Ajker Patrika

জিম্মি জাহাজে দুম্বা আনছে দস্যুরা, নতুন ২৩ নাবিক প্রস্তুত রেখেছে মালিকপক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
জিম্মি জাহাজে দুম্বা আনছে দস্যুরা, নতুন ২৩ নাবিক প্রস্তুত রেখেছে মালিকপক্ষ

সোমালিয়ার উপকূলে ১৮ দিন ধরে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও ২৩ নাবিককে ছাড়িয়ে আনার আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। তবে ঈদের আগে নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে পারার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে জাহাজের মালিক কর্তৃপক্ষ। 

এদিকে জাহাজে ২৫ দিনের খাবার মজুত থাকলেও দস্যুরা সেখানে ভাগ বসানোর কারণে তা দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও খাবারের কোনো সংকট না থাকলেও সুপেয় পানির কিছুটা সংকট দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন জাহাজ মালিকপক্ষের মুখপাত্র মো. মিজানুল ইসলাম। 

অন্যদিকে, জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, খাওয়ার জন্য তির থেকে দুম্বা ও ছাগল জাহাজে আনছে জলদস্যুরা। তবে এ দুম্বা ও ছাগলের মাংসের ভাগ নাবিকদেরও দেওয়া হচ্ছে কি না স্পষ্ট নয়। 

জাহাজ মালিকপক্ষের তরফে জিম্মিদের উদ্ধারে জোরদার আলোচনার মধ্যে ২৩ জনের একটি নাবিক গ্রুপকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। যাতে এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি করা দস্যুদের সঙ্গে মুক্তিপণের বিষয়টি মীমাংসা হলে এই নাবিকেরা এমভি আবদুল্লাহ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারেন। নতুন ২৩ নাবিককে এমভি আবদুল্লাহতে প্রতিস্থাপন করার পর জিম্মি ২৩ নাবিককে উড়োজাহাজ করে দেশে উড়িয়ে নিয়ে আসা হবে। 

এ বিষয়ে মো. মিজানুল ইসলাম জানান, জিম্মি ২৩ নাবিককে উদ্ধারের পর নতুন ২৩ নাবিককে জাহাজ চালিয়ে আনার দায়িত্ব দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে আমরা সার্বিক প্রস্তুতি সেরে রেখেছি। ঈদের আগে জিম্মি মুক্তিতে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। তবে এটা সম্ভব কিনা তাও দেখতে হবে। 

তিনি বলেন, সোমালিয়া থেকে জাহাজটি আরব আমিরাত যেতে লাগবে ১৩ দিন। নতুন নাবিকেরা জাহাজের দায়িত্ব নিতেও সময় লাগবে। সবকিছু মিলে ঈদের আগের জাহাজ ও জিম্মিদের উদ্ধারের বিষয়টি বাস্তবসম্মত কিনা সেটাও দেখতে হবে। 

গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ কয়লাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি করে সোমালি দস্যুরা। পরে তারা জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলের কাছে নিয়ে যায়। চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজটি বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করা আছে। 

 ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর একই গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি জাহান মণি জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। মুক্তিপণ দিয়ে ১০০ দিনের জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হন নাবিকেরা। জিম্মি অবস্থায় জাহাজটির খাবার ফুরিয়ে গেলে জলদস্যুরা সপ্তাহে দুটি করে দুম্বা নিয়ে আসত। একটি করে জিম্মি নাবিকদের দিত দস্যুরা। একই অভিজ্ঞতা এমভি আবদুল্লাহর বেলায়ও ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন জানান, কোনো জাহাজ ও নাবিক জিম্মি করলে জলদস্যুরা সাধারণত খাবার সরবরাহ করে থাকে। এ ক্ষেত্রে সুপেয় পানি নিয়ে সমস্যা হয়। রেশনিং করে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে হয়।

নাবিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে ২০০ টন সুপেয় পানি ছিল। এই পানি দিয়ে এক মাস পর্যন্ত চালানো যাবে বলে তখন নাবিকেরা জানিয়েছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, তবে রেশনিং করলে অনেক দিন চালানো যাবে। পানি বাঁচাতে এখন শুধু রান্না ও খাবারের জন্য এই পানি ব্যবহার করছেন নাবিকেরা। সংকটের কারণে এখন সপ্তাহে দুই দিন এক ঘণ্টা করে জাহাজের সুপেয় পানি ব্যবহার করছেন নাবিকেরা।

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ ও ২৩ নাবিকের মুক্তির ব্যাপারে আলাপ আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ: ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, নিষিদ্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে পন্টিংয়ের আরেকটি রেকর্ড ভাঙলেন কোহলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত