উখিয়ার ক্যাম্পে আগুন নাশকতা কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে, সন্দেহভাজন রোহিঙ্গা আটক

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি  
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৩, ২১: ০৪
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৩, ২২: ৫১

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবারও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। এ ঘটনায় নাশকতার মাধ্যমে ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার সন্দেহে এক রোহিঙ্গাকে আটক করেছে ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এপিবিএন। আজ রোববার ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-১৫ ব্লকে আগুনের সূত্রপাত ঘটলে ওই রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের দুটি সশস্ত্র সংগঠন আরসা ও আরএসওয়ের মধ্যে কয়েক দিন ধরে প্রকাশ্যে বিরোধ চলছে, এ ছাড়া গত চার মাসে ১৫টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। একপক্ষ আরেক পক্ষকে ক্যাম্পছাড়া করতে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন সাধারণ রোহিঙ্গারা। 

রোহিঙ্গা নেতা কামাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে আশ্রয়শিবিরে মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলি-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা হতাহত হয়েছেন। এর জেরে একপক্ষ আরেক পক্ষকে উচ্ছেদ করতে শিবিরে আগুন দিতে পারে।’ 

ইউটিউবে আরসা নেতার উসকানিমূলক অডিও
গত শুক্রবার (৩ মার্চ) রোহিঙ্গাভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল ‘রোহিঙ্গা রিয়েল ভয়েস’-এ প্রচারিত একটি ভিডিওতে আরসা নেতাকে উদ্ধৃত করে এক রোহিঙ্গার অডিও প্রচার করা হয়। অডিওতে অজ্ঞাতপরিচয় ওই রোহিঙ্গা নিজেকে আরসার সদস্য দাবি করে ক্যাম্পে যারা আরসাকে ‘দমনে’ জড়িত তাদের হুঁশিয়ারি দেন। 
 
বার্তায় আরও বলা হয়, ক্যাম্পে বড় ধরনের ঘটনা ঘটানো হবে, যদি আরসার ওপর ক্ষোভ বন্ধ না হয়। বার্তাটি প্রচারের দুই দিনের মাথায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। 

এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা কি না, তা আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না। সন্দেহভাজন একজনকে এরই মধ্যে আটক করা হয়েছে। পরিকল্পিত ঘটনা কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ একই কথা জানান কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম। 

পুলিশ সুপার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অগ্নিদুর্গত রোহিঙ্গাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে তৎপরতার পাশাপাশি নাশকতা কি না তা খতিয়ে দেখছি।’ 

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে ২২ মার্চ একই ক্যাম্পসহ পার্শ্ববর্তী তিনটি ক্যাম্পে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। সে সময় আগুনে ১০ হাজারেরও বেশি বসতঘর পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা সদস্য গৃহহারা হয়েছিল। এ ছাড়া দগ্ধ হয়ে দুই শিশুসহ ১৫ জন রোহিঙ্গা মারা যায়। 

আরও পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত