ইয়াসিন আরাফাত
ঢাকা: মিয়ানমারে বাড়ছে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী। শনিবারও (৫ জুন) একটি গ্রামে তল্লাশি চালাতে গিয়ে স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে পড়ে সেনাবাহিনী। এ সময় গুলিতে অন্তত ২০ জন গ্রামবাসী নিহত হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করছে। দেশটি গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
মিয়ানমারের ছায়া সরকার বলছে, সেনা অত্যাচার থেকে বাঁচতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে। সীমান্ত এলাকাগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে সেনাদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়েছে। এসব অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আগে থেকেই সক্রিয় রয়েছে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী।
তবে ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সাধারণ মানুষজনও সেনাদের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছে। এ নিয়ে মিয়ানমারের বেসামরিক ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) মুখপাত্র ড. সাসা বলেন, জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অব্যাহত সেনা অভিযান, গ্রেপ্তার, জুলুম এবং হত্যার কারণে বাধ্য হয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে বেসামরিক মানুষ।
সাসা আরও বলেন, এটা কেবল শুরু। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। যদি কোনো গ্রামে একজন মানুষও থাকে তাহলে সেও এসব হত্যা মেনে নেবে না। পুরো দেশই গৃহযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে।
মে মাসের শেষের দিকে মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ প্রদেশে বিদ্রোহী কারেন আর্মির সঙ্গে সেনাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কারেন পিপলস ডিফেন্স দলটি সম্প্রতি গঠন করা হয়েছে। এই সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ কায়াহ প্রদেশে থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গত ৩১ মে সন্ধ্যায়ও ওই প্রদেশে বিদ্রোহীদের ওপর হেলিকপ্টার দিয়ে বোমা হামলা চালিয়েছে সেনারা। এ নিয়ে কারেন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাওকে বলা হয়, আমরা হালকা অস্ত্র দিয়ে প্রতিরোধ গড়েছি।
এ নিয়ে মিয়ানমারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা দ্য আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডাটা প্রজেক্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ানমারে কমপক্ষে ৫৮টি সশস্ত্র বিদ্রোহী দল রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি সক্রিয়। এই দলগুলো স্থানীয়ভাবে সংগঠিত ও সক্রিয়। তবে তাঁদের সঙ্গে ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের কোনো সংযোগ নেই। এই দলগুলোর প্রশিক্ষণ সম্পর্কে অল্পই জানা গেছে। তবে তাঁদের সম্পদ এবং শক্তি সবার একরকম নয়।
মিয়ানমারের চিন রাজ্যের মিন্দাত শহরটি অন্যতম দারিদ্র্যপীড়িত এলাকা। স্থানীয়ভাবে শিকার করার জন্য যেসব অস্ত্র ব্যবহার হতো তার চেয়ে একটু শক্তিশালী অস্ত্র নিয়ে মে মাসে সেনাদের বিরুদ্ধে নামে রাজ্যের স্বেচ্ছাসেবকেরা। তখন শহরটির কমবয়সী বাসিন্দারা পালিয়ে জঙ্গলে চলে যায় এবং সেখানে গিয়ে বিস্ফোরক বানাতে শেখে। অনেক তারকারাও এসব প্রশিক্ষণে যোগ দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মিয়ানমারের জনপ্রিয় মডেল হাতেত হাতেত হাতুন, জনপ্রিয় ব্যান্ড বিগ ব্যাগের গায়ক কায়ার পোক।
মে মাসের শেষ নাগাদ মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে একাধিক হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে একটি বিয়ে বাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। যেখানে বর ছিলেন একজন সেনা সদস্য। ওই অনুষ্ঠানে হামলায় বরসহ চারজন নিহত হন। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, উপহারের বাক্সে বোমা পাঠানো হয়েছিল। তবে এই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।
মিয়ানমার সেনাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা স্কুলেও বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। মিয়ানমারের জান্তা সরকার সন্তানদের স্কুলে ফেরানোর জন্য অভিভাবকদের নিবন্ধন করতে বলেছে। তবে অধিকাংশই সাড়া দেননি। মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মিয়ানমারের অর্ধেকের বেশি শিক্ষক সেনাবিরোধী আন্দোলনে রয়েছেন।
আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা রিচার্ড হর্সি বলেন, এ ধরনের হামলা দুশ্চিন্তার। এই ধরনের সহিংসতা নিয়মিত হয়ে উঠলে এটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।
বেসামরিক ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা একটি নতুন ফেডারেল আর্মি গঠন করবে। পাশাপাশি বিদ্রোহীদের স্কুল এবং হাসপাতাল বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। এ নিয়ে গত ২৯ মে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে এনইউজি, যেখানে নতুন ফেডারেল আর্মিদের প্রথম ব্যাচকে দেখানো হয়েছে, ওই দলটি সম্প্রতি প্রশিক্ষণ শেষ করেছে।
এদিকে মিয়ানমারের কিছু জাতিগত সশস্ত্র দল সেনাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সমর্থন দিচ্ছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই সশস্ত্র দলগুলো নিজেদের অঞ্চলেই মনোযোগ দিচ্ছে। তারা অভ্যুত্থানের প্রভাবমুক্ত থাকার চেষ্টা করছে। আর এতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের মুখপাত্র সাসা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এনইউজিকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এর বিনিময়ে তাঁরা বিভিন্ন দেশের তেল এবং গ্যাস কোম্পানিকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। টোটাল এবং শেভরন তাঁদের টাকা গণতান্ত্রিক নেতাদের কাছে না দিয়ে সেনাদের কাছে দিচ্ছে। এ নিয়ে সাসা বলেন, এটা আমাদের জন্য অপমানের যে, মিয়ানমারের গ্যাস মিয়ানমারের জেনারেলরা ব্যবহার করছেন। তাঁরা যে জন্য অস্ত্র কিনছেন তার টাকা পশ্চিমারা দিচ্ছেন। রাশিয়া এবং চীন থেকে অস্ত্র কিনে তাঁরা মিয়ানমারের জনগণকে হত্যা করছেন।
মিয়ানমারের সেনাদের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করতে জাতিসংঘে একটি খসড়া প্রস্তাব জমা দিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার নয় দেশ। এ নিয়ে সাসা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ব্যবস্থা নিতে যত দেরি করবে, মিয়ানমারে তত রক্তপাত বাড়বে এবং দেশটি গৃহযুদ্ধের দিকে এগোবে।
দ্য আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডাটা প্রজেক্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের চেয়ে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মিয়ানমারে সংঘাতের সংখ্যা বেড়েছে। আগে এই সংঘাত রাখাইন এবং উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এটি এখন পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ নিয়ে ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা রিচার্ড হর্সি বলেন, সেনাদের সংখ্যা অনেক। তাঁদের কাছে অস্ত্র আছে এবং বেসামরিক জনগণের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে তাঁদের কোনো মাথাব্যথা নেই।
মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন চিন হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের উপ নির্বাহী পরিচালক সালাই জা উ উ লিং বলেন, মিন্দাত শহরের জনগণ মনে করছে যে, সেনারা তাঁদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। সেখানে বর্ষাকাল শুরু হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ সেখানে আটকা পড়ে আছে। তাঁরা এখন অনেক বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
মিয়ানমারের মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর এ পর্যন্ত ৮৩৩ জন সেনা বিরোধীদের হাতে নিহত হয়েছেন।
ঢাকা: মিয়ানমারে বাড়ছে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী। শনিবারও (৫ জুন) একটি গ্রামে তল্লাশি চালাতে গিয়ে স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে পড়ে সেনাবাহিনী। এ সময় গুলিতে অন্তত ২০ জন গ্রামবাসী নিহত হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করছে। দেশটি গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
মিয়ানমারের ছায়া সরকার বলছে, সেনা অত্যাচার থেকে বাঁচতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে। সীমান্ত এলাকাগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে সেনাদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়েছে। এসব অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আগে থেকেই সক্রিয় রয়েছে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী।
তবে ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সাধারণ মানুষজনও সেনাদের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছে। এ নিয়ে মিয়ানমারের বেসামরিক ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) মুখপাত্র ড. সাসা বলেন, জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অব্যাহত সেনা অভিযান, গ্রেপ্তার, জুলুম এবং হত্যার কারণে বাধ্য হয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে বেসামরিক মানুষ।
সাসা আরও বলেন, এটা কেবল শুরু। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। যদি কোনো গ্রামে একজন মানুষও থাকে তাহলে সেও এসব হত্যা মেনে নেবে না। পুরো দেশই গৃহযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে।
মে মাসের শেষের দিকে মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ প্রদেশে বিদ্রোহী কারেন আর্মির সঙ্গে সেনাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কারেন পিপলস ডিফেন্স দলটি সম্প্রতি গঠন করা হয়েছে। এই সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ কায়াহ প্রদেশে থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গত ৩১ মে সন্ধ্যায়ও ওই প্রদেশে বিদ্রোহীদের ওপর হেলিকপ্টার দিয়ে বোমা হামলা চালিয়েছে সেনারা। এ নিয়ে কারেন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাওকে বলা হয়, আমরা হালকা অস্ত্র দিয়ে প্রতিরোধ গড়েছি।
এ নিয়ে মিয়ানমারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা দ্য আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডাটা প্রজেক্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ানমারে কমপক্ষে ৫৮টি সশস্ত্র বিদ্রোহী দল রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি সক্রিয়। এই দলগুলো স্থানীয়ভাবে সংগঠিত ও সক্রিয়। তবে তাঁদের সঙ্গে ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের কোনো সংযোগ নেই। এই দলগুলোর প্রশিক্ষণ সম্পর্কে অল্পই জানা গেছে। তবে তাঁদের সম্পদ এবং শক্তি সবার একরকম নয়।
মিয়ানমারের চিন রাজ্যের মিন্দাত শহরটি অন্যতম দারিদ্র্যপীড়িত এলাকা। স্থানীয়ভাবে শিকার করার জন্য যেসব অস্ত্র ব্যবহার হতো তার চেয়ে একটু শক্তিশালী অস্ত্র নিয়ে মে মাসে সেনাদের বিরুদ্ধে নামে রাজ্যের স্বেচ্ছাসেবকেরা। তখন শহরটির কমবয়সী বাসিন্দারা পালিয়ে জঙ্গলে চলে যায় এবং সেখানে গিয়ে বিস্ফোরক বানাতে শেখে। অনেক তারকারাও এসব প্রশিক্ষণে যোগ দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মিয়ানমারের জনপ্রিয় মডেল হাতেত হাতেত হাতুন, জনপ্রিয় ব্যান্ড বিগ ব্যাগের গায়ক কায়ার পোক।
মে মাসের শেষ নাগাদ মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে একাধিক হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে একটি বিয়ে বাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। যেখানে বর ছিলেন একজন সেনা সদস্য। ওই অনুষ্ঠানে হামলায় বরসহ চারজন নিহত হন। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, উপহারের বাক্সে বোমা পাঠানো হয়েছিল। তবে এই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।
মিয়ানমার সেনাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা স্কুলেও বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। মিয়ানমারের জান্তা সরকার সন্তানদের স্কুলে ফেরানোর জন্য অভিভাবকদের নিবন্ধন করতে বলেছে। তবে অধিকাংশই সাড়া দেননি। মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মিয়ানমারের অর্ধেকের বেশি শিক্ষক সেনাবিরোধী আন্দোলনে রয়েছেন।
আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা রিচার্ড হর্সি বলেন, এ ধরনের হামলা দুশ্চিন্তার। এই ধরনের সহিংসতা নিয়মিত হয়ে উঠলে এটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।
বেসামরিক ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা একটি নতুন ফেডারেল আর্মি গঠন করবে। পাশাপাশি বিদ্রোহীদের স্কুল এবং হাসপাতাল বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। এ নিয়ে গত ২৯ মে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে এনইউজি, যেখানে নতুন ফেডারেল আর্মিদের প্রথম ব্যাচকে দেখানো হয়েছে, ওই দলটি সম্প্রতি প্রশিক্ষণ শেষ করেছে।
এদিকে মিয়ানমারের কিছু জাতিগত সশস্ত্র দল সেনাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সমর্থন দিচ্ছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই সশস্ত্র দলগুলো নিজেদের অঞ্চলেই মনোযোগ দিচ্ছে। তারা অভ্যুত্থানের প্রভাবমুক্ত থাকার চেষ্টা করছে। আর এতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের মুখপাত্র সাসা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এনইউজিকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এর বিনিময়ে তাঁরা বিভিন্ন দেশের তেল এবং গ্যাস কোম্পানিকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। টোটাল এবং শেভরন তাঁদের টাকা গণতান্ত্রিক নেতাদের কাছে না দিয়ে সেনাদের কাছে দিচ্ছে। এ নিয়ে সাসা বলেন, এটা আমাদের জন্য অপমানের যে, মিয়ানমারের গ্যাস মিয়ানমারের জেনারেলরা ব্যবহার করছেন। তাঁরা যে জন্য অস্ত্র কিনছেন তার টাকা পশ্চিমারা দিচ্ছেন। রাশিয়া এবং চীন থেকে অস্ত্র কিনে তাঁরা মিয়ানমারের জনগণকে হত্যা করছেন।
মিয়ানমারের সেনাদের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করতে জাতিসংঘে একটি খসড়া প্রস্তাব জমা দিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার নয় দেশ। এ নিয়ে সাসা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ব্যবস্থা নিতে যত দেরি করবে, মিয়ানমারে তত রক্তপাত বাড়বে এবং দেশটি গৃহযুদ্ধের দিকে এগোবে।
দ্য আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডাটা প্রজেক্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের চেয়ে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মিয়ানমারে সংঘাতের সংখ্যা বেড়েছে। আগে এই সংঘাত রাখাইন এবং উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এটি এখন পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ নিয়ে ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা রিচার্ড হর্সি বলেন, সেনাদের সংখ্যা অনেক। তাঁদের কাছে অস্ত্র আছে এবং বেসামরিক জনগণের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে তাঁদের কোনো মাথাব্যথা নেই।
মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন চিন হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের উপ নির্বাহী পরিচালক সালাই জা উ উ লিং বলেন, মিন্দাত শহরের জনগণ মনে করছে যে, সেনারা তাঁদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। সেখানে বর্ষাকাল শুরু হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ সেখানে আটকা পড়ে আছে। তাঁরা এখন অনেক বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
মিয়ানমারের মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর এ পর্যন্ত ৮৩৩ জন সেনা বিরোধীদের হাতে নিহত হয়েছেন।
সম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
৮ ঘণ্টা আগেএকটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
১৬ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৫ দিন আগে