Ajker Patrika

১০০ গাছ কেটে সাবাড়, অজুহাত পরিবেশ নষ্টের

মো. ইমরান হোসাইন, কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ১১ জুন ২০২৪, ১৫: ৪০
১০০ গাছ কেটে সাবাড়, অজুহাত পরিবেশ নষ্টের

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে দাবি করে শতাধিক ফলদ-বনজ গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। দুই দিন ধরে এসব গাছ কেটে রাতের আঁধারে কাটা অংশ সরিয়ে ফেলেছেন ঠিকাদার। এদিকে প্রচণ্ড গরমের সময় গাছ কাটায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাসপাতালে আসা রোগী ও স্বজনেরা। হাসপাতালের পরিবেশ সুরক্ষায় গাছ কাটা বন্ধেরও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা যায়, হাসপাতাল কম্পাউন্ডের বিভিন্ন স্থানে ফলদ-বনজ গাছের গুঁড়ি পড়ে রয়েছে। অনেক বছরের পুরোনো এসব গাছ কেটে নিয়ে গেলেও এখনো মাটিতে রয়েছে গোড়া। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এভাবে গাছ কেটে ফেলায় হাসপাতালসংশ্লিষ্ট ও স্থানীয়দের মধ্যে চাপা ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

তবে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় এসব কেটে ফেলা হয়েছে বলে দাবি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মামুনুর রশিদের। এ ছাড়া সপ্তাহখানেক আগে তাঁর যোগসাজশে হাসপাতালে আবদুল কুদ্দুস নামক নিযুক্ত খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে তিনটি মেহগনি ও দুটি কড়ইগাছ কেটে নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার পর পর্যায়ক্রমে বেশ কিছু ফলদ-বনজ গাছ লাগানো হয়। বর্তমানে এগুলো প্রায় ৫০ বছরের পুরোনো। এ ছাড়া কিছু শত বছরের পুরোনো গাছও ছিল। এগুলোর মধ্যে মেহগনি, কড়ই, আকাশিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে।

হাসপাতালসংশ্লিষ্ট, রোগী ও স্বজনদের দাবি, প্রচণ্ড গরমে এসব গাছ হাসপাতালের পরিবেশকে ঠান্ডা রাখত। এ ছাড়া হাসপাতালে সার্বক্ষণিক জেনারেটরের ব্যবস্থা না থাকায় রোগী ও স্বজনেরা এগুলোর মাধ্যমে শীতলতা অনুভব করত। কিন্তু দুই-তিন দিন আগে থেকে হঠাৎ এসব কাটা শুরু করলে লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এখন এগুলো কাটার কারণে হাসপাতালজুড়ে তাপপ্রবাহ বেড়ে গেছে বলে দাবি তাঁদের।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফলদ-বনজ গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছেচিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনেরা জানান, হাসপাতালে অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকে না। কিন্তু বিদ্যুৎ চলে গেলেও ঠিকমতো চালু করা হয় না জেনারেটর। প্রচণ্ড গরমে রোগী ও স্বজনেরা এসব গাছের নিচে বিশ্রাম নিতেন। এখন সেই পরিবেশ আর নেই। সরকার যেখানে গাছ লাগানোর জন্য বলছে, সেখানে সরকারি কর্মকর্তারা গাছ কেটে পরিবেশ নষ্ট করছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গাছ হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট করছে। পুকুরের পানি নষ্টসহ বিদ্যুতের তারে লাগছে। এতে রোগীর ক্ষতি হচ্ছে। তাই সিভিল সার্জন, বন বিভাগ ও হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের সঙ্গে কথা বলে নিলামের মাধ্যমে এগুলো কাটা হয়েছে।’

সরকার যেখানে গাছ লাগাতে গুরুত্ব দিচ্ছে, সেখানে এত গাছ কীভাবে কাটলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি একজন গাছপ্রেমী। ক্ষতিকারক গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া আমরা নতুন করে গাছ লাগাব, তখন আবারও সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত