূল্য চুকিয়েছে, তা জার্মানরা কখনোই পরিশোধ করেনি। সব সময়ই উপেক্ষা করেছে। আজকের জার্মানির এই অপরাধবোধকেও খুব ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে রুশরা।
জার্মানিকে এভাবেই রুশরা ব্ল্যাকমেল করেছে। কিন্তু তারা সব সময় পুতিনকে সম্মান এবং বোঝাপড়া ও আলোচনার জন্য যোগ্য বিশ্বনেতা হিসেবে দেখাতেই বেশি আগ্রহী ছিল। তারা তাঁকে নিরবচ্ছিন্ন পশ্চিমা চাপের কারণে কোণঠাসা পরিস্থিতির শিকার এক শক্তিশালী নেতা হিসেবে দেখাতে চেয়েছে। কিন্তু জার্মানি কি সেভাবেই দেখেছে?
না। তবে এটি জার্মান সরকার বা নীতিনির্ধারণের সঙ্গে জড়িত সংখ্যাগরিষ্ঠদের দৃষ্টিভঙ্গি নয়। কিন্তু মাঝেমধ্যে, জার্মানির (সাবেক) নৌবাহিনী প্রধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও পুতিনের প্রতি এই ধরনের সহানুভূতি প্রকাশ করেন। এটিই ইউক্রেনে আগ্রাসন থেকে মস্কোকে নিরুৎসাহিত করতে পশ্চিমা প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে নৈতিক নেতৃত্ব কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এবং জার্মান সরকারে সে নৈতিক নেতৃত্বের অভাবের বিষয়টি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে।
তারপরও, গত ডিসেম্বরে দায়িত্ব নিয়ে চ্যান্সেলর শুলজ বলেছিলেন, জার্মান-রুশ গ্যাস পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম-২ সম্পূর্ণরূপে একটি ‘অরাজনৈতিক ব্যবসায়ী প্রকল্প’ এবং এটিকে রাজনৈতিক বা ভূ-রাজনৈতিক প্রশ্নের সঙ্গে জড়ানো উচিত নয়। জার্মানির নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী, ক্ষমতাসীন দল এসডিপির সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য রাজনৈতিক নেতাও শুলজের বক্তব্য সমর্থন করেছিলেন সে সময়। তাঁরা মনে করেন, রাশিয়ার সঙ্গে ‘জ্বালানি সম্পর্ক’ দেশটির সঙ্গে যেকোনো বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। কিন্তু বাস্তবতা কি তাই?
নর্ড স্ট্রিম-২ পাইপলাইন যে রাশিয়াবিরোধী ‘প্রতিরোধমূলক নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ’-এর মধ্যই পড়ে, তা ন্যাটো এবং ইইউ মিত্রদের বোঝাতেই জার্মান চ্যান্সেলরের কয়েক সপ্তাহ সময় লেগেছে। তাঁর এই ঢিমেতাল দেখে মনে হচ্ছিল, যেন জোট সরকারের অন্য অংশীজনেরা ইতিমধ্যে যা উপলব্ধি করেছেন, তা তাঁকে নতুন করে বোঝাতে হবে।
তবে দেরিতে হলেও জার্মান সরকার নিজের হারানো সম্মান পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নিয়েছে। ইউক্রেন সংকটের ডামাডোলের মধ্যেই বার্লিন ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার জমি প্রস্তুত করছে। জোট সরকারের অন্যতম সদস্য গ্রিনস পার্টির সদস্য, বর্তমান জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবক কিয়েভ সফরকালে ইউক্রেনের সাইবার প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করতে হাইড্রোজেন পার্টনারশিপ (যেকোনো দেশের সরকার এবং অন্য আরেকটি দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাডেমিক গবেষণা, শিল্প সহায়তা-সংক্রান্ত চুক্তিকে হাইড্রোজেন পার্টনারশিপ বলা হয়) এবং জার্মান সমর্থনের প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া ইউক্রেনে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি ও ৫ হাজার সামরিক হেলমেট পাঠানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
কিন্তু জার্মানির পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার বিষয়টি আলোচনার টেবিলের বাইরেই থেকে যায়। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির কৃতকর্মের উদাহরণ টেনে সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতার কারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন। এর আগেও গ্রিনস পার্টি থেকে আসা জার্মানির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জোশকা ফিশার ১৯৯৯ সালে কসোভোতে ন্যাটোর সামরিক হস্তক্ষেপের সময় সেখানে জার্মান অংশগ্রহণ আটকে দিয়েছিলেন। ফিশার একে ‘ইতিহাসের আবেগপূর্ণ’ অধ্যায় উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘নাৎসি জার্মানির সংঘটিত নৃশংসতা জার্মানদের কসোভোতে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বাধ্য করেছিল।’
কিন্তু জার্মানির এমন অবস্থান পরাশক্তি (রাশিয়া) মোকাবিলায় কার্যকর কোনো কৌশল নয়। দুর্ভাগ্যবশত জার্মানির কোনো পদক্ষেপ এমন কিছুই ইঙ্গিত করে না যে, জার্মানি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রতিযোগিতামূলক কৌশল প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করতে প্রস্তুত। যে কৌশল পশ্চিমা প্রভাব বলয়ে থাকা ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোকে জোরপূর্বক রাশিয়ার বলয়ে ঢোকানোর প্রচেষ্টাকে বাধা দিতে সক্ষম।
এ অবস্থায় পশ্চিমা বিশ্বের অপরাপর শক্তিগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র তার মনোযোগ নিবদ্ধ করেছে চীনের ওপর। এই মনযোগ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক নিরাপত্তার ওপর ক্রমশ চাপ সৃষ্টি করছে। ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যস্ত থাকলেও রাশিয়াকে টেক্কা দিতে ইউরোপীয় ব্লক গঠনের প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে। এ ছাড়া পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়াসহ ইউরোপের অন্য দেশগুলোও রুশ হুমকির সামনে তাদের ন্যায্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি করেছে।
এমন অবস্থায় জার্মানিকে অবশ্যই উঠে দাঁড়াতে হবে। আর তা যদি সম্ভব না-ই হয়, সে ক্ষেত্রে ইউক্রেনগামী ব্রিটিশ সামরিক বিমানগুলো জার্মানির আকাশসীমা এড়িয়ে চলার স্যাটেলাইট থেকে তোলা যে ছবি দেখা যাচ্ছে, তা এই সংকটে জার্মানির সম্ভাব্য ভূমিকা স্পষ্ট করে দিচ্ছে। ছবিটি আগামী দিনে ইউরোপের নিরাপত্তা সম্পর্ক কীভাবে পুনর্গঠিত হবে এবং সেখানে জার্মানির ভূমিকা কী হবে, তাও নির্দেশ করতে পারে।
লেখক: বার্লিনভিত্তিক ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনের সদস্য এবং ইউরোপের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আবদুর রহমান
বিশ্লেষণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
অ্যাঙ্গেলা মের্কেল যুগের অবসানের পর জার্মানির বর্তমান সরকারের প্রথম ১০০ দিন ক্ষমার অযোগ্য বলেই মনে হচ্ছে। কারণ, চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা গত ৪ ডিসেম্বর দায়িত্ব গ্রহণের পর ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা মোতায়েন এবং ন্যাটোর পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকির মধ্য দিয়ে ইউরোপকে একটি বড় যুদ্ধের আশঙ্কার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু সরকারের কর্মকাণ্ড এই সংকট উত্তরণে জার্মানির সক্ষমতা সম্পর্কে খুব একটা আত্মবিশ্বাস জোগায় না।
জার্মানির প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার প্রায় অর্ধেকই মেটানো হয় রাশিয়া থেকে আসা গ্যাস দিয়ে। এদিকে জার্মানি কয়লা ও পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়া একযোগে বন্ধ করে দেওয়ায় রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরতা আরও বাড়বে। আবার জার্মান পণ্যের অন্যতম একটি বড় বাজার হলো রাশিয়া। এ ছাড়া ঐতিহাসিক কারণেই জার্মান নেতৃবৃন্দের কাছে রাশিয়ার সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্কও বহুল কাঙ্ক্ষিত। কিন্তু কালক্রমে জার্মানি নিজেই ক্রেমলিনের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে একটি দুর্বল অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছে।
রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানির সম্পর্ক বেশ জটিল, যা ইউরোপের অন্য দেশগুলোর তুলনায় আলাদা। ১৯৬৯ সালে জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসডিপি) চ্যান্সেলর উইলি ব্র্যান্ডট প্রথমবারের মতো রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের উদ্যোগ নেন। সে সময় ব্র্যান্ডট গৃহীত ‘অস্টপলিটিক’ বা ‘অরাজনৈতিক’ নীতি পূর্ব জার্মানির সঙ্গ পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সুযোগ তৈরি করেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে ইউরোপের দেশগুলোর সীমানা নির্ধারক চুক্তি হেলসিঙ্কি অ্যাক্টের পথও প্রশস্ত করেছিল। জার্মানির এই পদক্ষেপ অধিভুক্ত দেশগুলো হারানোর ভয়ে ভীত তৎকালীন সোভিয়েত নেতাদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, এর মাধ্যমে সোভিয়েত বলয়ের দেশগুলোর সীমানাও নির্ধারিত হয়েছিল। ফলে সোভিয়েত বলয় তার স্পষ্ট সীমানা পেয়েছিল। একই সঙ্গে ব্র্যান্ডটের নীতি তখনকার সোভিয়েত সাম্রাজ্যের ভিন্নমতাবলম্বী এবং নাগরিক অধিকারকর্মীদের উদারবাদী সংস্কারের দিকনির্দেশনাও দিয়েছিল।
কিন্তু ২০২২ সালের রাশিয়া, স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী রাশিয়া থেকে অনেক পরিবর্তিত একটি রাষ্ট্র। বর্তমান রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্র এবং ন্যাটোর সামনে ইউরোপ ও রাশিয়ার সামগ্রিক নিরাপত্তার সুস্পষ্ট ও দৃঢ় দাবি উত্থাপন করতে পেরেছে। অথচ, ১৯৯০ সালের আগের রাশিয়া পশ্চিমের রাজনৈতিক মৈত্রী, এমনকি পশ্চিমের কাছে নগদ অর্থ সহায়তা চাওয়ার কাতারে ছিল। কিন্তু বর্তমান রাশিয়া কোনোভাবেই সে পথে হাঁটবে না। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এরই মধ্যে ইউরোপের ন্যাটো জোটের রূপ ধরে আমেরিকার অব্যাহত উপস্থিতিকে বাঁকা চোখে দেখতে আরম্ভ করেছেন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে দুর্বল ও বিভক্ত হিসেবে এবং উদার গণতন্ত্রকে ধ্বংসাত্মক বলে মনে করেন।
তবে রুশ প্রেসিডেন্টের পশ্চিম বিরোধিতার শুরু এখানে নয়। ২০০৭ সালে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে পুতিন প্রথমবারের মতো সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। এর সাত বছর পর ২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অধিভুক্ত করে নেওয়ার কয়েক মাস পর পুতিন মস্কোভিত্তিক থিংক ট্যাংক ‘ভালদাই ডিসকাশন ক্লাব’-এর এক সম্মেলনে বক্তৃতা দেন। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ক সেই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল: ‘নিউ রুলস অর গেম উইদাউট রুলস’। সম্প্রতি ইউক্রেন আক্রমণের রুশ হুমকি সেই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ইউরোপকে, ‘নিউ রুলস অর গেম উইদাউট রুলস’-এর উত্তর খুঁজতে বাধ্য করছে। একই সঙ্গে বিগত দুই দশকে জার্মানির রাশিয়া নীতিকে প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে।
২০০০ সালের পর থেকে জার্মানির ক্ষমতায় থাকা দুই চ্যান্সেলরের একজন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির গেরহার্ড শ্রোয়েডার এবং ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির অ্যাঙ্গেলা মের্কেল। এর মধ্যে শ্রোয়েডারের সঙ্গে রাশিয়ার ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। অন্যদিকে, অ্যাঙ্গেলা মের্কেল দুই দেশের মধ্যকার পারস্পরিক সুবিধা, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য সম্পর্ককে আরও গভীর করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জার্মানির এই সদিচ্ছা এবং রাশিয়ার প্রতি জার্মান নির্ভরতাকে জার্মানিকেই চাপে ফেলার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। এ জন্য তিনি জার্মান-রুশ সম্পর্কের দুর্বল জায়গাগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন।
কেবল তাই-ই নয়, রুশ প্রেসিডেন্ট জার্মানির দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সংক্রান্ত অপরাধবোধকেও খুব চমৎকারভাবে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। নাৎসি জার্মানরা পূর্ব ইউরোপ, বিশেষ করে রাশিয়ায় যে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তা নিয়ে জার্মান অপরাধবোধকে চমৎকারভাবে কাজে লাগিয়েছেন তিনি। যদিও পোলিশ, বেলারুশিয়ান ও ইউক্রেনীয়রা আনুপাতিকভাবে আরও বেশি মৃত্যু ও ধ্বংসের শিকার হয়েছিল। বিনিময়ে সামান্যই সহানুভূতি পেয়েছে তারা। এ ছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এবং ১৯৪৫ সালের পর থেকে পূর্ব ইউরোপে সোভিয়েত দখলদারত্বের সময় জার্মান-সোভিয়েত সহযোগিতার কারণে পূর্ব ইউরোপীয়রা যে মূল্য চুকিয়েছে, তা জার্মানরা কখনোই পরিশোধ করেনি। সব সময়ই উপেক্ষা করেছে। আজকের জার্মানির এই অপরাধবোধকেও খুব ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে রুশরা।
জার্মানিকে এভাবেই রুশরা ব্ল্যাকমেল করেছে। কিন্তু তারা সব সময় পুতিনকে সম্মান এবং বোঝাপড়া ও আলোচনার জন্য যোগ্য বিশ্বনেতা হিসেবে দেখাতেই বেশি আগ্রহী ছিল। তারা তাঁকে নিরবচ্ছিন্ন পশ্চিমা চাপের কারণে কোণঠাসা পরিস্থিতির শিকার এক শক্তিশালী নেতা হিসেবে দেখাতে চেয়েছে। কিন্তু জার্মানি কি সেভাবেই দেখেছে?
না। তবে এটি জার্মান সরকার বা নীতিনির্ধারণের সঙ্গে জড়িত সংখ্যাগরিষ্ঠদের দৃষ্টিভঙ্গি নয়। কিন্তু মাঝেমধ্যে, জার্মানির (সাবেক) নৌবাহিনী প্রধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও পুতিনের প্রতি এই ধরনের সহানুভূতি প্রকাশ করেন। এটিই ইউক্রেনে আগ্রাসন থেকে মস্কোকে নিরুৎসাহিত করতে পশ্চিমা প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে নৈতিক নেতৃত্ব কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এবং জার্মান সরকারে সে নৈতিক নেতৃত্বের অভাবের বিষয়টি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে।
তারপরও, গত ডিসেম্বরে দায়িত্ব নিয়ে চ্যান্সেলর শুলজ বলেছিলেন, জার্মান-রুশ গ্যাস পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম-২ সম্পূর্ণরূপে একটি ‘অরাজনৈতিক ব্যবসায়ী প্রকল্প’ এবং এটিকে রাজনৈতিক বা ভূ-রাজনৈতিক প্রশ্নের সঙ্গে জড়ানো উচিত নয়। জার্মানির নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী, ক্ষমতাসীন দল এসডিপির সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য রাজনৈতিক নেতাও শুলজের বক্তব্য সমর্থন করেছিলেন সে সময়। তাঁরা মনে করেন, রাশিয়ার সঙ্গে ‘জ্বালানি সম্পর্ক’ দেশটির সঙ্গে যেকোনো বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। কিন্তু বাস্তবতা কি তাই?
নর্ড স্ট্রিম-২ পাইপলাইন যে রাশিয়াবিরোধী ‘প্রতিরোধমূলক নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ’-এর মধ্যই পড়ে, তা ন্যাটো এবং ইইউ মিত্রদের বোঝাতেই জার্মান চ্যান্সেলরের কয়েক সপ্তাহ সময় লেগেছে। তাঁর এই ঢিমেতাল দেখে মনে হচ্ছিল, যেন জোট সরকারের অন্য অংশীজনেরা ইতিমধ্যে যা উপলব্ধি করেছেন, তা তাঁকে নতুন করে বোঝাতে হবে।
তবে দেরিতে হলেও জার্মান সরকার নিজের হারানো সম্মান পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নিয়েছে। ইউক্রেন সংকটের ডামাডোলের মধ্যেই বার্লিন ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার জমি প্রস্তুত করছে। জোট সরকারের অন্যতম সদস্য গ্রিনস পার্টির সদস্য, বর্তমান জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবক কিয়েভ সফরকালে ইউক্রেনের সাইবার প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করতে হাইড্রোজেন পার্টনারশিপ (যেকোনো দেশের সরকার এবং অন্য আরেকটি দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাডেমিক গবেষণা, শিল্প সহায়তা-সংক্রান্ত চুক্তিকে হাইড্রোজেন পার্টনারশিপ বলা হয়) এবং জার্মান সমর্থনের প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া ইউক্রেনে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি ও ৫ হাজার সামরিক হেলমেট পাঠানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
কিন্তু জার্মানির পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার বিষয়টি আলোচনার টেবিলের বাইরেই থেকে যায়। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির কৃতকর্মের উদাহরণ টেনে সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতার কারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন। এর আগেও গ্রিনস পার্টি থেকে আসা জার্মানির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জোশকা ফিশার ১৯৯৯ সালে কসোভোতে ন্যাটোর সামরিক হস্তক্ষেপের সময় সেখানে জার্মান অংশগ্রহণ আটকে দিয়েছিলেন। ফিশার একে ‘ইতিহাসের আবেগপূর্ণ’ অধ্যায় উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘নাৎসি জার্মানির সংঘটিত নৃশংসতা জার্মানদের কসোভোতে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বাধ্য করেছিল।’
কিন্তু জার্মানির এমন অবস্থান পরাশক্তি (রাশিয়া) মোকাবিলায় কার্যকর কোনো কৌশল নয়। দুর্ভাগ্যবশত জার্মানির কোনো পদক্ষেপ এমন কিছুই ইঙ্গিত করে না যে, জার্মানি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রতিযোগিতামূলক কৌশল প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করতে প্রস্তুত। যে কৌশল পশ্চিমা প্রভাব বলয়ে থাকা ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোকে জোরপূর্বক রাশিয়ার বলয়ে ঢোকানোর প্রচেষ্টাকে বাধা দিতে সক্ষম।
এ অবস্থায় পশ্চিমা বিশ্বের অপরাপর শক্তিগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র তার মনোযোগ নিবদ্ধ করেছে চীনের ওপর। এই মনযোগ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক নিরাপত্তার ওপর ক্রমশ চাপ সৃষ্টি করছে। ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যস্ত থাকলেও রাশিয়াকে টেক্কা দিতে ইউরোপীয় ব্লক গঠনের প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে। এ ছাড়া পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়াসহ ইউরোপের অন্য দেশগুলোও রুশ হুমকির সামনে তাদের ন্যায্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি করেছে।
এমন অবস্থায় জার্মানিকে অবশ্যই উঠে দাঁড়াতে হবে। আর তা যদি সম্ভব না-ই হয়, সে ক্ষেত্রে ইউক্রেনগামী ব্রিটিশ সামরিক বিমানগুলো জার্মানির আকাশসীমা এড়িয়ে চলার স্যাটেলাইট থেকে তোলা যে ছবি দেখা যাচ্ছে, তা এই সংকটে জার্মানির সম্ভাব্য ভূমিকা স্পষ্ট করে দিচ্ছে। ছবিটি আগামী দিনে ইউরোপের নিরাপত্তা সম্পর্ক কীভাবে পুনর্গঠিত হবে এবং সেখানে জার্মানির ভূমিকা কী হবে, তাও নির্দেশ করতে পারে।
লেখক: বার্লিনভিত্তিক ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনের সদস্য এবং ইউরোপের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আবদুর রহমান
বিশ্লেষণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
ইউক্রেনের ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র সারা বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও, রাশিয়ার এ ধরনের আক্রমণকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়েছে—যেমনটি ইসরায়েল উত্তর গাজাকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেট্রাম্প ফিরে আসায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে পারে, সামান্য কিছু পরিবর্তন নিয়ে। ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পেছনের সারিতে থাকলেও বাংলাদেশ,
১২ ঘণ্টা আগেড. ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন পুরো জাতি তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবে তাঁকে পরিষ্কারভাবে এই পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে যে, তিনি কীভাবে দেশ শাসন করবেন এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
১ দিন আগেসম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
২ দিন আগে