চুয়েটে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে থমথমে ক্যাম্পাস

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২২, ১২: ১৭

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারি ও সশস্ত্র অবস্থানে গতকাল সোমবার দিনভর উত্তপ্ত পরিস্থিতির পর রাতে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা গেছে। এতে পরিস্থিতি আরও ভীতিকর হয়ে উঠে। 

এ অবস্থায় অঘটনের আশঙ্কায় রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনোয়ার হোসেন শামীম, রাউজান মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন ও চুয়েটের প্রক্টর অধ্যাপক ড. রেজাউল করিমসহ সংশ্লিষ্টরা চুয়েটের স্বাধীনতা চত্বরে রাতভর অবস্থান করেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। 

গতকাল সোমবার দিনের বেলায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী চুয়েটের ১২টি বিভাগের ২ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করেন। শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

এদিকে গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় বিবাদমান দুই পক্ষের এক গ্রুপ মিছিল বের করতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার মুখে পিছু হটে। তবে দুই পক্ষই যার যার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিজেদের সশস্ত্র অবস্থান অব্যাহত রাখে। সন্ধ্যার পর থেকে বহিরাগতদের আনাগোনাও লক্ষ্য করা গেছে বলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানায়। 

সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, রাত ৯টার পর থেকে ক্যাম্পাসে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা গেছে। এতে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী ও আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

এ সময় এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম, ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন ও চুয়েটের প্রক্টর রেজাউল করিমসহ সংশ্লিষ্টরা চুয়েটের স্বাধীনতা চত্বরে ছুটে আসেন। তাঁরা বলেন, শব্দগুলো গুলির ছিল না। বিবাদমান দুই গ্রুপ পটকা (বাজি) ফাটিয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পরিস্থিত এখন স্বাভাবিক রয়েছে। 

এদিকে শেখ রাসেল হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা গতকাল সোমবার চুয়েট থেকে ছেড়ে যাওয়া বিকেল ৫টার গাড়িতে ড. কুদরত-এ-খুদা হলের শিক্ষার্থীদের উঠতে দেয়নি। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা দায়িত্বরত শিক্ষকদের প্রকাশ্যে গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. রফিকুল আলম বলেন, যারা এভাবে দিনদুপুরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করে এবং শিক্ষকদের গালিগালাজ করে তারা কেউ সুস্থ মস্তিষ্কের নয়। এ ঘটনায় বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট সৈয়দ মাসরুর আহমেদকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জড়িতদের সবাইকে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। 

সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান চাইছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ডিসিপ্লিনারি অরডিন্যান্স’র ৪-এর ক অনুযায়ী যেকোনো ধরনের শৃঙ্খলা বহির্ভূত কাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে। তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও ছাত্রলীগ কর্মীরা যেভাবে অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, শিক্ষকদের গালাগালি করছে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহত করছে, তা আমাদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলছে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে গুজব

ববির ট্রেজারার সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে যোগদানে বাধা

বিগত সরকারে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ দিতেই যাবে শতকোটি টাকা

দুই দিনে ৭ ব্যাংককে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেননি রয়টার্সের প্রতিবেদক: সিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত