Ajker Patrika

পর্যটকদের মুগ্ধ করবে লক্ষণ্যা ঝরনা

হিমেল চাকমা, রাঙামাটি
আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২১, ২০: ০০
পর্যটকদের মুগ্ধ করবে লক্ষণ্যা ঝরনা

রাঙামাটির লক্ষণ্যা মানুষের কাছে এখনো এ নামটি অপরিচিত। এলাকায় প্রবেশ করলে পাহাড়ের গহিন বনের ওপর থেকে আঁচড়ে পড়া পানির ঝমঝম শব্দ কানে আসে। পাহাড় বেয়ে নিচে নামলে দেখা মিলে ছড়ার। ছড়ার পথ ধরে হাঁটলে চোখে পড়বে একাধিক ঝরনা। সবগুলো ঝরনায় মনোমুগ্ধকর। ঝরনায় যাওয়ার পথে বা আশপাশে নেই কোন কাদা। শত বছরের পাথরের আস্তরণ ঝরনাগুলোর আশপাশকে করেছে আকর্ষণীয়। 

রাঙামাটির শহর থেকে সবচেয়ে কাছের ঝরনাগুলো যে কাউকে মুগ্ধ করবে। এ ঝরনার আশপাশে নেই কোন কৃত্রিমতার ছোঁয়া। কিন্তু এসব ঝরনা সম্পর্কে কেউ না জানায় গামবাসী ছাড়া পর্যটকের আনাগোনা একেবারে নেই। ছড়ার পথটি পায়ে হেঁটে ব্যবহার করে লক্ষণ্যা গ্রামের মানুষজন। 

লক্ষণ্যা গ্রামের গ্রাম প্রধান জ্ঞান নন্দ চাকমা বলেন, ঝরনাটি মানুষের কাছে এখনো অপরিচিত। শুধুমাত্র চাকমা রাজা দেবাশীষ রায় কয়েকবার এসেছিলেন। তিনি ছাড়া এ ঝরনায় তেমন কোন লোক আসেনি। এ ঝরনাটি সম্পূর্ণ রক্ষিত অবস্থায় আছে। সুবলং, চিলেক ডাক এ দুটি ঝরনার চেয়ে শতগুণে অপূর্ব আমাদের লক্ষণ্যা ঝরনাটি। এখানে একাধিক ঝরনা আছে। প্রত্যকটি অনেক সুন্দর। এ ঝরনাগুলোর পানিতে কোন ময়লাও নেই। কারণ এ ছড়ার আশপাশে কোন বসতি নেই। এ পানি আমরা পান করি। 

গ্রাম প্রধান আরও বলেন, এ ছড়ায় রাতে প্রচুর কাঁকড়া ঘুরে বেড়ায়। মাছও আছে। রাঙামাটি শহরের পাশে একমাত্র এ ঝরনাগুলো রক্ষিত অবস্থায় আছে। ঝরনাগুলোতে সারা বছর কম বেশি পানি থাকে। যদি এসব ঝরনা দেখতে পর্যটক আসে তাহলে আমরা খুশি হব। 

রাঙামাটির লক্ষণ্যা ঝরনাগুলো উন্নত করা হলে সম্ভাবনাময় একটি পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে উঠবেগ্রাম প্রধান শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের একটি জিনিস নিয়ে ভয় হয় তা হল পর্যটক আসলে সরকার আমাদের এ জমিগুলো অধিগ্রহণ করবে কিনা? আমাদের উচ্ছেদ হতে হয় কিনা? কারণ যেখানে পর্যটন হয় সেখান থেকে স্থানীয়দের উচ্ছেদ করা হয়। এ ভয়ে আমরা এটি কাউকে বলি না। এ ঝরনা যদি আমাদের কল্যাণে ব্যবহার করা হয় তাহলে পর্যটক আসলে আমাদের কোন বাধা থাকবে না। বরং আমরা পর্যটকদের উপকার করব।

বালুখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিজয়গিরি চাকমা বলেন, পর্যটন নিয়ে পাহাড়িদের মাঝে আতঙ্ক কাজ করে। যেখানে পর্যটন হয় সেটি দখলে নেওয়া হয়। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশীদারত্ব থাকে না। এ বাক্যগুলো সবার মুখে মুখে রয়েছে। সে জন্য স্থানীয়রা আতঙ্কে থাকে। 

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, লক্ষণ্যার প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্পূর্ণ ঠিক রেখেছেন স্থানীয়রা। পর্যটক ঝরনায় এলে কোন অসুবিধা হবে না। আমরা চাই এখানে পর্যটক এই ঝরনাগুলোতে আসুক। পর্যটক এলে স্থানীয় মানুষদের কর্মসংস্থান হবে। তবে রাঙামাটি শহর থেকে ঝরনাটি কাছে হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা একটু খারাপ। এগুলো উন্নত করা গেলে লক্ষণ্যা ঝরনাগুলো সম্ভাবনাময় একটি পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে উঠবে। 

যেভাবে ঝরনায় যেতে হবে: ঝরনা দেখতে হলে যেতে হবে নৌ পথে। রাঙামাটি শহর থেকে বালুখালী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন পেরিয়ে নির্বাণ নগর বনবিহারের আগে পূর্বদিকে বসন্ত হাইস্কুলের দিকে যেতে হবে। যে পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদের পানি গেছে সে পর্যন্ত ছড়ার মুখে ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিতে হবে। স্পিড বোটও যাওয়া যায়। এরপর ছড়া পথ দিয়ে হাটতে হবে ৩০ / ৩৫ মিনিট। যাওয়ার পথে চোখে পড়বে ছোট ছোট ঝরনা। মূল ঝরনায় যেতে আরও একটু হাঁটতে হবে। তবে যাওয়ার সময় অবশ্যই সব প্রয়োজনীয় খাবার সঙ্গে নিতে হবে। সেখানে কোন দোকান বা রেস্টুরেন্ট নেই। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় সাবেক শিবির নেতা আটক

ঢাবিতে জানাজা হলো না সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিকের, তীব্র সমালোচনার মুখে প্রশাসন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করে রাষ্ট্রদূতের ফেসবুকে পোস্ট, পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত

প্রত্যাহার হওয়া ওসির খোঁজে থানায় ভিড় পাওনাদারদের

রাজধানীতে মাদ্রাসাছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণধোলাই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত