মীর মহিবুল্লাহ, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা পৌরসভার সদ্য অপসারিত মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন মর্মে অভিযোগের অনুসন্ধান ইতিমধ্যে শুরু করেছে দুদক।
স্থানীয়রা জানান, আনোয়ার হাওলাদার একসময় জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেলেও তিনি অংশগ্রহণ করেননি। পরে ২০২০ সালে কুয়াকাটা পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তৎকালীন মেয়র বারেক মোল্লাকে হারিয়ে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। এর পরই তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই সেরনিয়াবাত আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন।
কুয়াকাটা পৌরসভার অপসারিত মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের বিরুদ্ধে পৌর শহরে প্রবেশের নামে সড়কে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। তিনি ডিম ও ডাব থেকে ইজারা নিতেন। কুয়াকাটা সি বিচের ময়লা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। রাতে বিচের পাড়ে সড়কবাতিও জ্বালাতেন না। তাঁর এসব স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাননি কেউ।
ডিম ও ডাব থেকে খাজনা আদায়: স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পৌরসভার ভেতরের হাট-বাজার ইজারা দেওয়ার কথা থাকলেও আনোয়ার হাওলাদার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ডিম, ডাব, গোশতমহল বানিয়ে ইজারা দিতেন। নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বার্ষিক ইজারা দিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করেন।
এ বিষয়ে পৌরসভার সামনে মুদি ব্যবসায়ী মো. মঞ্জু মিয়া বলেন, ‘মেয়র এ বছর চৈত্র মাসে ইসমাইলকে ৫ লাখ টাকায় ডিম ইজারা দিয়েছেন। আমরা যারা খুচরা বিক্রেতা রয়েছি, শুধু তাঁর (ইসমাইলের) কাছ থেকেই ডিম কিনে বিক্রি করতে হবে। এ কারণে কুয়াকাটায় ডিমের দাম এক টাকা বেশি। কারণ ইজারাদার ডিমপ্রতি খাজনা নেন। সারা দেশের কোথাও না থাকলেও কুয়াকাটায় ডিম, ডাব, গোশতে ইজারা দিতে হয়েছে।’
ডিম ইজারাদার মো. ইসমাইল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি গত বছর ইজারা নিয়েছিলাম। এ বছর টেন্ডারের মাধ্যমে মেয়রের কাছ থেকে মন্টু দফাদার ৫ লাখ টাকায় ইজারা নেছে। আর দোকান থেকে ডিম পাইকারি বিক্রি করে জাকির। তারা ডিমপ্রতি ২৫ পয়সা খাজনা নেয়, ট্রেতে ৯-১০ টাকার মতো পড়ে।’
ডাবের ইজারাদার আব্দুর রব মাঝি বলেন, ‘আমি তিন বছর পর্যন্ত মেয়রের থেহে ডাব ইজারা নেই। এ বছর চৈত্র মাসে মেয়রেরে ২ লাখ টাহা দিয়া ইজারা নিছি আগামী চৈত্র মাস পর্যন্ত। কুয়াকাটায় ১৫ জনের মতো ডাব বিক্রি করে। ওরা প্রতিদিন ডাব ওঠাইলে ডাবপ্রতি ১ টাহা নেই।’
মহাসড়কে চাঁদাবাজি: সড়ক ইজারা দিয়ে কোনো পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যানবাহন থেকে টোল বা চাঁদা আদায় করতে পারবে না। উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়। সবশেষ ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় আরেক দফা চিঠি দিয়ে দেশের সব পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের মেয়রকে এ তথ্য জানিয়েছে। কিন্তু এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে আনোয়ার হাওলাদার বাস স্ট্যান্ড ইজারার নামে নিজস্ব লোকজন দিয়ে সড়কে চাঁদাবাজি করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুয়াকাটা পৌর বাসস্ট্যান্ডের সামনে মহাসড়কে থামানো হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক, থ্রি হুইলার, লরি। থামিয়ে চালক ও তাঁর সহকারীর কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে টাকা। এই টাকা আদায়ের কাজে রয়েছেন দুজন। তাঁরা মহাসড়কের পাশে চায়ের দোকানে বসা একজনের কাছে চাঁদার টাকা পৌঁছে দিচ্ছেন।
বরিশাল থেকে আকিজ গ্রুপের মালামাল নিয়ে আসা পিকআপচালক মো. পলাশ হোসেন বলেন, ‘কুয়াকাটায় ঢুকতে ১০০ টাকা টোল দিতে হয়। না দিলে ঢুকতে দেয় না। সপ্তাহে দুই-তিনবার আসি, প্রতিবারই দিতে হয়।’
ঢাকা থেকে আসা বসুন্ধরা গ্রুপের ট্রাকচালক মো. জসিম বলেন, ‘পৌরসভা ১০০ টাকা নেয়। এটা নাকি সরকারি চাঁদা। টাকা না দিলে তো আটকে রাখবে।’
এদিকে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সৈকতের ময়লা-আবর্জনা প্রতিদিন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়ে পরিষ্কার করা হয়। রাতে পর্যটকদের জন্য বিচের পাশের সড়কবাতিগুলো পৌরসভা জ্বালায়। তবে গত ১৪ এপ্রিল থেকে হঠাৎ বিচের ময়লা নেওয়া বন্ধসহ রাতে সড়কবাতি না জ্বালানোর নির্দেশ দেন আনোয়ার হাওলাদার।
উপজেলা প্রশাসন সৈকতের দখল হওয়া জমি উদ্ধার শুরু করলে সাবেক এই মেয়র উপজেলা প্রশাসনকে বাধা দেন এবং সৈকতে একক আধিপত্য বিস্তার করতে চান। তাঁর কথা না শোনায় তিনি বিচের ময়লা নেওয়াসহ সড়কবাতি বন্ধ করে দেন।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যসচিব মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সাবেক মেয়র মহোদয় অজানা কারণে বিচের ময়লা নেওয়া ও সড়ক বাতি জ্বালানো বন্ধ করে দেন। বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি আটজন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়ে বিচ পরিষ্কার রাখছে।’
দুদকের অনুসন্ধান: এদিকে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করায় আনোয়ার হাওলাদারের বিরুদ্ধে গত বছর মেয়র থাকাকালীন দুদকে অভিযোগ দিয়েছে এক ব্যক্তি। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুদক। সর্বশেষ গত ৭ জুলাই সতর্কতামূলক সুরক্ষা কাজ প্রকল্পের আওতায় কুয়াকাটা সি বিচের দুই কিলোমিটার সড়কের যাচাই-বাছাই ও মূল্য নিরূপণের অনুসন্ধান করা হয়।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রাসেল রনি বলেন, ‘কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আমরা অনুসন্ধান চালাচ্ছি। অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়াকাটা পৌরসভার অপসারিত মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘আপনারা গিয়ে পৌরসভায় দেখেন রুল টানানো আছে, ডিম, ডাব থেকে কত টাকা নেবে। কুয়াকাটায় কোনো বাজার নাই। এখানে ৩০-৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করে। পৌরসভার খরচ আছে, হোটেলসহ সব মিলিয়ে যে টাকা রাজস্ব আদায় হতো, তা দিয়ে স্টাফদের বেতন দিতে হতো।’ এ ছাড়া কুয়াকাটা পৌরসভার রাস্তা ব্যবহারের কারণে ট্রাক থেকে টাকা নেওয়া হতো, মাইক্রোবাস, মাহেন্দ্র থেকে টাকা আদায় করা হতো না। এখনো পৌরসভা টাকা নিচ্ছে। আর এ টাকা পৌরসভার রাজস্ব খাতে চলে যায়।’
আনোয়ার হাওলাদার আরও বলেন, ‘কুয়াকাটা বিচের ময়লা নেওয়াসহ বিচের পাড়ে সড়কবাতি জ্বালানো বন্ধ করেছিলাম ইউএনওর সঙ্গে রাগ করে। তিনি বলেছিলেন, বিচের পাড়ে মেয়রের কোনো কাজ নেই, এ কারণে। দুদক যে অনুসন্ধান চালাচ্ছে, এ বিষয়ে আমি জানি। যদি আমার সম্পদ বের করে দিতে পারে তাহলে ভালো, আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। উল্টো রাজনীতি করে ৩-৪ কোটি টাকা দেনা হয়ে গেছি। এ ছাড়া সড়কের সব টেন্ডার হয় অনলাইনে, এখানে অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগ নেই। আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা।’
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা পৌরসভার সদ্য অপসারিত মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন মর্মে অভিযোগের অনুসন্ধান ইতিমধ্যে শুরু করেছে দুদক।
স্থানীয়রা জানান, আনোয়ার হাওলাদার একসময় জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেলেও তিনি অংশগ্রহণ করেননি। পরে ২০২০ সালে কুয়াকাটা পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তৎকালীন মেয়র বারেক মোল্লাকে হারিয়ে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। এর পরই তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই সেরনিয়াবাত আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন।
কুয়াকাটা পৌরসভার অপসারিত মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের বিরুদ্ধে পৌর শহরে প্রবেশের নামে সড়কে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। তিনি ডিম ও ডাব থেকে ইজারা নিতেন। কুয়াকাটা সি বিচের ময়লা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। রাতে বিচের পাড়ে সড়কবাতিও জ্বালাতেন না। তাঁর এসব স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাননি কেউ।
ডিম ও ডাব থেকে খাজনা আদায়: স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পৌরসভার ভেতরের হাট-বাজার ইজারা দেওয়ার কথা থাকলেও আনোয়ার হাওলাদার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ডিম, ডাব, গোশতমহল বানিয়ে ইজারা দিতেন। নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বার্ষিক ইজারা দিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করেন।
এ বিষয়ে পৌরসভার সামনে মুদি ব্যবসায়ী মো. মঞ্জু মিয়া বলেন, ‘মেয়র এ বছর চৈত্র মাসে ইসমাইলকে ৫ লাখ টাকায় ডিম ইজারা দিয়েছেন। আমরা যারা খুচরা বিক্রেতা রয়েছি, শুধু তাঁর (ইসমাইলের) কাছ থেকেই ডিম কিনে বিক্রি করতে হবে। এ কারণে কুয়াকাটায় ডিমের দাম এক টাকা বেশি। কারণ ইজারাদার ডিমপ্রতি খাজনা নেন। সারা দেশের কোথাও না থাকলেও কুয়াকাটায় ডিম, ডাব, গোশতে ইজারা দিতে হয়েছে।’
ডিম ইজারাদার মো. ইসমাইল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি গত বছর ইজারা নিয়েছিলাম। এ বছর টেন্ডারের মাধ্যমে মেয়রের কাছ থেকে মন্টু দফাদার ৫ লাখ টাকায় ইজারা নেছে। আর দোকান থেকে ডিম পাইকারি বিক্রি করে জাকির। তারা ডিমপ্রতি ২৫ পয়সা খাজনা নেয়, ট্রেতে ৯-১০ টাকার মতো পড়ে।’
ডাবের ইজারাদার আব্দুর রব মাঝি বলেন, ‘আমি তিন বছর পর্যন্ত মেয়রের থেহে ডাব ইজারা নেই। এ বছর চৈত্র মাসে মেয়রেরে ২ লাখ টাহা দিয়া ইজারা নিছি আগামী চৈত্র মাস পর্যন্ত। কুয়াকাটায় ১৫ জনের মতো ডাব বিক্রি করে। ওরা প্রতিদিন ডাব ওঠাইলে ডাবপ্রতি ১ টাহা নেই।’
মহাসড়কে চাঁদাবাজি: সড়ক ইজারা দিয়ে কোনো পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যানবাহন থেকে টোল বা চাঁদা আদায় করতে পারবে না। উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়। সবশেষ ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় আরেক দফা চিঠি দিয়ে দেশের সব পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের মেয়রকে এ তথ্য জানিয়েছে। কিন্তু এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে আনোয়ার হাওলাদার বাস স্ট্যান্ড ইজারার নামে নিজস্ব লোকজন দিয়ে সড়কে চাঁদাবাজি করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুয়াকাটা পৌর বাসস্ট্যান্ডের সামনে মহাসড়কে থামানো হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক, থ্রি হুইলার, লরি। থামিয়ে চালক ও তাঁর সহকারীর কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে টাকা। এই টাকা আদায়ের কাজে রয়েছেন দুজন। তাঁরা মহাসড়কের পাশে চায়ের দোকানে বসা একজনের কাছে চাঁদার টাকা পৌঁছে দিচ্ছেন।
বরিশাল থেকে আকিজ গ্রুপের মালামাল নিয়ে আসা পিকআপচালক মো. পলাশ হোসেন বলেন, ‘কুয়াকাটায় ঢুকতে ১০০ টাকা টোল দিতে হয়। না দিলে ঢুকতে দেয় না। সপ্তাহে দুই-তিনবার আসি, প্রতিবারই দিতে হয়।’
ঢাকা থেকে আসা বসুন্ধরা গ্রুপের ট্রাকচালক মো. জসিম বলেন, ‘পৌরসভা ১০০ টাকা নেয়। এটা নাকি সরকারি চাঁদা। টাকা না দিলে তো আটকে রাখবে।’
এদিকে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সৈকতের ময়লা-আবর্জনা প্রতিদিন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়ে পরিষ্কার করা হয়। রাতে পর্যটকদের জন্য বিচের পাশের সড়কবাতিগুলো পৌরসভা জ্বালায়। তবে গত ১৪ এপ্রিল থেকে হঠাৎ বিচের ময়লা নেওয়া বন্ধসহ রাতে সড়কবাতি না জ্বালানোর নির্দেশ দেন আনোয়ার হাওলাদার।
উপজেলা প্রশাসন সৈকতের দখল হওয়া জমি উদ্ধার শুরু করলে সাবেক এই মেয়র উপজেলা প্রশাসনকে বাধা দেন এবং সৈকতে একক আধিপত্য বিস্তার করতে চান। তাঁর কথা না শোনায় তিনি বিচের ময়লা নেওয়াসহ সড়কবাতি বন্ধ করে দেন।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যসচিব মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সাবেক মেয়র মহোদয় অজানা কারণে বিচের ময়লা নেওয়া ও সড়ক বাতি জ্বালানো বন্ধ করে দেন। বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি আটজন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়ে বিচ পরিষ্কার রাখছে।’
দুদকের অনুসন্ধান: এদিকে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করায় আনোয়ার হাওলাদারের বিরুদ্ধে গত বছর মেয়র থাকাকালীন দুদকে অভিযোগ দিয়েছে এক ব্যক্তি। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুদক। সর্বশেষ গত ৭ জুলাই সতর্কতামূলক সুরক্ষা কাজ প্রকল্পের আওতায় কুয়াকাটা সি বিচের দুই কিলোমিটার সড়কের যাচাই-বাছাই ও মূল্য নিরূপণের অনুসন্ধান করা হয়।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রাসেল রনি বলেন, ‘কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আমরা অনুসন্ধান চালাচ্ছি। অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়াকাটা পৌরসভার অপসারিত মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘আপনারা গিয়ে পৌরসভায় দেখেন রুল টানানো আছে, ডিম, ডাব থেকে কত টাকা নেবে। কুয়াকাটায় কোনো বাজার নাই। এখানে ৩০-৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করে। পৌরসভার খরচ আছে, হোটেলসহ সব মিলিয়ে যে টাকা রাজস্ব আদায় হতো, তা দিয়ে স্টাফদের বেতন দিতে হতো।’ এ ছাড়া কুয়াকাটা পৌরসভার রাস্তা ব্যবহারের কারণে ট্রাক থেকে টাকা নেওয়া হতো, মাইক্রোবাস, মাহেন্দ্র থেকে টাকা আদায় করা হতো না। এখনো পৌরসভা টাকা নিচ্ছে। আর এ টাকা পৌরসভার রাজস্ব খাতে চলে যায়।’
আনোয়ার হাওলাদার আরও বলেন, ‘কুয়াকাটা বিচের ময়লা নেওয়াসহ বিচের পাড়ে সড়কবাতি জ্বালানো বন্ধ করেছিলাম ইউএনওর সঙ্গে রাগ করে। তিনি বলেছিলেন, বিচের পাড়ে মেয়রের কোনো কাজ নেই, এ কারণে। দুদক যে অনুসন্ধান চালাচ্ছে, এ বিষয়ে আমি জানি। যদি আমার সম্পদ বের করে দিতে পারে তাহলে ভালো, আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। উল্টো রাজনীতি করে ৩-৪ কোটি টাকা দেনা হয়ে গেছি। এ ছাড়া সড়কের সব টেন্ডার হয় অনলাইনে, এখানে অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগ নেই। আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা।’
রাজধানীর সবুজবাগ থানাধীন ভাইগদিয়া এলাকায় মো. নয়ন আহম্মেদ ওরফে রমজান নামের এক যুবককে পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয় জনতা। গতকাল বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় রমজানের এক সহযোগীকে জনরোষ থেকে উদ্ধার করে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।
৯ মিনিট আগেরাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের খোলা স্পটে বর্জ্য অপসারণের সময় বোমা বিস্ফোরণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) চারজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী আহত হয়েছেন। তারা হলেন মো. আলমগীর হোসেন (৩৬), মো. ইয়াছিন (৪০), আসাদ মিয়া (৫৮) ও সাইফুল ইসলাম (৪৭)। আহত পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বর্তমানে রাজধানীর শহীদ সোহ্রাওয
১ ঘণ্টা আগেরাজধানীর বনশ্রীতে লেগুনা স্ট্যান্ডের টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে মো. হাসান হাওলাদার (১৯) হত্যা মামলায় এজাহারনামীয় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে রামপুরা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেপটুয়াখালীর দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষার সময় সূচি পরিবর্তন করে ওই স্কুল মাঠে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল হক নুরের জনসভা হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলায় চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
১ ঘণ্টা আগে