Ajker Patrika

রাঙামাটির বরকলে তিন মাসে ৫ মৃত্যু: চারজনের স্বাভাবিক, একজনের অপচিকিৎসায়

হিমেল চাকমা, রাঙামাটি
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৪, ১১: ২৮
Thumbnail image

রাঙামাটির বরকলের চান্দবী ঘাটে তিন মাসে পাঁচজনের মৃত্যু অজ্ঞাত কোনো রোগে হয়নি। কবিরাজের অপচিকিৎসায় একজনের এবং স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে চারজনের। বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মংক্যছিং সাগর এ তথ্য জানিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ডা. মংক্যছিংয়ের নেতৃত্বে চান্দবী ঘাটে মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করা হয়। ওই এলাকায় রোগী, রোগীর স্বজন, স্থানীয় ও মৃত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ডা. মংক্যছিংয়ের দাবির সত্যতা পাওয়া যায়।

সরেজমিনে চান্দবী ঘাট পাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, এখনো ওই এলাকার ১২ জন জ্বর ও সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। তাঁদের মধ্যে ছয়জনের পায়ের গোড়ালিতে সরিষা বীজ কাপড় দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যক রোগীর গলায় ঝোলানো হয়েছে তাবিজ। যাঁদের পেটে ব্যথা তাঁদের পেটে ভেজা কাপড়সহ বেঁধে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন গাছের শিকড়। প্রত্যকের ঘরে দেখা গেছে বিভিন্ন লতা-পাতা, গাছের শিকড়। এসব শিকড় ভেজা লালচে পানিভর্তি পাতিল দেখা গেছে রোগীদের ঘরে ঘরে।

রোগী ও রোগীর স্বজনেরা বলেন, গ্রামের সবাইকে কবিরাজি চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন গ্রামের কারবারি ও কবিরাজ শিব রতন চাকমা। টাকা চেয়ে নেন না। কেউ স্বেচ্ছায় দিলে নেন।

তিনি রোগীদের মাছ, মাংস, ডিম, ডাল ও তেলে রান্না করা জিনিস খেতে বারণ করেছেন। রোগ নিরাময়ের জন্য তাঁরা কবিরাজের কথা মেনে চলছেন। 
পশ্চিম চান্দবী ঘাটপাড়ার সাধন বিজয় চাকমা (১৯) বলেন, তিনি ২১ দিন ধরে শুধু সেদ্ধ বেগুন দিয়ে ভাত খাচ্ছেন। মরিচ, তেল, মাছ, মাংস, ডিম খেতে মানা আছে। 
স্থানীয় কারবারি ও কবিরাজ শিব রতন চাকমা (৫৫) বলেন, ‘আমি তো এযাবৎ ধরে কবিরাজি চিকিৎসা করে আসছি। আমার কাছে রোগ পরীক্ষার কোনো যন্ত্র নেই। পেট ধরে যা মনে হয় তা দিয়ে চিকিৎসা করি। ভূত আতঙ্কে থাকা রোগীর চিকিৎসা করছি।’

বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মংক্যছিং সাগর বলেন, ‘যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু স্বাভাবিক। আর ছয় বছর বয়সী যে শিশুটি মারা গেছে, তাকে কবিরাজ শিকড়ের যে রস দিয়েছিলেন তা সহ্য করতে পারেনি। তা ছাড়া জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত রোগীদের পুষ্টিকর খাবার বন্ধ করে দেওয়ায় তাঁরা দুর্বল হয়ে পড়ে। দুর্বল হওয়ার কারণে শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। এতে রোগী ও স্বজনেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আসলে তিন মাসের ব্যবধানে পাঁচজনের মৃত্যুতে গ্রামের মানুষ ভয় পেয়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত