কাস্টমসে নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগ পৃথক ৩ মামলা, গ্রেপ্তার ৩০

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯: ০৯

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে সিপাহি পদে লিখিত পরীক্ষার জালিয়াতির ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এতে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। পৃথক তিনটা মামলায় ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে পাঁচজন এবং গতকাল মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রোজিনা খাতুন এই তথ্য নিশ্চিত করেন। 

এর আগে পরীক্ষার দিন ২৩ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষার সময় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন খুলশী থানায় একটি মামলা দিয়ের করা হয়। খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা এই তথ্য নিশ্চিত করেন। 

পাহাড়তলি থানার উপপরিদর্শক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশ্রাফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাস্টমসের নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির দায়ে ১৮ জনকে আসামি করে বুধবার মামলা করা হয়েছে। মামলার কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বুলবুল আহাম্মেদ চৌধুরী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এর আগে মঙ্গলবার কাস্টমসের নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির দায়ে পাঁচজনকে আসামি করে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলার বাদী কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম।’

কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, ৯৮ জন সিপাহি পদে ৩ হাজার ৩৪৪ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে গত ২২ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩৫০ জন প্রার্থী গত সোমবার, মঙ্গলবার ও আজ বুধবার মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। লিখিত পরীক্ষায় জালিয়াতির বিষয় মৌখিক পরীক্ষার সময় ধরা পড়ায় ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, মূলত ২০১৪ ও ২০১৭ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও নানান জটিলতায় পরীক্ষা সম্পন্ন করা যাচ্ছিল না। দীর্ঘদিন পর পরীক্ষা হওয়ায় চাকরির প্রার্থীদের আবেদনের ছবির সঙ্গে বর্তমান চেহারার অনেক পরিবর্তন এসেছে। ফলে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি চক্র মূল প্রার্থীর বদলে অন্যজনকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছে। মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসা পরীক্ষার্থীদের হাতের লেখা মিলিয়ে লিখিত পরীক্ষার খাতার সঙ্গে সাদৃশ্য না পাওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর জালিয়াতির মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষা দিতে আসা ৭ জনকে আটক করা চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং এ ব্যাপারে মামলা হয়। 

মামলার সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে গ্রেপ্তারকৃত ১৮ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সময় তাঁদের হাতের লেখা গরমিল পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে লিখিত পরীক্ষার খাতার লেখা কোনো প্রশ্নের জবাবও দিতে পরেননি তাঁরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন ১০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে কৌশলে লিখিত পরীক্ষায় অন্যকে দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। 

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপকমিশনার মো. মাহফুজ আলম বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষার জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ায় জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত