Ajker Patrika

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন

কাজে আসছে না দেড় কোটির রোড সুইপার

  • ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে কুসিকে একটি রোড সুইপার ট্রাক দেওয়া হয়।
  • এটি দিনে প্রায় ৩০ কিমি রাস্তা পরিষ্কার করে ৮৫০ কেজি ময়লা সংগ্রহ করতে সক্ষম।
দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ, কুমিল্লা 
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭: ৩০
কুমিল্লা নগরের ধর্মসাগর পশ্চিমপাড়ায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কার গ্যারেজে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে রোড সুইপার ট্রাক। ছবিটি গত রোববার তোলা।
কুমিল্লা নগরের ধর্মসাগর পশ্চিমপাড়ায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কার গ্যারেজে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে রোড সুইপার ট্রাক। ছবিটি গত রোববার তোলা।

কুমিল্লা নগরীর সড়কের ধুলাবালু পরিষ্কার করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দেওয়া দেড় কোটি টাকার রোড সুইপার (সড়ক পরিচ্ছন্নতার যন্ত্র) ট্রাক অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রাস্তার জন্য উপযোগী না হওয়ায় কয়েক দিন ব্যবহারের পর এটি ফেলে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে (কুসিক) একটি রোড সুইপার ট্রাক দেওয়া হয়। এ গাড়ি দিনে প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা পরিষ্কার করে ৮৫০ কেজি ময়লা সংগ্রহ করতে সক্ষম। শুরুতে কয়েক দিন এটি ব্যবহার করা হয়। পরে এটি ব্যবহারের সময় বাতাসে ব্যাপক ধুলা ওড়ার কারণে পরিবেশ নষ্ট ও পথচারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া সড়কে দৈনিক যে পরিমাণ ধুলা জমে তা পরিষ্কার করতে এই সুইপার ট্রাক যথেষ্ট নয়। ধুলার সঙ্গে রাস্তায় থাকা নানাবিধ আবর্জনার কারণে অল্প সময় চালানোর পরই এ ট্রাক আর ধুলা টানতে পারে না। এ রাস্তার জন্য প্রয়োজন আরও শক্তিশালী যন্ত্র।

গতকাল রোববার নগরের ধর্মসাগর পশ্চিমপাড়ায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কার গ্যারেজে (গাড়ি রাখার জায়গা) গিয়ে দেখা যায়, আধুনিক রোড সুইপার ট্রাকটি অব্যবহৃত পড়ে আছে। এর ওপর জমেছে ধুলার আস্তর।

কুসিক সূত্র জানায়, শুরুতে কয়েক মাস এটি ব্যবহার করা হয়। রাস্তায় অধিক ময়লা থাকায় ময়লা পরিষ্কারে এই ট্রাক আর ঠিকমতো কাজ করছিল না।

কুমিল্লা সিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, ট্রাকগুলোর ভ্যাকুয়াম পাইপ ভারী ময়লা টানতে সক্ষম না। ফলে ১৫-২০ মিনিট চলার পর ওই পাইপ জ্যাম হয়ে যেতে শুরু করে। এ কারণে ধীরে ধীরে এ ট্রাকের ব্যবহার কমিয়ে আনা হয়। কয়েক মাস চালানোর পর বর্তমানে এটি ওয়ার্কশপে পড়ে আছে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উপসহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. ইদ্রিস মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে যে রোড সুইপারটি আমাদের দিয়েছে; সেটি আমাদের দেশের পরিবেশের সঙ্গে একদমই মানানসই নয়। আবার এগুলো ব্যবহার করলে উল্টো রাস্তার ধুলা বাতাসের সঙ্গে মিশে যায়। সড়কে ব্যবহারের উপযোগী না হওয়া ও পথচারীদের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় এটি আমরা আর ব্যবহার করছি না। এটি ব্যবহারে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি।’

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান বলেন, ‘যেকোনো উদ্যোগ নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। রাষ্ট্রের এত টাকা নষ্ট করে যে রোড সুইপার কেনা হয়েছে, তা কোনো কাজেই আসছে না। অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এটা রাষ্ট্রের অর্থের অপচয়। এতে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে কি না খতিয়ে দেখতে হবে।’

কুসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মো. ছামছুল আলম বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে একটি রোড সুইপার আছে। সেটি মাঝেমধ্যে কাজে লাগানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত