ভারী যানবাহন অথবা নির্মাণে ভুল থাকায় ফ্লাইওভারে ফাটল: প্রকল্প পরিচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১১: ১২
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ৪০

ভারী যানবাহন চলা অথবা নির্মাণকাজে ভুল থাকার কারণে এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের (বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার) আরাকান সড়কমুখী পাশাপাশি দুটি র্যাম্পের পিলারে ফাটল হতে পারে বলে দাবি করেছেন প্রকল্প পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান। 

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) এই নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘হঠাৎ ফ্লাইওভারে পিলারে ফাটল হওয়ার পেছনে হয়তো ধারণক্ষমতার বেশি যানবাহন চলাচল করেছে। এ ছাড়া নির্মাণকাজে ভুলও থাকতে পারে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করে করণীয় ঠিক করব।’ 

তবে ফ্লাইওভারটি নির্মাণের সময় ২০১২ সালে দুর্ঘটনার পর আগের এক্সপানশন জয়েন্টটি ফ্লাইওভারের সঙ্গে তেমন সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। পরে দুটি স্প্যানের মধ্যবর্তী জয়ন্টে ব্যবহৃত উপকরণ বদলে আন্তর্জাতিক মানের এক্সপানশন জয়েন্ট ব্যবহার করা হয়। এমনকি বেশি লোড (ভার) নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নতুন করে এক্সপানশন জয়েন্ট স্থাপন করা হয়। 

নির্মাণের চার বছরের মাথায় বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার আরাকান সড়কমুখী দুটি র্যাম্পের পিলারে গত সোমবার রাতে ফাটল দেখা দেয়। দুর্ঘটনা এড়াতে ওই দিন রাত ১০টার দিকে র্যাম্প দুটিতে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। 

নগরের চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মইনুর রহমান বলেন, আরাকান সড়কমুখী অংশে যানবাহন ও মানুষ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে ষোলকবহরমুখী যান চলাচল অব্যাহত আছে। 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের চান্দগাঁও ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এসরারুল হক আজ মঙ্গলবার সকালে বলেন, মদিনা হোটেলের সামনে পাশাপাশি দুটি র্যাম্পের পিলারের ওপরের অংশে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র গবেষক দলের সঙ্গে বসেছেন। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। 

সিডিএ সূত্র জানায়, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১১ সালের মার্চে ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথমে নির্মাণের কার্যাদেশ পায় মীর আক্তার-পারিশা (জেভি) কনস্ট্রাকশন। মীর আকতার প্রধান অংশীদার হলেও মূল কাজ করে পারিশা। 

এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করার সময় ২০১২ সালের ২৯ জুন একটি গার্ডার হঠাৎ ধসে পড়ে। এতে একজন রিকশাচালক সামান্য আহত হন। এরপর একই বছরের ২৪ নভেম্বর ফ্লাইওভারের তিনটি গার্ডার ধসের ঘটনা ঘটে। এতে ১২ জন নিহত হন। 

এ ঘটনার পর সিডিএর প্রকল্প পরিচালক নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম হাবিবুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়। পরে তাঁকে মামলার আসামি করা হয়। 

প্রথমে প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৯১ কোটি টাকা। পরে সংশোধন করে ১০৬ কোটি টাকা করা হয়। ফের সংশোধন করে প্রকল্প ব্যয় ১২০ কোটি টাকা করা হয়। ১ হাজার ৩৩২ মিটার দৈর্ঘ্যের ফ্লাইওভারটির প্রস্থ ১৪ মিটার। চার লেনের বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের দুই পিলারের দূরত্ব ১৩০ ফুট। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত