Ajker Patrika

৩৪ মাস ধরে পরিত্যক্ত ভবনে ইউএনও, রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ

মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা)
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ৫০
ইউএনওর পরিত্যক্ত বাসভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইউএনওর পরিত্যক্ত বাসভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা

৩৪ মাস ধরে পরিত্যক্ত তিনটি ভবনে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) কতিপয় কর্মকর্তা–কর্মচারী বসবাস করছেন। এসব ভবনে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে নতুন ভবনের জন্য বরাদ্দ এলেও রহস্যজনক কারণে তা আর এগোয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় উপজেলা শাখা-২ থেকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বাসভবনসহ ছয়টি ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। নিয়ম অনুযায়ী ওই সব ভবনে কেউ বসবাস করতে পারবেন না। ভবনগুলোর বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রহস্যজনকভাবে কয়েক দিন পর আবার সংযোগ প্রদান করা হয়।

অপর দিকে এলজিইডি নিলাম আহ্বান করে তিনটি ভবন ভাঙলে দুটি ভবন থেকে যায়। এর একটিতে বসবাস করছেন ইউএনও, অন্যটিতে কর্মকর্তারা।

সরকারি বিধি অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ষষ্ঠ গ্রেডের বেতন অনুযায়ী বাসভবন ভাড়া বাবদ ৫৫ ভাগ টাকা রাজস্ব খাতে জমা হওয়ার কথা। সে হিসাবে গত ৩৪ মাসে ১২ লাখ ৫৩ হাজার ৭০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হওয়ার কথা। কিন্তু এক টাকাও জমা হয়নি।

২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ২০ মার্চ পর্যন্ত ইউএনও মঞ্জুরুল হক ১১ মাস, ২০২২ সালের ২২ মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউএনও তানভীর হোসেন ১০ মাস, ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইউএনও জে পি দেওয়ান তিন মাস এবং সবশেষ ২০২৪ সালের ১৫ মার্চ থেকে ইউএনও মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ সপরিবারে বাস ভবনটিতে বসবাস করে আসছেন।

আরও জানা গেছে, ইউএনওর বাসভবনটি মেরামতের জন্য গত ৩৪ মাসে কয়েক লাখ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে খরচও করা হয়। এ ছাড়া সরকারি তহবিল থেকে পরিশোধ করা হচ্ছে বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল।

এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ, উপজেলা শাখা-২ উপসচিব মোহাম্মদ সামছুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫৬ হাজার ৭১৩ টাকা বরাদ্দ করে।

কিন্তু ইউএনওরা সরকারি বাসাভাড়া ফাঁকি দেওয়ার জন্য প্রভাব খাটিয়ে নতুন বাসভবন নির্মাণ না করে পরিত্যক্ত ভবনে সপরিবারে বসবাস করে আসছেন। আর এসব ভবনের ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারি খরচে বিদ্যুৎ ও গ্যাস। মেরামতের জন্য বছরে ব্যয় হচ্ছে কয়েক লাখ টাকা।

সূত্রে আরও জানা গেছে, অপর দুটি পরিত্যক্ত ভবনে বসবাস করছেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মীর হোসেন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোবায়ের আহম্মেদসহ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা।

এর মধ্যে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন ২০২৩ সালে চৌদ্দগ্রামে যোগদান করার পর উপজেলা কমপ্লেক্সের ডরমিটরিতে সিট বরাদ্দ নেন। কিন্তু তিনি চার মাস ডরমিটরি ব্যবহারের পরে পরিত্যক্ত ভবনেই বসবাস করে আসছেন। এতে করে তিনিসহ ওই সব কর্মকর্তারা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন।

চৌদ্দগ্রামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, উপজেলা কমপ্লেক্সে বসবাসের জন্য উপযুক্ত কোনো আবাসস্থল না থাকায় তিনি বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত ভবনেই অবস্থান করছেন।

৩৪ মাস সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়, এমনটা উল্লেখ করে রহমত উল্লাহ বলেন, তিনি উপজেলার দায়িত্ব নেন গত ১৪ মার্চ। এ ছাড়া পরিত্যক্ত ভবনে সরকারি রাজস্ব আদায়ের সুযোগও নেই।

প্রভাব খাটিয়ে নতুন ভবন নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে, এ তথ্যও সঠিক নয়, এমন দাবি করে ইউএনও বলেন, ভবন নির্মাণের কাজ এলজিইডির মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। এ কারণে ইউএনওর প্রভাব খাটানোর সুযোগ নেই। আর নতুন ভবন নির্মাণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

ইউএনওর দাবি, পরিত্যক্ত ভবন লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে মেরামত করা হচ্ছে এটিও সঠিক নয়।

যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, ‘ডরমিটরিতে বসবাসের সুন্দর পরিবেশ না থাকায় আমি ২০২৪ সালে বরাদ্দ বাতিল করে ইউএনওর মৌখিক অনুমতি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনের বসবাস করে আসছি।’ ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পরিত্যক্ত ভবনের ভাড়া দেব কাকে।’

চৌদ্দগ্রাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. ওয়াহেদুর রহমান বলেন, ‘পরিত্যক্ত ভবনগুলোতে কীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়েছে, তা আমি জানি না। এই বিষয়ে আপনারা ইউএনওর সঙ্গে কথা বলেন।’

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী নুরুজ্জামান বলেন, ‘পরিত্যক্ত তিনটি ভবন নিলামের মাধ্যমে ভেঙে ফেলা হলেও ইউএনওর বাসভবনসহ দুটি ভবন এখনো ভাঙা সম্ভব হয়নি।’ বিদ্যুৎ–গ্যাস সংযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে চিঠি প্রদান করেছি।’ ইউএনওর নতুন বাসভবন নির্মাণ প্রশ্নের এ প্রকৌশলী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’

গ্যাস সংযোগের বিষয়ে জানতে বাখরাবাদ কুমিল্লার ব্যবস্থাপক (এমডি) আনোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুবশক্তির তিন নেতাকে হত্যার হুমকি, সোনারগাঁ থানায় জিডি

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের এনসিপির যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির তিন নেতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নারায়ণগঞ্জের এনসিপির যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির তিন নেতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির নেতাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল রোববার রাতে সোনারগাঁ থানায় জিডি করেছেন জাতীয় যুবশক্তির নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সংগঠক মো. জাহিদুল হক।

জিডিতে জাহিদুল হক উল্লেখ করেন, গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ‘সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে

তাঁর উদ্দেশে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। ওই পোস্টে তাঁর সঙ্গে জাতীয় যুবশক্তি নারায়ণগঞ্জের আহ্বায়ক শাকিল সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব অনিক খাঁন সিয়ামের ছবি ব্যবহার করে গালাগালি ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। ফেসবুক পোস্টে আরও লেখা ছিল—‘লিস্টে রাখলাম হঠাৎ করেই সোনারগাঁবাসী দেখবে লাশ’।

মো. জাহিদুল হক জানান, পোস্টটিতে তাঁকে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত দেখিয়ে বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তাঁর সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং জীবন নিরাপত্তাঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। তিনি আরও জানান, তিনি জাতীয় যুবশক্তি (এনসিপি) নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সংগঠক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলার সাবেক মুখ্য সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল আমীন বলেন, ‘এ ঘটনায় ইতিমধ্যে জিডি করা হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে কথা হচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে আমরা কেন্দ্রীয় নেতারা অবগত রয়েছি।’

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিববুল্লাহ বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় জিডি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ফেসবুক আইডিটি শনাক্তের জন্য সাইবার ক্রাইম ইউনিটের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গমের জমিতে ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে একজন নিহত

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
গমের জমিতে ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে একজন নিহত

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় গমের জমিতে ছাগল ঢুকে পড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে সাহাবুল ইসলাম (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী পারুল আক্তার (৪৮) ও ছেলে। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের মুন্দখৈর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাহাবুল ইসলাম মুন্দখৈর এলাকার মৃত মোজাফফর হোসেনের ছেলে।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একই এলাকার সালামের দুটি ছাগল সাহাবুল ইসলামের গমের খেতে ঢুকে চারা নষ্ট করে। এ নিয়ে সাহাবুল ছাগল দুটিকে খোঁয়াড়ে দিলে সালামসহ কয়েকজন তাঁর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে চলে যান। পরে বিষয়টি নিয়ে সাহাবুল ইসলাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

গতকাল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেয় এবং বিষয়টি থানায় বসে মীমাংসার কথা বলে। তবে পুলিশ চলে যাওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর সন্ধ্যার দিকে সালামসহ অন্যরা হাঁসুয়া, চাকু, রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে সাহাবুল ইসলামের ওপর হামলা চালান। তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকেও মারধর করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাহাবুল ইসলামের মৃত্যু হয়।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় পারুল আক্তার ও তাঁদের ছেলেকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত সালাম ও তাঁর ছেলে রিপনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিক্ষার্থী হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাবেক এমপি বাদলকে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিউমার্কেট থানা এলাকায় শিক্ষার্থী শামীমকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম গ্রেপ্তার দেখানোর এ নির্দেশ দেন।

আজ ফয়জুর রহমানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার এসআই মো. ওমর ফারুক। শুনানি শেষে আদালত বাদলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. হারুন অর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তদন্তকালে এই মামলায় সাবেক এমপি ফয়জুর রহমান বাদলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের জন্য তিনি এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের প্ররোচনা এবং অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন বলে প্রাথমিক সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এবং আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই করতে তাঁকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজ এলাকায় আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে আন্দোলনকারীদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শামীম গুরুতর আহত হন। পরে সুস্থ হয়ে তিনি মামলা দায়ের করেন।

উল্লেখ্য, ‎গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার খিলক্ষেত থানা এলাকা থেকে সাবেক এই এমপিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের হওয়া একাধিক মামলায় তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

কুমিল্লা প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৬
নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ, সিটি করপোরেশন ও সেনানিবাস) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তা জমা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর

নানুয়ার দীঘিসংলগ্ন নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

মনিরুল হক সাক্কু বলেন, তিনি শুরু থেকেই কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মনোনয়ন কেনার বিষয়টি ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। এ কারণে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেবেন না। তবে ভবিষ্যতে যদি এ আসনে দলীয় মনোনয়নে পরিবর্তন আসে, সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক এমপি আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের ব্যাপারে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, অতীতের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইয়াছিন তাঁর শ্যালককে প্রার্থী করেছিলেন। এতে ভোট বিভাজনের কারণে তিনি অল্প ব্যবধানে পরাজিত হন। একই ব্যক্তি পরবর্তী উপনির্বাচনেও অংশগ্রহণ করেন। এসব ঘটনায় তিনি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কাউকে দোষারোপ করেননি। এ বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা প্রকাশ্যে আনার আহ্বান জানান তিনি।

মনিরুল হক সাক্কু আরও বলেন, চূড়ান্ত মনোনয়নে দলের মনোনয়ন পরিবর্তন হয়ে যদি হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিন পান তাহলে তিনি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করবেন।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনিরুল হক সাক্কু এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে সাক্কু অল্প ব্যবধানে পরাজিত হন। পরে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে উভয়কেই বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন মনিরুল হক সাক্কু। গতকাল রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাঁর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত