মারুফ ইসলাম
চীন কী শেষ পর্যন্ত তাইওয়ানে আক্রমণ করেই বসবে? গত পরশু মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ানে পা রাখার পর থেকে চীন যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, তাতে এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এরই মধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে বেইজিং। তাইওয়ান থেকে বেশ কয়েকটি কৃষিপণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে তাইওয়ানের চারপাশ ঘিরে ‘নজিরবিহীন’ সামরিক মহড়া শুরু করেছে। তাইওয়ানের জলসীমা ও আকাশসীমা কার্যত অবরোধ করে ফেলেছে চীন।
এমন সব আয়োজন দেখে মনে শঙ্কা জাগাই স্বাভাবিক, চীন কী তাইওয়ানে আক্রমণ করেই বসবে? আরও সম্পূরক যে প্রশ্ন আসে মনে, তাইওয়ান নিয়ে চীনের এত আগ্রহ কেন? তার আগে জানা প্রয়োজন, তাইওয়ান নামের দেশটি আসলে কোথায়।
মানচিত্রে তাইওয়ান
চীনের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের উপকূল থেকে প্রায় ১০০ মাইল দূরের দেশ তাইওয়ান। এটি একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। তাইওয়ান ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রগুলোর মধ্যে একটি।
অন্যদিকে চীন দাবি করে, তাইওয়ান তাদের নিজেদের ভূখণ্ড। এটিকে নিজেদের কবজায় নিতে চীন সব সময়ই চেষ্টা করে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে তাইওয়ানের প্রধান রক্ষক হয়ে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
কেন চায় না, তার পেছনে একাধিক কারণ আছে বটে। চীন যদি তাইওয়ান দখল করে নেয়, তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য শিরে সংক্রান্তি হয়ে দেখা দেবে। গুয়াম দ্বীপ ও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো হুমকির মুখে পড়বে। তাইওয়ানকে চীন থেকে আলাদা রাখা তাই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য জরুরি।
তাইওয়ান কি সব সময় চীন থেকে আলাদা ছিল?
ইতিহাস বলছে, সতেরো শতকের দিকে তাইওয়ান প্রথম চীনের নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর ১৮৯৫ সালের যুদ্ধে জাপানের কাছে হেরে যায় চীন এবং জাপানের কাছে দ্বীপটি ছেড়ে দেয়।
এরপর ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান হেরে যাওয়ার পর চীন আবার দ্বীপটি দখল করে নেয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর চীনে কয়েক বছর গৃহযুদ্ধ ছিল। ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্ট পার্টি বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে নিলে চীনের জাতীয়তাবাদী দলের নেতারা তাইওয়ানে পালিয়ে যান। পরবর্তী কয়েক দশক তাঁরা তাইওয়ান শাসন করেছিলেন।
এই ইতিহাসের দিকে ইঙ্গিত করেই চীন দাবি করে যে, তাইওয়ান মূলত চীনা প্রদেশ ছিল। অন্যদিকে তাইওয়ানও একই ইতিহাসের দিকে ইঙ্গিত করে বলে, আধুনিক চীন রাষ্ট্র, যেটি ১৯৪৯ সালে মাও সেতুংয়ের হাতে গঠিত হয়েছিল, সেই রাষ্ট্রের কখনোই অংশ ছিল না তাইওয়ান। কিংবা ১৯১১ সালের বিপ্লবের পর স্বাধীন হয়েছিল যে তাইওয়ান, সেটিও কখনোই চীন রাষ্ট্রের অংশ ছিল না।
তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করলেও এখন পর্যন্ত বিশ্বের মাত্র ১৩টি দেশ তাইওয়ানকে সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। চীন এখন অবধি তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের একটি বৈরী সম্পর্ক চলছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘চীনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ৪০ বছর ধরেই ভীষণ খারাপ।’
সেই খারাপ অবস্থা গত কয়েক দিন ধরে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, যেকোনো মুহূর্তে তাইওয়ানে হামলা করে বসতে পারে চীন।
তাইওয়ান কি নিজেকে রক্ষা করতে পারবে
চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণ করেই বসে, তাইওয়ান কি নিজেকে রক্ষা করতে পারবে? চীনের যে শক্তি সামর্থ্য, তাতে তাইওয়ানের সেনাদের প্রতিহত করতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না। কারণ চীন প্রতিরক্ষা খাতে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি ব্যয় করে থাকে। দেশটি নৌবহর থেকে শুরু করে ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধাস্ত্র, যুদ্ধবিমান, উন্নত প্রযুক্তি ও সাইবার হামলার দিক থেকেও কয়েক গুণ এগিয়ে আছে। চীন ও তাইওয়ানের সামরিক সক্ষমতার ব্যবধান বিশাল।
চীনের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে তাইওয়ানকে তাই অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চাইতে হবে। সে ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কি সরাসরি তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াতে পারবে?
কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে ‘এক চীন’ নীতির সমর্থক। আনুষ্ঠানিকভাবে বেইজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক রয়েছে। বরং তাইওয়ানের সঙ্গেই ওয়াশিংটনের সম্পর্ক অনানুষ্ঠানিক। এরপরও যুক্তরাষ্ট্র হয়তো দ্ব্যর্থহীনভাবেই তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াবে। গত মে মাসে সাংবাদিকেরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তাইওয়ানকে যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে সহায়তা করবে কি না? জবাবে বাইডেন বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ। ওয়াশিংটন তার অবস্থান পরিবর্তন করেনি।’
শেষ পর্যন্ত কী হতে পারে
যুক্তরাষ্ট্রের জার্মান মার্শাল ফান্ডের এশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক বনি গ্লেসার মনে করেন, চীন তাইওয়ানে হামলা করবে—এমন সম্ভাবনা নেই। চীন যতই হম্বিতম্বি করুক, তার নিজের সামর্থ্যের কিছু ঘাটতি এখনো আছে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ থেকেও চীন শিক্ষা নেবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। স্থলে যুদ্ধ করার চেয়ে জলে যুদ্ধ করা অবশ্যই অধিকতর কঠিন। তাইওয়ানের প্রায় ১০০ মাইলজুড়ে জলসীমায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া অবশ্যই কঠিন হবে।
ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে তাইওয়ানের জনগণও শিক্ষা নেবেন বলে মনে করেন বনি গ্লেসার। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনীয়রা যেভাবে নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষায় প্রাণপণ লড়াই করছে, তাইওয়ানের জনগণও তেমনি মরিয়া হয়ে লড়াই করবে।’
সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিলিপস ও’ব্রায়েন ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য স্পেকটেটরে লিখেছেন, তাইওয়ানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ানো সব পক্ষের জন্যই ধ্বংসাত্মক। সুতরাং যারাই তাইওয়ানে সেনা পাঠাতে চান না কেন, তাদের সাবধানে ভেবেচিন্তে পা ফেলা উচিত।
ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে বিশ্ব মোড়লদের সত্যিই শিক্ষা নেওয়া উচিত। কারণ যুদ্ধ সব সময়ই অপ্রত্যাশিত। অধ্যাপক ফিলিপস বলেছেন, ‘আপনার প্রতিপক্ষকে কখনোই ছোট করে দেখবেন না। ভাববেন না যে আপনার সিস্টেম সব সময়ই ভালোভাবে কাজ করবে।’
সুতরাং চীন শেষ পর্যন্ত তাইওয়ানে আক্রমণ করবে কি না, যুক্তরাষ্ট্র এ দ্বন্দ্বে সরাসরি জড়িয়ে পড়বে কি না, এসব প্রশ্নের উত্তর আসলে সময়ের হাতে তোলা আছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, সিএনএন ও ইন্ডিয়া টাইমস
চীন কী শেষ পর্যন্ত তাইওয়ানে আক্রমণ করেই বসবে? গত পরশু মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ানে পা রাখার পর থেকে চীন যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, তাতে এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এরই মধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে বেইজিং। তাইওয়ান থেকে বেশ কয়েকটি কৃষিপণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে তাইওয়ানের চারপাশ ঘিরে ‘নজিরবিহীন’ সামরিক মহড়া শুরু করেছে। তাইওয়ানের জলসীমা ও আকাশসীমা কার্যত অবরোধ করে ফেলেছে চীন।
এমন সব আয়োজন দেখে মনে শঙ্কা জাগাই স্বাভাবিক, চীন কী তাইওয়ানে আক্রমণ করেই বসবে? আরও সম্পূরক যে প্রশ্ন আসে মনে, তাইওয়ান নিয়ে চীনের এত আগ্রহ কেন? তার আগে জানা প্রয়োজন, তাইওয়ান নামের দেশটি আসলে কোথায়।
মানচিত্রে তাইওয়ান
চীনের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের উপকূল থেকে প্রায় ১০০ মাইল দূরের দেশ তাইওয়ান। এটি একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। তাইওয়ান ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রগুলোর মধ্যে একটি।
অন্যদিকে চীন দাবি করে, তাইওয়ান তাদের নিজেদের ভূখণ্ড। এটিকে নিজেদের কবজায় নিতে চীন সব সময়ই চেষ্টা করে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে তাইওয়ানের প্রধান রক্ষক হয়ে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
কেন চায় না, তার পেছনে একাধিক কারণ আছে বটে। চীন যদি তাইওয়ান দখল করে নেয়, তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য শিরে সংক্রান্তি হয়ে দেখা দেবে। গুয়াম দ্বীপ ও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো হুমকির মুখে পড়বে। তাইওয়ানকে চীন থেকে আলাদা রাখা তাই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য জরুরি।
তাইওয়ান কি সব সময় চীন থেকে আলাদা ছিল?
ইতিহাস বলছে, সতেরো শতকের দিকে তাইওয়ান প্রথম চীনের নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর ১৮৯৫ সালের যুদ্ধে জাপানের কাছে হেরে যায় চীন এবং জাপানের কাছে দ্বীপটি ছেড়ে দেয়।
এরপর ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান হেরে যাওয়ার পর চীন আবার দ্বীপটি দখল করে নেয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর চীনে কয়েক বছর গৃহযুদ্ধ ছিল। ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্ট পার্টি বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে নিলে চীনের জাতীয়তাবাদী দলের নেতারা তাইওয়ানে পালিয়ে যান। পরবর্তী কয়েক দশক তাঁরা তাইওয়ান শাসন করেছিলেন।
এই ইতিহাসের দিকে ইঙ্গিত করেই চীন দাবি করে যে, তাইওয়ান মূলত চীনা প্রদেশ ছিল। অন্যদিকে তাইওয়ানও একই ইতিহাসের দিকে ইঙ্গিত করে বলে, আধুনিক চীন রাষ্ট্র, যেটি ১৯৪৯ সালে মাও সেতুংয়ের হাতে গঠিত হয়েছিল, সেই রাষ্ট্রের কখনোই অংশ ছিল না তাইওয়ান। কিংবা ১৯১১ সালের বিপ্লবের পর স্বাধীন হয়েছিল যে তাইওয়ান, সেটিও কখনোই চীন রাষ্ট্রের অংশ ছিল না।
তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করলেও এখন পর্যন্ত বিশ্বের মাত্র ১৩টি দেশ তাইওয়ানকে সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। চীন এখন অবধি তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের একটি বৈরী সম্পর্ক চলছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘চীনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ৪০ বছর ধরেই ভীষণ খারাপ।’
সেই খারাপ অবস্থা গত কয়েক দিন ধরে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, যেকোনো মুহূর্তে তাইওয়ানে হামলা করে বসতে পারে চীন।
তাইওয়ান কি নিজেকে রক্ষা করতে পারবে
চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণ করেই বসে, তাইওয়ান কি নিজেকে রক্ষা করতে পারবে? চীনের যে শক্তি সামর্থ্য, তাতে তাইওয়ানের সেনাদের প্রতিহত করতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না। কারণ চীন প্রতিরক্ষা খাতে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি ব্যয় করে থাকে। দেশটি নৌবহর থেকে শুরু করে ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধাস্ত্র, যুদ্ধবিমান, উন্নত প্রযুক্তি ও সাইবার হামলার দিক থেকেও কয়েক গুণ এগিয়ে আছে। চীন ও তাইওয়ানের সামরিক সক্ষমতার ব্যবধান বিশাল।
চীনের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে তাইওয়ানকে তাই অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চাইতে হবে। সে ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কি সরাসরি তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াতে পারবে?
কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে ‘এক চীন’ নীতির সমর্থক। আনুষ্ঠানিকভাবে বেইজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক রয়েছে। বরং তাইওয়ানের সঙ্গেই ওয়াশিংটনের সম্পর্ক অনানুষ্ঠানিক। এরপরও যুক্তরাষ্ট্র হয়তো দ্ব্যর্থহীনভাবেই তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াবে। গত মে মাসে সাংবাদিকেরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তাইওয়ানকে যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে সহায়তা করবে কি না? জবাবে বাইডেন বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ। ওয়াশিংটন তার অবস্থান পরিবর্তন করেনি।’
শেষ পর্যন্ত কী হতে পারে
যুক্তরাষ্ট্রের জার্মান মার্শাল ফান্ডের এশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক বনি গ্লেসার মনে করেন, চীন তাইওয়ানে হামলা করবে—এমন সম্ভাবনা নেই। চীন যতই হম্বিতম্বি করুক, তার নিজের সামর্থ্যের কিছু ঘাটতি এখনো আছে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ থেকেও চীন শিক্ষা নেবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। স্থলে যুদ্ধ করার চেয়ে জলে যুদ্ধ করা অবশ্যই অধিকতর কঠিন। তাইওয়ানের প্রায় ১০০ মাইলজুড়ে জলসীমায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া অবশ্যই কঠিন হবে।
ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে তাইওয়ানের জনগণও শিক্ষা নেবেন বলে মনে করেন বনি গ্লেসার। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনীয়রা যেভাবে নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষায় প্রাণপণ লড়াই করছে, তাইওয়ানের জনগণও তেমনি মরিয়া হয়ে লড়াই করবে।’
সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিলিপস ও’ব্রায়েন ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য স্পেকটেটরে লিখেছেন, তাইওয়ানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ানো সব পক্ষের জন্যই ধ্বংসাত্মক। সুতরাং যারাই তাইওয়ানে সেনা পাঠাতে চান না কেন, তাদের সাবধানে ভেবেচিন্তে পা ফেলা উচিত।
ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে বিশ্ব মোড়লদের সত্যিই শিক্ষা নেওয়া উচিত। কারণ যুদ্ধ সব সময়ই অপ্রত্যাশিত। অধ্যাপক ফিলিপস বলেছেন, ‘আপনার প্রতিপক্ষকে কখনোই ছোট করে দেখবেন না। ভাববেন না যে আপনার সিস্টেম সব সময়ই ভালোভাবে কাজ করবে।’
সুতরাং চীন শেষ পর্যন্ত তাইওয়ানে আক্রমণ করবে কি না, যুক্তরাষ্ট্র এ দ্বন্দ্বে সরাসরি জড়িয়ে পড়বে কি না, এসব প্রশ্নের উত্তর আসলে সময়ের হাতে তোলা আছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, সিএনএন ও ইন্ডিয়া টাইমস
সম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
১২ ঘণ্টা আগেএকটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
১৯ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৫ দিন আগে