অনলাইন ডেস্ক
বাইয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ও তালেবানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির বৈঠকটি আফগানিস্তানে ভারতের প্রভাব বাড়ানোর ইচ্ছার পরিষ্কার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। গত এক বছরে তালেবানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ধীরে ধীরে বাড়লেও, এই বৈঠক ছিল প্রথমবারের মতো উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ।
গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে ভারত ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ সাহায্য ও পুনর্গঠন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আঞ্চলিক উন্নয়ন, বাণিজ্য, মানবিক সহযোগিতা, উন্নয়ন প্রকল্প পুনরায় শুরু এবং স্বাস্থ্য খাত ও শরণার্থীদের সহায়তার মতো বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
তবে এই বিবৃতিতে একটি বিষয় বলা হয়নি, কিন্তু বৈঠকের সময় ও এজেন্ডা থেকে তা বোঝা গেছে। সেটি হলো—অঞ্চলটিতে ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার এক বড় পরিবর্তন।
বৈঠকটি এমন এক সময়ে হয়েছে, যখন ভারত সম্প্রতি আফগানিস্তানে পাকিস্তানি বিমান হামলার নিন্দা করেছে। এ ধরনের হামলায় গত এক মাসে অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে মুম্বাইয়ে আফগান কনস্যুলেটে কনসাল নিয়োগ দেওয়ার পরপরই এই বৈঠক হলো।
ভারতে পড়াশোনা কর ইকরামউদ্দিন কামিল বর্তমানে তালেবান সরকারের কূটনীতিক হিসেবে ভারতে দায়িত্ব পালন করছেন। এই নিয়োগের ফলে রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, ইরান এবং উজবেকিস্তানের পর ভারতও সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলো যায় নিজ দেশে আফগানিস্তানকে কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি তালেবানকে দিয়েছে। এর আগে, ২০২২ সালে ভারত কাবুল দূতাবাস আংশিকভাবে পুনরায় চালু করতে একটি ছোট কারিগরি দল পাঠিয়েছিল।
নয়াদিল্লি ও কাবুলের সম্পর্ক গভীরতর হওয়া একটি কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে বলে মনে হলেও, এটি খুব বড় পরিবর্তন নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক কবীর তানেজার মতে, ‘এটি ভারতের সাবধানী ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশলেরই একটি স্বাভাবিক অগ্রগতি। তালেবান এখন কাবুলের বাস্তবতা এবং ভারত এই সত্য অগ্রাহ্য করতে পারে না।’
ভারতের জিন্দাল স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের অধ্যাপক রাঘব শর্মার মতে, ‘আমরা তালেবানের সঙ্গে কিছুটা সংযোগ রাখছি, তবে এর গভীরতা স্বীকার করতে চাই না।’ ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা বলছেন, কাতার, চীন, তুরস্ক এবং পাকিস্তান তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে অনেক এগিয়ে। ভারত সেখানে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।
রাঘব শর্মা আরও বলেন, ‘আমরা বলি, আফগানিস্তান আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু কাজের মাধ্যমে সেটা দেখানো হয়নি। তালেবানের ক্ষমতায় আসার পর আমরা বিষয়টি একপ্রকার উপেক্ষা করেছি।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৈঠকের একটি ইতিবাচক দিক হতে পারে ভারতে আফগানদের জন্য ভিসা চালু। কবীর তানেজা বলেন, ‘বাণিজ্য, স্বাস্থ্য পর্যটন ও শিক্ষার জন্য আফগানদের ভিসা দেওয়া পুনরায় শুরু হতে পারে। তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর ভারত ভিসা প্রক্রিয়া স্থগিত করেছিল, এটি পুনরায় চালু করা দরকার।’
তবে রাঘব শর্মা এ বিষয়ে সন্দিহান। তিনি মনে করেন, নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে ভিসা দেওয়া হয়তো সহজ হবে না। তিনি বলেন, ‘তালেবান একটি মতাদর্শিক সংগঠন এবং তাদের ক্ষমতায় ফিরে আসার ফলে চরমপন্থা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
ভারত এই অঞ্চলে সম্পৃক্ত থাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে। তবে তালেবান তাদের প্রতিশ্রুতি কতটা রাখতে পারবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। রাঘব শর্মা বলেন, এই বৈঠক ভারতের চেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল তালেবানদের। পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক সংঘর্ষে জড়িত তালেবান এখন এটি দেখাতে চাইছে যে, তাদের কাছেও অনেক বিকল্প রয়েছে।
রাঘব শর্মা বলেন, ‘তারা (তালেবান) বিশেষভাবে পাকিস্তানকে তাদের (স্বাধীনতা) দেখাতে চায়। এতে তাদের সুবিধা হচ্ছে—তাদের বিরুদ্ধে যে প্রচার চলছে, তাদের কোনো কৌশলগত স্বাধীনতা নেই, তারা শুধুই পাকিস্তানের পুতুল—এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করবে।’
অবশ্য, ভারতের তালেবানদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন না করার আরও কিছু কারণ থাকতে পারে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র’ হিসেবে পরিচিত ভারত যদি এটি করে, তবে নৈতিক সমস্যায় পড়তে পারে। এ বিষয়ে রাঘব শর্মা প্রশ্ন রাখেন, ‘ভারত বহুদিন ধরে নিজেকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছে, কিন্তু আফগানিস্তানে নারী শিক্ষা বন্ধের ব্যাপারে কোনো প্রতিবাদও করেনি। এই বিষয়গুলোতে ভারত একদম নীরব, তাহলে আমরা দেশে কী বার্তা দিচ্ছি?’
এর আগে, ২০০১ সালে তালেবান সরকারের পতনের পর ভারত আফগানিস্তানে কূটনৈতিক মিশন পাঠিয়েছিল এবং সেখানে শক্তিশালী উপস্থিতি বজায় রেখেছিল। তবে, আফগানিস্তানে ভারতের অনেক স্বার্থ থাকলেও দেশটির জন্য ভারতের কোনো সুসংহত পররাষ্ট্রনীতি ছিল না।
রাঘব শর্মার মতে, ‘ভারত যেসব পদক্ষেপ নিতে চেয়েছে, তা সব সময়ই অন্য শক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নেওয়া। যেমন, ইরান, রাশিয়া বা আমেরিকা।’ আফগানিস্তানে মার্কিন-সমর্থিত সরকারের পতনের পর দেশটিতে ভারত নতুন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।
বিশ্বের অন্যান্য দেশ দ্রুত নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও, ভারত আফগানিস্তানকে ‘শীতল ঘরে’ রেখেছিল। এমনকি খোদ আমেরিকাও ইসলামিক স্টেট অব খোরাসানের মোকাবিলায় তালেবানের সঙ্গে কাজ করছে। রাঘব শর্মা বলেন, ‘একই সময়ে, ইরান, পাকিস্তান এমনকি তাজিকিস্তানও তালেবান তাদের বিরোধীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে।’
এখন, এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ মূল্যায়ন করছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন তালেবান সরকারের ক্ষেত্রে কী পরিবর্তন আনবে। কবীর তানেজা বলেন, ‘ওয়াশিংটন ডিসিতে আফগানিস্তান আর কোনো বড় বিষয় নয়। নিরাপত্তা প্রশ্নে এটি প্রাসঙ্গিক থাকলেও, অন্যান্য বিষয় যেমন গাজা, ইরান, ইউক্রেনের চেয়ে এসব ইস্যু এগিয়ে থাকবে না।’
কবীর তানেজার মতে, কী হবে, তা বলা কঠিন। ট্রাম্পের কৌশল অনুমান করা খুবই কঠিন। তবে, তালেবানবিরোধী শক্তি হয়তো ট্রাম্পের কাছে বাইডেনের তুলনায় বেশি মনোযোগ পাবে। এসব ভেবেই হয়তো ভারত এবার তার স্বার্থ দীর্ঘ মেয়াদে অন্যদের চেয়ে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। এর একটা বড় কারণ, তারা আফগানিস্তানের বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন ভারত যদি পক্ষগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করতে চায় সে ক্ষেত্রে বেশ সময় লাগবে। কারণ, ভারতের আফগান সমাজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই।
এ প্রসঙ্গে কবীর তানেজা বলেন, ‘এটি কেবল রাজনৈতিক সম্পর্কের বিষয় নয়, একটি দেশের সামাজিক কাঠামো কীভাবে কাজ করে তাও বোঝা জরুরি। আমি মনে করি না, ভারত সেই বোঝাপড়া করতে পেরেছে। এমনকি আমরা ভৌগোলিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে তাদের কাছে খুব কাছাকাছি থাকার পরও ভারত কেন পারেনি, সেটা বিস্ময়কর।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্ভাবনা থাকার পরও আমরা (আফগান) সমাজকে বোঝার চেষ্টা করিনি। আমরা আবারও একই ভুল করছি এবং তালেবানের ঝুড়িতেই সব ডিম রাখছি।’ আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বরাবরই অস্থিতিশীল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি খুব দ্রুতই পরিবর্তিত হয়।’
আল-জাজিরা থেকে সংক্ষেপে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
বাইয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ও তালেবানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির বৈঠকটি আফগানিস্তানে ভারতের প্রভাব বাড়ানোর ইচ্ছার পরিষ্কার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। গত এক বছরে তালেবানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ধীরে ধীরে বাড়লেও, এই বৈঠক ছিল প্রথমবারের মতো উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ।
গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে ভারত ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ সাহায্য ও পুনর্গঠন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আঞ্চলিক উন্নয়ন, বাণিজ্য, মানবিক সহযোগিতা, উন্নয়ন প্রকল্প পুনরায় শুরু এবং স্বাস্থ্য খাত ও শরণার্থীদের সহায়তার মতো বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
তবে এই বিবৃতিতে একটি বিষয় বলা হয়নি, কিন্তু বৈঠকের সময় ও এজেন্ডা থেকে তা বোঝা গেছে। সেটি হলো—অঞ্চলটিতে ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার এক বড় পরিবর্তন।
বৈঠকটি এমন এক সময়ে হয়েছে, যখন ভারত সম্প্রতি আফগানিস্তানে পাকিস্তানি বিমান হামলার নিন্দা করেছে। এ ধরনের হামলায় গত এক মাসে অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে মুম্বাইয়ে আফগান কনস্যুলেটে কনসাল নিয়োগ দেওয়ার পরপরই এই বৈঠক হলো।
ভারতে পড়াশোনা কর ইকরামউদ্দিন কামিল বর্তমানে তালেবান সরকারের কূটনীতিক হিসেবে ভারতে দায়িত্ব পালন করছেন। এই নিয়োগের ফলে রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, ইরান এবং উজবেকিস্তানের পর ভারতও সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলো যায় নিজ দেশে আফগানিস্তানকে কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি তালেবানকে দিয়েছে। এর আগে, ২০২২ সালে ভারত কাবুল দূতাবাস আংশিকভাবে পুনরায় চালু করতে একটি ছোট কারিগরি দল পাঠিয়েছিল।
নয়াদিল্লি ও কাবুলের সম্পর্ক গভীরতর হওয়া একটি কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে বলে মনে হলেও, এটি খুব বড় পরিবর্তন নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক কবীর তানেজার মতে, ‘এটি ভারতের সাবধানী ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশলেরই একটি স্বাভাবিক অগ্রগতি। তালেবান এখন কাবুলের বাস্তবতা এবং ভারত এই সত্য অগ্রাহ্য করতে পারে না।’
ভারতের জিন্দাল স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের অধ্যাপক রাঘব শর্মার মতে, ‘আমরা তালেবানের সঙ্গে কিছুটা সংযোগ রাখছি, তবে এর গভীরতা স্বীকার করতে চাই না।’ ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা বলছেন, কাতার, চীন, তুরস্ক এবং পাকিস্তান তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে অনেক এগিয়ে। ভারত সেখানে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।
রাঘব শর্মা আরও বলেন, ‘আমরা বলি, আফগানিস্তান আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু কাজের মাধ্যমে সেটা দেখানো হয়নি। তালেবানের ক্ষমতায় আসার পর আমরা বিষয়টি একপ্রকার উপেক্ষা করেছি।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৈঠকের একটি ইতিবাচক দিক হতে পারে ভারতে আফগানদের জন্য ভিসা চালু। কবীর তানেজা বলেন, ‘বাণিজ্য, স্বাস্থ্য পর্যটন ও শিক্ষার জন্য আফগানদের ভিসা দেওয়া পুনরায় শুরু হতে পারে। তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর ভারত ভিসা প্রক্রিয়া স্থগিত করেছিল, এটি পুনরায় চালু করা দরকার।’
তবে রাঘব শর্মা এ বিষয়ে সন্দিহান। তিনি মনে করেন, নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে ভিসা দেওয়া হয়তো সহজ হবে না। তিনি বলেন, ‘তালেবান একটি মতাদর্শিক সংগঠন এবং তাদের ক্ষমতায় ফিরে আসার ফলে চরমপন্থা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
ভারত এই অঞ্চলে সম্পৃক্ত থাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে। তবে তালেবান তাদের প্রতিশ্রুতি কতটা রাখতে পারবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। রাঘব শর্মা বলেন, এই বৈঠক ভারতের চেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল তালেবানদের। পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক সংঘর্ষে জড়িত তালেবান এখন এটি দেখাতে চাইছে যে, তাদের কাছেও অনেক বিকল্প রয়েছে।
রাঘব শর্মা বলেন, ‘তারা (তালেবান) বিশেষভাবে পাকিস্তানকে তাদের (স্বাধীনতা) দেখাতে চায়। এতে তাদের সুবিধা হচ্ছে—তাদের বিরুদ্ধে যে প্রচার চলছে, তাদের কোনো কৌশলগত স্বাধীনতা নেই, তারা শুধুই পাকিস্তানের পুতুল—এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করবে।’
অবশ্য, ভারতের তালেবানদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন না করার আরও কিছু কারণ থাকতে পারে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র’ হিসেবে পরিচিত ভারত যদি এটি করে, তবে নৈতিক সমস্যায় পড়তে পারে। এ বিষয়ে রাঘব শর্মা প্রশ্ন রাখেন, ‘ভারত বহুদিন ধরে নিজেকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছে, কিন্তু আফগানিস্তানে নারী শিক্ষা বন্ধের ব্যাপারে কোনো প্রতিবাদও করেনি। এই বিষয়গুলোতে ভারত একদম নীরব, তাহলে আমরা দেশে কী বার্তা দিচ্ছি?’
এর আগে, ২০০১ সালে তালেবান সরকারের পতনের পর ভারত আফগানিস্তানে কূটনৈতিক মিশন পাঠিয়েছিল এবং সেখানে শক্তিশালী উপস্থিতি বজায় রেখেছিল। তবে, আফগানিস্তানে ভারতের অনেক স্বার্থ থাকলেও দেশটির জন্য ভারতের কোনো সুসংহত পররাষ্ট্রনীতি ছিল না।
রাঘব শর্মার মতে, ‘ভারত যেসব পদক্ষেপ নিতে চেয়েছে, তা সব সময়ই অন্য শক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নেওয়া। যেমন, ইরান, রাশিয়া বা আমেরিকা।’ আফগানিস্তানে মার্কিন-সমর্থিত সরকারের পতনের পর দেশটিতে ভারত নতুন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।
বিশ্বের অন্যান্য দেশ দ্রুত নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও, ভারত আফগানিস্তানকে ‘শীতল ঘরে’ রেখেছিল। এমনকি খোদ আমেরিকাও ইসলামিক স্টেট অব খোরাসানের মোকাবিলায় তালেবানের সঙ্গে কাজ করছে। রাঘব শর্মা বলেন, ‘একই সময়ে, ইরান, পাকিস্তান এমনকি তাজিকিস্তানও তালেবান তাদের বিরোধীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে।’
এখন, এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ মূল্যায়ন করছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন তালেবান সরকারের ক্ষেত্রে কী পরিবর্তন আনবে। কবীর তানেজা বলেন, ‘ওয়াশিংটন ডিসিতে আফগানিস্তান আর কোনো বড় বিষয় নয়। নিরাপত্তা প্রশ্নে এটি প্রাসঙ্গিক থাকলেও, অন্যান্য বিষয় যেমন গাজা, ইরান, ইউক্রেনের চেয়ে এসব ইস্যু এগিয়ে থাকবে না।’
কবীর তানেজার মতে, কী হবে, তা বলা কঠিন। ট্রাম্পের কৌশল অনুমান করা খুবই কঠিন। তবে, তালেবানবিরোধী শক্তি হয়তো ট্রাম্পের কাছে বাইডেনের তুলনায় বেশি মনোযোগ পাবে। এসব ভেবেই হয়তো ভারত এবার তার স্বার্থ দীর্ঘ মেয়াদে অন্যদের চেয়ে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। এর একটা বড় কারণ, তারা আফগানিস্তানের বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন ভারত যদি পক্ষগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করতে চায় সে ক্ষেত্রে বেশ সময় লাগবে। কারণ, ভারতের আফগান সমাজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই।
এ প্রসঙ্গে কবীর তানেজা বলেন, ‘এটি কেবল রাজনৈতিক সম্পর্কের বিষয় নয়, একটি দেশের সামাজিক কাঠামো কীভাবে কাজ করে তাও বোঝা জরুরি। আমি মনে করি না, ভারত সেই বোঝাপড়া করতে পেরেছে। এমনকি আমরা ভৌগোলিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে তাদের কাছে খুব কাছাকাছি থাকার পরও ভারত কেন পারেনি, সেটা বিস্ময়কর।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্ভাবনা থাকার পরও আমরা (আফগান) সমাজকে বোঝার চেষ্টা করিনি। আমরা আবারও একই ভুল করছি এবং তালেবানের ঝুড়িতেই সব ডিম রাখছি।’ আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বরাবরই অস্থিতিশীল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি খুব দ্রুতই পরিবর্তিত হয়।’
আল-জাজিরা থেকে সংক্ষেপে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বর্তমানে টানাপোড়েনের মুখে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের আশ্রয় দেওয়া এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে ভারতের উদ্বেগ সম্পর্কের উত্তেজনা বাড়িয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর সমাধান না হলে সম্পর্ক ভেঙে পড়ার
১৯ ঘণ্টা আগেবহু বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় কারিনা স্মিথের নজর পড়েছিল এক সহপাঠীর ওপর। শান্ত স্বভাবের কিন্তু অত্যন্ত সুদর্শন সেই তরুণের নাম জাস্টিন ট্রুডো। কারিনা সাহস করে তাঁকে প্রেমের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন!
৩ দিন আগেআগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বছরের নভেম্বরে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
৫ দিন আগেতৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ফেসবুকের তথ্য যাচাই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকদের অভিযোগ ছিল। জাকারবার্গের ঘোষণার পর ট্রাম্প নিজেও বলেছেন, সম্ভবত তাঁর সমালোচনার কারণেই জাকারবার্গ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম প্ল্যাটফর্মে ফ্যাক্ট-চেকিং বন্ধের ঘোষণাকে ট্রাম্পের বশ্যতা স্বীকার...
৫ দিন আগে