ভোলায় ৩ দিনেও উদ্বার হয়নি নিখোঁজ ৮ জেলে 

ভোলা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২২, ১৮: ১০

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনার তিন দিন পরও সন্ধান পাওয়া যায়নি নিখোঁজ আট জেলের। পরিবারের সদস্য হারিয়ে জেলেদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। থামছে না পরিবারের আহাজারি।

গত ৯ আগস্টে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচরে ঝড়ের কবলে ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ হয়েছে কারো বাবা, কারো সন্তান, কারো স্বামী। পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তিকে না পেয়ে শোকাহত হয়ে পড়েছেন জেলে পরিবারগুলো। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে চরফ্যাশনের দুই ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম।

ইউসুফ মাঝির ট্রলারের পাঁচ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও এখনো আট জেলেকে না পেয়ে নিখোঁজদের পরিবারের উৎকন্ঠা বেড়েই চলেছে। নিখোঁজ জেলেরা জীবিত ফিরবেন এই আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন জেলে পরিবারগুলো।

চরমানিকা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিখোঁজ জেলে ইসমাইলের মা শাহিনূর বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলের তিন ছেলে মেয়ে রয়েছে। আমার ছেলে নদীতে মাছ ধরতেন। মাছ বিক্রির টাকায় আমার ছেলের সংসার চলে। কিন্তু ট্রলারডুবির ঘটনার তিন দিন পরও আমার ছেলের সন্ধান পাইনি। ছেলের বউ এবং নাতি-নাতিনদের কে দেখবে? সরকারের কাছে আমার ছেলের জীবিত অথবা মৃত ফেরত চাই।’

এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নেমান রাহুল বলেন, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কোস্টগার্ডকে বলা হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঘটনাস্থলে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নিখোঁজ জেলে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। 

ভোলা কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফট্যানেন্ট কে এম শাফিউল কিঞ্জল আজকের পত্রিকাকে জানান, ভোলায় ডুবে যাওয়া ট্রলারের নিখোঁজ ৮ জেলেকে এখনো উদ্ধার করা যায়নি। তাঁদেরকে উদ্ধারের জন্য কোস্ট গার্ডের সদস্যরা ভোলার মনপুরা, হাতিয়া, চর মানিকা এলাকায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের পূর্ব ও পশ্চিম জোনের সমুদ্রগামী জাহাজ দিয়ে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে।

বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ হওয়া জেলেরা হলেন, চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার চরমানিকা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবু পাটোয়ারীর ছেলে মো. রাছেল (২৮), ২ নম্বর ওয়ার্ডের মোকলেছুর রহমানের ছেলে তছলিম (৩০), ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. জাফরের ছেলে ইসমাইল (৩১), ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আ. মন্নান আখনের ছেলে আ. রহমান আখন (৪০) এবং নাছির মাঝীর ছেলে আ. মন্নান (৩৪)। শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সুলতান আহমেদ মল্লিকের ছেলে নাজু (৫০), মো. আক্কেল আলী বেপারীর ছেলে মো. ছাদেক (৪২) এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবু হাওলাদারের ছেলে মো. জুয়েল (২৯)।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বিকালে চরমানিকা ইউনিয়ন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউসুফ মাঝির মাছ ধরার ট্রলার বৈরি আবহাওয়ায় কারণে সাগরে প্রচণ্ড ঢেউয়ের কবলে পড়ে পায়রা বন্দর সংলগ্ন বঙ্গপসাগরের গভীরে ১৩ জেলে সহ মাছ ধরার ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় ইউসুফ মাঝিসহ পাঁচ জেলে উদ্ধার হলে, বাকি আট জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার হওয়া জেলেরা পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত