সাবেক এমপি ফজলে করিমের বিরুদ্ধে দুটি হত্যাসহ ৬ মামলা 

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১৪: ১৭
আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১৪: ৫০

চট্টগ্রামের রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে এবার পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। গত বুধবার রাতে মামলাটি করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত দোকান কর্মচারী মো. ফারুকের বাবা মো. দুলাল। মামলায় তাঁকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। 

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ নিয়ে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলাসহ মোট ছয়টি মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া এই মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিনসহ ২৬৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাঁচলাইশ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আখতারউজ্জামান। মামলাটি তদন্ত করবেন সংশ্লিষ্ট থানার এসআই মো. এনামুল হক। 

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ মডেল থানাধীন মুরাদপুরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতার ওপর এলোপাতাড়িভাবে বোমা বিস্ফোরণ, দা-কিরিচ, লোহার রড, চাপাতি দিয়ে আঘাত, এ ছাড়া প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়ে বহু ছাত্র-জনতাকে আহত করা হয়। মামলার বিবাদী হাছান মাহমুদ, ফজলে করিম, নওফেলসহ অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জন আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের নির্দেশনা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী এ হামলা চালানো হয়। 

উল্লেখিত বিবাদীদের ছোড়া গুলিতে বাদী চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজারের বাসিন্দা মো. দুলালের (৫৬) ছেলে মো. ফারুক (৩২) বুকে, পেটে ও পায়ের ঊরুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকেন। উপস্থিত লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় বিকেল ৫টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। 

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার বিপ্লবে আওয়ামী সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর নামে গত ১৯ আগস্ট চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সর্বপ্রথম মামলা করেন পশ্চিম গুজরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিরাজদৌল্লাহ। হত্যাচেষ্টা, অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয় এই মামলায়। 

এদিকে পবিত্র কোরআন পোড়ানো, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, ইবাদতখানা ও ব্যবসায়প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, নগদ অর্থ, প্রয়োজনীয় দলিলপত্র ও সম্পদ লুট, অগ্নিসংযোগ, হত্যার চেষ্টাসহ নানা অভিযোগে গত ২৩ ও ২৫ আগস্ট রাউজান থানায় দুটি মামলা হয়। মামলা দুটি করেন যথাক্রমে তরিকতভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের ১০৩ নম্বর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন ও ২০৪ নম্বর শাখার সহ সভাপতি মো. জোহেল উদ্দিন। 

এদিকে ২৫ আগস্ট চট্টগ্রাম চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দ্রুত বিচার আইনে আরেকটি মামলা করা হয়। রাউজানের বিনাজুরী ইউনিয়নের বাসিন্দা ইসতিয়াক হোসেন প্রকাশ বজল এ মামলা করেন। হামলা, চাঁদাবাজি, ভাঙচুরের অভিযোগে এ মামলা করা হয়।

এ ছাড়া ২৭ আগস্ট চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নাজিম উদ্দিন। সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট নগরীর পাঁচলাইশ মডেল থানায় হত্যা মামলাটি হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত