ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে প্রীতি ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরের দিকে উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ সংঘর্ষ হয়। ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহাগ রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার ফান্দাউক গ্রামে দুপক্ষের মধ্যে এক প্রীতি ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়। খেলা চলাকালে দুই তরুণের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়ায়। 

এরপর সংঘর্ষের বিষয়টি গ্রামের বড়দের কাছে পৌঁছায়। উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এর মধ্যে একটি পক্ষকে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল আওয়াল ও অপর পক্ষটিকে মো. রিপন মিয়া নামে এক ব্যক্তি সমর্থন দেয়। পরে বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে বিচার-সালিসের মাধ্যমে নিষ্পত্তিও হয়। 

পরে আজ শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে ফান্দাউক সাধুপাড়া নূরে মদিনা মসজিদে যায় আওয়াল মিয়ার পক্ষের লোকজন। নামাজ থেকে বের হওয়ার পর আওয়াল মিয়ার পক্ষের লোকদের ওপর অতর্কিত হামলা করে রিপন মিয়ার লোকজন। এ সময় বিষয়টি দ্রুত গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে নারীসহ দুপক্ষের ৩০ জন আহত হয়। 

পরে উভয় পক্ষের আহতদের পুলিশ পাহারায় নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। অনেকেই পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গেছে।

আহতদের মধ্যে মো. নূরে আলম, মো. সজল, নাছির মিয়া, সাগর মিয়া, শিমুল মিয়া, তফু মিয়া, দিদার মিয়া, কাজল মিয়া, ফসাল শিয়া, হৃদয় মিয়া ও নূরেম বেগম আওয়ালের পক্ষের লোক। প্রতিপক্ষের আহতরা হলেন গোলাম নূর, রুবেল মিয়া, আলা উদ্দিন, শাহনাজ বেগম, জিনিয়া বেগম, ফাতেমা বেগম ও রুজিনা বেগম। 

সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল আওয়াল বলেন, ‘বাচ্চাদের ক্রিকেট খেলা নিয়ে সামান্য বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য স্থানীয়ভাবে বিচার-সালিসের ব্যবস্থাও হয়। কিন্তু আজ নামাজ পড়তে গেলে রিপন মিয়ার পক্ষের লোকজন আমাদের পক্ষের লোকদের ওপর হামলা করে।’

রিপন মিয়ার পক্ষের মো. রাজা মিয়া বলেন, ঈদের দিন ছোট ছেলেদের মধ্যে মারামারি হয়। স্থানীয় মাতবররা বিষয়টা সমাধান করে দেবেন বলছিলেন। আজ জুমার নামাজ শেষে বের হওয়ার পর আওয়ালের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহাগ রানা বলেন, ‘উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নে ক্রিকেট খেলা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’