বান্দরবানের থানচি উপজেলায় সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের শাখায় ৩০ জনের সশস্ত্র দল গ্রাহকদের টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার পর থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের শাখায় ৩০ জনের সশস্ত্র দল হামলা চালায়। ঘটনার সময় আতঙ্কে উপজেলার সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীসহ স্থানীয়রা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের আসার খবর পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। 

সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় ফাঁকা গুলি করে এবং বাজারে লোকজনদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

ঘটনার পর উপজেলাটির বাজারে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অনেকে পালিয়ে সাঙ্গু নদীর তীরে আশ্রয় নিয়েছে। তবে কাউকে মারধর ও অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। 

থানচি সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার শামসুল হুদা ও কৃষি ব্যাংকের ম্যানেজার হ্লাচিং থোয়াই জানান, ৩০ জনের একটি সশস্ত্র দল হামলা করে। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর দ্রুত তৎপরতার কারণে তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।

থানচির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে লুট হয়েছে। দুটি ব্যাংক থেকে মোট ১৭ লাখ ৪৫ হাজার লুট করে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসী দল। ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে বাজারের লোকজনদের কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা।’ 

• থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হানা, ১৭ লাখ টাকা লুট

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কেএনএফের ৫০-৬০ জনের সশস্ত্র দল রুমার সোনালী ব্যাংকে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ব্যাংকের পাহারায় থাকা পুলিশ, আনসার সদস্যদের দুটি সাব-মেশিন গান ও এর ৬০ রাউন্ড গুলি, আটটি চাইনিজ রাইফেল ও এর ৩২০ রাউন্ড গুলি এবং চারটি শটগান ও ৩৫ রাউন্ড গুলি লুট করে তারা। এ সময় ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। 

• ‘মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ও ফোন নিয়েছে সন্ত্রাসীরা’, সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক

ঘটনার পর ১৪ ঘণ্টা পার হলেও ব্যাংকের ম্যানেজারকে উদ্ধার করা যায়নি। এখনো কোনো মামলাও হয়নি। পরপর দুদিন ব্যাংক লুটের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি ফের আলোচনায় এসেছে কেএনএফ। 

আজ বুধবার সকালে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। 

• রুমায় সোনালী ব্যাংক লুট, ম্যানেজারকে অপহরণ ও ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ছিনতাই

রুমা ও থানচির ঘটনা নিয়ে আইজিপি বলেন, ‘তারা পুলিশ ও আনসারের অস্ত্র নিয়েছে, ম্যানেজারকে নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের সক্ষমতা রয়েছে, কোনো ঘাটতি নেই, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমরা একটু অসুবিধায় রয়েছি। এই ঘটনার পর সিআইডিসহ সব সংস্থা একযোগে কাজ করছে, সবকিছু স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি, এখনো আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছুই নেই।’ 

এদিকে বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে ঘটনার পর রুমা ও থানচি উপজেলায় পর্যটকবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলার অন্য ৫টি উপজেলার ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলাগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।