নৈশপ্রহরী আজাদ খুন: হত্যার পর উল্টো মামলা দিয়ে স্বজনদের হয়রানি

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৪, ১৩: ৫৪
Thumbnail image

চট্টগ্রামের হালিশহর নয়াবাজার এলাকায় নৈশপ্রহরী আজাদুর রহমান আজাদ খুনের পর উল্টো মামলার বাদীসহ নিহতের পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা, সাধারণ ডায়েরিসহ (জিডি) নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি এই খুনের সাক্ষী ও ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজনকে এলাকাছাড়া করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। 

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাঁদের পরিবারের কারও বিরুদ্ধে কোনো সময় মামলা ছিল না। ওই খুনের ঘটনার পর প্রতিপক্ষ দুটি মামলা ও দুটি জিডি দিয়ে হয়রানি করে আসছে। তাঁরা এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকেও কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না।

আজাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটনের ভাই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল মান্নান খোকনের অনুসারী। খুনের পর থেকে খোকন নিজেও আসামিদের বাঁচাতে নানা তৎপরতা চালিয়ে আসছেন। 

নয়াবাজারে একটি ভবনের ফটকের সামনে প্রস্রাবে বাধা দেওয়া নিয়ে বিতণ্ডা হয়। এর জেরে গত বছরের ২৮ মে ভোরে আজাদকে ছুরিকাঘাত ও মারধর করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পাহাড়তলী থানায় আজাদের স্ত্রী নাজমা আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে ওসমান, আবুল হাসান রাজু, আবু তাহের রাজীব ও ফয়সাল আহমেদ চৌধুরীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা তিন-চার জনকে আসামি করা হয়।

আজাদের ভাবি রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘এই মার্ডারের মামলার পর আমাদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা দিয়েছে। মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। রাস্তাঘাটে আমাদের ধরে এই করবে সেই করবে বলে নানা হুমকি দিচ্ছে। রাস্তাঘাটে আমার মেয়েরা চলাফেরা করতে পারছে না। আমার ছেলের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মারামারিসহ চারটি মামলা দিয়েছে। মূলত সে খুনের ঘটনা নিয়ে মাতামাতি করায় তাকে একের পর এক মামলা দিচ্ছে। আমাদের কোনো অভিযোগ নিয়ে থানায় পুলিশের কাছে গেলে তারা গ্রহণ করছে না। পুলিশ বলে যে ওয়ার্ড কমিশনারের কাছে যাও, সেখানে গিয়ে ফোন ধরিয়ে দাও। কমিশনার বললে মামলা নিব। তারা সবাইকে কিনে রেখেছে। এই খুনের ঘটনার সাক্ষী ও মানববন্ধনে অংশ নেওয়া লোকজনের কয়েকজনকে এলাকাছাড়া করেছে। অভিযুক্তরা প্যানেল মেয়রের লোক হওয়ায় তাদের কোনো বিচার হচ্ছে না।’

আজাদের বড় ভাই আব্দুর রহমান অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলে এসএসসি পাস করেছে; কিন্তু কলেজে ভর্তি করাতে পারেননি। এর মধ্যে ছেলের নামে মামলা দিয়েছে। মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে উত্ত্যক্ত করছে। পুরো গোষ্ঠীর নামে মামলা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে প্যানেল মেয়র লিটন ও তাঁর ভাই খোকনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা সাড়া দেননি। পরে বার্তা পাঠানোর পরও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। পুলিশের অসহযোগিতার ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) নিহাদ আদনান তাইয়ান বলেন, ‘আমি এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ নিয়ে তাঁদের পরিবারের কেউ এখানে আসেনি। অভিযোগ পেলে সেটা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার দপ্তরে অভিযোগ দিতে বলেন। আমি ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত