চকরিয়ায় লাম্পি স্কিন রোগে ১০০ গরুর মৃত্যু, দুশ্চিন্তায় খামারিরা

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৪, ১৩: ৪৮
Thumbnail image

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি)। এই চর্মরোগে সংক্রমিত হয়ে উপজেলায় এক মাসে অন্তত ১০০ গরু মারা গেছে। এতে খামারিরা চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে সংক্রমিত পশুকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা ও খামারিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

প্রাণিসম্পদ কার্যালয়, খামারি ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত চর্মরোগটি গ্রীষ্মের শেষ ও বর্ষার শুরুর দিকে বছরে দুবার ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত মশা, মাছি ও বিশেষ পোকার মাধ্যমে গরুর দেহে ভাইরাস ছড়ায়। এ ছাড়া সংক্রমিত গরুর সঙ্গে খাবার গ্রহণ করলেও এই রোগ ছড়াতে পারে। 

লাম্পি স্কিন রোগে সংক্রমিত গরু নিয়ে প্রতিদিন প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে ভিড় করছেন খামারি ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গরুর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ ছাড়া উপজেলায় ভাইরাসজনিত চর্মরোগ এলএসডি ছাড়াও ক্ষুরারোগ ও ছাগল-ভেড়া পিপিআর রোগ দেখা দিয়েছে। 

চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলায় দুগ্ধ ও হৃষ্টপুষ্টকরণ গরুর খামার রয়েছে ১ হাজার ৪৩২টি। গরু রয়েছে প্রায় ৬০ হাজার। ১৩২ খামারে ৩৫ হাজার ছাগল-ভেড়া ও ৬৭ খামারে প্রায় ৬ হাজার মহিষ রয়েছে। গত এক মাসে উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে প্রায় ৫ হাজার পশুর চিকিৎসা করা হয়েছে। অন্তত ২ হাজার গবাদিপশুর ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। এ ছাড়া গত ছয় মাসে উপজেলায় ৩৩ হাজার ৫৫০ গরু ও ৪০ হাজার ১৩৫ ছাগল ও ভেড়াকে টিকা দেওয়া হয়। 

কাকারার মাইজপাড়ার জমির উদ্দিন বলেন, ‘ষাঁড় ও বাছুরসহ ছয়টি গরু আছে। এর মধ্যে দুটি গরুর এলএসডি রোগে সংক্রমিত হয়েছে। মশা ও মাছি থেকে বাঁচতে ২৪ ঘণ্টা মশারি টাঙিয়ে রাখতে হচ্ছে। এখন মোটামুটি সুস্থ হলেও গরুর চামড়ার ওপর গভীর ক্ষত হয়ে আছে।’ 

পশ্চিম বড় ভেওলার চোঁয়ারফাঁড়ির জামাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গাভিসহ মোট গরু আছে আটটি। এক মাস ধরে একটি গাভি ও বাছুর এলএসডি রোগে সংক্রমিত। বাকি পশুর দেহে টিকা পুশ করেছি। মূলত এই রোগ হলে গরুকে বাঁচিয়ে রাখা অনেক কষ্টসাধ্য। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে এসে গরুর চিকিৎসা করিয়েছি। তাঁরা ওষুধও লিখে দিয়েছেন।’ 

এ বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আরিফ উদ্দিন বলেন, ‘লাম্পি স্কিন রোগ মূলত ভাইরাসজনিত চর্মরোগ। মশা, ওঠালি (বিশেষ পোকা) ও মাছির মাধ্যমে গবাদিপশুর দেহে রোগটি ছড়ায়। এই রোগে সংক্রমিত হলে গরুর দেহের চামড়া ছোট বৃত্তাকার মাংসপিণ্ডের মতো ফুলে যায়। সেখানে ক্ষত হয়ে রক্ত ও পুঁজ বের হয়। এক বছরের কম বয়সী গরুর এই রোগ বেশি হয়। তাই সংক্রমিত গবাদি পশুকে মশারির ভেতরে রাখা প্রয়োজন।’ 

মো. আরিফ উদ্দিন আরও বলেন, ‘লাম্পি স্কিন রোগে এক মাসে উপজেলায় অন্তত ১০০ গরু মারা গেছে। শাহীওয়াল ও দেশি জাতের গরুর দেহে এই রোগ বেশি দেখা যায়। প্রতিদিন পশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে খামারিরা ভিড় করছেন। লাম্পি স্কিন রোগ বিস্তার রোধে জন্য মাঠপর্যায়ে কৃষক ও খামারিদের পরামর্শসহ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

দেওয়ানি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে একগুচ্ছ সুপারিশ কমিশনের

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত