আব্দুর রহমান
মোট সম্পদ বিবেচনায় বিশ্বে অ্যাপল ইনকরপোরেশন সবার ওপরে। প্রতিষ্ঠানটির মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার বিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশের জিডিপির তুলনায় প্রায় ৭ গুণ বেশি। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি মিডিয়া কনটেন্টের ব্যবসায় মনোযোগ দিয়েছে। অথচ ২০২১ সালে অ্যাপল ইনকরপোরেশনের ৩৬৬ বিলিয়ন ডলার মুনাফার বেশির ভাগই শুধু নিয়মিত পণ্য—আইফোন, আইপ্যাড, ম্যাকবুক ও অ্যাপল ওয়াচ-বিক্রি করেই হয়েছে। তাহলে কেন অ্যাপল মিডিয়া কনটেন্টের ব্যবসায় নাক গলাতে চাইছে?
দুই দশক আগে আইটিউনের মাধ্যমে মিডিয়া কনটেন্টের ব্যবসায় যাত্রা শুরু অ্যাপলের। আইটিউনের সূত্র ধরে বিগত কয়েক বছরে কয়েক মিলিয়ন আইপ্যাড বিক্রি করেছে প্রতিষ্ঠানটি, এখনো করছে। প্রতিবছরই প্রতিষ্ঠানটির মোট সম্পদ ক্রমশ বাড়ছে। এই ক্রমবর্ধমান আয় থেকেই অ্যাপল বিগত কয়েক বছর মিডিয়া কনটেন্টে বিনিয়োগ আরম্ভ করেছে। শুরুর দিকে আইটিউনের মাধ্যমে গ্রাহকদের অর্থের বিনিময়ে গানের সেবা দিলেও প্রতিষ্ঠানটি মিডিয়া কনটেন্ট, বিশেষ করে ভিডিও ও টিভি কনটেন্ট বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। এ লক্ষ্যে তারা নিজস্ব ফোন, আইপ্যাড, ম্যাকবুকে অ্যাপল টিভি প্লাস, নিউজ প্লাস এবং ফিটনেস প্লাসের মতো সেবা চালু করেছে। প্রতিষ্ঠানটি আইটিউনে গান বিক্রির পাশাপাশি টিভি কনটেন্ট, বিশেষ করে সিনেমাও বিক্রি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির আশা ছিল, তাদের এই উদ্যোগ গানের বাজারের চেয়েও বেশি গ্রাহকপ্রিয়তা পাবে। পেয়েছেও তাই। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে এই খাতে বেশ ভালো সাড়া পেয়েছে অ্যাপল।
বাজার বিশ্লেষক ইসাবেল টেইলর অ্যাপলের এই নতুন উদ্যোগ নিয়ে কিছু চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন। তিনি অ্যাপল টিভির আর্থিক লাভের পরিমাণ উল্লেখ না করলেও দেখিয়েছেন যে, প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে অ্যাপল টিভিতে বিনিয়োগ করেছিল প্রায় ৫৫ মিলিয়ন ডলার, বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির বাজার সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের। এ থেকে বোঝা যায়, অ্যাপল টিভি ভালোই মুনাফা তুলতে সক্ষম।
তবে গান ও টিভি কনটেন্টের বাজারে অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বীও আছে। গানে স্পটিফাই, টিভি কনটেন্টে নেটফ্লিক্স। আইটিউন গানের বাজারে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও (প্রথমে আছে স্পটিফাই), টিভি কনটেন্টের বাজারে অ্যাপল টিভি প্লাসের অবস্থান চতুর্থ (প্রথমে আছে নেটফ্লিক্স)। তবে টিভি কনটেন্টের ক্ষেত্রে অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বী শুধু নেটফ্লিক্সই নয়, আছে আমাজনও।
লন্ডনভিত্তিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওমডিয়ার তথ্যমতে, ২০২১ সালে টিভি কনটেন্ট নির্মাণে নেটফ্লিক্স ও আমাজন যেখানে ব্যয় করেছে যথাক্রমে ১৪ ও ৯ বিলিয়ন ডলার, তার বিপরীতে অ্যাপল টিভি কনটেন্ট নির্মাণ ও কেনায় ব্যয় করেছে মাত্র ২ বিলিয়ন ডলার। এ থেকেই বোঝা যায়, অ্যাপল ‘ধীরে চলো’ নীতি গ্রহণ করেছে। তবে লন্ডনভিত্তিক আরেক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাম্পিয়ার বলছে, এই অল্প বিনিয়োগ অ্যাপলের যে লক্ষ্য তা অর্জনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। অ্যাম্পিয়ার আরও বলছে, অ্যাপল এখনো তার মনোযোগ প্রযুক্তিপণ্যের দিকেই নিবদ্ধ রেখেছে।
তুলনামূলকভাবে গানের চেয়ে, টিভি কনটেন্টের দিকেই অ্যাপলের নজর বেশি। ২০২০ সালে সারা বিশ্বে গানের বাজার ছিল ২২ বিলিয়ন ডলারেরও কম। অথচ আইপ্যাড বিক্রি করেই এর চেয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করেছে অ্যাপল। আবার নেটফ্লিক্সের এক বছরের আয় অ্যাপলের এক মাসের আয়ের চেয়েও কম। কিন্তু নেটফ্লিক্স ও অ্যাপলের টিভি কনটেন্টের মধ্যকার তফাতটি হলো, অ্যাপলের অধিকাংশ কনটেন্ট কেনা। পক্ষান্তরে নেটফ্লিক্স সরাসরি বিভিন্ন টিভি শো বা ভিডিও কনটেন্ট নির্মাণে বিনিয়োগ করে। এইচবিও তাই।
ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, দেরিতে হলেও অ্যাপল কনটেন্ট কেনার পাশাপাশি নির্মাণেও মনোযোগ দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি স্টিভেন স্পিলবার্গ ও টম হ্যাংকসের মতো তারকা পরিচালক ও অভিনেতার সিনেমায় বিনিয়োগ করছে। বিনিয়োগ করেছে একাধিক পপ তারকার গানেও। এমনকি মালালা ইউসুফজাইয়ের মতো নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্বকে দিয়ে শিশুদের পড়ালেখায় উৎসাহিত করতে পডকাস্টও তৈরি করেছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি সিনেমা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লায়নসগেট ও ডিজনির সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে হাজির হয়েছে। এটি আগামী দিনে অ্যাপলের সরাসরি সিনেমা এবং অন্যান্য টিভি কনটেন্ট নির্মাণে নামার ইঙ্গিত দেয়।
সব মিলিয়ে প্রযুক্তি বাজার বিশ্লেষক বেনেডিক্ট ইভানস বলছেন, ‘অ্যাপলের মুনাফা এত বেশি হয়ে গেছে যে তাদের মূল ব্যবসায় বিনিয়োগের পরও বিপুল উদ্বৃত্ত থাকছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী ব্যক্তিদের শখ হয়েছে, তাঁরা সিলিকন ভ্যালি ছেড়ে লস অ্যাঞ্জেলসে আড্ডা গাড়বেন। সে লক্ষ্যে তাঁরা চেকবই নিয়ে হলিউডে হাজির হয়েছেন।’
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, ৩ হাজার বিলিয়ন ডলারের মালিক প্রতিষ্ঠানটি এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে মিডিয়া কনটেন্টে তাদের মোট মুনাফার মাত্র ০ দশমিক ৬ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে। বিশ্লেষকেরা এই পরিমাণকে প্রতিষ্ঠানটির জন্য ‘হাতখরচ’-এর মতো বিষয় বলে আখ্যা দিয়েছেন।
সব মিলিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাপল দ্রুত কিছু করার কথা ভাবছে না। এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ এক ডাটা ফার্মের বিশ্লেষক জুলিয়া প্যারট বলেছেন, ‘অ্যাপল তার অন্য প্রতিদ্বন্দ্বিদের (মিডিয়া) মতো করে ভাবছে না। অ্যাপল এখনো তার মূল ব্যবসা নিয়েই ভাবছে।’ জুলিয়া আরও বলেন, টিভি কনটেন্টের ক্ষেত্রে অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বী নেটফ্লিক্স অনেক এগিয়ে। কারণ, নেটফ্লিক্সের সংগ্রহে যে পরিমাণ কনটেন্ট আছে অ্যাপলের সংগ্রহে রয়েছে তার চেয়ে অনেক কম। এ ছাড়া, অ্যাপলের আরও একটি বড় সীমাবদ্ধতা হলো, অ্যাপলের সেবাগুলো শুধু তাদের তৈরি করা আইফোন, আইপ্যাড কিংবা ম্যাকবুকেই পাওয়া যায়, এর বাইরে নয়। কিন্তু নেটফ্লিক্স ও আমাজনের সেবা প্রচলিত যেকোনো অপারেটিং সিস্টেম, বিশেষ করে অ্যান্ড্রয়েডে খুব সহজেই পাওয়া যায়। তাই প্রশ্ন থেকে যায়, অ্যাপল কি আসলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে চায়, নাকি শুধু তাদের পণ্যের গ্রাহক যারা, তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চায়?
অ্যাপলে মিডিয়া কনটেন্ট ব্যবসা নিয়ে ডাটা বিশ্লেষণী প্রতিষ্ঠান অ্যাম্পিয়ারের মন্তব্য হলো, অ্যাপল মিডিয়া কনটেন্ট নির্মাণ ও কেনায় বিনিয়োগ ক্রমশ বাড়াতেই থাকবে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২২ সালের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে ভিডিও কনটেন্টের বাজার প্রায় ২৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হতে পারে।
এই ক্রমবর্ধমান বিশাল অঙ্কের অর্থের বাজারে আমাজন, নেটফ্লিক্স ও অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো চলে আসায় ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো হয়তো হারিয়ে যাবে। কিন্তু ৩ হাজার বিলিয়ন ডলার নিয়ে ক্রমশ বাড়তে থাকা একটি প্রতিষ্ঠান এই প্রতিযোগিতায় ভালোভাবেই যে টিকে থাকবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে অ্যাপল কোথায় গিয়ে থামে, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।
মোট সম্পদ বিবেচনায় বিশ্বে অ্যাপল ইনকরপোরেশন সবার ওপরে। প্রতিষ্ঠানটির মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার বিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশের জিডিপির তুলনায় প্রায় ৭ গুণ বেশি। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি মিডিয়া কনটেন্টের ব্যবসায় মনোযোগ দিয়েছে। অথচ ২০২১ সালে অ্যাপল ইনকরপোরেশনের ৩৬৬ বিলিয়ন ডলার মুনাফার বেশির ভাগই শুধু নিয়মিত পণ্য—আইফোন, আইপ্যাড, ম্যাকবুক ও অ্যাপল ওয়াচ-বিক্রি করেই হয়েছে। তাহলে কেন অ্যাপল মিডিয়া কনটেন্টের ব্যবসায় নাক গলাতে চাইছে?
দুই দশক আগে আইটিউনের মাধ্যমে মিডিয়া কনটেন্টের ব্যবসায় যাত্রা শুরু অ্যাপলের। আইটিউনের সূত্র ধরে বিগত কয়েক বছরে কয়েক মিলিয়ন আইপ্যাড বিক্রি করেছে প্রতিষ্ঠানটি, এখনো করছে। প্রতিবছরই প্রতিষ্ঠানটির মোট সম্পদ ক্রমশ বাড়ছে। এই ক্রমবর্ধমান আয় থেকেই অ্যাপল বিগত কয়েক বছর মিডিয়া কনটেন্টে বিনিয়োগ আরম্ভ করেছে। শুরুর দিকে আইটিউনের মাধ্যমে গ্রাহকদের অর্থের বিনিময়ে গানের সেবা দিলেও প্রতিষ্ঠানটি মিডিয়া কনটেন্ট, বিশেষ করে ভিডিও ও টিভি কনটেন্ট বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। এ লক্ষ্যে তারা নিজস্ব ফোন, আইপ্যাড, ম্যাকবুকে অ্যাপল টিভি প্লাস, নিউজ প্লাস এবং ফিটনেস প্লাসের মতো সেবা চালু করেছে। প্রতিষ্ঠানটি আইটিউনে গান বিক্রির পাশাপাশি টিভি কনটেন্ট, বিশেষ করে সিনেমাও বিক্রি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির আশা ছিল, তাদের এই উদ্যোগ গানের বাজারের চেয়েও বেশি গ্রাহকপ্রিয়তা পাবে। পেয়েছেও তাই। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে এই খাতে বেশ ভালো সাড়া পেয়েছে অ্যাপল।
বাজার বিশ্লেষক ইসাবেল টেইলর অ্যাপলের এই নতুন উদ্যোগ নিয়ে কিছু চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন। তিনি অ্যাপল টিভির আর্থিক লাভের পরিমাণ উল্লেখ না করলেও দেখিয়েছেন যে, প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে অ্যাপল টিভিতে বিনিয়োগ করেছিল প্রায় ৫৫ মিলিয়ন ডলার, বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির বাজার সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের। এ থেকে বোঝা যায়, অ্যাপল টিভি ভালোই মুনাফা তুলতে সক্ষম।
তবে গান ও টিভি কনটেন্টের বাজারে অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বীও আছে। গানে স্পটিফাই, টিভি কনটেন্টে নেটফ্লিক্স। আইটিউন গানের বাজারে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও (প্রথমে আছে স্পটিফাই), টিভি কনটেন্টের বাজারে অ্যাপল টিভি প্লাসের অবস্থান চতুর্থ (প্রথমে আছে নেটফ্লিক্স)। তবে টিভি কনটেন্টের ক্ষেত্রে অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বী শুধু নেটফ্লিক্সই নয়, আছে আমাজনও।
লন্ডনভিত্তিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওমডিয়ার তথ্যমতে, ২০২১ সালে টিভি কনটেন্ট নির্মাণে নেটফ্লিক্স ও আমাজন যেখানে ব্যয় করেছে যথাক্রমে ১৪ ও ৯ বিলিয়ন ডলার, তার বিপরীতে অ্যাপল টিভি কনটেন্ট নির্মাণ ও কেনায় ব্যয় করেছে মাত্র ২ বিলিয়ন ডলার। এ থেকেই বোঝা যায়, অ্যাপল ‘ধীরে চলো’ নীতি গ্রহণ করেছে। তবে লন্ডনভিত্তিক আরেক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাম্পিয়ার বলছে, এই অল্প বিনিয়োগ অ্যাপলের যে লক্ষ্য তা অর্জনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। অ্যাম্পিয়ার আরও বলছে, অ্যাপল এখনো তার মনোযোগ প্রযুক্তিপণ্যের দিকেই নিবদ্ধ রেখেছে।
তুলনামূলকভাবে গানের চেয়ে, টিভি কনটেন্টের দিকেই অ্যাপলের নজর বেশি। ২০২০ সালে সারা বিশ্বে গানের বাজার ছিল ২২ বিলিয়ন ডলারেরও কম। অথচ আইপ্যাড বিক্রি করেই এর চেয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করেছে অ্যাপল। আবার নেটফ্লিক্সের এক বছরের আয় অ্যাপলের এক মাসের আয়ের চেয়েও কম। কিন্তু নেটফ্লিক্স ও অ্যাপলের টিভি কনটেন্টের মধ্যকার তফাতটি হলো, অ্যাপলের অধিকাংশ কনটেন্ট কেনা। পক্ষান্তরে নেটফ্লিক্স সরাসরি বিভিন্ন টিভি শো বা ভিডিও কনটেন্ট নির্মাণে বিনিয়োগ করে। এইচবিও তাই।
ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, দেরিতে হলেও অ্যাপল কনটেন্ট কেনার পাশাপাশি নির্মাণেও মনোযোগ দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি স্টিভেন স্পিলবার্গ ও টম হ্যাংকসের মতো তারকা পরিচালক ও অভিনেতার সিনেমায় বিনিয়োগ করছে। বিনিয়োগ করেছে একাধিক পপ তারকার গানেও। এমনকি মালালা ইউসুফজাইয়ের মতো নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্বকে দিয়ে শিশুদের পড়ালেখায় উৎসাহিত করতে পডকাস্টও তৈরি করেছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি সিনেমা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লায়নসগেট ও ডিজনির সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে হাজির হয়েছে। এটি আগামী দিনে অ্যাপলের সরাসরি সিনেমা এবং অন্যান্য টিভি কনটেন্ট নির্মাণে নামার ইঙ্গিত দেয়।
সব মিলিয়ে প্রযুক্তি বাজার বিশ্লেষক বেনেডিক্ট ইভানস বলছেন, ‘অ্যাপলের মুনাফা এত বেশি হয়ে গেছে যে তাদের মূল ব্যবসায় বিনিয়োগের পরও বিপুল উদ্বৃত্ত থাকছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী ব্যক্তিদের শখ হয়েছে, তাঁরা সিলিকন ভ্যালি ছেড়ে লস অ্যাঞ্জেলসে আড্ডা গাড়বেন। সে লক্ষ্যে তাঁরা চেকবই নিয়ে হলিউডে হাজির হয়েছেন।’
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, ৩ হাজার বিলিয়ন ডলারের মালিক প্রতিষ্ঠানটি এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে মিডিয়া কনটেন্টে তাদের মোট মুনাফার মাত্র ০ দশমিক ৬ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে। বিশ্লেষকেরা এই পরিমাণকে প্রতিষ্ঠানটির জন্য ‘হাতখরচ’-এর মতো বিষয় বলে আখ্যা দিয়েছেন।
সব মিলিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাপল দ্রুত কিছু করার কথা ভাবছে না। এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ এক ডাটা ফার্মের বিশ্লেষক জুলিয়া প্যারট বলেছেন, ‘অ্যাপল তার অন্য প্রতিদ্বন্দ্বিদের (মিডিয়া) মতো করে ভাবছে না। অ্যাপল এখনো তার মূল ব্যবসা নিয়েই ভাবছে।’ জুলিয়া আরও বলেন, টিভি কনটেন্টের ক্ষেত্রে অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বী নেটফ্লিক্স অনেক এগিয়ে। কারণ, নেটফ্লিক্সের সংগ্রহে যে পরিমাণ কনটেন্ট আছে অ্যাপলের সংগ্রহে রয়েছে তার চেয়ে অনেক কম। এ ছাড়া, অ্যাপলের আরও একটি বড় সীমাবদ্ধতা হলো, অ্যাপলের সেবাগুলো শুধু তাদের তৈরি করা আইফোন, আইপ্যাড কিংবা ম্যাকবুকেই পাওয়া যায়, এর বাইরে নয়। কিন্তু নেটফ্লিক্স ও আমাজনের সেবা প্রচলিত যেকোনো অপারেটিং সিস্টেম, বিশেষ করে অ্যান্ড্রয়েডে খুব সহজেই পাওয়া যায়। তাই প্রশ্ন থেকে যায়, অ্যাপল কি আসলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে চায়, নাকি শুধু তাদের পণ্যের গ্রাহক যারা, তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চায়?
অ্যাপলে মিডিয়া কনটেন্ট ব্যবসা নিয়ে ডাটা বিশ্লেষণী প্রতিষ্ঠান অ্যাম্পিয়ারের মন্তব্য হলো, অ্যাপল মিডিয়া কনটেন্ট নির্মাণ ও কেনায় বিনিয়োগ ক্রমশ বাড়াতেই থাকবে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২২ সালের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে ভিডিও কনটেন্টের বাজার প্রায় ২৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হতে পারে।
এই ক্রমবর্ধমান বিশাল অঙ্কের অর্থের বাজারে আমাজন, নেটফ্লিক্স ও অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো চলে আসায় ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো হয়তো হারিয়ে যাবে। কিন্তু ৩ হাজার বিলিয়ন ডলার নিয়ে ক্রমশ বাড়তে থাকা একটি প্রতিষ্ঠান এই প্রতিযোগিতায় ভালোভাবেই যে টিকে থাকবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে অ্যাপল কোথায় গিয়ে থামে, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।
ইউক্রেনের ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র সারা বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও, রাশিয়ার এ ধরনের আক্রমণকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়েছে—যেমনটি ইসরায়েল উত্তর গাজাকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে হয়েছে।
১ দিন আগেট্রাম্প ফিরে আসায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে পারে, সামান্য কিছু পরিবর্তন নিয়ে। ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পেছনের সারিতে থাকলেও বাংলাদেশ,
১ দিন আগেড. ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন পুরো জাতি তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবে তাঁকে পরিষ্কারভাবে এই পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে যে, তিনি কীভাবে দেশ শাসন করবেন এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
২ দিন আগেসম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
৩ দিন আগে