Ajker Patrika

টিকার মেধাস্বত্ব উন্মুক্ত হলে বাংলাদেশের কী লাভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
টিকার মেধাস্বত্ব উন্মুক্ত হলে বাংলাদেশের কী লাভ

ঢাকা: করোনা মহামারি মোকাবিলায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকার ওপর ভরসা করছিল বাংলাদেশ। এরই মধ্যে ৫৮ লাখ মানুষ সেরামের উৎপাদিন অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেয়েছে। কিন্তু ভারত টিকা রপ্তানি স্থগিত করায় তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে দিশহারা সরকার করোনা টিকার বিকল্প উৎস খুঁজতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। দেশেই টিকা উৎপাদনের প্রস্তাব দিয়েছে তিনটি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি।

এর মধ্যে গরিব দেশগুলোর জন্য ভ্যাকসিনের মেধাস্বত্ব (পেটেন্ট) উন্মুক্ত করার প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সমর্থন ঘোষণায় আশার আলো দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, মেধাস্বত্ব উন্মুক্ত করা হলে, করোনা টিকার জন্য আর কারো মুখাপেক্ষী থাকতে হবে না। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো নিজেরাই টিকা উৎপাদন করতে পারবে। আরও সহজ হবে বিশ্বজুড়ে করোনা মোকাবিলা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য বলছে, দরিদ্র দেশগুলোর জন্য কোভিড ভ্যাকসিনের মেধাস্বত্ব উন্মুক্ত করার পক্ষে সায় দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা এবং শতাধিক দেশের চাপের মুখে ডোনাল্ড ট্রাম্পকালীন মার্কিন অবস্থান থেকে সরে এসেছেন বাইডেন। প্রেসিডেন্টের এই সমর্থন কার্যকর হলে সক্ষম সব দেশই টিকা উৎপাদন করতে পারবে। যদিও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো। রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যানরা বলছেন, এর ফলে মার্কিন প্রযুক্তি চীনের হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা উন্নয়নশীল দেশের জন্য ভ্যাকসিনের মেধাস্বত্ব উন্মুক্ত করাকে আশীর্বাদ হিসেবে দেখছেন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুশতাক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনেক দিন ধরে বলে আসছে, মহামারির সময় মেধাস্বত্ব রাখা উচিত না। করোনা টিকার মেধাস্বত্ব উন্মুক্ত করা হলে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো উপকৃত হবে। টিকা সংগ্রহ করার জন্য আর অনেক টাকা খরচ করতে হবে না। চেষ্টা করলে করোনা টিকা উৎপাদনের সক্ষমতাও বাংলাদেশের রয়েছে। এখন মেধাস্বত্ব ও ফর্মুলার সঙ্গে দরকার হবে কারিগরি সহায়তা। তাহলে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি মোকাবিলা অনেক সহজ হবে।

টিকার মেধাস্বত্ব উন্মুক্ত করার প্রক্রিয়া দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ আমেরিকার একটি টিকা আমদানি করার জন্য এরই মধ্যে যোগাযোগ করছে। মেধাস্বত্ব তুলে নিলে টিকার দাম অনেক কমে যাবে। আমেরিকার টিকার ফর্মুলা নিয়ে সহজে, কম খরচে উৎপাদন করতে পারবে। বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। আমেরিকার এই উদ্যোগকে আমরা অবশ্যই সাধুবাদ জানাবো।

করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় ভ্যাকসিনসহ জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জামগুলোর মেধাস্বত্ব উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে গত অক্টোবরে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) প্রস্তাব উত্থাপন করে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এ পর্যন্ত তাদের ওই প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে ১০০টিরও বেশি দেশ।

তবে বিষয়টি নির্ভর করছে ডব্লিউটিওর ১৬০ সদস্য দেশের ঐকমত্যের ওপর। একটি দেশও যদি ভেটো দেয় তাহলে পেটেন্ট উন্মুক্ত করার বিষয়টি ঝুলে যেতে পারে। ৩০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর ডব্লিউটিওর মন্ত্রী পর্যায়ের পরবর্তী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই সম্মেলনেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

বোনের বাড়িতে ‘ধর্ষণের’ শিকার: ২৪ ঘণ্টা পরও অচেতন শিশু, মূর্ছা যাচ্ছেন মা

আওয়ামী লীগ নেতা ‘ব্যাটারি বাবু’ ভবনে ঢুকে হাওয়া!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত