'পরিত্যক্ত' ভবনটিই ২৫ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা

আলআমিন ভূঁইয়া
আপডেট : ২৩ জুন ২০২১, ১৫: ৫৯
Thumbnail image

গুলশান-বাড্ডা (ঢাকা): জরাজীর্ণ আর পরিত্যক্ত এ ভবনটি দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি উপস্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানের পলেস্তারা খসে পড়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। এ ছাড়া বাইরের ভাঙা দেয়াল আর ভেতরের এমন ভঙ্গুর অবস্থা দেখলে যে কারোর এর ধারেকাছেও যাওয়ার কথা নয়।

এমন পরিস্থিতিতে যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে ভবনটি।

এরপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। একইভাবে সেবাও গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছেন এলাকাবাসী।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বর্ধিত ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের বেরাইদ এলাকার একমাত্র উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এটি।

বেরাইদ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট সৈয়দ মো. আসাদুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে জানান, ২৫ হাজার মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা পরিত্যক্ত এ ভবনটি; যা পাঁচ বছর আগেই পুরোপুরিভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

পরিত্যক্ত এ ভবনটি পুনর্নির্মাণে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬১ শতাংশ ভূমির ওপর দ্বিতল ভবনে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়মানুযায়ী সব দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করা হয় বলেও জানান আসাদুল্লাহ।

তিনি বলেন, কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তর করার মাত্র দুই মাস বাকি থাকলেও এখনো পরিত্যক্ত ভবনটি ভাঙাই শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কোনো ধরনের কাজ ছাড়াই এরই মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া অর্থের প্রথম ধাপের জন্য আড়াই কোটি টাকা ছাড় করিয়ে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। 

নতুন ভবন নির্মাণের দাপ্তরিক কাজ শেষ হলেও আশার আলো দেখেনি২০০৪ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে এখানে যোগ দেওয়া ডা. সাহানা পারভিন আজকের পত্রিকাকে জানান, সরকারের সব সুবিধা ও লোকবল থাকা সত্ত্বেও ভবনের অভাবে চিকিৎসা সেবাবঞ্চিত প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। 

প্রতিদিন গড়ে দেড় শতাধিক মানুষ এখানে চিকিৎসাসেবা নিতে আসে বলেও দাবি করেন তিনি। 

বেরাইদ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের এফফিআই ইন্সপেক্টর মো. সাইদুল ইসলাম জানান, ২৭ প্রকার ওষুধ এখানে সরবরাহ করা হয়।

জরাজীর্ণ ভবনটিতে দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে আসা এখানকার বাসিন্দা মো. আরিফুল ইসলাম পারভেজের অভিযোগ, একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটির এমন বেহাল অবস্থার ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তাঁরা। ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। 

আরেক বাসিন্দা রহিমা আমিন প্রতিভা জানান, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিত্যক্ত হওয়ায় অপারেশন থিয়েটারের মতো গুরুত্বপূর্ণ রুমটিও জরাজীর্ণ, ব্যবহার অনুপযোগী ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এতে মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। ফলে নারী, শিশু ও বয়স্করা স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়ছেন। 

ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও শুধু ভবনের অভাবে আমরা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঠিকমতো সেবা পাচ্ছি না।’ 

জরুরি ভিত্তিতে একমাত্র এ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পুনঃসংস্কার করে জনবল নিয়োগ দিয়ে দ্রুত চালু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত