বেতাগীতে নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ

বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৩, ০০: ০০

বরগুনার বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের কাইয়লকাটা এলাকায় পাকা রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এক কিলোমিটার সড়কটি পাকা করার কাজ করছে মেসার্স শাকিল এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসী বলেছেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) লোকজনকে ‘ম্যানেজ’ করে ঠিকাদার দায়সারাভাবে রাস্তার কাজ করছেন। 

বেতাগী উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্র জানায়, মোকামিয়া ইউনিয়নের কাইয়লকাটা থেকে চরখালী পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা পাকা করার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭৬ লাখ টাকা। দরপত্রের মাধ্যমে মেসার্স শাকিল এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এক মাস আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তাটির নির্মাণকাজ শুরু করে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ ১ কিলোমিটারের বালি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে। এখন রাস্তার সাববেজের (নিচের স্তর) কাজ চলছে। রাস্তার পাশের মাটি ভরাটও করা হয়েছে কোনোমতে। পুরো সাববেজের জন্য ব্যবহৃত খোয়া নিম্নমানের ইটের। স্থানীয়ভাবে যা রাবিশ বলে পরিচিত। রাস্তার মাঝে মাঝে স্তূপ করে রাখার পর ইটের গুঁড়ামিশ্রিত ব্যবহার অযোগ্য ইটের খোয়া রাস্তায় বিছিয়ে (স্প্রেডিং) বালু দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। তবে ওই রাস্তার নির্মাণ কাজ দেখার দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি প্রকৌশলী জানিয়েছেন তিনি খোয়া বিছিয়ে (স্প্রেডিং) বালু দিয়ে ঢেকে দেওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না। 

স্থানীয় বাসিন্দা মন্নান জোমাদ্দার, জালাল কাজী, চান মৃধা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তা নির্মাণে যে ইটের খোয়া ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে, এমন খোয়া দিয়ে কোনো কাজ হয় না। লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়ে এ নিয়ে প্রতিবাদও করতে পারছেন না তাঁরা। তাদের আশঙ্কা নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করে ঠিকাদার এভাবে কাজ শেষ করে গেলে অল্পদিনের মধ্যে রাস্তা দেবে ও কার্পেটিং উঠে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যাবে। 

বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের কাইয়লকাটা এলাকায় রাস্তায় রাখা খোয়া। ছবি: আজকের পত্রিকামেসার্স শাকিল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মহিউদ্দিন বলেন, ১ নম্বর খোয়া দিয়ে কাজ চলতেছে। হয়তো সঙ্গে কিছু খারাপ খোয়া থাকতে পারে। আমি সেগুলো ফালিয়ে দিতে বলেছি। ভালো মন্দ অভিযোগ থাকবেই। আমার খোয়া ল্যাবে টেস্ট করা হয়েছে এবং তা পাশও হয়েছে। রাস্তায় তড়িঘড়ি করে ফাস্ট কাজ হচ্ছে। বরগুনা জেলার ভেতরে ৭৫ দিনে দেড় কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ করা একমাত্র ঠিকাদার আমি।’ 

বেতাগী এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘আপাত দৃষ্টিতে আমাদের কাছে খোয়ার মান ভালো মনে হয়েছে। আমারা খোয়া পরীক্ষা করার জন্য ল্যাবে পাঠিয়েছি। যদি রিপোর্টে খোয়ার মান খারাপ আসে তবে ঠিকাদারকে খারাপ খোয়া পরিবর্তন করে ভালো খোয়া দিতে হবে।’ 
 
বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, ‘আমি গিয়ে দেখেছি খোয়ার মান ভালো। কিছু খারাপ খোয়া থাকতে পারে। আপনারা হয়তো শুধু সেই খারাপ খোয়ার ছবি তুলেছেন। খোয়া পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যদি রাস্তা নির্মাণ কাজে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করে থাকলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত