ইসকনকে নিয়ে কটূক্তি: সেই দোকানদার পুলিশ হেফাজতে

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯: ৫৬
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২: ৪৮
ফাইল ছবি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইসকনকে নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্ট শেয়ারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের দোকানদারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এতে সাত পুলিশ সদস্য আহত হন।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার হাজারী গলি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ জানায়, হাজারী গলি এলাকার মো. ওসমান নামের এক দোকানদার কয়েক দিন আগে তাঁর ফেসবুকে ইসকনকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ আখ্যা দেওয়া একটি পোস্ট শেয়ার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে একদল লোক এক ঘণ্টা ধরে ওই দোকানদারকে অবরুদ্ধ রাখেন। খবর পেয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে ওই দোকানদারকে উদ্ধার করেন।

আজকের পত্রিকার মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আব্দুল কাইয়ুম ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি জানান, বিক্ষুব্ধ জনতা দোকানদারকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান। এ সময় তাঁরা বিক্ষোভ করতে থাকেন এবং ইটপাটকেল ছোড়েন। পরে ওসমানকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

পরে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী তারেক আজিজ মঙ্গলবার রাতে বলেন, হাজারী গলি এলাকার মো. ওসমান নামের এক দোকানদার কয়েক দিন আগে তাঁর ফেসবুকে হিন্দুদের ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের নাম উল্লেখ করে একটি পোস্ট শেয়ার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু লোক আজ সন্ধ্যার দিকে তাঁর দোকানে গিয়ে হামলা চালা়ন। ওই সময় তাঁরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে যান। ওসমানকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন তাঁকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায়। ওই সময় তারা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরে ওসমানকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বিক্ষুব্ধ লোকজন যৌথ বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে আবার ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা অ্যাসিডও নিক্ষেপ করেন। এতে সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি অঞ্চল) মাহফুজুর রহমানসহ সাত পুলিশ সদস্য আহত হন। এর মধ্যে একজন সামান্য অ্যাসিডদগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

পুলিশ কর্মকর্তা তারেক আজিজ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনী কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আটকে হাজারী গলি এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন বলেন, ‘যারা এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের আটকে অভিযান চলছে। আর যে ব্যবসায়ীকে আক্রমণের চেষ্টা চালিয়েছিল, তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিসের পরিপ্রেক্ষিতে কী হলো—পুরো বিষয়টি তদন্ত করে এবং যারা এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী, তাদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করে আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত