৩ মাস বন্ধ বিদ্যুৎকেন্দ্র, অতিষ্ঠ ভোলার জনজীবন

মো. সাইফুল ইসলাম, বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০: ৪৮
Thumbnail image

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাড়ে তিন মাস ধরে বন্ধ ভোলার সাড়ে ৩৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র। ফলে অসহনীয় লোডশেডিংয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভোলাবাসী। সম্প্রতি দাবদাহে এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। লোডশেডিংয়ের কারণে চিকিৎসাসহ জরুরি সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কখনো ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কখনো ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকছে উপকূলীয় জেলা ভোলার তাপমাত্রা। এতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোলা সদর উপজেলায় ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিং চলছে। মনপুরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। সেখানে রাতে বিদ্যুৎ থাকে না। দিনে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে তিন থেকে চার ঘণ্টা। একই চিত্র চরফ্যাশনের চর কুকরি-মুকরির। দৌলতখান, মদনপুরের চিত্র একটু ভিন্ন। এ দুই উপজেলায় দিনে ছয়-সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। 

সেখানকার পরিস্থিতি তুলে ধরে ভোলা বিদ্যুৎ সরবরাহ ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, ভোলায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৯০ মেগাওয়াট, তবে পাচ্ছি ৬০ মেগাওয়াট। বাধ্য হয়েই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। 

জানা যায়, ২০০৯ সালে সিনহা গ্রুপের ভাড়াভিত্তিক ৩৪ দশমিক ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে। গ্যাসনির্ভর এই বিদ্যুৎকেন্দ্র এর আগেও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুবার বন্ধ ছিল। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গত ২৫ জানুয়ারি আবারও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আশা করি আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা সম্ভব হবে।’

জনজীবন বিপর্যস্ত
বিদ্যুৎ সরবরাহ না পেয়ে এরই মধ্যে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভোলা সদরের ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী জানান, অনেক দিন অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তবে কর্মচারীদের মজুরি দিতে হচ্ছে প্রতিদিন। আবার চিকিৎসার জন্য চরফ্যাশন, মনপুরা, তজুমদ্দিন, লালমোহন, বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখান থেকে জেলা সদরে আসা রোগীরাও পড়েছে বিপাকে। হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় রোগীরা সেবাবঞ্চিত হচ্ছে। 

ভোলা সদরের একাধিক অটোরিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যুৎ না পাওয়ায় ঠিকমতো অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জ দিতে পারছেন না তাঁরা। এতে করে আয় যেমন কমেছে, তেমনি অটোরিকশার ব্যাটারিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে ভোলাবাসী কিছুটা দুর্ভোগে পড়েছে। বিষয়টি বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত