চবিতে কোটা আন্দোলনকারীকে হত্যার হুমকি, থানায় ২ জিডি  

চবি সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৪, ২২: ২৮

সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে দুই থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী খান তালাত মাহমুদ রাফি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও কোটা বিরোধী আন্দোলনে চবির সহ-সমন্বয়কারী। তিনি অভিযোগ করেন, গত ৭ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার বাবার নম্বরে ফোন দিয়ে তাকে হত্যার হুমকি দেয় একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদ রিজভী।

ঘটনার পরদিন প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দেন রাফি। পরে গত ৮ জুলাই হাটহাজারী মডেল থানায় একটি ও  ৯ জুলাই ভুক্তভোগীর নিজ এলাকা নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থানায় অপর জিডিটি করা হয়েছে। এর মধ্যে হাটহাজারী মডেল থানায় ভুক্তভোগী রাফি ও নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থানায় ভুক্তভোগীর বাবা তরিকুল ইসলাম এই জিডি করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাফি বলেন, ৭ জুলাই রাতে আমার বাবাকে ফোন দিয়ে বলেছে ‘আপনার ছেলেকে যদি কোটা আন্দোলন থেকে সরে যেতে না বলেন তাহলে হয়তো আপনার ছেলেকে আর পাবেন না, তার লাশটা পাবেন। দেখা যাবে যে কোথাও না কোথাও মেরে ফেলে রাখা হয়েছে। পরে লাশটা অ্যাম্বুলেন্সে করে পাঠানো হবে।’

পরে আব্বু পরিচয় জানতে চাইলে লোকটি বলে, ‘আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। ক্যাম্পাসেই থাকি।’ এটা বলে ফোন কেটে দেয়। রাফি বলেন, যে নম্বর থেকে কল করা হয়েছিল সেটি নিয়ে আমি আমার সাধ্যমতো খোঁজ খবর নিয়েছি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে ওটা আমার বিভাগের  সিনিয়র ২০১৯-২০ সেশনের হৃদয় আহমেদ রিজভীর নম্বর। তাঁর বাড়ি নরসিংদী জেলায়। আমি এখন ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছি। এছাড়া হাটহাজারী মডেল থানা ও মোহনগঞ্জ থানায় দুটি জিডি করা হয়েছে।

হুমকি দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে অভিযুক্ত হৃদয় আহমেদ রিজভী অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি তার বাবাকে কোনো ফোন করিনি। আমি রাফিকে বিভাগের ছোটভাই হিসেবে চিনি। সে একদিন এসে পরিচিত হয়েছিল। আমি বাড়িতে অবস্থান করছি। হত্যার হুমকি দেব কেন? আমি এ বিষয়ে জানি না।

তবে আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি অভিযোগ দেন অভিযুক্ত রিজভী। সেখানে তিনি রাফির বাবাকে ফোন দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। কিন্তু হত্যার হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, ‘রোববার রাতে একটি নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বলে আপনার ছেলেকে কোটা আন্দোলন থেকে সরে যেতে বলেন। না হলে হয়তো লাশটা পাবেন। অ্যাম্বুলেন্স করে পাঠানো হবে। পরিচয় জানতে চাইলে সে ফোন কেটে দেয়। আমি চাই আমার ছেলেকে যেন নিরাপত্তা দেওয়া হয়।’

জিডির বিষয়ে মোহনগঞ্জ থানায় ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভুক্তভোগীর বাবা একটি জিডি করেছেন। আমরা আগামীকাল এটি আদালতে পাঠাবো। আদালতের নির্দেশনা হলে আমরা বিষয়টি তদন্ত করবো।’

এ বিষয়ে হাটহাজারী মডেল থানার ওসি মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাফি নামে একটা ছেলে জিডি করেছে। এখানে তেমন কিছুই উল্লেখ করেনি।

একই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. অহিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছেলেটা অভিযোগপত্র দিয়েছে। যেহেতু তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে, এটা ক্রিমিনাল কেস। এটা পুলিশ তদন্ত করবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত