সপরিবারে মদ খেয়ে ঘুমানোর পর ২ তরুণীর মৃত্যু, দুজন হাসপাতালে 

মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৪: ৫৮
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৫: ১৬

মাদারীপুর শহরে একটি বাড়ি থেকে দুই তরুণীর মরদেহসহ পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অসুস্থ দুজনকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গত রাতে তাঁরা প্রত্যেকে দেশি-বিদেশি মদ পান করেছিলেন বলে জানিয়েছেন।

পুলিশ বলছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত এক তরুণীর মাকে থানায় নেওয়া হয়েছে।

মাদারীপুর পৌরসভার কলেজ রোড এলাকার লুৎফর মোল্লার বাসার চতুর্থ তলায় গতকাল শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। আজ রোববার সকালে তাঁদের মাদারীপুর সদর হাসপাতালে আনা হয়।

নিহতেরা হলেন সাগরিকা আহম্মেদ (২০) ও পারুল আক্তার রুপা (২০)। সাগরিকা শহরের উকিলপাড়া এলাকার কে এইচ শাকিল আহম্মেদের মেয়ে এবং পারুল আক্তার রুপা ডাসার উপজেলার বালিগ্রাম এলাকার মালেক মাতুব্বরের মেয়ে।

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সাগরিকার মামা মো. বাবু (৪০) ও ডালিয়া (৪২) নামের এক নারী।

নিহত সাগরিকার মা সাবিনা ইয়াসমিনকে (৪৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেন মাদারীপুর সদর মডেল থানার পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছে, ভোররাতে হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে রুমে ছুটে যান বাসার কেয়ারটেকার হেলাল সরদার। পরে ফ্লোরে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন সাগরিকা আহম্মেদ ও তাঁর বান্ধবী পারুল আক্তার রুপাকে। এ ছাড়া সাগরিকার মা সাবিনা ইয়াসমিন এবং তাঁর মামা বাবু ও ডালিয়া নামের এক নারীকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। বেশি অসুস্থ থাকায় বাবু ও ডালিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. রিয়াদ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই নারীকে মৃত অবস্থায় এখানে আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’

নিহত সাগরিকার মা সাবিনা ইয়াসমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মেয়ে সাগরিকার বান্ধবী পারুলসহ কয়েকজন মেয়ে আমাদের বাসায় বেড়াতে আসে। রাতে আমরা সবাই দেশি ও বিদেশি মদ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। পরে ভোররাতে দেখি আমার মেয়ে সাগরিকা ও তার বান্ধবী পারুল মারা গেছে।’

সাগরিকার মামা মো. বাবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বাড়ি নাটোর। আমি এখানে আমার বোনের সাথে থাকি। এক বছর হলো এখানে এসেছি। এখানে একটি ইটভাটায় কাজ করি। রাতের বেলায় আমার ভাগনি ও ওর কয়েকজন বান্ধবী মিলে দেশি ও বিদেশি মদ খাই। এরপর ঘুমিয়ে পড়ি। পরে ভোরে জেগে দেখি আমার ভাগনি ও তার বান্ধবী মারা গেছে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, শনিবার রাতে ওই বাসায় অপরিচিত তিন-চার নারীকে ঢুকতে দেখেছেন তাঁরা। এ ঘটনার পর ওই নারীদের আর দেখা যায়নি।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাদারীপুর সরকারি কলেজের পেছনে লুৎফর মোল্লার বাড়ির চতুর্থ তলায় সাবিনা ইয়াসমিন তাঁর মেয়ে সাগরিকাকে নিয়ে ভাড়া থাকেন। প্রাথমিকভাবে জেনেছি, শনিবার রাতে সাগরিকার তিন বান্ধবী ওই বাসায় বেড়াতে যান। এরপর তাঁরা সবাই মিলে দেশি ও বিদেশি মদ পান করেন, কিছুক্ষণ নাচানাচি করে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে তাঁরা জেগে দেখতে পান সাগরিকা ও তাঁর বান্ধবী মারা গেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় আরও দুজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত সাগরিকার মা সাবিনা ইয়াসমিনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত