Ajker Patrika

রাজনীতির বেশে ব্যবসায় ফিরতে চান গডফাদাররা

শাহরিয়ার হাসান, টেকনাফ থেকে
রাজনীতির বেশে ব্যবসায় ফিরতে চান গডফাদাররা

রাজনীতিই সবকিছুর রক্ষাকবচ। ক্ষমতার দাপটের পাশাপাশি রয়েছে সম্মানও। নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধি যাই করুক না কেন সেটাই বৈধ। হয়রানিরও ভয় থাকে না। রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে এমন ভাবনা কক্সবাজারের টেকনাফের ইয়াবা কারবারিদের। তাঁরা মনে করেন, রাজনীতিতে আসতে পারলেই তাঁদের সব সমস্যার সমাধান হবে। তাই কারাগার থেকে ফিরে এসেই রাজনৈতিক দলে ভিড়ে এবার নির্বাচন করতে চান তাঁরা।

দুই বছর আগে কক্সবাজারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে আত্মসমর্পণকারী ১০২ ইয়াবা কারবারির সবাই এখন জামিনে। সে সময় পুলিশ আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে ৩০ জনকে আলাদা করে ‘ইয়াবা গডফাদার’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জামিনে বের হয়ে এসে এই গডফাদাররা এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

স্বঘোষিত এই ইয়াবা কারবারিরা বলছেন, জনপ্রতিনিধি হয়ে এবার তাঁরা ‘জনসেবা’ করতে চান। সঙ্গে নিজের পেশা ও নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে চান। করোনা মহামারির কারণে বন্ধ থাকা টেকনাফের ৫ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন ও আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে, তাই মাঠ কাঁপাচ্ছেন চিহ্নিত এই ইয়াবা কারবারিরা।

তবে সাধারণ ভোটাররা ইয়াবা কারবারিদের রাজনীতিতে নামা নিয়ে শঙ্কিত। ক্ষমতা দেখিয়ে তাঁরা আগের মতো ইয়াবার রাজত্ব কায়েম করবেন–এমন আশঙ্কা সবার। এঁরা যেন মনোনয়ন না পান, তা দেখার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি নিজেও মনে করি, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা জনপ্রতিনিধি হলে আবারও ব্যবসায় জড়ানোর আশঙ্কা আছে। পুলিশের কাছে তাদের বিষয়ে এমনই তথ্যও আছে। তবে সবাইকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশরের দাবি, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিদের জামিনের পেছনে তদবির কাজ করেছে। জামিনে বের হয়ে এসে তাঁরা এখন আরও ভয়ানক হয়ে উঠেছেন। কারাগারে বসেই তাঁরা ইয়াবা সিন্ডিকেট চালিয়েছেন। এখন বের হয়ে এসে গডফাদাররা একটা সাইনবোর্ড খুঁজছেন। যেটা সামনে রেখে ব্যবসাটা বৈধ করা যায়। তাই উপজেলার মেয়র, কাউন্সিলর থেকে শুরু করে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার হওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। 

নির্বাচনে অংশ দিচ্ছেন যাঁরা
জানা যায়, আত্মসমর্পণের আগেই বেশ কয়েকজন মাদক কারবারি স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন।

১০২ জনের মধ্যে টেকনাফ পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নের অন্তত ২৭ জন নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন।

সূত্র বলছে, আত্মসমর্পণ করা মাদক কারবারিদের একজন আব্দুর শুক্কুর, যিনি পুলিশের তালিকায় এক নম্বর ইয়াবা গডফাদার। জামিনে বের হয়ে তিনি এখন টেকনাফ পৌরসভার মেয়র নির্বাচন করতে চান। তিনি মেয়র প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি আগে ব্যবসা (ইয়াবা) করতাম। এখন আত্মসমর্পণ করে জামিনে রয়েছি। জনগণ চায় আমি মেয়র পদে নির্বাচন করি। তা ছাড়া রাজনীতিতে থাকা ভালো। অন্যায়ভাবে কেউ হয়রানি করতে পারে না। সম্মান আর ক্ষমতাও আছে।’ 

শুধু শুক্কুর নন টেকনাফ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে অন্তত ২০ জন চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি প্রচার চালাচ্ছেন। কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করতে চান আরেক ইয়াবা গডফাদার মোহাম্মদ জোবায়ের। তিনি বলেন, ‘আমি আর মাদকের সঙ্গে নেই। এখন একটু জনসেবা করতে চাই। তা ছাড়া টেকনাফের মতো জায়গায় টিকে থাকতে হলে আপনাকে কোনো না–কোনো দিক দিয়ে ক্ষমতাবান হতে হবে। এটার বিকল্প নাই।’

টেকনাফ সদর ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যাঁরা প্রচার শুরু করেছেন সেই পাঁচজনের মধ্যে তিনজনই চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি। যাঁর মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়াও আছেন। যাঁর বিরুদ্ধে ইয়াবা ও অস্ত্র আইনে কয়েকটি মামলা রয়েছে। তাঁর দাবি, প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার তিনি। তিনি ইয়াবা গডফাদার ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে ইয়াবা কারবারিদের পরিচয় ছিল, তাতেই পুলিশ তাঁকে সন্দেহ করে।

শাহপরীর দ্বীপ ইউপির সদস্য রেজাউল করিম রেজা। যিনি আবার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। আত্মসমর্পণ করে ছয় মাস আগে জামিনে কারাগার থেকে বের হয়েছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি স্থানীয় দলীয় ষড়যন্ত্রের শিকার। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তালিকায় আমাকে বলা হচ্ছে গডফাদার। কিন্তু আসলে আমার সঙ্গে এ ব্যবসার কোনো সম্পর্ক নেই। জীবন বাঁচাতে আত্মসমর্পণ করেছি। জনগণ জানে, আমি কেমন? তাই আমি আবার ভোট করব।’

তথ্য বলছে, এ ছাড়া সাবরাং ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৪ জন, বাহারছড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৫ জন, হ্নীলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যানে প্রার্থীসহ ১১ জন, হোয়াইক্যং ইউনিয়নে ৭ জন এবং সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নে ৩ জন প্রার্থী রয়েছেন। যাঁরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি ও কথিত গডফাদার।

কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আয়াছুর রহমান বলেন, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিরা স্বঘোষিত মাদক কারবারি। যাঁরা আদালতের মাধ্যমে জামিন পেয়ে এলাকায় ফিরেছেন। এঁরা যদি জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসেন, মাদক আর কোনো দিন রোধ হবে না। 

ইয়াবা কারবারিরা জামিন পেলেন যেভাবে
 ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ইয়াবা কারবারিরা আত্মসমর্পণের সময় ৩ লাখ ইয়াবা বড়ি এবং ৩০টি আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ৷ তাঁদের প্রত্যেককে অস্ত্র ও মাদক আইনের দুইটি মামলায় আসামি করা হয় ৷ ১০২ জনের মধ্যে ১ জন কারাগারে মারা যান ৷ কারাগারে যাওয়ার সাত মাস পর প্রথম ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট থেকে ৫ জন জামিন পান ৷ এরপর ৫ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পান ৭ জন ৷ একই আদালত থেকে ৩ নভেম্বর জামিন পান ১৫ জন ৷ ধাপে ধাপে ১০১ জনই জামিনে বেরিয়ে এসেছেন।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ফরিদুর আলম চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিরা সবাই জামিন পেয়েছেন। তাঁরা যেহেতু একটা শর্তে আত্মসমর্পণ করেছিলেন, তাই তাঁদের মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্র সেভাবেই দেওয়া হয়েছিল। এ জন্য এত দ্রুত অস্ত্র ও মাদক মামলায় জামিনে বেরিয়েছেন।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আত্মসমর্পণে কিছু শর্তের মাধ্যমে তাঁরা আইনের আওতায় এসেছেন। প্রক্রিয়া অনুসারেই তাঁদের জামিন হয়েছে। তবে মামলা এখনো বিচারাধীন। আমাদের নজরদারিতে আছেন তাঁরা।’ 

আবারও ফিরছেন মাদক ব্যবসায় 
গত ২২ মে রাতে টেকনাফ হ্নীলা ইউপির রঙ্গিখালী এলাকা থেকে ১০ হাজার ইয়াবা বড়িসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা গডফাদার জামাল হোসেনের ছেলে শাহ আলম। তিনিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। জামিনে বেরিয়ে এসে আবার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন।

টেকনাফ থানার ওসি হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আত্মসমর্পণ করা ইয়াবা কারবারিরা আবার ব্যবসায় ফিরেছেন। যে কারণে জামিনে থাকা কারবারিদের ওপর বিশেষ নজর রাখছে পুলিশ।’ 

বাকি গডফাদারদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা নেই
মাদক ব্যবসায় জড়িত পুলিশের তালিকায় থাকায় আরও হাজারখানেক মানুষকে গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে পুলিশের বিশেষ কোনো তৎপরতা নেই। দুই দফায় ১২৩ কারবারি আত্মসমর্পণ করলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৪০ জন গডফাদার এখনো আত্মসমর্পণ করেননি। গত দুই বছরে তাঁরা গ্রেপ্তারও হননি। 
চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অনাগ্রহের কথা জানিয়ে কক্সবাজার চেম্বারের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, তালিকায় থাকা সত্ত্বেও তাঁরা লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কিন্তু পুলিশ তাঁদের ধরছে না। মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশাসনের আগ্রহ কমে গেছে। যে কারণে বর্তমানে ব্যবসা বেড়ে গেছে। তাঁর দাবি, কৌশলে ইয়াবা ব্যবসার হোতাদের টিকিয়ে রাখা হচ্ছে।

সূত্র বলছে, গডফাদারের তালিকায় থাকা ৪০ জন পালিয়ে থাকলেও এখন সবাই এলাকায় ফিরেছেন। নাজিরপাড়ার ভুট্টো, মৌলভীপাড়ার এশরাম, আব্দুর রহমান, রেঙ্গুর বিলের মীর কাসিমের মতো কারবারিরা পুলিশের সামনেই থাকেন। নিয়মিত যাতায়াত আছে থানাতেও।

পুলিশের তালিকায় থাকার পরও গ্রেপ্তার হচ্ছে না সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদির ভাই টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর মৌলভি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভি রফিক উদ্দীন, তাঁর ভাই ইউপি চেয়ারম্যান মৌলভি আজিজ উদ্দীন, রহমান, কাউন্সিলর শাহ আলম, রেজাউল করিম মানিক, মোহাম্মদ হোসেন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মেম্বার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, আজম উল্লাহ, মোহাম্মদ আলম, সাবরাং ইউনিয়নের মাহমুদুর রহমান, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রাকিব আহমেদেরা। 

মাদক কারবারিদের কথা ভুলে গেছে সিআইডি ও দুদক 
দুই বছর আগে কক্সবাজারের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারিদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও সিআইডি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে সংস্থা দুইটির তদন্তে, কারবারিদের অনেকের শতকোটি টাকার মালিক হওয়ার তথ্য পেয়েছিল তারা। কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সিআইডি মাত্র ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। কিন্তু জব্দ করেনি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। এমনকি পরে আর এগোয়নি এসব মামলার তদন্তও। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১৫ বছর পর চালু হলো টাঙ্গাইলের সোনালিয়া করটিয়া রেলস্টেশন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 
টাঙ্গাইলের সোনালিয়া করটিয়া স্টেশন উদ্বোধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
টাঙ্গাইলের সোনালিয়া করটিয়া স্টেশন উদ্বোধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

দীর্ঘ ১৫ বছর প্রতীক্ষার পর টাঙ্গাইলের সোনালিয়া করটিয়া স্টেশন উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে ফিতা কেটে ও সবুজ পতাকা নাড়িয়ে এই ট্রেনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালক আফজাল হোসেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুল হক বলেন, ‘স্টেশনটি বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের সোনালিয়া গ্রামে ২০১০ সালের দিকে নির্মিত হয়েছে। এটি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া এলাকার সীমান্তবর্তী। নাম জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে স্টেশনটি চালু হচ্ছিল না। দীর্ঘদিন পর আজ স্টেশনটি চালু হয়েছে। করটিয়া একটি বাণিজ্যিক এলাকা। এখানে সব আন্তনগর ট্রেন থামানোর পাশাপাশি আশপাশের সড়ক উন্নয়নের দাবি করছি। স্টেশনটি চালু হওয়ায় টাঙ্গাইল সদর, বাসাইল ও সখীপুর উপজেলার মানুষের যাতায়াতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, উদ্বোধন হওয়া এই রেলস্টেশনে সব আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি নিশ্চিত করলে স্থানীয়রা অধিকতর রেলসেবা ভোগ করতে পারবে। তিনি রেলস্টেশনের সংযোগ সড়ক উন্নয়নের দাবি জানান।

সরকারি সা’দত কলেজের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিনের দাবি আজ পূরণ হয়েছে। এতে করে সা’দত কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার বাসিন্দারা এবং করটিয়া হাটের কয়েক লাখ মানুষ যাতায়াতের সুবিধা পাবেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে একটি ট্রেন দিয়ে যাত্রা শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এ ছাড়া টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রেলপথে নিরাপত্তা জোরদারের কথাও জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে পাকশী বিভাগের ব্যবস্থাপক লিয়াকত আলী খান শরিফ, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা গৌতম কুমার কুণ্ডু, করটিয়ার জমিদার সাবেক সংসদ সদস্য মোর্শেদ আলী খান পন্নী, এইচ এম ইনস্টিটিউট অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির স্মরণে নলছিটিতে অর্ধবেলা দোকানপাট বন্ধ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
নলছিটিতে বন্ধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটিতে বন্ধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁর নিজ এলাকা ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলাজুড়ে চলছে শোকের মাতম। পরিবার ও এলাকাবাসীর কান্না ও আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। অল্প বয়সে শরিফ ওসমান হাদির এমন মর্মান্তিক মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনেরা।

শরিফ ওসমান হাদির স্মরণে আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নলছিটি উপজেলা ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে উপজেলার সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। পাশাপাশি সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।

এই উপলক্ষে সকালে নলছিটি উপজেলা ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে শহরে মাইকিং করা হয়।

নলছিটি পৌর বস্ত্র ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি নেওয়াজ হোসাইন বলেন, নলছিটি উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে সব ব্যবসায়ীরা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির প্রতি সম্মান জানিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেছেন। তিনি আরও বলেন, জাতীয় বীর শরিফ ওসমান হাদির পরিচিতি ও সুখ্যাতি এখন আর শুধু নলছিটিতে সীমাবদ্ধ নয়, তা সারা দেশে এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।

ব্যবসায়ী শাহাদাত ফকির, রফিকুল ইসলাম ও জিয়াউল কবীর মিঠু বলেন, ‘শরিফ ওসমান হাদি একজন জাতীয় বীর। তাঁর জন্মভূমি নলছিটি হওয়ায় আমরা গর্বিত। তাঁর স্মরণে ব্যবসায়ী সমিতির এই উদ্যোগকে আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, চার দম্পতি ও ১ বৃদ্ধা আটক

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধের জেরে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার জাবাখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত গোলাম হোসেন (৬০) উপজেলার জাবাখালী গ্রামের মৃত হামিজ উদ্দীন মোড়লের ছেলে। আটক ব্যক্তিরা হলেন জাবাখালী গ্রামের সেলিম মোড়ল (৫০), সাইফুল মোড়ল (৩৫), ফারুক মোড়ল (৩২), রেজাউল মোড়ল (৪০), রেজাউলের স্ত্রী মাছুমা বেগম (৩৫), সেলিম মোড়লের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪০), সাইফুল মোড়লের স্ত্রী মাহফুজা বেগম (৩০), ফারুক মোড়লের স্ত্রী জহুরা খাতুন (৩০) ও এমান আলীর স্ত্রী সফুরা বেগম (৬৫)। আটকের পর উত্তেজিত জনতা তাঁদের ঘরবাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গোলাম হোসেনের ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাড়ির সামনে চলাচলের পথের অনেকাংশ দখল করে রাখায় প্রতিবেশী রেজাউল মোড়ল, সাইফুল মোড়লসহ অন্যদের সঙ্গে গোলাম হোসেনের বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। পরে গোলাম হোসেন সাতক্ষীরা আদালতে মামলা করেন। মামলায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারি হওয়ায় প্রতিপক্ষরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। শনিবার সকালে বাড়ির সামনে কাজ করছিলেন গোলাম হোসেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে প্রতিপক্ষরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গোলাম হোসেনকে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে শ্যামনগর হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান জানান, পথের জমি নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি। শ্যামনগর থানায় একটি হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হত্যাসহ ১১ মামলার আসামি যশোরের

যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা ‘টাক’ মিলন ঢাকায় গ্রেপ্তার

­যশোর প্রতিনিধি
যশোরে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে ‘টাক’ মিলন। ছবি: সংগৃহীত
যশোরে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে ‘টাক’ মিলন। ছবি: সংগৃহীত

যশোর যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে ‘টাক’ মিলনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর রামপুরা থেকে যশোর ডিবির একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ বলছে, মিলন যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ১১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

আজ শনিবার যশোর ডিবি বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। বিকেলে পুলিশ মিলনকে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে মিলন যশোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে শহরে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মিলন আত্মগোপনে ছিলেন।

যশোর ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মিলনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সেসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ রয়েছে। ডিবির একটি দল মিলনের অবস্থান শনাক্ত করে রাজধানীর রামপুরা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে আদালতে হাজির করলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’

ডিবি ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে দুবাই থেকে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে দেশে ফেরার পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এরপর তিনি জামিনে বের হন। ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মদ্যপ অবস্থায় তিনজন সহযোগীসহ ফের গ্রেপ্তার হয়ে আবারও কারাগার থেকে জামিনে বের হন।

মিলনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়া এলাকার যুবলীগ কর্মী শরিফুল ইসলাম সোহাগকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া তিনি ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রাতে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাড়িতে বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে পুলিশের তদন্তে তাঁর নাম আসে।

পুলিশ জানিয়েছে, যশোর শহরের পালবাড়ি মোড়ে রয়েল কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ক্যাসিনোর (জুয়া) কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে মিলনের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের বাড়িতে অন্তত ১০ বার ককটেল হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মিলনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দলটির নেতাদের অভিযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত