সংরক্ষিত বনে হেলিকপ্টার থেকে ছিটানো হলো বিরল ও বিলুপ্ত ৩০ প্রজাতির বীজ

প্রতিনিধি, লামা (বান্দরবান)
প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২১, ১৮: ৫০
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২১, ২০: ১০

লামা ও বান্দরবান বন বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের সাহায্যে আকাশ হতে সিডবল নিক্ষেপের মাধ্যমে মাতামুহুরি ও সাঙ্গু সংরক্ষিত বনে ৩০ প্রজাতির বনজ বীজ ছিটানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার সময় মাতামুহুরি সংরক্ষিত বনে এ বীজ সিড বলের মাধ্যমে ছিটানো হয়। এ সময় চাম্পাফুল, পুতিজাম, ঢাকিজাম, কালাজাম, গামার, করই, জারুল, হারগাজাসহ ইত্যাদি প্রজাতির বীজ বপন করা হয়েছে। 

চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. আবদুল আওয়াল সরকার জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে হেলিকপ্টারের সাহায্যে ওপর থেকে সিডবল নিক্ষেপের মাধ্যমে বনায়ন এবারই প্রথম। তবে এ পদ্ধতিতে বীজ বপন বাংলাদেশে এটি দ্বিতীয়। এ সময় তিনি বলেন, ব্রিটিশ আমলের পর এই প্রথম রিজার্ভ বন এলাকা রক্ষায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মাতামুহুরি সংরক্ষিত বনের আয়তন ১ লাখ ২ হাজার একর ও সাঙ্গু সংরক্ষিত বনের আয়তন ৮৩ হাজার ২০০ একর। এ রিজার্ভ বনের যেসব এলাকায় গাছের সংখ্যা কম এসব এলাকাতেই হেলিকপ্টার থেকে বীজ ছিটানো হয়েছে। 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের বান্দরবান রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হক, এএফডব্লিউসি, পিএসসি এ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য জীব-বৈচিত্র্য দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে উদ্ভিদ ও প্রাণী বৈচিত্র্যের অনেক প্রজাতি ইতিমধ্যে আমাদের পরিবেশ থেকে হারিয়ে গেছে। বহু উদ্ভিদ ও প্রাণী বিরল তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। এ ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে বৃক্ষ ও বনাঞ্চল। 

হেলিকপ্টারে করে ছিটানো হলো বিরল প্রজাতির ৩০ বীজজলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব হ্রাস, জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং সর্বোপরি দেশের উন্নয়নের মূলধারা অব্যাহত রাখতে হলে ব্যাপক হারে বনায়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরি। একই সঙ্গে জনসাধারণকে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন করা এবং বনাঞ্চল সৃষ্টিতে উদ্বুদ্ধ করা একান্ত অপরিহার্য বলেও জানান মো. জিয়াউল হক। 

লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম কায়চার বলেন, মাতামুহুরি ও সাঙ্গু সংরক্ষিত বনে বনায়ন কর্মসূচিতে ৩০ প্রজাতির ৪৮০ কেজি বিরল ও বিলুপ্ত প্রজাতির বীজ ছিটানো হয়েছে। যা জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এ কার্যক্রম সরকারি পর্যায়ে নয় শুধু মাত্র লামা ও বান্দরবান বন বিভাগের উদ্যোগে এ বীজ ছিটানো হয়েছে। 

এ ছাড়া আলীকদম উপজেলার আলীকদম-পোয়ামুহুরী সড়কে লামা বন বিভাগ ও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর (বিএটিবি) বনায়ন প্রকল্পের আওতায় বিস্তীর্ণ রিজার্ভ এলাকায় ফলজ, বনজ ও সৌন্দর্য বর্ধনকারী বিভিন্ন প্রজাতির চারা রোপণ করা হয়েছে। বিএটিবির বনায়ন প্রকল্পের আওতায় সড়ক সৌন্দর্য বর্ধনে লামা বন বিভাগকে ৫৫ হাজার চারা দেওয়া হয়েছে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত