ব্রিটিশ আমলের জাহাজ নিয়ন্ত্রণ অফিস ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে

মো. ইমরান হোসাইন, কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৯: ৩১
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১০: ০৫

চট্টগ্রামের দেয়াং পাহাড়ে ফিরিঙ্গি বন্দর নামে পরিচিত পাহাড়ের চূড়ায় উত্তর বন্দর এলাকায় অবস্থিত ব্রিটিশ শাসনামলের চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন জাহাজ নিয়ন্ত্রণ অফিস। সংরক্ষণের অভাবে কয়েক যুগ ধরে সেটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলের অফিসটি কালের বিবর্তনে বন্ধ হয়ে গেছে। তবে কালের সাক্ষী হয়ে জরাজীর্ণ অবস্থায় এখনো দাঁড়িয়ে আছে দেয়াং পাহাড়ে। ২০ বছর আগে সরকারের কিছু লোককে এখানে আসা-যাওয়া করতে দেখা গেলেও এখন আর কারও আনাগোনা দেখা যায় না বলে জানান স্থানীয়রা। লোককাহিনি অনুসারে, ভবনটি ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল। ভবনের শীর্ষে থাকা সিঁড়ি থেকে তারা চারদিকে নজরদারিসহ বাইনোকুলার দিয়ে কর্ণফুলী নদী ও সমুদ্রে জাহাজ চলাচল পর্যবেক্ষণ করত।

সম্প্রতি সরেজমিনে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উত্তর বন্দর মেরিন একাডেমি এলাকায় পাহাড়ের চূড়ায় দ্বিতল ভবনটি মোগল ও পাশ্চাত্য যুগের অনন্য স্থাপত্য। দুই ফুট চওড়া দেয়াল ইট-চুন-সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ভবনটিতে ১১টি কক্ষের পাশাপাশি সিঁড়ি রয়েছে। জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকা ভবনের ছাদ, কক্ষ ও সিঁড়ির প্রবেশদ্বার ভেঙে পড়েছে। বছরের পর বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় ভবনটি আগাছায় ছেয়ে গেছে।

দ্বিতীয় তলায় পরিত্যক্ত ভবনের কক্ষটি পরিণত হয়েছে মাদক সেবনের নিরাপদ আস্তানায়। বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদকসেবীরা এখানে ছুটে আসে। বিকেল থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত আনাগোনা থাকে মাদকসেবীদের।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির আহমদ (৫০) বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর পতেঙ্গায় চলে যাওয়ার পর থেকে এটি পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়েছে। ভয়ে কেউ এখন ওই দিকে যান না। এটি এখন খারাপ মানুষদের নিরাপদ আস্তানা।’ বন্দর এলাকার মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, ‘এই অফিসে এলাকার অনেকেই চাকরি করেছেন। এখান থেকে কর্ণফুলী নদীতে জাহাজ প্রবেশ আর বাইরের দৃশ্যটা এখনো পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। ভবনটির করুণ অবস্থা দেখে খারাপ লাগছে। ভবনটি রক্ষায় সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’

স্থানীয় বৈরাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোয়াব আলী বলেন, ‘এটি রাষ্ট্রের সম্পদ। এটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া খুবই জরুরি। আমি প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’ ইউএনও মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, ‘সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে বন্দর আধুনিকায়ন ও কাজ প্রসারিত হওয়ার কারণে বন্দরের দাপ্তরিক সব কাজ কর্ণফুলী নদীর অপর প্রান্তে স্থানান্তর করা হয়। বন্দরের পুরোনো ভবনটি প্রত্নতাত্ত্বিকদের সঙ্গে পরামর্শ করে পুরাকৃতি হিসেবে সংরক্ষণের চেষ্টা করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত