চাঁদপুরে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে হামলা, অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

চাঁদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৪, ২১: ৫৯
Thumbnail image

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে চাঁদপুরে ‘রিমেম্বার দ্য হিরোজ’ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ছাত্রলীগের ধাওয়া ও হামলায় অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে শহরের বাসস্ট্যান্ড ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা ছোটাছুটি করতে থাকলে পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকাজুড়ে হামলার ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রলীগ লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষার্থীদের ঘটনাস্থল থেকে তাড়িয়ে দেয়। আহত অবস্থায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দিকে চলে যায়। 

স্থানীয় লোকজন জানায়, বেলা ৩টার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের ষোলঘর এলাকায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে। সেখানে তাদের একাধিকবার ধাওয়া করে ছাত্রলীগ। তাদের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় কাউন্সিলর কবির চৌধুরী। ধাওয়া খেয়ে আবারও শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয় শহরের বাসস্ট্যান্ড ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সের সামনে। সেখানে তারা স্লোগান দিয়ে অবস্থান নেয়। 

বিকেল ৫টার দিকে ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক কর্মী শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রবেশ করে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা অতর্কিতভাবে হামলা করেন শিক্ষার্থীদের ওপর। পুলিশের সামনেই তাঁরা লাঠিসোঁটা দিয়ে শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে শহরের পশ্চিম দিকে নিয়ে যান। ওই সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলের বিপরীত দিকে অবস্থান করেন। শেষ মুহূর্তে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে হামলা চালানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকাআন্দোলনকারী এক ছাত্রীর অভিযোগ, ‘ছাত্রলীগের কর্মীরা লাঞ্ছিত করেছে। তারা আমাদের চুল ধরে টানাটানি করেছে। পুলিশ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রলীগের ছেলেরা আমাদের গায়ে হাত দিয়েছে। আমরা পুলিশের কাছে ২০ মিনিট সময় চেয়েছি। পুলিশের উপস্থিতিতে তারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’ 

এই বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর কবির চৌধুরীকে বক্তব্যের জন্য তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন। 

এদিকে ঘটনার পর পুলিশের একাধিক গাড়ি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থল এবং পুরো শহরে টহল দেয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে থাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল। 

চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল এমরান খাঁন বলেন, ঘটনার পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরে টহল জোরদার করা হয়েছে। 

ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ছবি: আজকের পত্রিকাচাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায় বলেন, ‘ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্যে এখন আর ছাত্ররা নেই। এখানে অন্য অনেকে ঢুকে গেছে। যারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করার চেষ্টা করছে। তারা বিভিন্ন ধরনের সরকারবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে এবং উত্তেজনামূলক পরিস্থিতি তৈরি করছে। তাদের মধ্যে এখন কথা-কাটাকাটি এবং ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। তাদের মধ্যে কেউ বিষয়টি বুঝতে পারছে, আবার কেউ বুঝতে পারছে না। এমন অবস্থায় আজকে এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছি এবং তাদের চলে যাওয়ার জন্য বলেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত