বান্দরবানে তঞ্চঙ্গ্যাদের ফুল বিজু উৎসব

বান্দরবান প্রতিনিধি
Thumbnail image

পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষেরা পুরোনো (বাংলা) বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে শুরু করেছে ফুল বিজু উৎসব। 

আজ মঙ্গলবার সকালে বান্দরবান শহরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসিয়ে শুরু করে ফুল বিজু উৎসব। এ সময় বিভিন্ন পাড়ার তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের মানুষেরা একত্রিত হয়ে পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরোনো বছরের গ্লানি মুছে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর এই আনন্দ এখন বইছে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে। 

নতুন বছর বরণ উপলক্ষে তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় আয়োজন করে বিশেষ একটি খেলা। এ খেলাকে ‘ঘিলা’ খেলা বলা হয়। ঘিলা হলো জংলি লতায় জন্মানো এক প্রকার বীজ। এই বীজ দিয়ে তঞ্চঙ্গ্যারা খেলা করে। তাঁদের বিশ্বাস আদিকালে এক প্রেমিক যুগল এই ঘিলা খেলা খেলে তাদের ভালোবাসা পরিপূর্ণ করেছিল; এই বিশ্বাস থেকেই তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় প্রতিবছরই ঘিলা খেলায় মেতে ওঠে। 

বান্দরবানে তঞ্চঙ্গ্যাদের ফুল বিজু উৎসবে শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যানার প্রদর্শনতঞ্চঙ্গ্যারা বিশ্বাস করে, ঘিলা বীজের ব্যবহারে অপদেবতাসহ সকল দুঃখ চলে যায়, আর নিজ নিজ পরিবারে সুখ শান্তি নেমে আসে। তাই প্রতিবছর বিজুর দিনে তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় ঘিলা খেলার মাধ্যমে সুখ শান্তির প্রত্যাশা করে। 

তবে বান্দরবানে বর্ষ বিদায় ও বরণের মূল অনুষ্ঠান হয় পয়লা বৈশাখ বাংলা বছরের প্রথম দিন। এর আগে বাংলা বছরের শেষ দিন ৩১ চৈত্র বর্ষ বিদায় উপলক্ষে কিছু ধর্মীয় কর্মসূচি পালন করে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজন বুদ্ধমূর্তিকে নিয়ে শোভাযাত্রা ও স্থানীয় সাঙ্গু নদীতে বুদ্ধমূর্তিকে স্নান করানোর মাধ্যমে নতুন বছরের কর্মসূচি পালন করে। এ ছাড়া বছরের প্রথম দিন মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। 

বান্দরবানে মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, চাকমাসহ ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বিভিন্ন আয়োজনে মধ্য দিয়ে পুরোনো বছরকে বিদায় আর নববর্ষকে বরণ উদ্‌যাপন করবে, ১৬ এপ্রিল নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত