পান্নার মরদেহ আনতে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পরিবার

পিরোজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২৪, ২০: ৫৭
Thumbnail image

ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মেঘালয়ের জয়ন্তিয়া হিলস জেলার একটি সুপারিবাগান থেকে উদ্ধার হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা ইসহাক আলী খান পান্নার অর্ধগলিত লাশ। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব জয়ন্তিয়া হিলস জেলার পুলিশ সুপার গিরি প্রসাদ এই তথ্য জানিয়েছেন। 

ইসহাক আলী খান পান্নার নিকটাত্মীয় (বড় ভাইয়ের শ্যালক—বেয়াই) পিরোজপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিন খান জানান, পূর্ব জয়ন্তিয়া হিলস জেলার জেলা পুলিশ সুপার গিরি প্রসাদ ২৮ আগস্ট এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ভারত–বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে পূর্ব জয়ন্তিয়া হিলস জেলার ডোনাভই গ্রাম থেকে ২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় মরদেহটি পাওয়া যায়। মেঘালয় পুলিশ পান্নার পাসপোর্ট দেখে তাঁর পরিচয় শনাক্ত করেছেন। এ মুহূর্তে অধিকতর শনাক্তকরণ ও পোস্ট মর্টেমের জন্য মরদেহটি খলিহরিয়াত সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে যাবতীয় কার্যক্রম শেষে পান্নার মরদেহ শনাক্ত এবং কারও দাবির ব্যাপারে অভিযোগের জন্য পূর্ব জয়ন্তিয়া হিলস জেলার খলিহরিয়াত সিভিল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মেঘালয় পুলিশের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ২৬ আগস্ট পূর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড়ের ডোনাভই গ্রামের একটি সুপারিবাগানে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এলাকাটি ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে দেড় কিলোমিটার ভেতরে। সঙ্গে থাকা পাসপোর্ট দেখে লাশ শনাক্ত করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে আরও বলা হয়েছে, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন থেকে বোঝা যায়, শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন পান্না। গলায় ফাঁস লাগার কারণে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তিনি মারা গিয়ে থাকতে পারেন। শরীরের বিভিন্ন স্থান, কপাল ও মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মরদেহ ফরেনসিক বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি। 

জসিম উদ্দিন খান বলেছেন, সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় পান্নার সঙ্গে মোটা অঙ্কের নগদ অর্থও ছিল। তবে তার পরিমাণ তিনি বলতে পারেননি।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা পান্না আত্মগোপনে ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সরকার পতনের পর তিনি সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেন। 

২৬ আগস্ট সকালে পান্না ও আরও কয়েকজন সিলেটের তামাবিল এলাকা দিয়ে মেঘালয়ে পাড়ি জমান বলে জানা যায়। ওই দিন সকাল ৬টার দিকে তাঁরা সীমান্ত পার হয়ে কাছাকাছি একটি পাহাড়ে পৌঁছান। সেখানে পান্নার হঠাৎ গুরুতর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এ কারণে তিনি আর হাঁটতে পারছিলেন না। পথিমধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

একাধিক অসমর্থিত সূত্র বলছে, পান্না ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) ধাওয়া খেয়ে পালানোর সময় মারা গিয়ে থাকতে পারেন। মূলত, কর্তৃপক্ষ এখনো তাঁর মৃত্যুর পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি তদন্ত করছে। 

১৯৯৪ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন ইসহাক আলী খান পান্না। ২০১২ সালের সম্মেলনের পর ইসহাক আলী খান পান্না আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক হন। পান্নার স্ত্রী আইরীন পারভীন বাঁধন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল মারা যান। আইরিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন্নাহার হলের ভিপি ছিলেন। পরে সরকারের উপসচিব হন। এই দম্পতির ইফতেশাম আফতারি আরিয়ান নামে এক ছেলে রয়েছে। 

ইসহাক আলী খান পান্নার বেয়াই জসিম উদ্দিন খান বলেন, ‘মেঘালয় পুলিশের মাধ্যমে পান্নার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করেছি। আশা করছি, খুব শিগগিরই পান্নার মরদেহ আমরা দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত