সাড়ে পাঁচ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি সীতাকুণ্ডে তুলার গুদামের আগুন 

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৩, ১৮: ৪২
Thumbnail image

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ইউনিট্যাক্স কোম্পানির একটি তুলার গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট চেষ্টা চালাচ্ছে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম দুলাল। তবে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।

এর আগে আজ শনিবার সকাল সোয়া ১০টায় উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ছোট কুমিরা বাইপাস রোড সংলগ্ন হিঙ্গিরি পাড়া এলাকায় এ তুলার গুদামটিতে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন সীতাকুণ্ড ও কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট। পরে আগুনের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেলে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতা চান। এরপর আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকালে তুলার গুদামে টিন মেরামতের কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। ঝালাইয়ের কাজ করার সময় হঠাৎ আগুনের স্ফুলিঙ্গ তুলার ওপর গিয়ে পড়ে আগুনের সূত্রপাত হয়। এই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা আরও জানান, এসএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা লোকমানের মালিকানাধীন গুদামটি ইউনিটেক্স লিমিটেড ভাড়া নেয়। তাঁদের নিজস্ব সুতা তৈরির কারখানার জন্য সেখানে অনেক তুলা মজুত করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ইকবাল, ফরহাদ ও জুয়েল জানান, সকালে তাঁরা গুদামের সামনে থাকা চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। হঠাৎ গুদামের ভেতর থেকে আগুন, আগুন বলে চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে আসেন। এ সময় তাঁরা আগুনের লেলিহান শিখা দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর স্থানীয় এলাকাবাসী ছুটে এলে তাঁদের সঙ্গে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেন। পরে তাঁরা মোবাইল ফোনে সহায়তা চেয়ে কুমিরা ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।

কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, কারখানাটি এস এল স্টিলের মালিক গুদাম হিসেবে ব্যবহার করেন। তিনি এটি গুদাম হিসেবে ব্যবহার করলেও এর জন্য পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স কিংবা কোনো ধরনের অনুমতি নেননি।

এসএল স্টিলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, গুদামটি বর্তমানে ইউনিট্যাক্সের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এটি তাঁরাই তুলার গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছেন। তাই আমাদের ট্রেড লাইসেন্স কিংবা অনুমতি নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম দুলাল জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে তাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করেন। কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। বর্তমানে তাঁদের চারটি ইউনিটের পাশাপাশি আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তাঁরা গুদামের পাশের নেমসন ডিপোকে আগুন থেকে রক্ষায়ও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শুরুতে পানি সংকটের কারণে কাজে বেগ পেতে হচ্ছিল। তবে দুপুরের পর নেমসন কন্টেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করলে তা দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

নুরুল আলম দুলাল আরও জানান, স্থানীয়রা ঝালাইয়ের কাজ করার সময় তুলার গুদামে আগুন লেগেছে বলে জানিয়েছেন। তবে গুদামে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তার সঠিক কারণ এখনো নির্ণয় করতে পারেননি তাঁরা। তুলার গুদামের পাশাপাশি আগুনে চারটি চায়ের ও খাবার দোকান পুড়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত