চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী ভিসির পায়ে হঠাৎ ছাত্রলীগ নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৪, ০১: ০৮

ঘটনাটি অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব শেষ করার আগের দিন ২০ মার্চের। লিফটের সামনে আগে থেকে অপেক্ষায় ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক তিন সহসভাপতি মইনুল ইসলাম রাসেল, মুজিবুর রহমান ও রুমেল হোসেন। উপাচার্য লিফট থেকে বের হতেই তাঁর পায়ে পড়ে যান মইনুল ও মুজিবুর। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলেছে, চাকরির দাবিতে এমন ঘটনা ঘটিয়েছিলেন ওই তিন নেতা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার তাঁর মেয়াদের পাঁচ বছরে ছয় শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে বেশ আলোচিত হন। শেষ কর্মদিবসেও তিনি ৪৪ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পাঁচ দিন আগে শিরীণ আখতারকে জড়িয়ে ফেসবুকে বিস্ফোরক স্ট্যাটাস দেন মইনুল। সেখানে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্যের অভিযোগের ইঙ্গিত ছিল। তবে পা ধরার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর মইনুলের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সেই পোস্ট আর দেখা যাচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলেছে, মইনুল ইসলাম রাসেল, মুজিবুর রহমান ও রুমেল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী। মইনুল শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক একাকার গ্রুপের নেতা। মুজিবুর ও রুমেল বগিভিত্তিক ভার্সিটি এক্সপ্রেস গ্রুপের নেতা। 

পায়ে পড়ার বিষয়ে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘কয়েক মাস আগে উপাচার্যের বাসা ও অফিস ভাঙচুরের মামলার তদন্ত থেকে বাঁচতে মইনুলসহ আমরা ম্যাডামকে অনুরোধ করতে গিয়েছিলাম উনার বাসভবনের নিচে। মইনুলের ছোট ভাইয়ের শিক্ষক পদে চাকরি না পাওয়ার বিষয় নিয়ে ট্রেন অবরোধের ঘটনা ঘটেছিল। এরপর ঘটে ভাঙচুরের ঘটনা। এসব ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়।’ তিনি বলেন, ‘বিষয়টি যে এতটুকু গড়াবে, আমরা চিন্তা করিনি। তবে যেটা হয়েছে তার জন্য আমরা লজ্জিত।’ 

ভিডিওতে দেখা যায়, ড. শিরীণ আখতারের বাসার নিচে লিফটের সামনে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক তিন নেতা। উপাচার্য বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পায়ে পড়ে যান ছাত্রলীগ নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল ও মুজিবুর রহমান। পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আরেক ছাত্রলীগ নেতা রুমেল হোসেন। পরে উপাচার্য তাঁদের হাত সরিয়ে দেন এবং দ্রুত গাড়িতে উঠে যান। এ সময় উপাচার্যকে উচ্চ কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, ‘ওদের যেতে বলো, নইলে আমি পুলিশ ডাকব।’ 

এরপরও কোনোভাবেই হাল ছাড়তে চাচ্ছিলেন না তিন নেতা। তাঁরা গাড়ির দরজা আটকে কথা বলতে থাকেন। এ সময় শিরীণ আখতারও উচ্চ স্বরে নানা কথা বলছিলেন। পরে গাড়িটি ধীরে ধীরে এগোতে থাকলে সামনে বসে যান মইনুলরা। পরে অবশ্য তাঁরা হাল ছেড়ে দেন। এগিয়ে যায় উপাচার্যের গাড়ি। এ সময় গাড়ির পেছন পেছন ছুটে যেতেও দেখা যায় তিন নেতাকে। 

এ বিষয়ে ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘দায়িত্বে থাকলে কত প্রেশারে থাকতে হয়, কত কিছু সামাল দিতে হয়, এ ঘটনায় নিশ্চয় বুঝতে পারেন।’ তবে কেন তিন নেতা পায়ে পড়েছিলেন, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ধর্ম অবমাননা: একই স্ট্যাটাসের জন্য দ্বিতীয়বার অভিযুক্ত হৃদয়

আমিরাতে অবৈধদের সাধারণ ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ আর মাত্র দুদিন

৫ আগস্ট সশস্ত্র সংগ্রামের ভিডিও বার্তা দিয়ে রেখেছিলাম: উপদেষ্টা নাহিদ

ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে ইরানের সামরিক বাজেট তিনগুণ

রাজধানীতে চাঁদা আদায়ের প্রতিবাদ করায় লেগুনা চালককে ছুরিকাঘাতে হত্যা

আরও
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত