তাপস বড়ুয়া
এক.
বইয়ের শেষ বাক্যটা দিয়ে শুরু করি, ‘ওয়ান মাস্ট ইমাজিন সিসিফাস হ্যাপি।’ সিসিফাসের অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে একেবারে অসুখী জীবন বলে মেনে নিতে চাননি আলব্যার কাম্যু। সিসিফাস যে কাজ করছে, অনন্তকাল সেই কাজই তাকে করে যেতে হবে, কখনোই চূড়ান্ত কোনো গন্তব্যে বা লক্ষ্যে পৌঁছানো হবে না। তবু ভেবে নিতে হবে, সিসিফাস সুখী। কেন? কারণ, কাম্যুর মতে, কাজ করে যাওয়াটাও তো সুখের উপলক্ষ হতে পারে; ‘নাই বা হলো পারে যাওয়া’।
গ্রিক মিথ অনুযায়ী, দেবতা সিসিফাসকে শাস্তি দিয়েছেন বড় এক খণ্ড পাথরকে ঠেলে ঠেলে পাহাড়ের চূড়ায় তোলার। প্রতিবার তোলার পর পাথরটা আবার গড়িয়ে পাহাড়ের পাদদেশে এসে পড়বে। সিসিফাসকে আবার তুলতে হবে। অনন্তকাল ধরে চলতে থাকবে এভাবে। তার সাজার মেয়াদ যাতে কখনো শেষ না হয়, সে জন্য দেবতা তাকে করে দিয়েছে অমর। অনন্তকাল অর্থহীন জীবন যাপনই সিসিফাসের সাজা।
এখন যদি আমরা আমাদের নিজেদের দিকে তাকাই, তাহলে কী দেখি? যে মানুষ প্রতিদিন একই কাজ করে, করতে হয় সকাল থেকে রাত—প্রতিদিন শুধুই পুনরাবৃত্তির জীবন, সে-ও আসলে সিসিফাস। সফল হওয়ার চেষ্টা সে করে, সফল হওয়া হয়ে ওঠে না। আসলে চূড়ান্ত সফলতা বলে কোনো গন্তব্য হয়তো নেই। সিসিফাসের মতো এই যে পৌনঃপুনিক দিনরাত্রি মানুষের, এই অনন্ত অর্থহীনতার যন্ত্রণা থেকে মুক্তির পথ কী?
দুই.
আলব্যার কাম্যুর ভাবনায় জীবন ‘অ্যাবসার্ড’—অর্থহীন। তাই জীবনের অর্থ খুঁজতে যাওয়ারও কোনো মানে নেই। আমরা জীবনকে অর্থময় মনে করে অর্থ খুঁজি। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয় না। ব্যক্তি মানুষ জীবনের অর্থ খোঁজার চেষ্টা করলেও পৃথিবী তার সেই চেষ্টায় একই সুরে, একই তালে সাড়া দেয় না।
দুটি উপায় তখন থাকে মানুষের হাতে—এক. পালিয়ে বাঁচা; দুই. অর্থ খোঁজার চিন্তাটাই বাদ দেওয়া। পালানোর আবার দুটো উপায়—ক. শারীরিকভাবে আত্মহত্যা করা, খ. বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আত্মহত্যা করা।
মানুষ প্রতিমুহূর্তে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়, সে আত্মহত্যা করবে কি না। কাম্যুর মতে, এটাই জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফিলোসফিক্যাল প্রশ্ন। অন্য কথায়, সে সিদ্ধান্ত নেয়, যে জীবন সে যাপন করছে, সেটা যাপন করার কি কোনো মানে হয়! যদি মনে হয়, তার জীবনটা যাপন করার অর্থ আছে, তাহলে সে বেঁচে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। না হলে আত্মহত্যা করে; অর্থহীনতার পৌনঃপুনিকতায় ‘ফুলস্টপ’ দিয়ে দেয়।
শারীরিকভাবে আত্মহত্যা কম মানুষ করলেও অধিকাংশ মানুষ প্রতিনিয়ত বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আত্মহত্যা করে চলেছে। তারা প্রশ্নাতীতভাবে তত্ত্ব ও তথ্যে, এমনকি বানানো গল্প ও ব্যাখ্যাকে বিশ্বাস করে বাস্তবকে ভুলে থাকে বা অস্বীকার করে। কাম্যুর মতে, প্রশ্নাতীতভাবে কোনো তত্ত্ব, তথ্য বা মিথে বিশ্বাস করা বুদ্ধিবৃত্তিক আত্মহত্যা।
প্রশ্নাতীতভাবে কোনো তত্ত্ব, তথ্য বা মিথে বিশ্বাস করা বুদ্ধিবৃত্তিক আত্মহত্যা।
কারণ, এর মধ্য দিয়ে মানুষ নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাকে নিজেই অস্বীকার করে। নিজের অভিজ্ঞতার চেয়ে অন্যের দেওয়া তথ্য ও ব্যাখ্যাকে বেশি মূল্য দেয়। জীবনের অর্থহীনতার বিপরীতে একটি আরোপিত অর্থময়তায় সে বিশ্বাস করতে শুরু করে।
আরেকটা হচ্ছে, জীবনটা এখন অর্থহীন হলেও পরে সুদে-আসলে অর্থ তৈরি হবে—এই আশা ও স্বপ্নে বুক বেঁধে স্বস্তি খোঁজে। বিশ্বাস করতে শুরু করে, জীবন খুবই অর্থপূর্ণ; সেটা বুঝতে না পারাটা তার নিজের সমস্যা। সুতরাং তথাকথিত ‘নিজের বোঝার সীমাবদ্ধতা’ কাটিয়ে উঠতে অন্যের চিন্তা ও মোটিভেশনের আলোকে নিজের জীবনকে দেখে।
তৃতীয় পথ হচ্ছে, এই কিছু হওয়ার আশাটা ত্যাগ করা। জীবন যে অর্থহীন, এই সত্যকে সোজাসাপটা মেনে নেওয়া এবং জীবনের মানে খোঁজার মতো অর্থহীন কাজটি না করা। তাহলে কি মানুষ গতানুগতিকতায় গা ভাসিয়ে দেবে? কাম্যু বলেছেন, না, লিভ লাইক এ রেবেল। সবকিছুকে চ্যালেঞ্জ করো। অচলায়তন ভেঙেচুরে দাও। কিন্তু তাতে জীবন অর্থময় হয়ে উঠবে—এই আশা করার কথা তিনি বলেননি; বরং সময়টা কেটে যাবে কিছু একটা নিয়ে। বর্তমানটা মিইয়ে পড়বে না, এটাই লাভ।
সমস্যা হচ্ছে, আমরা শুধু সেই রীতিনীতিকে প্রশ্ন করি, যেগুলো আমাদের অসুবিধায় ফেলে। যেসব রীতিনীতি আমাদের সুবিধা দেয়, সেগুলো অযৌক্তিক হলেও প্রশ্নাতীতভাবে মেনে নিই। আমরা তাই কাম্যুর ভাবনার রেবেল হতে পারি না।
তিন.
অন্য এক্সিসটেন্সিয়ালিস্ট ফিলোসফারদের সঙ্গে কাম্যুর পার্থক্য হচ্ছে, কাম্যু মনে করেন, অর্থহীনতা শেষ কথা নয়। অর্থহীনতার জটকে পাশে সরিয়ে রেখে জীবনকে উপভোগ্য করা সম্ভব।
সেই আপাত সুখের উপলক্ষগুলো কী হতে পারে? অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে পাশে সরিয়ে রেখে ভালো লাগছে এমন কিছুতে মনোযোগ দেওয়া। সমাজের জন্য, মানুষের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করা। ভালো কিছু একটা নিয়ে ব্যস্ত আছি, সময়টা অর্থপূর্ণভাবে ব্যয় হচ্ছে—এটা ভেবে মানসিক শান্তি পাওয়া একটা ভালো উপায় হতে পারে।
আরেকটা হতে পারে জীবনের জন্য উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সেই লক্ষ্যের পেছনে ছুটে সময়টাকে ব্যয় করা। দিন শেষে বড় কিছু হলেও যে জীবন অর্থপূর্ণ হয়ে উঠবে, তা হয়তো না। বড় কিছু হওয়া মানুষেরাও জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে হিমশিম খেয়েই জীবন শেষ করে। কিন্তু সেই হওয়া পর্যন্ত পথচলার সময়টাতে ভাবা যায়, অর্থপূর্ণ কিছু করছি, বড় কিছুর পেছনে দৌড়াচ্ছি।
এখান থেকেই এসেছে বর্তমানে বাঁচার ধারণা। মনে করা যেতে পারে কাম্যুর বিখ্যাত উক্তি লিভ ইন প্রেজেন্ট। অতীতকে পেছনে রেখে, ভবিষ্যতের আশা ছেড়ে বর্তমানকেই রাঙিয়ে তোলার চেষ্টা করা। আমাদের হিপোক্রেসি হচ্ছে, আমরা অতীতকে ধরে রাখতে চাই; ভবিষ্যতের আশাও ছাড়ি না; আবার বর্তমানকেও পুরোপুরি উদ্যাপন করতে চাই। আমাদের তাই কাম্যুর ‘প্রেজেন্ট’-এ বাঁচা হয়ে ওঠে না।
কাম্যু মনে করেন, সকালবেলায় আমরা আত্মহত্যা না করে যখন এক কাপ গরম কফি খেয়ে নতুন দিন শুরু করি, এর মধ্য দিয়েই আমরা জানিয়ে দিই, জীবন নিয়ে এত সহজে হাল ছাড়ছি না; অর্থহীনতার মধ্যেও আপাত আনন্দ খুঁজছি। গূঢ় কোনো অর্থ থাক বা না থাক; জীবন সুন্দর। প্রতিটা বর্তমান-ক্ষণে সেই সুন্দরেরই উদ্যাপন করছি।
এক.
বইয়ের শেষ বাক্যটা দিয়ে শুরু করি, ‘ওয়ান মাস্ট ইমাজিন সিসিফাস হ্যাপি।’ সিসিফাসের অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে একেবারে অসুখী জীবন বলে মেনে নিতে চাননি আলব্যার কাম্যু। সিসিফাস যে কাজ করছে, অনন্তকাল সেই কাজই তাকে করে যেতে হবে, কখনোই চূড়ান্ত কোনো গন্তব্যে বা লক্ষ্যে পৌঁছানো হবে না। তবু ভেবে নিতে হবে, সিসিফাস সুখী। কেন? কারণ, কাম্যুর মতে, কাজ করে যাওয়াটাও তো সুখের উপলক্ষ হতে পারে; ‘নাই বা হলো পারে যাওয়া’।
গ্রিক মিথ অনুযায়ী, দেবতা সিসিফাসকে শাস্তি দিয়েছেন বড় এক খণ্ড পাথরকে ঠেলে ঠেলে পাহাড়ের চূড়ায় তোলার। প্রতিবার তোলার পর পাথরটা আবার গড়িয়ে পাহাড়ের পাদদেশে এসে পড়বে। সিসিফাসকে আবার তুলতে হবে। অনন্তকাল ধরে চলতে থাকবে এভাবে। তার সাজার মেয়াদ যাতে কখনো শেষ না হয়, সে জন্য দেবতা তাকে করে দিয়েছে অমর। অনন্তকাল অর্থহীন জীবন যাপনই সিসিফাসের সাজা।
এখন যদি আমরা আমাদের নিজেদের দিকে তাকাই, তাহলে কী দেখি? যে মানুষ প্রতিদিন একই কাজ করে, করতে হয় সকাল থেকে রাত—প্রতিদিন শুধুই পুনরাবৃত্তির জীবন, সে-ও আসলে সিসিফাস। সফল হওয়ার চেষ্টা সে করে, সফল হওয়া হয়ে ওঠে না। আসলে চূড়ান্ত সফলতা বলে কোনো গন্তব্য হয়তো নেই। সিসিফাসের মতো এই যে পৌনঃপুনিক দিনরাত্রি মানুষের, এই অনন্ত অর্থহীনতার যন্ত্রণা থেকে মুক্তির পথ কী?
দুই.
আলব্যার কাম্যুর ভাবনায় জীবন ‘অ্যাবসার্ড’—অর্থহীন। তাই জীবনের অর্থ খুঁজতে যাওয়ারও কোনো মানে নেই। আমরা জীবনকে অর্থময় মনে করে অর্থ খুঁজি। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয় না। ব্যক্তি মানুষ জীবনের অর্থ খোঁজার চেষ্টা করলেও পৃথিবী তার সেই চেষ্টায় একই সুরে, একই তালে সাড়া দেয় না।
দুটি উপায় তখন থাকে মানুষের হাতে—এক. পালিয়ে বাঁচা; দুই. অর্থ খোঁজার চিন্তাটাই বাদ দেওয়া। পালানোর আবার দুটো উপায়—ক. শারীরিকভাবে আত্মহত্যা করা, খ. বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আত্মহত্যা করা।
মানুষ প্রতিমুহূর্তে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়, সে আত্মহত্যা করবে কি না। কাম্যুর মতে, এটাই জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফিলোসফিক্যাল প্রশ্ন। অন্য কথায়, সে সিদ্ধান্ত নেয়, যে জীবন সে যাপন করছে, সেটা যাপন করার কি কোনো মানে হয়! যদি মনে হয়, তার জীবনটা যাপন করার অর্থ আছে, তাহলে সে বেঁচে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। না হলে আত্মহত্যা করে; অর্থহীনতার পৌনঃপুনিকতায় ‘ফুলস্টপ’ দিয়ে দেয়।
শারীরিকভাবে আত্মহত্যা কম মানুষ করলেও অধিকাংশ মানুষ প্রতিনিয়ত বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আত্মহত্যা করে চলেছে। তারা প্রশ্নাতীতভাবে তত্ত্ব ও তথ্যে, এমনকি বানানো গল্প ও ব্যাখ্যাকে বিশ্বাস করে বাস্তবকে ভুলে থাকে বা অস্বীকার করে। কাম্যুর মতে, প্রশ্নাতীতভাবে কোনো তত্ত্ব, তথ্য বা মিথে বিশ্বাস করা বুদ্ধিবৃত্তিক আত্মহত্যা।
প্রশ্নাতীতভাবে কোনো তত্ত্ব, তথ্য বা মিথে বিশ্বাস করা বুদ্ধিবৃত্তিক আত্মহত্যা।
কারণ, এর মধ্য দিয়ে মানুষ নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাকে নিজেই অস্বীকার করে। নিজের অভিজ্ঞতার চেয়ে অন্যের দেওয়া তথ্য ও ব্যাখ্যাকে বেশি মূল্য দেয়। জীবনের অর্থহীনতার বিপরীতে একটি আরোপিত অর্থময়তায় সে বিশ্বাস করতে শুরু করে।
আরেকটা হচ্ছে, জীবনটা এখন অর্থহীন হলেও পরে সুদে-আসলে অর্থ তৈরি হবে—এই আশা ও স্বপ্নে বুক বেঁধে স্বস্তি খোঁজে। বিশ্বাস করতে শুরু করে, জীবন খুবই অর্থপূর্ণ; সেটা বুঝতে না পারাটা তার নিজের সমস্যা। সুতরাং তথাকথিত ‘নিজের বোঝার সীমাবদ্ধতা’ কাটিয়ে উঠতে অন্যের চিন্তা ও মোটিভেশনের আলোকে নিজের জীবনকে দেখে।
তৃতীয় পথ হচ্ছে, এই কিছু হওয়ার আশাটা ত্যাগ করা। জীবন যে অর্থহীন, এই সত্যকে সোজাসাপটা মেনে নেওয়া এবং জীবনের মানে খোঁজার মতো অর্থহীন কাজটি না করা। তাহলে কি মানুষ গতানুগতিকতায় গা ভাসিয়ে দেবে? কাম্যু বলেছেন, না, লিভ লাইক এ রেবেল। সবকিছুকে চ্যালেঞ্জ করো। অচলায়তন ভেঙেচুরে দাও। কিন্তু তাতে জীবন অর্থময় হয়ে উঠবে—এই আশা করার কথা তিনি বলেননি; বরং সময়টা কেটে যাবে কিছু একটা নিয়ে। বর্তমানটা মিইয়ে পড়বে না, এটাই লাভ।
সমস্যা হচ্ছে, আমরা শুধু সেই রীতিনীতিকে প্রশ্ন করি, যেগুলো আমাদের অসুবিধায় ফেলে। যেসব রীতিনীতি আমাদের সুবিধা দেয়, সেগুলো অযৌক্তিক হলেও প্রশ্নাতীতভাবে মেনে নিই। আমরা তাই কাম্যুর ভাবনার রেবেল হতে পারি না।
তিন.
অন্য এক্সিসটেন্সিয়ালিস্ট ফিলোসফারদের সঙ্গে কাম্যুর পার্থক্য হচ্ছে, কাম্যু মনে করেন, অর্থহীনতা শেষ কথা নয়। অর্থহীনতার জটকে পাশে সরিয়ে রেখে জীবনকে উপভোগ্য করা সম্ভব।
সেই আপাত সুখের উপলক্ষগুলো কী হতে পারে? অর্থহীন পৌনঃপুনিকতার জীবনকে পাশে সরিয়ে রেখে ভালো লাগছে এমন কিছুতে মনোযোগ দেওয়া। সমাজের জন্য, মানুষের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করা। ভালো কিছু একটা নিয়ে ব্যস্ত আছি, সময়টা অর্থপূর্ণভাবে ব্যয় হচ্ছে—এটা ভেবে মানসিক শান্তি পাওয়া একটা ভালো উপায় হতে পারে।
আরেকটা হতে পারে জীবনের জন্য উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সেই লক্ষ্যের পেছনে ছুটে সময়টাকে ব্যয় করা। দিন শেষে বড় কিছু হলেও যে জীবন অর্থপূর্ণ হয়ে উঠবে, তা হয়তো না। বড় কিছু হওয়া মানুষেরাও জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে হিমশিম খেয়েই জীবন শেষ করে। কিন্তু সেই হওয়া পর্যন্ত পথচলার সময়টাতে ভাবা যায়, অর্থপূর্ণ কিছু করছি, বড় কিছুর পেছনে দৌড়াচ্ছি।
এখান থেকেই এসেছে বর্তমানে বাঁচার ধারণা। মনে করা যেতে পারে কাম্যুর বিখ্যাত উক্তি লিভ ইন প্রেজেন্ট। অতীতকে পেছনে রেখে, ভবিষ্যতের আশা ছেড়ে বর্তমানকেই রাঙিয়ে তোলার চেষ্টা করা। আমাদের হিপোক্রেসি হচ্ছে, আমরা অতীতকে ধরে রাখতে চাই; ভবিষ্যতের আশাও ছাড়ি না; আবার বর্তমানকেও পুরোপুরি উদ্যাপন করতে চাই। আমাদের তাই কাম্যুর ‘প্রেজেন্ট’-এ বাঁচা হয়ে ওঠে না।
কাম্যু মনে করেন, সকালবেলায় আমরা আত্মহত্যা না করে যখন এক কাপ গরম কফি খেয়ে নতুন দিন শুরু করি, এর মধ্য দিয়েই আমরা জানিয়ে দিই, জীবন নিয়ে এত সহজে হাল ছাড়ছি না; অর্থহীনতার মধ্যেও আপাত আনন্দ খুঁজছি। গূঢ় কোনো অর্থ থাক বা না থাক; জীবন সুন্দর। প্রতিটা বর্তমান-ক্ষণে সেই সুন্দরেরই উদ্যাপন করছি।
আকাশি রঙের বাড়ি। দোতলায় দুটি কক্ষে আলো জ্বলছে। সন্ধ্যার আবছা আঁধারে ছেয়ে আছে বাড়িটির চারদিকের গাছগুলো। সন্ধ্যার নীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ। বাড়ির সামনে ল্যাম্পপোস্টের আলোয় জলাশয়ে প্রকৃতির এই মোহনীয় ছবি প্রতিফলিত হয়েছে।
৩ দিন আগেচারুশিল্প হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। একটি ছবি একটি বিপ্লবের উন্মেষ ঘটাতে পারে। ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিপ্লবের বার্তাও নিয়ে আসে।
১৩ দিন আগেআপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, এই বই পড়লে তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন, অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বইয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেওয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চার শ পৃষ্ঠার বইটির দাম
২০ দিন আগেপ্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ তার দুই যুগের পথচলা (২০০০-২০২৪) স্মরণীয় করে রাখতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী ‘ঐতিহ্য বই উৎসব ২০২৪’ আয়োজন করেছে। আজ ২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় যৌথভাবে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শারমিন আহমদ এবং তরুণ
২০ দিন আগে